ছড়া-কবিতা:: ইঁদুর ভায়া - সুজাতা চ্যাটার্জী


ইঁদুর ভায়া
সুজাতা চ্যাটার্জী
 
কালকে রাতে, ঘুমের মাঝে, দেখতে পেলাম পষ্ট,
গণেশ দাদার ইঁদুর ভায়ার, বড্ড মনে কষ্ট
দেখতে পেলাম, চোখ ভরা জল, মুখটা পুরো কালো,
বলছে কেঁদে, “ছোট্ট বলে, কেউ বাসে না ভালো!
লক্ষ্মী দিদির ওই পেঁচাটা, চোখ গোল গোল ক'রে,
ইঁদুর দেখেই তার নাকি গো, জিব দিয়ে জল ঝরে!
কার্ত্তিকদার ময়ূরটারও একই রকম ভাষা,
তারও নাকি, ইঁদুর খেতে, ভীষণ লাগে খাসা!
রাজহাঁসটা একটু ভালো, সবটা ভালো নয়,
বিশাল বড়ো ঠোঁটটি দেখে, ভীষণ লাগে ভয়।
দুর্গতি মোর হরবে বলে, মায়ের আপন করে,
সাহস করে গেলাম সেদিন, মা দুর্গার ঘরে।
কপাল আমার মন্দ এমন, যেই ঢুকেছি হায়,
সিংহ ব্যাটা লাফিয়ে এসে, পড়ল আমার গায়!
ও বাবা গো! ভাবলে আমার হাত পা কাঁপে বেশ,
পালিয়ে ছিলাম, নইলে সেদিন, হয়েই যেতাম শেষ
এই না শুনে, গণেশ দাদা, বললে আদর করে,
“কেউ না বাসুক, আমি তো ভাই, ভালোই বাসি তোরে
ইঁদুর বলে, “হে বিনায়ক, প্রেম আপনার দামি,
কিন্তু যখন চাপেন পিঠে, চেপটে যে যাই আমি।
এসব কথা বলব কাকে? চক্ষে আসে জল,
একলা আমি, ছোট্ট আমি, কোথায় পাব বল?”
গনেশ দাদা হাসেন এবার, বলেন, “ওরে থাম।
ঢং দেখে তোর এবার আমার, ঝরছে গায়ে ঘাম।
অনেক দিনের বন্ধু যে তুই, চিনতে তো নেই বাকি,
লাগবে কী তোর, বল তো শুনি, লজ্জা শরম ঢাকি
স্পষ্ট দেখি, ইঁদুর ভায়ার, মুখের কোণে হাসি,
“গণেশ দাদা, এই জন্যই তোমায় ভালোবাসি।
বলছ যখন, তোমার কাছে, বলেই ফেলি তবে,
বেশি তো নয়, দু-তিন কিলো, লাড্ডু হলেই হবে
_____
ছবিঃ শ্রীময়ী

3 comments:

  1. বাহ, এতদিন গনেশ দাদা আপন বাহনটিকে লাড্ডু না দিয়ে বা কম কম দিয়ে রেখেছিল? খুব ই অন্যায়। তুমি ভাগ্যিস প্রতিবাদ টা করে দিলে, এবার ন্যায্য পাওনা পাবে। খুব ভালো হয়েছে।

    ReplyDelete
  2. সেই জন্যই তো বলা... বেচারার কষ্ট আর দেখা যাচ্ছিল না চোখে 😂😂

    ReplyDelete
  3. দারুন। দারুন। সুজাতা আপনার ছড়া টা পরে নিজের সেই ছোট বেলার পুজো এ হা করে ঠাকুর দেখা র কথা মনে পড়ে গেল। কি যে হয়ে গেল। কেন যে বড় হয়ে গেলাম।

    ReplyDelete