গল্প:: নেউলবাঁধির বরপক্ষ - প্রতীক কুমার মুখার্জি


নেউলবাঁধির বরপক্ষ
প্রতীক কুমার মুখার্জি

জুলাই মাসের চাঁদিফাটা রোদে ভাজা ভাজা এক দুপুরে, দুর্গাপুর স্টেশনে এসে দাঁড়াল মা সারদানামের ঝরঝরে মিনিবাসটা হুড়মুড়িয়ে বাস খালি করতে থাকা যাত্রীদের ভিড় ঠেলে, দুহাতে হাবিজাবি মালপত্র নিয়ে প্রায় খাবি খেতে খেতে নেমে এল ওরা দুজন - বিজু আর হীরু ছোট্ট দলটার অঘোষিত মোড়ল’ - বাস থেকে সবার আগে নেমে পড়া রাজা তখন একরাশ বিরক্তি নিয়ে হাতঘড়ি দেখতে ব্যস্ত এই ফাঁকে বলে রাখি, এই ঘটনা উনিশশো আশি সালের কাছাকাছি সময়কার - কাজেই, কেউ যেন আবার মোবাইল ফোনের অভাব নিয়ে কাজিয়া করতে বোসো না!
অস্থিরভাবে বিড়বিড় করে রাজা, “অসহ্য ব্যাপার, সবাই নেমে পড়ল! খোদার খাসি সমুটার নামার নাম নেই!স্বাভাবিক, প্রায় দেড়শো কেজির দৈত্যাকার শরীরটা নামাতে, সমুর একটু বাড়তি সময় তো লাগতেই পারে! রাজার তর সইল না, সে সদ্যভূমিষ্ঠ দুই শাগরেদের দিকে অর্থপূর্ণ দৃষ্টি হেনে সোজা ছুটল কাউন্টারের সামনে জমে থাকা লাইনটা লক্ষ্য করে! দুটো পঁয়তাল্লিশের ডিএমইউ লোকাল স্টেশনে ঢুকতে আর মাত্র বারো মিনিট বাকি!
কাউন্টারের ছোট্ট ফোকরটায় হাত গলিয়ে বিস্তর হাতাহাতির পর, চারজনে যখন হাপরের মতো হাঁপাতে হাঁপাতে ওভারব্রিজ পেরিয়ে সিঁড়ি ধরে নিম্নগামী, তখন তিন নম্বর প্ল্যাটফর্ম থিকথিক করছে মানুষের মাথায়! পাব্লিক এড্রেস সিস্টেমে কর্কশস্বরে, রেল কোম্পানির কেউ খুব কায়দা করে বারো বগির বর্ধমান ডিএমইউ প্যাসেঞ্জার আর কিছু সময়ের মধ্যে তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসছে!বক্তব্যের ত্রিভাষিক তর্জমা করে চলেছে!
নিজেদের পিঠব্যাগ, হাতের খুনখারাপি চেহারার বিগ শপারগুলো, আর প্লাস্টিকমোড়া, আনকোরা লাল সুটকেসটা সামলেসুমলে ওরা সাথে আছে ভগবানমোডে ট্রেনে লোড হলএইসব পরিস্থিতিতে অবশ্য সমুর বডি ল্যাংগোয়েজ’-টা কাজে লাগে বরাবরসে বুলডোজারের মতো রাস্তা ফাঁকা করতে করতে এগোয় (সে গদাইলশকরি চালে এগোতে থাকলে এমনিই সকলে গুটিয়ে গাটিয়ে জায়গা খালি করে দেয়), বাকিরা কৃতজ্ঞচিত্তে পাইলট কারের পিছনে থাকা কনভয়ের বাকি গাড়ির মতো অবলীলায় পিছু নেয়বসার দুরাশা ওরা করেনি, তাই লটবহরগুলো ওপরের বাংকে গুঁজে দিয়ে, দরজা জুড়ে দেহরক্ষা করতে লাগলমাত্র তিনটে স্টেশন তো - রাজবাঁধ, পানাগড়, আর মানকরে তো ওরা নেমেই পড়বে!
ঘামে জবজবে শরীরগুলো ছুটে চলা লোকালের ভিড়ের ফাঁকে, দরজা দিয়ে আসা ঝোড়ো হাওয়ায় একটু জিরোতে থাকুক, ততক্ষণে এদের সম্পর্কে একটু বলে নেওয়া যাকমানে এরা কারা, কোথায় চলেছে এই ভরদুপুরে একগাদা লটবহর কোলেপিঠে করে, কেনই বা মানকরে নামবে, তারপর কোথায় যাবে - এইসব আর কী!
রাজা, বিজু, হীরু, সমু আর তোতন ছোটোবেলার বন্ধু, সম্প্রতি প্রত্যেকে কলেজের গণ্ডি ছাড়িয়ে নিয়মিত রাজা উজির মারতে সদাব্যস্ত! সঙ্গে ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের মাঠে ফুটবল, ক্রিকেটও চুটিয়ে চলেরাজা জন্ম মাতব্বর, তবে দলপতি হবার এলেম রাখেচটজলদি সিদ্ধান্ত নেওয়া, যে কোনো কাজে এগিয়ে সেটা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা তার মজ্জাগতবিজু বইপোকা বিশেষ - ছবি আঁকা, গান, সিনেমা, ক্যারাটে, খেলাধুলো নিয়েই থাকেসিরিয়াস ধরনের মানুষ, এই দলের ভাইস ক্যাপটেমারাত্মক ধরনের ট্যারা হীরু দলের প্রাণভোমরা! সে ওই সাংঘাতিক দূরদৃষ্টিআর বিচিত্র চালচলনের মাধ্যমে, দলের সদস্যদের কমিক রিলিফের গুরুভারটা হইহই করে কাঁধে তুলে রেখেছেসমু রাশভারী - ওজনে, ভোজনে ও চাচলনেবহুবছর ধরে বিমাসংক্রান্ত কাজকর্মে হাত পাকিয়ে, এখন উপার্জনশীলকিন্তু ওই - ওর হাত থেকে একটা মাছিও কখনও ছাড়া পেয়েছে বলে কেউ শোনেনি কখনওঅবশ্য পাঠান স্যুটেড, সাইকেলবাহন সমুকে সকলেই চেনে তার পরোপকারী স্বভাবের জন্যবাকি রইল তোতন - ধড়িবাজ ম্যানেজ মাস্টা, ছিদ্রান্বেষী, মিছরির ছুরি এই ছোকরা ইতিমধ্যেই কলকাতায় একটা সেলসের কাজ জুটিয়ে ফেলেছেআদি বাড়ি শ্রীরামপুরে হওয়ায়, সেখান থেকেই অফিস করেসেও আজ শ্রীরামপুর থেকে ধেয়ে আসছে - গন্তব্য মানকরে নেমে নেউলবাঁধি গ্রাম!
দেখেছ, এত বকবক করছি, কিন্তু তোমাদের পঙ্কজের কথাই বলা হয়নি! আরে, নেউলবাঁধি গ্রামের সুপারস্টার পঙ্কজ রায় - যার গত পরশুই বিয়ে হল ডিসেরগড়ের মেয়ে টূটুলের সঙ্গে! তার আমলা কাকার প্রভাব কাজে লাগিয়ে, যে পঙ্কজ ক্যাজুয়াল স্টাফ হিসেবে কাজ পেয়েছে দুর্গাপুরের ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টে! সেই কাঁটাতার ঘেরা মাঠেই তো এরা সদলবলে ফুটবল, ক্রিকেট পেটায় সকাল বিকেল! পঙ্কজের ত্রিভুবনে কেউ নেই সে যখন এই বেকার ছেলেগুলোর কাছে বিয়ে করার প্ল্যান খোলসা করেছিল, ওরা বন্ধুর আসন্ন বিয়ের আনন্দে নেচে উঠেছিলকিন্তু আদতে কী ঘটতে চলেছে, তা যদি এরা ঘুণাক্ষরেও জানত!
সমুরা ভেবেছিল, কেউ না থাকলেও কী আর এমন, পঙ্কজের নেতাকাকাই একক উদ্যোগে বিয়েটা জমিয়ে দেবেনআদতে দেখা গেল, সে গুড়ে বস্তা বস্তা বালি! সেই কাকা বিবাহকাতর পঙ্কজকে নানা অছিলায় ঠিক মরা মাছির মতোই গা থেকে ঝেড়ে ফেললেন! এবার উপায়? পঙ্কজ তো নাকের জলে চোখের জলে অবস্থায় বিবাগি হবার থ্রেট দিতে লাগল! এমনকি, ‘ছুছাইডকরার হালকা হুমকি দিতে থাকল তার প্রাণের ভাইবন্ধুদের!
অগত্যা রাজা মাঠে নামল! দলের বাকি সবার চোয়াল ঝুলিয়ে, চোখ ছানাবড়া আর মুখ হাঁ করিয়ে দিয়ে সে ঘোষণা করল, “পঙ্কজের বিয়ে হবে! ওর জমানো টাকা দিয়েই হবে! আমরা চাঁদা তুলে ওর সংসারের বেসিক জিনিসপত্র কিনে দেব!ঘোষণার শেষে দেখা গেল, সমু বুকে হাত দিয়ে মাটিতে বসে পড়েছে! এই এক দোষ সমুর, পরোপকারী হলে কী হবে, গায়েগতরে খেটে দিতে রাজি - কিন্তু পয়সাপাতির ব্যাপারে সে বড়োই দুর্বল!
রাজা পরে তাকে বুদ্ধি দিয়েছিল, “মাথামোটা রে, এখন ওর বিয়েটা হতে দে, পরে তো পার্মানেন্ট হবেই, তখন মোটা করে একটা বিমা করিয়ে নিবিখন!ব্যস, সমু টাট্টুঘোড়ার মতো টগবগিয়ে উঠলবিজু ততক্ষণে খাতা নিয়ে বসে পড়েছে, হীরু সম্ভাব্য বাসরের নাচের মক শোকরতে লেগেছে হাত পা ঘুরিয়ে ঘুরিয়েআর পঙ্কজ? সে আনন্দের আতিশয্যে ছুছাইডক্যানসেল করে একবার একে জড়িয়ে ধরে, তো আরেকবার ওকে কোলে তুলে নেয়বিয়ের আনন্দে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে সমুকেই কোলে তুলতে গিয়েছিলশেষে ভুল বুঝে, মাথা-টাথা চুলকে নিজেই সমুর কোলে উঠে পড়ল!
তেএঁটে তোতন শুধু একবার বলেছিল – “দাঁড়া, দেখি অফিস ম্যানেজ করতে পারি কি না তাতে বাকিরা তাকে যেভাবে পেড়ে ফেলেছিল তা বলাই বাহুল্য! নিদান হাঁকা হয়েছিল, “আসবি কি আসবি না তোর প্রাইভেট ব্যাপার! চাঁদাটা না দিলে ওই এক অনুষ্ঠানেই তোর ছবিতে মাল্যদান পর্বটা সেরে ফেলব আমরা!” তোমরাই বলো, এরকম থ্রেট পেলে কোন মানুষটা কলকাতায় বসেও নিশ্চিন্ত থাকতে পারে?
তা, ভাগ্য বটে পঙ্কজের! এই ছেলেগুলোর প্রতিটি বাড়ি থেকেই বাবামায়েদের আশীর্বাদসহ ভালো অংকের বিবাহত্রাণপেয়েছিল সেরাজারাই একটা মিনিবাসের ব্যবস্থা করে, পঙ্কজসুদ্ধ বরযাত্রী হিসেবে ডিসেরগড় পৌঁছে গিয়েছিলবরের জন্য আলাদা গাড়ি করা না হলেও, সন্ধে থেকে সারারাত ধরে বিয়েবাড়ি মাতোয়ারা করে দিয়েছিল ওরা বিয়ে হল, টুটুল আর পঙ্কজ টুলটুলে চোখে একে অপরের দিকে তাকিয়ে-টাকিয়ে থাকল, হীরুর উচ্চগ্রামের নৃত্যগীতে সারা ডিসেরগড় গ্রামের লোকজন বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত হলএমনকি, সমুর মতো মহাখাদকও পেটভরে খেয়ে রীতিমতো ঢেকুর-টেকুর তুলে ফেরার বাসে উঠেছিলমোট কথা, ভালোয় ভালোয় মেয়ের বাড়ির ব্যাপারটা মিটে গিয়েছিল
কিন্তু, আজ ওরা চলেছে গুরুগম্ভীর বরপক্ষ হিসেবে, দায়িত্ব সহকারে পঙ্কজের বিয়ের কোর্স কমপ্লিট করার জন্য জমানো পুঁজি দিয়ে সুটকেস, আর তিন ব্যাগ ভর্তি বেসিক সাংসারিক জিনিসপত্রনিয়ে চড়ে বসেছে ট্রেনেওদিক থেকে আসছে তোতন - কী আর করা, চাকরি চাকরির জায়গায়, বন্ধুরা বন্ধুতে, চাঁদার টাকাটাও যে ওর অম্লশূলের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে! সেই সময়ে মাথাপিছু ছশো টাকার মূল্যটা নেহাত ফেলনা ছিল না!
বর্ধমান প্যাসেঞ্জার মানকরের লাল মোরাম ছড়ানো প্ল্যাটফর্মে ঢুকতেই, ওরা নেমে পড়ল তড়িঘড়িউরিব্বাস, কী গরম রে ভাই!বলে বিজু একছুটে তার ভাগের লাগেজ নিয়ে সোজা শেডের নিচে সেঁধোলবাকিরাও গর্জনতেল মাখা প্রতিমার মতো ঘর্মাক্ত কলেবরে তাকে অনুসরণ করলরাজা ঘড়ি দেখে বলল, “এখন বাজে তিনটে কুড়িতোতনের কথা মতো, এখানে নামতে নামতে পাঁচটা বাজবে ওর এখানেই বসি তাহলে, একসঙ্গে যাবখন!তখনকার দিনে মোবাইলজিনিসটার অস্তিত্ব থাকলে দেখা যেত, সেই মুহূর্তে তাপমাত্রা প্রায় পঁয়তাল্লিশ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই! পাণ্ডববর্জিত প্ল্যাটফর্মে সেই মুহূর্তে তারা ছাড়া মানুষ তো বটেই, একটা কুকুরকেও দেখা যাচ্ছিল না
যখন প্রায় ছটা বাজতে যায়, তোতনের ট্রেন তখনও ঢোকেনি মানকরে রাজা আর বিজু রীতিমতো দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছে - আজ গরিব ছেলেটা গ্রামসুদ্ধ সবাইকে নেমন্তন্ন করেছে স্রেফ ওদের ভরসায়! আর ওরা এখনও নেউলবাঁধি ঢুকতেও পারল না! দশ মিনিট দেখে, ওরা আর অপেক্ষা করা সমীচীন হবে না বুঝে, গোধূলির মরা আলোয় স্টেশন থেকে বেরিয়ে পড়লদু-চারটে ঝড়তিপড়তি ভ্যানরিকশা দাঁড়িয়েছিল বাইরেনেউলবাঁধির কথা শুনে তিনজন ভ্যানওয়ালা বেমালুম উলটোপথে হাঁটা দিলঅনেক ভ্যানতাড়ার পর, ষাট টাকায় রফা হল - আধবুড়ো ভ্যানচালক ওদের নেউলবাঁধি পৌঁছে দিতে রাজি হলভেবে দেখো, তখনকার দিনে ষাট টাকা ভ্যান ভাড়া! ওরাও বুঝল, কিন্তু কোনো উপায় ছিল নাহীরুর মনে পড়ল পঙ্কজের খবরদারি, “ভাই, তোমরা দিনমানে পৌঁছিয়ে যেও নেউলবাঁধি!
শুরু হল দফারফা হওয়ার প্রথম ভাগ! ভ্যানে চাপার দশ মিনিটের মধ্যেই, আলো মরে এসে ঘুটঘুটে অন্ধকার ওদের খামচে ধরল মাঠঘাটের রাস্তার ঝাঁকুনিতে ওদের হাড়গোড় আলাদা হবার দাখিল - মনে হচ্ছিল ঝালমুড়িওয়ালা যেমন সবকিছু মিশিয়ে একটা মোক্ষম ঘাঁটান দেয়, ওদেরকেও সেভাবে ঝাঁকানো হচ্ছে ওদের ব্যাগপত্র, এমনকি, লাল সুটকেসটাও একাধিকবার ভ্যান থেকে ছিটকে পড়লআর তার সঙ্গে ধুলো - যেন মরুঝড় হচ্ছে! বিশ্ব চরাচর থেকে রাজ্যের অন্ধকার যেন গিলতে আসছে! ভ্যাপসা গুমোট গরম, আর জমাট অন্ধকার ফুঁড়ে মাঝেমধ্যে তিন-চারখানা কেরোসিনের কুপি জ্বালা কুঁড়েঘর দেখা দিচ্ছে৷ মাঠের পর মাঠ পেরিয়ে যেতে লাগল ওরা! পাইলটকে জিজ্ঞেস করতে সে বলল, “এই তো সবে মেটুলিতলা পেরুলাম, নেউলবাঁধি অনেক দূর!
বাকিরা মুষড়ে পড়েছে স্বভাবতই, সমু ওই ভয়ংকর দুলুনির মধ্যেই ঢুলতে লেগেছেহীরুর মতো কমেডিয়ানও নিজস্ব স্টাইলে দু-একবার সুর করে, “ওরে কাকা রে, আমাদের কী হবে রে!বলে উঠে চুপসে গেছে বিজু নকল বুঁদির গড়ের মতো বাক্স প্যাঁটরা আগলে বসে, আর রাজা এমনভাবে ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকিয়ে, যেন সেটা ঘড়ি নয়, সেক্সট্যান্ট! প্রায় সোয়া দু-ঘন্টা পর, যখন ওরা নেউলবাঁধি পৌঁছোবার সব আশা ছেড়ে দিয়েছে, তখন দূরের অন্ধকারে দেখা গেল চারটে সবুজ টিউবলাইট খাড়া করা আছে, আর কানে এল আশা ভোঁশলের কাঁপা কাঁপা গলা! ওরা বুঝতে পারল না, সে গলা কাঁপছে, নাকি দু-ঘন্টা ধরে নাকানিচোবানি খাওয়ার পর ওদের শ্রবণশক্তি আহত হয়েছে!
হুই নেউলবাঁধি!পাইলটের আশ্বাসবাণী শুনে ওদের মনে হল লোকটাকে জাপটে ধরে আনন্দে! আর তখনই পিছন থেকে একটা সাইকেল এসে ওদের ওভারটেক করে কাঁচি মেরে দাঁড়াল! সিল্কের পাঞ্জাবি পায়জামা পরা পঙ্কজকুথা ছিলেক তোমরা? এত দেরি দেখে আমি ছাইকেল নিয়ে সেই মজারহাট চইলে গিছলাম!অনেক কিছু বলার থাকলেও, ওরা বৃথা শক্তিক্ষয় না করার সিদ্ধান্তে অটল থাকলনববরের টর্চের আলোতে তাকে তার জিনিসপত্র বুঝিয়ে দিয়ে, এগিয়ে যেতে বলল রাজাসে ব্যাটাও বেমালুম নিজের জিনিসপত্র বুঝে নিয়ে, ভ্যানসমেত বাড়ির দিকে এগোলযাওয়ার আগে অবশ্য অভ্যর্থনা জানাতে ভুলল না, “তুমরা এস কেনে, আমি মুড়ি দিতে বলছি শুনে কার কী প্রতিক্রিয়া হল, তা ওই কালি ঢালা অন্ধকারে কারও বোধগম্য হল না
দুদিকে ধানমাঠ, মাঝখানের চার আল চওড়া মেঠোপথ দিয়ে হাঁটছিল ওরা - সব দেখেশুনে বিয়েবাড়ি আসার শখ আহ্লাদ তখন তলানিতে! পিছন থেকে বেশ কিছুক্ষণ ধরে একটা ঘরঘরে আওয়াজ আসছিল - ক্রমশ এগিয়ে আসছিল একটা আলোএই মুহূর্তে পিছন থেকে, ‘হুররর! হুররর! হ্যাট হ্যাট!’-এর বিজাতীয় আওয়াজে বোঝা গেল ওটা আসলে একটা ট্র্যাকটর - যার একটা হেডলাইট খারাপ! সেটা ওদের ছত্রভঙ্গ করে এগিয়ে গিয়েই ব্রেক কষলমাডগার্ডের উপর থেকে ধর্মেন্দ্রর স্টাইলে লাফিয়ে নামল একটা ছায়ামূর্তিতোতন!
ব্যাটার লাক দেখ!’ মনে মনে গজরায় বিজুস্টেশন থেকে ঠিক একটা ব্যবস্থা করে চলে এসেছে চালিয়াতটা! কিন্তু, এ কী চেহারা হয়েছে তোতনের? এ তো লাল মাটি দিয়ে তৈরি একটা মানুষ মনে হচ্ছে! কুকুরেরা ভেজার পর যেমন করে গা ঝাড়া দেয়, ঠিক সেভাবে গা ঝাড়া দিল তোতনলাল মাটির মিহি ডাস্টে ভরে গেল সবাই! গা, হাত, পা ঝাড়তে ঝাড়তে, থু থু করে মুখে ঢুকে পড়া ধুলোর কুচি ফেলতে ফেলতে, ওরা ঢুকল পঙ্কজের বাড়িতেঅ পঙ্কজ, ইটার পরের স্টেশনটা কি স্বর্গ বটেক?” হীরু ফর্মে ফেরার প্রবল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে
সেভাবে কেউ আদর আপ্যায়ন করল না ওদের, তা করার মতো লোকবল পঙ্কজের নেই - তবে তিন-চারজন হোমরাচোমরার সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিল সেনেউলবাঁধিতে মাত্র পঁচিশ ঘর মানুষের বাস - তাই গ্রামবাসীরা সকলে মিলে অনাথ ছেলেটার বিয়ের অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছেদুজন মহিলা এসে ওদের একটা মাটির কুঁড়েঘর দেখিয়ে দিল, সঙ্গে লাগোয়া একটা ছোট্ট কুয়ো বলা হল স্নান-টান করে পান্ডেলেচলে আসতে - টিফিন দেওয়া হবে!
সারাদিনের ধুলোবালি, গরমের হলকা আর ভ্যানের ঠেলায় ভারাক্রান্ত ছেলেগুলো বালতির পর বালতি ঠান্ডা জল তুলে ঝপাঝপ স্নান-টান করে, কুপির আলোয় যতদূর সম্ভব সাজগোজ করে নিলযখন ভারিক্কি চালে গিয়েপান্ডেলেদাঁড়াল দলটা, ততক্ষণে বারোজন খেয়েদেয়ে আঁচাতে লেগেছে! রাজা গম্ভীরমুখে শুধু একবার পঙ্কজকে জিজ্ঞেস করল, তাদের আনা জিনিসগুলো ঠিকঠাক রাখা হয়েছে কিনা বরপক্ষের ইনিংস ডিফিট ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে - দায়িত্ব নিয়ে করার মতো কোনো কর্তব্যের দায় তাদের আর নেই, সেটা দিনের আলোর চেয়েও পরিষ্কারটিউবের ক্যাটকেটে আলোয় দেখা গেল, কলাই করা বাটি বোঝাই করে ইয়া ইয়া সাইজের ফুলুরি আর মুড়িমাখা আসছে তাদের জন্য - টিফিন! সঙ্গে লেবু চা! খিদের মুখে আধবাটি করে মুড়ি উড়ে গেল সবারই, বাকিটা কেয়ার অফ সমু!
রাত সাড়ে দশটায় গ্রামের প্রায় চল্লিশজন নেমন্তন্ন খেয়ে ফিরে যেতে, বাড়ি ফাঁকা হলপঙ্কজ হাসিমুখে দাঁড়িয়ে পড়ল সামনে, “এক কাণ্ড হইছে! মাংস শেষ হই গেছে! তোমাদের যে কী দিয়ে খেতি দিই গ!সমু দাঁত কিড়মিড়িয়ে কিছু বলার আগে হীরু মেকআপ দিল, “যা আছে তাই দেবে - লজ্জা কি সোনা! তাই দিয়েই দাও - আমরা বরপক্ষ বটেক!
আধঘন্টা পরে খাবারের ডাক পড়লকাগজের থালায় মোটা লাল চালের ভাতের ঢিপি আর সিড়িঙ্গে চেহারার একটা করে বেগুনভাজা, সঙ্গে বিটনুন, লংকা আর বোমা সাইজের পেঁয়াজডালের গামলা নিয়ে একজন দাঁড়িয়ে পড়ল পাশেআয়োজন কম না - বাঁধাকপির লাবড়া, আর ব্লেড দিয়ে সাইজ করা মাছের টুকরো - গোনাগুনতি পাঁচ পিস একেবারে যাচাই করে খাওয়া! যতবার চাই খাওপরিবেশনের ত্রুটি নেই - পাত খালি হবার আগেই ডালের জলপ্রপাত আর বাঁধাকপির মলমের বর্ষণ হচ্ছে পাতেতোতন, হীরু, বিজু আর রাজা তো অনেকক্ষণ আগেই রণে ভঙ্গ দিয়েছে - একা লড়ছিল সমুএকটা সময় সে খেয়াল করল, সবাই তার দিকে অপলকে তাকিয়ে! গম্ভীরমুখে সে বলল, “আরে, কী আশ্চর্য! খোলটা ভরাতে হবে তো!ঠোঁটকাটা হীরু বলল, “অ পঙ্কজ, ব্যবস্থা তো সুপারহিট, তা অতগুলো টাকা কী করলে চাঁদ? একটা মিষ্টিও জুটবে না আমাদের মুকে?”
মাথা চুলকে একশা করে ফেলে পঙ্কজ বলে, “সব ছেল, বালুসাই, দানাদার - সব! গেরামের মানুষ পেটপুর করে খেইয়ে আশীর্বাদ কইরতে কইরতে বাড়ি গেলেক! দই ছেল, সেটাও ভাপে গন্ধ ছাড়ি গিছে! মুড়ি দিয়ে মেকে খেলে গন্ধ টের পাবেক নাইখাবা?” সবার মুখ তখন একে একে রাজার দিকে ঘুরতে, দেখা গেল সে একমনে ঘড়িতে দম দিচ্ছে! আর কী, মনের রাগ মনে পুষে সবাই উঠে পড়ল! পঙ্কজ দাঁতগুলো ছড়িয়ে দিয়ে, “কাইল ভোরবেলা যাবার সময় আমারে ডেইকে দিয়ে যেওখন!বলে উত্তরের অপেক্ষা না করে সোজা তার ঘরের দরজায় আগল দিল!
বরকর্তার দল সেদিন মনুষ্যচরিত্র সম্পর্কে একটা ধ্রুব সত্য উপলব্ধি করল, যেটা কিশোরকুমার আগেই বলে গেছেন গানের মাধ্যমে, ‘জড়িয়ে ধরেছি যারে, সে আমার নয়...!’ ওই মানুষমারা বস্তাপচা গরমে কুঁড়ের ভিতরে শোওয়া অসম্ভব, তাই ওরা মেঝেতে পাতা শতরঞ্চি দুটো এনে বাইরে পেতে খোলা আকাশের নিচে শুয়ে বিলাপ করতে থাকে!
সমু বলল, “ও করবে বিমা? বিমা কোম্পানি উঠে যাবে রে! কড়কড়ে ছশোটা টাকা যে খরচ করলাম, সেটা কী করে মেকআপ করব? না খেয়ে ভরপাই করতে হবে আমাকেআর কোথাও আমায় ডাকিস না - আসব না, বলে দিলাম!
তোতন জোর গলায় বলে, “আরও বাড়াবাড়ি কর - এই পাঁঠাটার জন্য একগাদা খরচ করে, অফিস ম্যানেজ করে আসা! বেশ হয়েছেএই শিক্ষাটার দরকার ছিলপাড়ার মাথাচুপ কেন রে বাপ?”
হীরু বলে, “ছুঁচোবাজি থাকলে উল্লুকটার ঘরে ছেড়ে দিয়ে আসতাম! আমলার ভাইপো বটে - জীবনটা কালি করে দিল হতভাগা! সুটকেসটা কোথায় রেখেছে বল তো? নিয়ে ভাগব কাল ভোরে!
বিজু বলল, “হিসেবের খাতাটা কী করব? বলছি, ওকে ডেকে হিসেবটা চাইলে হয় না? ডাকব কি পঙ্কজকে?”
রাজা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে, “যা হবার হয়েছে, বুঝতেই তো পারছিসদয়া করে বাড়িতে বলিস না কেউ! এর শোধ আমি তুলবই! ঘুমোবার চেষ্টা কর, ভোর চারটেয় বেরোব!”
সারারাত ধরে গরমে সিদ্ধ হতে হতে, ফড়িং সাইজের মশার গেরিলা আক্রমণে ছটফট করতে করতে রাতটুকু কাটল! সাড়ে তিনটে বাজতেই রাজা তড়াক করে উঠে বসেই চমকে উঠল! বাকিরা ব্যাগ পিঠে নিয়ে বসে রোয়িং ক্লাবের লোকেদের মতো দুহাত চালাতে ব্যস্ত সকলের মুখ ফুলে ঢোল, হাত পা ডুমো ডুমো হয়ে ফুলে উঠেছে! কথা না বাড়িয়ে দুমিনিটে রেডি হয়ে, পঙ্কজের বাড়ির চৌহদ্দি পার করল বরপক্ষের পাঁচ অভ্যাগত!
বেরোবার আগে, রাজা নিঃশব্দে পঙ্কজের ঘরের দরজার শিকলটা বাইরে থেকে আটকে দিয়ে এল! বিয়ের আনন্দে সিল্কের পাঞ্জাবিটা প্যান্ডেলের বেড়ায় ঝুলিয়ে রেখে তুলতে ভুলে গিয়েছিল পঙ্কজ - হীরু স্যাট করে ওটা বগলদাবা করে ফেললসমু বাড়ির সামনের দরমার বেড়াটা অবলীলায় উপড়ে নিয়ে উলটোদিকের মাঠে ফেলে দিল নিঃশব্দে! তোতন একটা গাছের ডাল জোগাড় করে পঙ্কজ ও তার কনেবউয়ের চটিজোড়া টুকুস করে তুলে নিয়ে কুয়োতে ফেলে এল! বিজু সুটকেসটা হাতাবার তালে ছিল, কিন্তু সেটা খুঁজে না পেয়ে সেরকম দাগ কাটতে পারল না! তারপর, গতকালের অদেখা রাস্তা ধরে পাঁচমূর্তি নিমেষে অন্ধকারে মিশে গেল!
হাঁটতে হাঁটতে বেশ খানিকটা সময় পেরিয়ে গেছে - অনেক দূরে চলে এসেছে ওরা, হঠাৎ দেখা গেল আকাশের রংটা ফিকে হয়ে আসছেনেউলবাঁধির আওতা ছাড়াবার পর বার বার পিছনে তাকিয়ে দেখছিল ওরা! সমু সাইকেলে মাইলের পর মাইল যেতে পারে, কিন্তু বেচারার এতটা হাঁটার অভ্যাস নেই! সে পিছু পিছু আসছে কিনা দেখার জন্য ওই ব্যবস্থাতখনই বিজু প্রথম খেয়াল করল ব্যাপারটা!
সামনে দিগন্তবিস্তৃত মাঠ দেখা যাচ্ছে, দিনের আলো ক্রমশ ছড়িয়ে পড়তে, চারদিকে সবুজে সবুজ হয়ে উঠছে ঘড়িতে প্রায় সোয়া পাঁচটা, সামনের আকাশ রীতিমতো ফরসা হয়ে এলেও, পিছনের আকাশে তখনও গভীর রাতের অন্ধকার! দাঁড়িয়ে পড়ে সেটা নিয়ে আলোচনা সবে শুরু হয়েছে, সেই সুযোগে সমুও কিছুটা এগিয়ে এসেছে - এমন সময় ঝড়টা উঠল!
সে যে কী প্রচণ্ড অমানুষিক ঝড় তা বলে বোঝানো যাবে না - চারদিক সাদা করে প্রচণ্ড বিদ্যুৎ-এর সঙ্গে কানফাটানো বজ্রনির্ঘোষ - আর ফাঁকা মাঠে গোরুবাছুর উড়িয়ে নেওয়া এলোপাথাড়ি হাওয়া! বিশাল সাইজের বৃষ্টির ফোঁটা ওদের শরীরে কেটে বসছে!
উপায় না দেখে বিজু চিৎকার করে উঠল, “প্রাণ নিয়ে ফিরতে চাইলে সবাই শুয়ে পড়! হ্যাঁ, যে যেখানে আছিস শুয়ে পড় এখুনি!সবাই তার কথা মেনে নিয়ে পাক্কা চল্লিশ মিনিট ধরে সেই দুর্যোগের তাণ্ডব মাথা পেতে নিল বিধ্বস্ত অবস্থায় যখন আবার ওরা দুপায়ে দাঁড়িয়ে উঠেছে, তখন ঝড়ের তাণ্ডব কমলেও মুষলধারে বৃষ্টি পড়ে চলেছে!
বাড়ি ফেরার মরিয়া চেষ্টায় ওরা প্রাণপণে আবার হাঁটতে শুরু করে কাদামাখা মেঠো রাস্তা ধরে! ওরা শহুরে ছেলেপিলে, খোলা মাঠে এরকম ঝড়ের মুখে জীবনে পড়েনিপঙ্কজের বিয়ে, বরপক্ষ - এসব ভাবার ঊর্ধ্বে চলে গেছে ওরা, মনে ভিড় করে এসেছে নিরাপদে বাড়ি ফেরার দুশ্চিন্তা!
আরও আধঘন্টা হাঁটার পরে, চোখে পড়ে তিন-চারটে কুঁড়েঘর! ওরা আর পারছিল না - তাই মরিয়া হয়ে সেদিকেই যাওয়া স্থির হল, অন্তত স্টেশনের রাস্তাটার হদিস পাওয়ার জন্যঝড়ের দৌরাত্ম্যে, জায়গাটার উপর দিয়ে যেন একটা রোলার চলে গেছে - গাছপালা লন্ডভন্ড! বাড়ির খড়ের চাল উড়ে গিয়েছে, কোথাও মাটির দেয়াল পড়ে গেছে দু-তিনজন মহিলা বুক চাপড়ে কাঁদছে! একবারে যা তা অবস্থা! একটা বাড়ির সামনে কয়েকটা বাঁশ দাঁত ছিরকুটে পড়ে আছে, দুটো তিনটে গাছ ঢলে পড়েছে কুঁড়েঘরের উপরওদের দিকে পিছন করে বসে কয়েকজন মানুষ অসহায়ভাবে মাথা চাপড়াচ্ছে

বিজু বলল, “হ্যাঁ রে, এই এলাকায় লক্ষ করেছিস একটা জিনিস? চারিদিকে তেপান্তরের মাঠ আর সেই মাঠের এদিকে ওদিকে মাঝেমধ্যে তিন-চারখানা করে বাড়ি! বাড়িঘরের প্যাটার্ন একই ধরনের প্রায়! জায়গাটার একটা আলাদা ক্যারেকটার আছে কিন্তু!”
হীরু বলে, “তোর ক্যারেকটারের নিকুচি করেছে! বাড়ি ফিরবি কী করে ভাব রে মড়া!
রাজা এতক্ষণ পরে একটা কথা বলল, “ওই ফেরেববাজটার পিছনে অতগুলো টাকা আর সময় জলাঞ্জলি না দিয়ে যদি এই মানুষগুলোকে দিতাম, কাজের কাজ হত একটা!
হঠাৎ করে, সামনে উবু হয়ে বসে থাকা গামছা পরা একটা লোক, মাথা থেকে হাত নামিয়ে, কান্না থামিয়ে, মাথা ঘুরিয়ে ওদের দিকে তাকাল!
ধপ ধপ করে দুটো ভারী শব্দ হল - শেষেরটা ভয়ানক জোরে - হীরু আর সমু থেবড়ে মাটিতে বসে পড়েছে! তাদের ডুকরে কেঁদে ওঠার কিম্ভূত আওয়াজে লোকগুলো নিজেদের শোক ভুলে ওদের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে!
প্রায় চার ঘন্টা অমানুষিক হাঁটাহাঁটির পর, ওই ঝড় ঠেলে প্রাণ বাঁচিয়ে আসার পর - ওরা ঘু্রেফিরে সেই নেউলবাঁধিতেই এসে পড়েছে! আর ঢুকবি তো ঢোক - খোদ পঙ্কজের বাড়িতেই!
হীরু ফোঁপাতে ফোঁপাতে সিল্কের পাঞ্জবিটা পঙ্কজের দিকে বাড়িয়ে ধরল!
কমিক রিলিফএখন যে ট্র্যাজিক বিলিফ!
----------
এই গল্পের চিন্তাধারা সম্পূর্ণ কল্পনাপ্রসূত। কোনো জীবিত অথবা মৃত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কোনোরূপ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যদি এই গল্পের কোনো ঘটনার মিল থেকে থাকে, তা সম্পূর্ণ কাকতালীয় ও অনিচ্ছাকৃত।
----------
ছবি - নচিকেতা মাহাত

No comments:

Post a Comment