আয়নায় এ কার মুখ?
অভিজ্ঞান রায়চৌধুরী
“আজকের সন্ধেটা সত্যি ভূতের গল্পের জন্য আদর্শ।”
একটু আনমনে অনিলিখাদি ফের বলে উঠল, “এই যে অঝোরধারে
বৃষ্টি পড়ছে, বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থাকা অস্পষ্ট ল্যাম্পপোস্টের আলো ভিজে গায়ে হাওয়ায় কাঁপছে
- এটাই হল ভূতেদের খুব প্রিয় পরিবেশ। রাতের শহর যেন হঠাৎ করে কার মন্ত্রে ঘুমিয়ে
পড়েছে। এদিক ওদিক যেদিক তাকাবি, দেখবি শুধু ছায়ার রাজত্ব। হাঁটু অবধি
জলে রাস্তা পথ হারিয়েছে, কিন্তু তেঁনাদের পথে বেরোনোর সুযোগ করে দিয়েছে।”
দেড় ঘণ্টা আগে অনিলিখাদি এসেছে। এক ঠোঙ্গা সিঙ্গাড়া
নিয়ে। তারপরেই জোর ঝড় আর বৃষ্টি। ইংরাজিতে যাকে বলে ‘ক্যাটস অ্যান্ড ডগস’ - সেই
সেরকম বৃষ্টি। আমাদের হই-হট্টগোলও যেন বৃষ্টির শব্দে মাঝে মধ্যে কোণঠাসা
হয়ে পড়ছিল। অনিলিখাদি আমাদের আড্ডায় যোগ না দিয়ে ‘দ্য ইকনমিস্ট’ নিয়ে এককোণে বসে
পড়ছিল। মাঝে মধ্যে জানলা দিয়ে উদাস চোখে বাইরের দিকে তাকাচ্ছিল। আর আমাদের কোনো
প্রশ্নের উত্তরে সব থেকে কম অক্ষরের কিছু শব্দ ব্যবহার করে আবার ম্যাগাজিন পড়তে
শুরু করছিল।
হাতের আংটি মাঝে মধ্যে খোলাপরা করছিল। আমরা
ভাবছিলাম আজ নিশ্চয়ই কাজ নিয়ে কোনো টেনশনে আছে। জিজ্ঞেস করলে বড়োজোর ভারতের অর্থনীতির
অবস্থা নিয়ে কিছু বলতে শুরু করবে, অথবা স্পেস সায়েন্স নিয়ে কিছু। সেখান থেকে একেবারে ভূতে!
এ তো মেঘ না চাইতেই জল। অনিলিখাদি তার মানে কিছু
একটা এ ব্যাপারে বলতে চায়। বলার মুডে আছে।
“তুমিই একটা ভূতের গল্প বলো না। সত্যি যেরকম বাইরে
বৃষ্টি হচ্ছে, বৃষ্টি না থামলে তুমি বেরোতেও পারবে না।” সহেলী বলে উঠল।
আমরাও সহেলীর সমর্থনে সবাই একসঙ্গে বলে উঠলাম, “গল্প
চাই। গল্প।”
অনিলিখাদি হাতে ধরা ‘ইকনমিস্ট’-টা সরিয়ে রেখে ঠিক
এক মিনিট বাদে বলে উঠল, “আসলে এই ম্যাগাজিনে সিরিয়াল কিলারদের নিয়ে একটা আর্টিকেল
বেরিয়েছে, সেটা পড়ার পর একটা ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল। ভূতের কথা বলছি, তবে ঠিক গল্প
না। অভিজ্ঞতাও বলতে পারিস।”
“মানে? ভূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ?” রাজর্ষি বলে উঠল, “এসব
কথা এতদিন না বলে কী করে থাকতে পারো তুমি?” একটু অভিমানী স্বরে বলে উঠল রাজর্ষি।
অনিলিখাদি কোনো ভূমিকা ছাড়াই বলতে শুরু করল, “ইংল্যান্ডের
‘কটসওয়ালডের’ নাম শুনেছিস?”
আমাদের নীরবতা দেখে অনিলিখাদি বলে উঠল ---
দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ডের বেশ বড়ো একটা জায়গা জুড়ে
কটসওয়ালডের পর্বতশ্রেণীকে কেন্দ্র করে এই এলাকা। ভারী সুন্দর কিছু গ্রাম আছে এ
এলাকায়। ‘এরিয়া অফ আউটস্ট্যান্ডিং ন্যাচারাল বিউটি’-র মর্যাদা দেওয়া হয় এ এলাকাকে। আমি যে গ্রামের কথা বলছি
তার নাম ‘ক্যাসল কমবে’। ইংল্যান্ডের সব থেকে সুন্দর গ্রামগুলোর মধ্যে এটা একটা। দ্বাদশ
শতাব্দীতে এখানে একটা ক্যাসল ছিল। তার নামেই এই গ্রামের নাম।
গ্রামের ঠিক মাঝখানে যেখানে তিনটে প্রধান রাস্তা এক
জায়গায় মিশেছে, সেখানে আগে মার্কেট বসত। এখনও তার সামান্য ধ্বংসাবশেষ গ্রামের কেন্দ্রে
সংরক্ষিত আছে। তার পাশেই এখানকার প্রধান চার্চ। এখানে একসময় উলের ব্যাবসার খুব রমরমা
ছিল। এখন অবশ্য সে সব নেই। তবে পাথরের রাস্তায়, দু’পাশের পাথরের বাড়িতে যেন সময়
থমকে দাঁড়িয়ে আছে। এখানে আছে বলতে একটা খুব পুরোনো চার্চ, একটা পুরোনো পোস্ট অফিস,
একটা পাব, পাথরের রাস্তার দু’ধারে সারি দেওয়া পাথরের বাড়ি আর থেমে থাকা সময়। এদিক
ওদিক তাকালেই মনে হবে সময়ের কাঁটা হাজার বছর পিছিয়ে গেছে।
তা ক্যাসল কমবের ওই সেন্টার থেকে সামান্য দূরে একটা
রিডিং ক্লাবে আমার আলাপ হয়েছিল ফাদার ফেড্রিকের সঙ্গে। আলাপটা হয়েছিল বেশ
নাটকীয়ভাবেই।
শনিবার। ছুটির দিন।
গ্রামের একটা বাড়িতে এই রিডিং ক্লাবটা ছিল। বাড়ির কয়েকটা ঘর আর বড়ো
ড্রইংরুম ও সামনের বাগান জুড়ে বই পড়ার জায়গা। বাড়ির মালিক তার বিশাল লাইব্রেরি
খুলে দেন সব পাঠকের জন্য। একই সঙ্গে অপেক্ষাকৃত কম দামে চা–কফির ব্যবস্থা থাকে।
চা-কফি–বই পড়া এসবের আড়ালে আসল উদ্দেশ্য হল গ্রামের সবার মধ্যে যোগাযোগ বজায় রাখা।
সেদিন আমি বাড়ির একটা ছোটো ঘরের একটা কোণে বসে
ভূতের বই পড়ছি, হঠাৎ দেখলাম একই টেবিলে আমার উলটো দিকে একজন বছর ষাটের মানুষ এসে
বসেছেন। পাদ্রির পোষাক পরা।
কাঁচাপাকা চাপদাড়ি। মাথায় কম চুল। চোখে একটা পুরোনো
ফ্রেমের চশমা। একসময় দেখতে নিশ্চয়ই খুব সুন্দর ছিলেন। কিন্তু কীরকম যেন একটা
হিংস্রতা মিশে আছে চোখের চাহনিতে।
উনি নিজের পরিচয় দিয়ে বললেন, “এখানে একটা খুব পুরোনো
চার্চ আছে জানো তো! সেন্ট অ্যান্ড্রিউজ চার্চ। বারোশো সাল নাগাদ তৈরি হয়। আমি
সেখানে পাদ্রির কাজ করি। তুমি কি এখানে নতুন?”
“হ্যাঁ, নতুন। কর্মসূত্রে এসেছি। ব্রিস্টলে
না থেকে এখানে থাকছি। কয়েক সপ্তাহ থাকব।”
“তোমার হাতের বইটা দেখছিলাম। তুমি কি ভূতে বিশ্বাস
করো?”
“করি না। তবে ভূতের গল্প পড়তে বেশ ভালো লাগে। বিশেষ করে ভয়ের ভূতের
গল্প। কেন জানি না আজকাল খুব কম ভূতের গল্পে সেই ভয়ের রেশ পাই। হয়তো এটা আমারই
দোষ। ভয় কীভাবে পেতে হয় তাই আমি জানি না।”
“আমি কিন্তু তোমাকে একটা ভূতের গল্প শোনাতে পারি,
যা শুনে তুমি সত্যি খুব ভয় পাবে। চ্যালেঞ্জ?”
“চ্যালেঞ্জ অ্যাকসেপ্টেড। আপনি
শোনান।”
“উঁহু। এখন না। ভূতের গল্প
শোনার জন্য ঠিক পরিবেশ দরকার। তোমাকে তার জন্য আমার বাড়িতে যেতে হবে। সূর্যাস্তের
জন্যও অপেক্ষা করতে হবে। এখান থেকে মিনিট দশেকের পথ। আমি এখানেই আছি। এক ঘণ্টা
বাদে নিয়ে যাব। যদি অবশ্য তোমার সময় থাকে।”
“না, আজ সন্ধেতে কোনো
ব্যস্ততা নেই। এটা সত্যি, আরেকটু অন্ধকার না হলে ভূতের গল্প জমে না।”
ভদ্রলোক ঠিক এক ঘণ্টা বাদে
আবার আমার টেবিলে ফিরে এলেন। আমি প্রস্তুত ছিলাম। হাতের বইটা লাইব্রেরিতে ফেরত
দিয়ে বেরিয়ে এলাম ওনার সঙ্গে।
নভেম্বর মাস। বেশ ভালোরকম শীত
পড়তে শুরু করেছে। খানিক আগে সাড়ে চারটে নাগাদ সূর্যাস্ত হয়ে গেছে। চারদিক অন্ধকার
হয়ে গেলেও ক্যাসল কমবের রাস্তার সব ক’টা ষড়ভূজ আলো এখনও জ্বলে ওঠেনি। কিছু কিছু জায়গা জুড়ে গভীর কুয়াশা।
যে ক’টা আলো জ্বলে উঠেছে, তাদের দেখে মনে হচ্ছে যেন কুয়াশার মধ্যে চাঁদ ভাসছে। রাস্তায়
লোক একেবারেই নেই। ফেড্রিকের বাড়ি মিনিট দশেক হাঁটার পরেই পৌঁছে গেলাম। রাস্তা থেকে পাথরের সিঁড়ি দিয়ে বেশ
খানিকটা নিচে নেমে আসতে হয়। বড়ো বাগান পেরিয়ে একটা খুব পুরোনো দিনের পাথরের বাড়িতে
ঢুকলাম।
ফেড্রিক বলে উঠলেন, “এটা
বারোশো সাল নাগাদ তৈরি। চার্চের
পাদ্রিদের জন্যই তৈরি হয়েছিল।”
আমাকে নিয়ে উনি ওনার ড্রয়িংরুমে
এনে বসালেন।
মাঝারি সাইজের ড্রয়িং রুম।
পাথরের দেয়াল। দেয়াল সমতল নয়। এবড়ো খেবড়ো। মনে হচ্ছে বিভিন্ন সাইজের পাথর সাজিয়ে
তার উপর যেন মাটির প্রলেপ লাগানো হয়েছে। ঘরের মাঝামাঝি একটা ছোটো গোল টেবিল। তাকে
ঘিরে তিনটে কাঠের চেয়ার।
ঘরের একদিকে দেয়ালের মধ্যে
একটা বেশ বড়ো ফায়ারপ্লেস। তার উলটোদিকে একটা পুরোনো সোফা। ঘরের অন্যদিকে কাচের
দরজা। তার খানিকটা খোলা যায়। তার বাইরে বাগান ও তারপরে জঙ্গল।
ওদিকে আঙুল তুলে ফাদার
ফেড্রিক বলে উঠলেন, “জঙ্গলের পাশ দিয়েই কিন্তু একটা ছোটো নদী গেছে। তুমি সোফায় বসো। আমি ফায়ার প্লেসটা জ্বালাই। কফি চলবে তো?”
আমি সায় দিতে চেরি গাছের কাঠের
টুকরো দিয়ে ফায়ার প্লেস জ্বালিয়ে দিলেন ফেড্রিক। সত্যি ঠাণ্ডা লাগছিল। কীরকম যেন অস্বাভাবিক
রকম স্যাঁতস্যাঁতে ভেতরটা। ঘরের বাইরে কাচের দরজার ওপারে ইতিমধ্যেই ঘন অন্ধকার
নেমে এসেছে।
ফায়ার প্লেস জ্বালিয়ে দরজা
সামান্য খুলে দিলেন ফেড্রিক। আর খুলতেই অদ্ভুতভাবে বাইরের কুয়াশা ঘরে ঢুকে এল।
ঘরে অন্য কোনো আলো নেই। যেটুকু
আলো সেটা ওই ফায়ার প্লেসের আগুন থেকে। উনি এসে টেবিলে একটা মোমবাতি রেখে জ্বালিয়ে
দিলেন।
সোফার উপরে একটা জায়গায় এক
ঝাঁক পোকা উড়ে বেড়াচ্ছে। পাশের রান্নাঘরে ফেড্রিক কফি করতে করতে বলে উঠলেন, “চিনি
কতটা লাগবে?”
“দিতে হবে না। আমি চিনি
খাই না। সাহায্য করব?”
“একদম না। তুমি হলে গেস্ট।”
খানিক বাদে দু’কাপ কফি
হাতে নিয়ে টেবিলে এসে বসলেন ফেড্রিক।
ঘরের বাইরের জমাট অন্ধকারে,
ঘরের মধ্যে ছড়িয়ে থাকা কুয়াশায়, ফায়ার প্লেসের চাপা আগুনের হাতছানিতে, মোমবাতির
কম্পমান আলোর স্পর্শে একটা অদ্ভুত ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
ফেড্রিক এবারে বলে উঠলেন, “ভূতের
গল্পের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ লাগে। বলো এর থেকে ভালো পরিবেশ পাবে কোনোদিন? বিশেষ
করে এমন একজন যদি ভূতের গল্প বলে যাকে তুমি একদমই চেনো না। কী, ঠিক বলছি তো?”
“তা ঠিক। বাড়িটারও বিশেষ
মাহাত্ম্য আছে। ভেতরে ঢুকলেই কীরকম যেন গা ছমছম করে। মনে হয় পাঁচশো বছর পিছিয়ে
গেছি।”
“হ্যাঁ, এখানে এজন্য রুমহিটারের
ব্যবস্থাও নেই। ঠিক যেরকম ছিল আগে সেরকম ভাবেই রাখা আছে। এজন্যই ভেতরটা একটু স্যাঁতস্যাঁতে
লাগে। কত বিদেহী আত্মা যে এত বছরে এখানে এসে জড়ো হয়েছে কে জানে! তা এবার গল্প শুরু
করি।”
বলে ফেড্রিক ফায়ারপ্লেসের
থেকে ছাই সরিয়ে আগুনটা একটু বাড়িয়ে দিয়ে ফিরে এসে আবার শুরু করলেন, “আমি সারা
ইংল্যান্ডে একসময় ঘুরে বেড়িয়েছি। তবে আমার জন্ম এখানেই। তাই এখানেই শেষে ফিরে আসি।
তারপরে একটা সময়, এই বছর তিনেক আগে এই চার্চে পাদ্রির কাজ শুরু করি। সে সময়ে একটা
ঘটনা ঘটে।
“আমাদের ‘আইজাহা 58’-এ
লেখা আছে – ‘তোমার রুটি বুভুক্ষু লোকটার সঙ্গে শেয়ার করো, তোমার বাড়ীতে গৃহহীন
দরিদ্রের থাকার ব্যবস্থা করো।’
“সেদিন সন্ধেবেলা বাইবেল-এর
উপরে আলোচনা শেষে বাড়ি ফিরছি, মাথার মধ্যে ওই কথাগুলোই ঘুরছে, ঠিক সে সময় দেখি এ
বাড়িতে ঢোকার মুখে একটা বাচ্চা ছেলে রাস্তার পাশে বসে আছে। বছর দশেক বয়স হবে।
“প্রথমে যেন চেনা লাগল।
কোথাও দেখেছি কি আগে? কী ব্যাপার? বাচ্চাটাকে জিজ্ঞেস করলাম কিছু খেতে চায় কিনা!
কোথায় বাড়ি? একটু বাদে বুঝলাম ছেলেটা কথা বলতে পারে না। বোবা। হয়তো পথ হারিয়ে
এখানে এসে পড়েছে।
“ঠিক করলাম ছেলেটাকে বাড়িতে
নিয়ে আসব। তারপরে খোঁজখবর নেব কার ছেলে। ওকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে এলাম।
“সেটাই বড়ো ভুল ছিল।”
ফাদার একটু থামলেন। চুপ করে খানিকক্ষণ কী যেন ভাবলেন।
“কেন? আপনি তো ঠিক কাজই
করেছেন। এটাই তো করা উচিত ছিল। অসহায়ের পাশে দাঁড়ানো।”
উনি ফের একটু যেন অন্যমনস্ক
হয়ে বলে উঠলেন, “অনেক সময় ভাগ্যের সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। সেটাই হয়েছিল। কয়েক ঘণ্টার
মধ্যেই বুঝতে পারলাম ছেলেটা খুব অন্যরকম।
“কথা না বলা এক জিনিস,
কিন্তু কথা না বলে চুপচাপ দূর থেকে আমাকে লক্ষ করে যাওয়া আরেক জিনিস। কীরকম অদ্ভুত
সে দৃষ্টি। তখনই মনে হয় যেন একে কোথায় দেখেছি। হয়তো গত জন্মে।
“দু’দিন ছিল। তৃতীয় দিনে চার্চ
থেকে ফিরে এসে দেখি ছেলেটা বাড়িতে নেই। উধাও।”
“পুলিসে জানিয়েছিলেন?”
“কীভাবে জানাব? ও যে এখানে
এসেছিল সেটাই তো জানাইনি। কী পরিচয়ে ওর খোঁজ করব। আমাকেও হয়তো কোনো কারণে সন্দেহ শুরু
করতে পারে। ভেবেছিলাম
ছেলেটা হয়তো ওর বাবা-মার কাছেই ফিরে গেছে। যেখান থেকে এসেছিল, সেখানেই ফিরে গেছে।
“এর পরদিন ওকে দেখতে
পেলাম। স্বপ্নে। মাঝরাতের স্বপ্নে এল। শুধু সেদিন নয়, তার পরদিনও। আবার তার পরের দিন। বলতে পারো তারপরে
এমন কোনো দিন হয়নি, যেদিন সে ছেলেটা স্বপ্নে আসেনি। এমন হতে শুরু করল যে ঘুমোতেই
ভয় পেতাম। ঘুমোলেই যেন চোখের সামনে এসে হাজির হত।”
“স্বপ্নে কী দেখতেন?”
“নানান ধরনের স্বপ্ন। কোনোদিন দেখতাম শুয়ে আছি। আমার
পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। আমি জিজ্ঞেস করছি। উত্তর দিচ্ছে না।
শুধু পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে। কোনোদিন দেখলাম আমি চার্চে যিশুর প্রার্থনা করছি। হঠাৎ
দেখছি সামনে অন্য কেউ নেই। সব চেয়ারে শুধু ওই বসে আছে। আবার কোনোদিন হয়তো দেখলাম
গাড়ি চালাচ্ছি, হঠাৎ পিছনের সিট থেকে ও মাথা বাড়িয়ে দিয়েছে। আমাকে কী যেন বলতে চায়। পাহাড়ি
রাস্তা। আমি অন্যমনস্ক হতে চাই না। কিন্তু সেটাই যেন ও করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিছুতেই
আমার কথা শুনছে না। শেষে হঠাৎ করে উলটোদিক থেকে একটা গাড়ি। উফ, কী যে অসহ্য সে সব
স্বপ্ন!”
“সব ক’টাই কি ভয়ের স্বপ্ন?”
“হ্যাঁ, ভয়ের, খুব ভয়ের।
এমন হয়ে গেল যে ঘুমোতে ভয় পেতাম। শেষে একদিন হঠাৎ বুঝতে পারলাম, ছেলেটাকে কেন মনে
হয় আগে দেখেছি।
“কেন?” আমি অবাক হয়ে দেখলাম
ফেড্রিকের মুখ আর স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। ঘরের মধ্যে কুয়াশা যেন আরও ঘন হয়ে মোমবাতি
আর ফেড্রিকের মধ্যে থমকে দাঁড়িয়েছে।
তার ওপার থেকে ফেড্রিক ফের
বলে উঠলেন, “অনেক দিন আগের কথা।
আমি তখন ক্লাস নাইনে পড়ি। আমার এক বন্ধু ছিল। তার নাম মাইক ওবানন। এমনিতে
ভদ্র ছেলে। কিন্তু মাঝে মধ্যে যে কী হত! খুব রগচটা ছিল। অনেককে মারধর করত। আমরা দু’জনে
খুব বন্ধু ছিলাম। আমাদের দু’জনেরই ফুটবলের খুব নেশা ছিল। খেলা দেখতে দূরে দূরে যেতাম।
“সেরকমই একদিন একটা খেলা
দেখে ম্যাঞ্চেস্টার থেকে বাড়ি ফিরছি, বেশ রাত হয়েছে। হঠাৎ দেখি কিছু আগে আগে একটা
বাচ্চা ছেলে হেঁটে যাচ্ছে। মাইক হঠাৎ বলে উঠল - দাঁড়া, ছেলেটার সঙ্গে একটু মজা করে
আসি। বলে এগিয়ে গিয়ে ছেলেটার পথ আগলে দাঁড়াল।
“কী বলল জানি না, দেখি ছেলেটা
ছুটতে শুরু করেছে। ও তার পিছু পিছু ছুটছে।
ওদের আর দেখতে পেলাম না। কিছুক্ষণ হাঁটার পরে দেখি মাইক একটা পাশের ঝোপের ভেতর
থেকে বেরিয়ে আসছে। হাতে রক্ত মাখা একটা লাঠি।
“আমি চিৎকার করে বলে উঠলাম
- ছেলেটা কোথায়? তোর হাতে রক্ত কেন?
“মাইক ঝোপের মধ্যে দেখাল -
অবাক হয়ে দেখলাম ছেলেটা উপুড় হয়ে পড়ে আছে। বলে
উঠল – ছেলেটা আমার প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিল না। মাথা গরম হয়ে গেল। মেরে দিলাম।
“দেখি ছেলেটার মাথা ফেটে
গেছে। মাথার নিচের ঘাস পুরো রক্তে ভিজে গেছে। চেঁচিয়ে উঠলাম – কী করেছিস? শুধু
শুধু মারলি কেন?
“ও কীরকমভাবে যেন আমার
দিকে তাকাল। আমি বলে উঠলাম, ছেলেটাকে এখনই ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে হয়তো বেঁচে
যাবে।
“ও বলে উঠল - তারপরই আমার সম্বন্ধে
সব কথা বলে দেবে।
“বলে আবার লাঠিটা দিয়ে
ছেলেটাকে মারতে শুরু করল।”
“আপনি কিছু করলেন না?”
“ও খুব রগচটা টাইপের ছেলে
ছিল। গায়ে ছিল অসুরের মতো জোর। আমাকেই মারত তখন। আমি শুধু দূর থেকে দেখেছিলাম।
সেটাই আমার দোষ ছিল। তখন ওই ভুল বোঝার মতো ঠিক অত ম্যাচুরিটিও ছিল না।”
“তারপর?”
“এই ঘটনার দু’দিন পরে ছেলেটার
ডেডবডি ঝোপের মধ্যে থেকে পাওয়া যায়। কিন্তু পুলিস আমাদের সন্দেহ করেনি।”
“ও শুধু শুধু মেরে দিল!”
“হ্যাঁ, ও আসলে ছিল সিরিয়াল
কিলার। পরে আরও এরকম অনেককে মেরেছে। কিন্তু ওর এই পরিচয় আমি এ ঘটনার আগে জানতাম
না। ওটাই বোধহয় ওর প্রথম খুন ছিল।”
“আর ওই ছেলেটাই কি এই
ছেলেটা?”
“হ্যাঁ, সেজন্যই আমার
মুখটা এত চেনা চেনা লাগছিল। সেদিন একসঙ্গে বডিটা ওখানে একটা গাছের তলায় পুঁতে
দিয়েছিলাম। তখনই ছেলেটার মুখ দেখেছিলাম। ওই ছেলেটাকেই মেরেছিল মাইক। বুঝতে পারলাম
সে জন্যই ও প্রতিশোধ নিতে ফিরে এসেছে।”
“কিন্তু আপনি তো মারেননি!”
“আমি না মারলে কী হবে!
সঙ্গে তো ছিলাম। আমার পুলিসের কাছে চুপ করে থাকাটা অন্যায় হয়েছিল। তখন ভেবেছিলাম, বললে
আমাকেও সন্দেহ করবে। ও যে একা করেছে এর কী প্রমাণ আছে?”
“আচ্ছা, এই মাইক ওবানন কী
সেই যাকে তিন বা চার বছর আগ পোর্টসমাউথ থেকে ধরা হয়? যে তার কয়েক মাস পরেই পুলিস
কাস্টডিতে আত্মহত্যা করে? শুনেছিলাম লোকটা নাকি ষোলোটা খুন করেছিল পুরো ইংল্যান্ড
জুড়ে।”
“ঠিক। আমার ওই বন্ধুই হল সেই
মাইক ওবানন। কিন্তু ও
তো মারা গেছে। হয়তো ওর মৃত্যুতে, মানে ওর সুইসাইডেও ছেলেটার হাত ছিল। বাকি ছিলাম
আমি। তাই আমি হলাম ওই ছেলেটার প্রতিশোধের প্রধান লক্ষ্য।”
“কিন্তু ছেলেটা তো আপনার
বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল। শুধু
স্বপ্নে দেখতে শুরু করেছিলেন, তাই তো?”
“না, ও শুধু স্বপ্নে থেমে
থাকেনি। স্বপ্নে ঠিক যেভাবে দেখতাম, কিছু দিন বাদে সত্যি সত্যি ঠিক সেভাবেই, সেরকম
ঘটনার মাধ্যমেই আমার সামনে হঠাৎ করে ফিরে আসতে শুরু করল।
“গাড়ি চালাচ্ছি। লেক
ডিসট্রিক্টের পাহাড়ি রাস্তায় গাড়ি চালাচ্ছি, হঠাৎ রিয়ার ভিউ মিররে দেখতে পেলাম আমি
একা নেই। ও পিছনের সিটে বসে আছে। ওর ওই কাচের দৃষ্টি নিয়ে। বারবার মুখ সামনে
বাড়িয়ে দিচ্ছে। উলটোদিকের গাড়ির সঙ্গে অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছিল। কোনোরকমে প্রাণে
বেঁচেছিলাম।
“এক রোববার চার্চ-এ সার্ভিসের
সময় হঠাৎ দেখলাম চার্চের সব সিটে ওই ছেলেটা বসে আছে। সব চেয়ারে। অন্য কেউ নেই। ছুটে
পাঠ বন্ধ করে পাগলের মতো বেরিয়ে এসেছিলাম।
“একদিন আয়নার সামনে দাড়ি
কামাচ্ছি। দেখলাম পিছনে ও এসে দাঁড়িয়েছে। চমকে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি ও নেই। ফের আয়নায়
তাকিয়ে দেখি ও আমার পিছনে দাঁড়িয়ে দেখছে। আর ছেলেটার সামনে আমার জায়গায় এ কার মুখ?
অন্য একটা লোক দাঁড়িয়ে। কী
বীভৎস যে তার মুখ। মনে হচ্ছে কেউ যেন তার মুখ ছুরি চালিয়ে ফালা ফালা করে দিয়েছে। পুরো মুখ রক্তে ভাসছে। ওই অবস্থায়
দাড়ি কামানো বন্ধ করে বাড়ির বাইরে পালিয়ে গিয়েছিলাম।
“কখনও আবার হয়তো খাচ্ছি
এখানে বসে। হঠাৎ
দেখি আমার পাশে তোমার চেয়ারে ও বসে আছে। চুপ করে বসে আমাকে দেখে যাচ্ছে।
“বুঝতেই পারছ, আমি ভয়ে ভয়ে
পাগলের মতো হয়ে গেলাম। এমন কি বার বার এত অসুস্থ হয়ে পড়তে লাগলাম, যে চার্চেও মাঝে
মধ্যে যেতাম না। মনে হত ভয়ে একদিন হার্টফেল হবে। কোনোদিন মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে উঠে হঠাৎ
দেখতাম ছেলেটা আমার বিছানার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। হাতে একটা ধারালো ছুরি। চমকে উঠতাম।
তারপর দেখতাম ও হাওয়ায় মিলিয়ে যেত।
“আমি ঠিক করলাম ওর কাছে
আমার সব অপরাধের ক্ষমা চেয়ে নেব। হয়তো ও ক্ষমা করে দেবে।”
“হ্যাঁ, হয়তো এটা আপনার
মনের গভীরের অপরাধবোধ থেকে হত। হয়তো
এর পুরোটাই আপনার মনের ভুল। শুধু কল্পনা।”
ফেড্রিক হেসে উঠলেন, “ভুল?
ওই দেখো ও আবার এসে গেছে। সোফায় বসে আছে। মাথাটা ঘোরাও। কী দেখতে পাচ্ছ তো?”
আমি সোফার দিকে তাকালাম। মুহূর্তের জন্য নিশ্বাস বন্ধ হয়ে
গেল। সোফার উপরে যেখানে এক ঝাঁক পোকা উড়ছিল, ঠিক সেখানটাতে একটা বছর দশেকের ছেলে
এসে বসেছে। একদৃষ্টে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মুখটা দেখলে সত্যি কীরকম যেন ভয় হয়।
একটা অদ্ভুত কনট্রাস্ট। শান্ত সমাহিত, অথচ একটা জ্বলন্ত স্বচ্ছ কাচের দৃষ্টি। গায়ে
একটু অন্য ধরনের শার্ট, যেরকম আজ থেকে বছর পঞ্চাশ আগে কেউ পড়ত।
ফের ঘুরে তাকালাম ফেড্রিক-এর
দিকে। ওঁর মুখে এখন আর হাসি নেই। ভয়ের ছাপ।
সংবিৎ ফিরে পেয়ে ফের বলে
উঠলাম, “আপনি কি বাঁ হাতে কাজ করেন?”
“কী করে বুঝলে?”
“আপনার বাঁ হাতের আঙ্গুলে
কালি লেগে আছে। আমাকে বাঁ হাতে কফি এগিয়ে দিলেন।”
“বাহ। গুড অবসারভেশন। কিন্তু হঠাৎ করে এ প্রশ্ন।”
“আমার কিন্তু মনে হচ্ছে,
এখনও আপনি আমাকে সব কিছু সত্যি বলেননি। আপনার অপরাধটা একটু অন্যরকম ছিল।”
“কীরকম?”
“আমি যদি বলি আপনিই ছিলেন
আসল সিরিয়াল কিলার? আপনার ওই বন্ধু মাইক শুধু আপনার সঙ্গে থাকত।”
ফেড্রিকের চোখটা কুয়াশার
ওপার থেকে আবার বেড়ালের চোখের মতো যেন জ্বলে উঠল।
“কেন? এরকম কেন মনে হল?”
“আমার মাইকের কেস হিস্ট্রিটা
জানা আছে। একটা বড়ো রহস্য ওর অকাল মৃত্যুর জন্যে জানা যায়নি। ওর সব মার্ডারে দেখা
গিয়েছিল যে এরকমও হতে পারে, ও একা এই কাজ করেনি। এমনও মনে হয়েছিল যে ও প্রথমে আঘাত
করেনি। প্রথম গভীর আঘাত এসেছিল বাঁ হাতি কারুর কাছ থেকে।
“আমরা জানি বাঁ হাতি কারুর
ছুরির আঘাত ও ডান হাতি কারুর ছুরির আঘাত ভিন্ন ধরনের হয়। ইন ফ্যাক্ট দেখা গিয়েছিল যে
বেশির ভাগ মৃত্যুই হয়েছিল বাঁ হাতের ওই আঘাতের জন্যই। সেগুলো অনেক বেশি গভীর। আমার মনে হয় যে আপনি
খুন করার পরে আপনার প্রিয় বন্ধু মাইককে বলতেন আরও আঘাত করতে যাতে ওর নামও খুনের
সঙ্গে জড়িয়ে যায়। ও
আপনাকে বিশ্বাস করে সেটা করত। ঠিক এ জন্যই পুলিসকেও আপনি ওই ছেলেটার আপনার বাড়িতে
আসার কথা জানাননি।”
“ইউ আর ইন্টেলিজেন্ট
অনিলিখা। ঠিক এ কারণেই তুমি আমাদের এই ছোটো গ্রামে এসেছ শোনার পর থেকেই তোমার
সঙ্গে আলাপ করার ইচ্ছে ছিল। তবে তুমি আমার আর কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আমার দিকে
ভালো করে চেয়ে দেখো,” বলে হেসে উঠলেন ফেড্রিক। হাসিটা আস্তে আস্তে অট্টহাসিতে
পরিণত হল। ওনাকে কিন্তু স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল না। মাঝের গভীর কুয়াশা যেন ওনাকে আরও
বেশি করে ঘিরে ধরে আমার থেকে দূরে নিয়ে যাচ্ছিল।
একটু পরে কুয়াশা কেটে গেল।
ফেড্রিকের মুখ স্পষ্ট ফুটে উঠল। সারা মুখ জুড়ে ছুরি দিয়ে গভীর আঁচড়ের দাগ। ক্ষতবিক্ষত
মুখে রক্ত শুকিয়ে গেছে। কাচের দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তাতে মিশে আছে বাঘের
হিংস্রতা, ঈগলের দৃষ্টির শঠতা। এ মুখ কোনো জীবিত মানুষের হতে পারে না। বলতে নেই,
আমি সত্যি ভয় পেয়েছিলাম।
ফেড্রিক হাসি থামিয়ে ফের
বলে উঠলেন, “কি এবারে ভয় পেয়েছ তো? এই মুখটাই আমি কাচের আয়নায় দেখেছিলাম। এ আমারই।
আমিই আগে চিনতে পারিনি। কী বীভৎস ভাবো তো? ও আমাকে কালই খুন করেছে। বিকেল তিনটেতে।”
আমি উঠে দাঁড়াচ্ছিলাম।
ফেড্রিক ফের বলে উঠলেন, “এ
কী, উঠছ কেন? ভূতের গল্প তো এখনও শেষই হয়নি। সিরিয়াল কিলিং-এর অভ্যেসটা এখনও রয়ে
গেছে।”
অনিলিখাদি এতটা বলে হঠাৎ
উঠে দাঁড়াল। আমরা সবাই একসঙ্গে চেঁচিয়ে উঠলাম, “তারপর?”
“সেটা জানার জন্য তো তোদের
এই ‘দ্য ইকনমিস্ট’ ম্যাগাজিনটা পড়তে হবে। সব মিস্ট তা না হলে কাটবে না। রেখে
দিলাম। বাইরে বৃষ্টি থেমে গেছে। এখনই না বেরোলে আবার আটকে যাব।”
অনিলিখাদি দরজার দিকে
এগিয়ে গেল।
_____
ছবিঃ প্রত্যয়ভাস্বর জানা
রীতিমতো গা ছমছমে
ReplyDeleteThis comment has been removed by the author.
ReplyDeleteআমি শেষটা বুঝলাম না, ফাদার মরে ভূত হয়েছিল ? অনিলিখাকে সবটা ডেকে এনে বলল !
ReplyDeleteFather to bhoot hayei chilo. Ar Anilikha?????
Deleteখুব ভালো লাগল অভিজ্ঞান!দারুণ মুনশিয়ানার সঙ্গে পরিবেশন করেছ গল্প!অনিলিখা কেমন করে বেঁচে ফিরল, সেটা ধোঁয়াশায় রেখে অনিলিখাকে দিয়ে বলিয়েছ যে, "দি ইকোনমিস্ট"-ম্যাগাজিন না পড়লে শেষটা জানা যাবে না। এটুকু ধোঁয়াশা গল্পের উত্তরণ ঘটিয়েছ...পাঠক নিজের মতো করে ভেবে নিতে পারে, তাই তো?
ReplyDeleteAnek Dhanyabad Debabrata da. Hya. Ektu dhoyasha rekhe diyechi jate pathak possibility gulo bhebe nite pare
Deleteরোমহষর্ক
ReplyDeleteDhanyabad
Deleteপ্রিয় অভিজ্ঞান, আজ দুপুরেই তোমার এই গল্প পড়ে শেষ করেছি। একে ভূতের গল্প, তায় অনিলিখা! অতএব, ক্রাইম থাকবেই। আমার মতে এ গল্পটিকে "ক্রাইম-কাম-সাইকো থ্রিলার-গোষ্ঠির অন্তর্ভুক্ত করা যেতেই পারে। যথারীতি তুমি শুরু থেকেই জমিয়ে দিয়েছ... হাড়হিম ভয়ের পরিবেশে অনিলিখা সূর্যাস্তের পর প্রবেশ করেছে ইংল্যান্ডের এক গ্রামের অতি পুরোনো এক চার্চে। পাদরি মশাই বলে চলেছেন তাঁর জীবনের ঘটনা... শেষে যে ধোঁয়াশা রেখে দিয়েছ, তাতে পাঠক-মনে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে এবং ফলস্বরূপ গল্পটির উত্তরণ ঘটেছে। ইকোনমিস্ট পত্রিকা না পড়লে তো জানারও উপায় নেই! অনিলিখার সব গল্পেই কিছু না কিছু অভিনবত্ব তুমি আনবেই...এবং এ গল্পও ব্যতিক্রম নয়। আমার তরফে থাকছে অনেক অনেক শুভেচ্ছা... এভাবেই তুমি লিখে চলো অভিজ্ঞান।
ReplyDeleteবেশ গা ছমছমে। ভালো লাগল।
ReplyDeleteDhanyabad
ReplyDeleteদারুণ গল্প। তবে শেষটায় কী করে অনিলিখা ভুতুড়ে সিরিয়াল কিলারের হাত থেকে বেঁচে ফিরে এল, সেটা অভিজ্ঞানবাবু একটু বিশদে লিখলে আরও খুশি হতাম।
ReplyDeleteকি সাংঘাতিক!!!!!অনিলিখার কি হলো!!!! বেশ ভয়ধরানো।
ReplyDelete