বায়না
শ্যামাচরণ কর্মকার
দাও না কিনে হারমোনিয়াম শিখব আমি গান
ছোট্টবেলা থেকেই আমার গানের দিকেই
টান।
বাবা তবু হারমোনিয়াম দেয়নি আমায় কিনে
বলত শুনে, গান শিখবি? গলা তো
দেখছি নে?
অনেক কেঁদেকেটেও আমার হয়নি তো গান
শেখা
গান হবে না আছে এটাই কপালেতে লেখা?
গাইতে গাইতে গাইয়ে হব, হবে অনেক
নাম
দাও না বাবা হারমোনিয়াম কতই বা আর
দাম।
বলা-ই বৃথা দেয়নি কিনে দিলাম ছেড়ে
হাল
ভাবলাম, ঠিক আসবে
সুযোগ আজ নয়তো কাল।
সুযোগ এল বিয়ের পরে, বায়না ধরি
আমি
স্কেলচেঞ্জার হারমোনিয়াম আনল কিনে
স্বামী।
স্বামী আমার মস্ত গায়ক বসায় আমায়
গানে
গান শোনে আর পালাতে চায়, আঙুল গোঁজে
কানে।
বলে, এ কী? থামো থামো, হচ্ছে না তো সুর
কান-ফাটানো চিৎকারে কি গান-টান হয়,
ধুর?
যেমনি গলা তেমনি আওয়াজ শাঁকচুন্নি
যেন
এখন বুঝি, বাবা তোমায়
গান শেখাননি কেন?
কান কড়কড়, বুক ধড়ফড়, উঠছে কেঁপে
বাড়ি
রাগ কোরো না শোনো গিন্নি, গানেতে দাও
দাঁড়ি।
বলছটা কী! গাইব না গান? গান ছাড়া
যায় চলা?
এতই খারাপ আর বেসুরো আমার গানের গলা?
শুনলে বুঝি বাঘ পালাবে? আসবে না সেও
কাছে?
আমার মতো গাইয়ে হলে বাঘের থেকে বাঁচে?
ঠিক বলছ? তাহলে যার
বাঘের দেশে বাড়ি
আমার কাছে এলে তাদের গান শেখাতে
পারি।
নিয়ম করে গান শেখাব, সুর শেখাব
খেটে
গান শিখে যাও কেউ যাবে না আর তো
বাঘের পেটে।
গায়ক স্বামী শুনে অবাক, চোখ কপালে
তার
গান শোনে আর কান চাপা দেয় রাগে
বারংবার!
----------
ছবি - শ্রেয়া সেন
No comments:
Post a Comment