স্ট্রিট
ম্যাজিশিয়ান
চুমকি চট্টোপাধ্যায়
চুমকি চট্টোপাধ্যায়
বিভাসকাকুর
বাড়ির পাশ দিয়ে যাবার সময় মিল্টন বলল, “এই শুভ, বিভাসকাকুর
কোনও খবর জানিস?
অনেকদিন ধরে দরজায় তালা দেওয়া দেখছি।”
আমি বললাম, “না
রে। কিচ্ছু জানি না। একা মানুষ, পৃথিবী ভ্রমণে বেরিয়েছে হয়তো।”
মিল্টন বলল, “ধুস, কী
যে বলিস! এর ওর কাছে ধার করে খাওয়া মানুষ আবার পৃথিবী ভ্রমণ করবে কী রে! বাবার
কাছেই তো কতবার টাকা ধার নিয়েছে। যদিও বেশি নয়, ওই দশ টাকা, বিশ
টাকা এরকম।”
“আরে আমি
ইয়ার্কি মারলাম। ব্যাপারটা আমি জানি তো। আমার বাবা, ছোটকার কাছ
থেকেও টাকা চেয়ে নিয়েছে। তবে অ্যামাউন্ট কম বলে কেউ কিছু বলে না।”
“আসলে
আমাদের দেশে স্ট্রিট-ম্যাজিশিয়ানদের তো কদর নেই মোটেই। তাই ম্যাজিক জানা সত্ত্বেও
রোজগার ছিল না তেমন৷ আর স্টেজ ভাড়া করে শো করার মতো টাকাও ছিল না। ফলে অভাবেই থাকত
বেচারা বিভাসকাকু।”
“স্ট্রিট-ম্যাজিশিয়ানদেরই
কিন্তু ক্রেডিট বেশি, তাই না? বল? একেবারে এক
হাত দূরে দাঁড়িয়ে ট্রিকস দেখাচ্ছে কিন্তু লোকজন ধরতে পারছে না।”
“হানড্রেড
পারসেন্ট! অনেক বেশি ক্রেডিট এদের। কিন্তু ওই, ব্র্যান্ডের
দিকেই বেশি ঝোঁক মানুষের। ঝাঁ চকচকে পোশাক, সঙ্গে
পঁচিশজন সহকারী,
ঝিনচ্যাক স্টেজ, জগঝম্প মিউজিক... এ সব সমেত ম্যাজিকই লোকজনের পছন্দ।”
“বিদেশে
কিন্তু স্ট্রিট-ম্যাজিশিয়ানরা ভালোই পাত্তা পায়, রোজগারও
ভালোই করে। অ্যাই শুভ, বিভাসকাকুর রুমাল দিয়ে ঘাড় গলা মোছার একটা বাতিক ছিল না? কি
শীত, কি
গরম, মুছেই
যেত।”
“ওরেব্বাবা!
সেই রুমালের যা চেহারা ছিল, বালি রঙের হয়ে গেছিল সাদা রুমাল।
মাঝে মাঝে মুখও মুছত রে। তুই কোনোদিন বিভাসকাকুর ম্যাজিক দেখেছিস?”
“না রে শুভ।
কেউই তেমন দেখেনি। নিজেই মনে হয় নিজেকে স্ট্রিট-ম্যাজিশিয়ান বলে পরিচয় দেয়।
বিভাসকাকুর টোটাল অ্যাপিয়ারেন্সে কোথাও একটা কিছু বিশেষত্ব আছে। আমার তো মনে হয়, তোর
হয় কিনা জানি না। তবে সেটা যে কী, তা ধরতে পারি না।”
“বিভাসকাকুর
কথা বলতে বলতে বাড়ি এসে গেল। চল তাহলে, কাল দেখা হচ্ছে স্কুলে। তোর
কেমিস্ট্রি প্র্যাকটিকাল নোটবুকটা আনিস মনে করে।”
“শিওর। টাটা।”
মাস ছয়েক পর...
“আরে
বিভাসকাকু! কতদিন পর আপনাকে দেখলাম। কবে ফিরলেন?”
“এই তো
গতকাল ফিরেছি। তা এই সাতসকালে চললে কোথায় শুভ? তোমার
জুটিটি ভালো আছে তো?”
“আশুদার
দোকানে যাচ্ছি,
মা কিছু জিনিস আনতে দিয়েছে। মিল্টনের কথা বলছেন তো? ও ভালো আছে।
ইন ফ্যাক্ট,
কিছুদিন আগেই আপনার কথা বলছিলাম আমরা।”
“আরে তাই
নাকি? আমার
কথা বলার মানুষও আছে তাহলে! তা কী বলছিলে শুনি?”
“কাকু, আজ
একটু তাড়া আছে,
স্কুল যেতে হবে। আমি আর মিল্টন বরং স্কুলের পরে আসব আপনার কাছে। ম্যাজিক দেখব কিন্তু।”
“হ্যাঁ
হ্যাঁ, সেই
ভালো। এসো এসো।”
শুভ দেখল
পাজামার পকেট থেকে সেই বালি রঙের রুমালটা বার করে ঘাড় মুছল বিভাস সরখেল। রুমালটা
সাইজে বেশ বড়ো। চার ভাঁজ অবস্থাতেও বড়ো লাগছে।
মিল্টন ঠিকই বলেছে। ছোটোখাটো, রোগা-সোগা চেহারা হলেও বিভাসকাকুর
পুরো স্ট্রাকচারটাতে একটা ব্যাঁকাট্যারা ভাব আছে। ভালো করে খাওয়া-দাওয়া করে না
হয়তো।
স্কুলের
গেটের পাশে বটগাছটার নিচে দাঁড়িয়ে ছিল মিল্টন। দেখতে পেয়েই শুভ বলল, “বিভাসকাকুর
সঙ্গে দেখা হল আজ সকালে। সেই রুমালটা এখনও আছে রে!”
“তাই নাকি? ফিরেছে
তাহলে! কোথায় ছিল এতদিন সে কথা বলল কিছু?”
“না, অত
কথা বলার সময় ছিল না আমার। তোর কথা জিজ্ঞেস করছিল।”
“আচ্ছা শুভ, আমাদের
স্কুলে যে অ্যানুয়াল ফাংশন হয়, হেডস্যারকে বলে সেখানে বিভাসকাকুর
ম্যাজিক দেখাবার ব্যবস্থা করলে হয় না? লোকটার কিছু রোজগার হত তাহলে।”
“খুব ভালো
প্রোপোজাল দিয়েছিস। সুমিত স্যারকে বলব প্রথমে। উনি ঠিক হেডস্যারকে রাজি করিয়ে
ফেলবেন।”
সাগর দত্ত
অ্যাকাডেমির বার্ষিক উৎসব আজ। গান, আবৃত্তি, নাটকের
সঙ্গে আছে বিভাস সরখেলের ম্যাজিক শো।
ছেলেরা নানা
রকম মন্তব্য করছে। কেউ বলছে, দারুণ হবে ম্যাজিক শো। আবার কেউ কেউ
বলছে, ধুর, ঢাল
তরোয়াল নেই তার আবার ম্যাজিক! মিল্টন আর শুভ একটু টেনশনে আছে। কে জানে শেষমেশ কী
দাঁড়াবে। ওদের কথাতেই তো বিভাস সরখেলকে ডেকেছে স্কুল!
বিকেল
পাঁচটা। স্কুলের মাঠে ম্যারাপ বেঁধে প্রোগ্রাম চলছে। এবার ম্যাজিক শো। এক ঘন্টা
খেলা দেখাবে বিভাস সরখেল। মাঠ ছেলেপুলেতে ভর্তি। শিক্ষকরাও আছেন। মঞ্চের নিচে এক কোণে
দাঁড়িয়ে আছে শুভ আর মিল্টন।
মঞ্চে ঢুকল
বিভাস সরখেল। সাদা শার্ট আর সাদা প্যান্ট পরা, খালি হাত।
“নমস্কার, গুড
ইভিনিং এভরি ওয়ান! ধন্যবাদ সাগর দত্ত অ্যাকাডেমির হেড মাস্টারমশাই এবং সমস্ত
শিক্ষক মহাশয়দের আমাকে সুযোগ দেবার জন্য। সময় নষ্ট না করে আমি ম্যাজিক শুরু করছি।
“ম্যাজিক
দেখাবার সরঞ্জাম আমার কিছুই নেই কেবল এই রুমালটুকু ছাড়া। এর নাম রুমালি,” বিভাস
সরখেল পকেট থেকে বের করলেন সেই বালি রঙের রুমালটা। শুভ
আর মিল্টন এ ওর দিকে তাকাল, মুখে ফিচেল হাসি।
“আমার
ম্যাজিক কিন্তু ম্যাজিক নয়, এক্কেবারে সত্যি। আর এই রুমালি
কিন্তু জ্যান্ত!
“এই তো
সেদিন বাজারে গেছি। দেখি, খুব তাজা বাটা মাছ। লোভ হল। কিনলাম।
এদিকে মাছওয়ালার প্লাস্টিকের ব্যাগ ফুরিয়ে গেছে। কীসে নেব? পকেটে ছিল
আমার এই রুমালি। একে দিয়েই কাজ সারলাম,” বলে নিমেষে
রুমালকে বানিয়ে দিল থলে। হাততালি পড়ল ভালোই।
“তারপর
একদিন ফুটবল ম্যাচ দেখে ফিরছি, বলা নেই কওয়া নেই, ঝমঝমিয়ে
নামল বৃষ্টি। কাক-ভেজা হবার আগেই উদ্ধার করল এই মহাশয়। মাথার ওপর ধরতেই ছাতা হয়ে
আমাকে বাঁচাল।” বলার সঙ্গে সঙ্গেই হ্যান্ডেল ছাড়াই
ছাতার মতো বিভাস সরখেলের মাথার ওপর স্থির হয়ে গেল রুমালটা।
এরপর কখনও
রসগোল্লা,
কখনও লেখার খাতা, কখনও একতারা তো কখনও খুন্তি হয়ে যেতে লাগল সেই রুমাল।
শুভ
মিল্টনকে বলল,
“গুরু,
কেসটা কী বল তো? এরকম অদ্ভুত ম্যাজিক তো দেখিনি বটেই, গল্পেও
শুনিনি কোনোদিন। স্ট্রিট-ম্যাজিশিয়ানদের কাছেও অন্তত লাঠি, বাটি, গুটি, ঝুড়ি
ইত্যাদি থাকে। এর তো এই রুমাল ছাড়া কিচ্ছুটি নেই শুধু না, কী না কী
বানিয়ে দিচ্ছে রে!”
“যা বলেছিস।
বেশ মিস্টিরিয়াস ব্যাপারস্যাপার। এতদিন কোথায় ছিল জিগ্যেস করব? কী
বলে দেখি... বিভাসকাকু, আপনি এতদিন কোথায় ছিলেন?”
“আরে
মিল্টনবাবু যে! তোমার কথা জিজ্ঞেস করেছি তোমার বন্ধুকে। সব খবর ভালো তো?”
“হ্যাঁ
হ্যাঁ, ভালো।”
“বেশ বেশ। আমি
তো কোথাও যাইনি ভাই, বাড়িতেই তো ছিলাম।”
“বাইরের
দরজায় তো তালা ছিল বিভাসকাকু,” শুভ জিজ্ঞেস করল।
“বাইরে তালা
মানেই কি ভেতরে কেউ নেই! তুমি যে বেঁচে আছ, তার সবটাই
তো ভেতরে। বাইরেটা তো খোলস। হৃদপিণ্ড বল, ফুসফুস বল, মস্তিষ্ক বল...
সবই আন্ডার লক অ্যান্ড কী! তাই না?”
“কিন্তু
কাকু, খাবারদাবার
বা অন্যান্য দরকারি জিনিসপত্র কিনতে তো বাইরে বেরোতে হয়। আপনাকে তো কেউই দেখেনি গত
ছ’মাস।”
“খাবার লাগে
বলেই শুভর বাবা,
মিল্টনের বাবা, কালুদা, রুমাদির কাছ থেকে দশ বিশ টাকা চেয়ে
নিই দরকার মতো। আমি তো নোটে থাকা পলি ভিনাইল অ্যালকোহলটুকু খাই, আর কতটুকুই বা পেট
আমার, ওতেই
দিব্যি ভরে যায়।”
শুভকে
কনুইয়ের এক গুঁতো মারল মিল্টন। কীসব বলছে রে বিভাসকাকু! বাকি দর্শকরাও এক্কেবারে
চুপ। ঠিক ধরতেই পারছে না ম্যাজিশিয়ানবাবু কী বলছে।
“ও বুঝেছি, পলি
ভিনাইল অ্যালকোহল কী সেটা বোঝোনি তোমরা। জিলাটিন নামটা নিশ্চয়ই জানো। তারই পোশাকি
নাম, হে
হে।”
ছেলেরা
কয়েকজন বলে উঠল, জিলাটিন কি মানুষ খায় যে আপনি খান?
এ কথার
সরাসরি উত্তর না দিয়ে বিভাস সরখেল প্রশ্ন করল, “হাইবারনেশন
কাকে বলে জানো তো? শীতঘুম। সাপখোপ, টিকটিকিসহ অনেক প্রাণীই শীতকালে পড়ে
পড়ে ঘুমোয়। এর উলটোটাও আছে। গরমঘুম -- এস্টিভেশন। তোমাদের জানা থাকতে পারে আবার
নাও থাকতে পারে,
সেটা বড়ো কথা নয়। কথা হল, আমি বিগত ছ'মাস সেই
এস্টিভেশনে ছিলাম। পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছিলাম। খুব আরামের ঘুম।”
“বাইরে
তাহলে তালা কে দিল?” শুভ জিজ্ঞেস করে।
“আমিই
দিয়েছি ভাই।”
“মানে? তা
ভেতরে ঢুকলেন কীভাবে?”
“খুব সহজ
তো! আমার রুমালি থাকতে কিছুই অসম্ভব নয়! বাইরে প্রথমে তালা দিলাম। তারপর ছোটো হয়ে
গেলাম।”
মাঠভর্তি
দর্শক দেখল ক্রমশ ছোটো হয়ে যাচ্ছে বিভাস সরখেল। তার কথা তখনও শোনা যাচ্ছে, তবে
আস্তে।
“তারপর
জানলার খড়খড়ির ফাঁক গলে ভেতরে ঢুকে রুমালিকে গায়ে চাপিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।”
বিভাস
সরখেলের হাত পা সব সেঁধিয়ে গেছে পেটের ভেতর। অনেকটা ফুলকপির পোকার মতো হয়ে গেল
শরীরটা। এতটাই ছোটো যে মাঠে বসে থাকা দর্শকরা আর দেখতে পেল না ম্যাজিকবাবুকে। মঞ্চ
বিলকুল ফাঁকা।
শুভ আর
মিল্টন লাফ দিয়ে মঞ্চে উঠে পড়েছিল। স্টেজময় ঘুরে ঘুরে দেখতে গিয়ে চোখে পড়ল মঞ্চের
এক্কেবারে ধারে একটা বালি রঙের গিলগিলে পোকা পড়ে গেল জমিতে।
ওরা
তাড়াতাড়ি নেমে এসে দৌড়ে সেই পাশে গিয়েও দেখতে পেল না কোনও কিচ্ছু।
বিস্তর
আলোচনা হল বিভাস সরখেলের এমনধারা ম্যাজিক নিয়ে। সুমিত স্যার মিল্টন আর শুভকে ডেকে
বললেন, “ভদ্রলোক
খুব আন-ইউজুয়াল ম্যাজিশিয়ান। বায়নার বাকি টাকাটা দিতে তোমাদের সঙ্গে ওনার বাড়ি
যেতে চাই আমি। কবে যাওয়া যায় বোলো। ভেরি ইন্টারেস্টিং ক্যারেকটার!”
“ঠিক আছে
স্যার। উনি আছেন কিনা দেখে নিয়ে ওনার বাড়িতে আমরা নিয়ে যাব আপনাকে।”
শুভ আর
মিল্টনেরও কদর একটু বেড়েছে স্কুলে এমন ম্যাজিশিয়ানের হদিস দেবার জন্য। সুমিত স্যার
বলাতে তাই সেদিনই স্কুল ছুটির পর দু’জনে মিলে চলে যায় বিভাস সরখেলের বাড়িতে।
সেই তালাটাই
ঝুলছে দরজায়। আবার কোথায় গেল রে বাবা! বাড়িটার চারপাশে চক্কর মারে শুভ আর মিল্টন
যদি দ্বিতীয় কোনও দরজার হদিস পাওয়া যায়। কিন্তু নাহ্। মন খারাপ নিয়ে সুমিত স্যারকে
জানায় ওরা যে বিভাসকাকু আবার বেপাত্তা।
এর ঠিক
সাত-আট দিন পরে এক রবিবারে মিল্টন আর শুভ
সিনেমা দেখে ফিরছিল। দুর্দান্ত সাই-ফাই সিনেমা। সে কথা আলোচনা করতে করতে সেবক
সঙ্ঘের পাশ দিয়ে আসার সময় হঠাৎই দেখে ক্লাবের সিঁড়িতে বসে আছে বিভাস সরখেল। দু’জনেই
একটু থতোমতো খেয়ে যায়।
“আরে, বিভাসকাকু, আপনি
এখানে? আমরা
আপনার বাড়ি গেছিলাম।”
“জানি।
তোমাদের স্যার আসতে চেয়েছিলেন আমার সঙ্গে দেখা করতে। সরি ভাই। আমার বাড়িতে কাউকে
বসাবার মতো কিচ্ছু নেই। তাই আমি ব্যাপারটা বুঝতে পেরেই ঘাপটি মেরে ছিলাম।”
“আপনার ঘরে
কিছু নেই তো আপনি বসেন বা শোন কোথায়?”
“আরে আমার
কথা ছাড়ো। বলছি তো আমার কিছু লাগে না। কৌতূহলের বশে উঠে এসেছিলাম এখানে। ফিরে
যাবার ফুয়েলটা পাচ্ছি না। লোকজনের কাছে বেশি টাকা চাইতেও লজ্জা লাগে। কিন্তু
একমাত্র টাকাতেই আমি আমার সুটেবল পলি ভিনাইল অ্যালকোহল পাই। কিছুটা তোমাদের স্কুল
দিয়েছিল,
আর কিছুটা পেলেই হয়ে যায়। কিন্তু কে
দেবে বলো!”
অবাক হয়ে
তাকিয়ে থাকে শুভ আর মিল্টন। প্রচুর বাজে বকে তো বিভাসকাকু!
“কিন্তু
আপনি তো পুরো টাকা নেননি। তাই তো সুমিত স্যার দেখা করতে চেয়েছিলেন আপনার সঙ্গে।”
“তাই নাকি? আরও
কিছু পাব?
এ তো খুব ভালো কথা। তাহলে কাল এখানে আসব পাঁচটার সময়। তোমাদের স্যারকে নিয়ে
এসো, এখানেই
কথা বলে নেব।”
পরদিন স্কুল
ছুটির পর শুভ,
মিল্টন আর সুমিত রায় সেবক সঙ্ঘের মাঠে গিয়ে দাঁড়াল। আগে থেকেই উপস্থিত বিভাস
সরখেল, হাতে
সেই রুমালি।
“আপনি সেদিন
যা খেল দেখালেন তা অত্যাশ্চর্য। কিন্তু বায়নার বাকি টাকাটা না নিয়েই তো চলে এলেন।
আমার একটা কথা খুব জানতে ইচ্ছে করছে। এসব ম্যাজিক আপনি শিখলেন কোত্থেকে?”
“ওই আর কী!
আপনাদের অবাক লাগলেও, আমার কাছে এগুলো কিছুই নয়। মানুষের দোষ কী জানেন? সবাই
আপনারা মাহাকাশ,
অন্য গ্রহ নিয়ে গবেষণায় ব্যস্ত। মাটির গভীরে কী আছে তা নিয়ে অত মাথাব্যথা নেই।
তাই এখনও অজানা থেকে গেছে অনেক রহস্য।”
ঠিক কী বলতে
চাইছে বিভাস সরখেল তা বুঝলেন না সুমিত স্যার। তিনি বাকি টাকাটা দিয়ে দিলেন
বিভাসবাবুর হাতে।
বিভাস সরখেল
ওদের চোখের সামনেই টাকাগুলো সরাসরি মুখে পুরে দিল। ওদের অবাক হবার আগেই সাঁ করে
ছোটো হতে হতে বালি রঙের গিলগিলে পোকা হয়ে মাটি ফুঁড়ে ঢুকে গেল ভেতরে।
আর কোনোদিন
দেখা যায়নি বিভাস সরখেলকে।
_____
ছবিঃ অতনু দেব
No comments:
Post a Comment