সহজে দুর্গাকথা
ইন্দিরা
মুখোপাধ্যায়
তোমরা
কি জান, দুর্গা
শব্দের নামের অর্থ?
দুর্গ
শব্দের অর্থ দৈত্য, বাধাবিঘ্ন, দুঃখশোক, নরকযন্ত্রণা, রোগব্যাধি।
আর এহেন নানাবিধ অশুভ কিছু আর ‘আ’ অর্থটি বাংলাভাষায় নাশ করা বা বধ করা বোঝায়। সেই কারণে
দুর্গা শব্দের অর্থ দাঁড়ায় জীবের জীবন থেকে যা কিছু অশুভ শক্তির বিনাশকারী
দেবীশক্তি। নিজের
নাম প্রসঙ্গে দেবী বলেছেন চন্ডীতে,
“তত্রৈব চ
বধিষ্যামি দুর্গমাখ্যং মহাসুরং
দুর্গা
দেবীতি বিখ্যাতং তন্মে নাম ভবিষ্যতি”।।
কিন্তু
দুর্গা নাম এল কীভাবে?
পুরাকালে দুর্গম নামক এক অত্যাচারী অসুর দেবতাদের পরাজিত করে বেদশাস্ত্রকে হরণ
করে। তার
উদ্দেশ্য ছিল জীবজগতে ধর্মের বিনাশ ঘটানো। সমাজে এমন বিশৃঙ্খলা দেখে দেবতারা
সমবেতভাবে মহামায়ার শরণাপন্ন হন। কোনও অসুর যাতে ভবিষ্যতে এমন অনিষ্টসাধন না করতে
পারে তাই দেবী দেবতাদের আরাধনায় তুষ্ট হয়ে সমগ্র ‘বেদ’কে নিজের দেহে ধারণ করেন। বেদময়ী
দেবীকে দেবগণ ‘দুর্গা’ নামে ভূষিত করেন। ‘দেবী পুরাণ’ মতে দুর্গা
নাম স্মরণ করলেই ত্রিতাপ দুঃখ, জ্বালা-যন্ত্রণা মুক্ত হয় এবং এরূপে তিনি জীবের
কল্যাণদায়িনী, রোগ-শোক
বিনাশিনী রূপে জীবকে অশুভ শক্তির হাত থেকে উদ্ধার করেন। অথবা বলতে পারি,
মহাশক্তিকে লাভ করার দুর্গম পথকে যিনি সুগম করে দেন তিনিই দুর্গা।
লৌকিক
উপাখ্যানগুলো মানুষের মনে বিশ্বাস আনানোর জন্য। লোকমুখে প্রচারিত হতে হতে
দেবীমাহাত্ম্য আজ খ্যাতির শিখরে। আর স্বীয় ব্র্যান্ড সৃষ্টিতেও দেবী নিজেই বহুদূর
এগিয়ে রয়েছেন। ঋগ্বেদের দেবীসুক্ততেই তো তা বর্ণিত।
অহং
রুদ্রের্ভিবসুভিশ্চরাম্যহমাদিত্যৈরুতবিশ্বদেবৈ
অহং
মিত্রাবরুণোভাবিভর্ম্যহমিদ্রাগ্নী অহমশ্বিনোভা…
অর্থাৎ,
আমিই সমগ্র জগতের ঈশ্বরী,
সকলকে ধারণ করি। আমিই সর্বভূতে জীবরূপে প্রবিষ্টা। আমাকেই সুর, নর ও মুনিগণ
বিবিধরূপে আরাধনা করে।
এমন
মাহাত্ম্য যাঁর তাঁকে কী করে অস্বীকার করি আমরা? তাই তো নানা অছিলায় সারাটি বছর ধরে
তাঁর পূজায় আমাদের খামতি নেই। তিনি যে সেই নারীশক্তি, আমাদের ঘরের
কন্যাশ্রী, দেবী
দুর্গা যাঁর নাম।
আর
আমাদের ঘরের এই কন্যাশ্রীটির জন্য শারদীয়া পুজোর বিশেষ আয়োজন। সারাবছরের
মধ্যে এই সময়টাতে মহাধূম। মেয়ের স্নানে, মেয়ের পোষাকে, মেয়ের খাবারে
সবকিছুতেই বিশেষ ছোঁয়া যেন।
আশ্বিনে
পুবের নরম আলোয় স্নান করবে আমাদের আদরের মেয়ে। রোদ লাগবে
বলে গায়ে শাড়ি জড়ানো কন্যে দুর্গার গায়। দুর্গা স্নানে যাবে বলে কথা! দুব্বোমাটি
মাড়িয়ে, ঢাকঢোল
পিটিয়ে, শাঁখ
বাজিয়ে, উলু
দিয়ে মেয়ে
যাবে পাইক বরকন্দাজের কোলে চেপে। কেউ আবার পালকিতে নিয়ে যায়। কেউ আবার দোলায়।
কেউ মাথার ওপর ছাতা ধরে তার, পাছে মেয়েটার কষ্ট
হয়। পরিপাটি করে লালপাড় কোরা শাড়িতে মেয়ের উথলে ওঠা রূপলাবণ্য ঢেকে
দিয়েছে বাড়ির বড়োরা। লজ্জা মেয়ের ভূষণ কিনা।
আমাদের
এই গ্রীষ্মপ্রধান দেশে মানুষের এত রোগভোগ। আবার এ দেশটায় চাষাবাদ সর্বস্বতা! চাষ করেই কত
মানুষ খেয়ে পরে বেঁচে থাকে। কৃষিকাজ তাদের রুজি-রোজগার। তাই মহাসপ্তমীর ভোরে এই সবুজের
অভিযান। সবুজের স্নান। কলাবৌ স্নান। মেয়ে থাকে সকলের আড়ালে। নেপথ্যের
নায়িকা হয়ে।
“ওঁ
কদলীতরুসংস্থাসি বিষ্ণুবক্ষঃ স্থলাশ্রয়ে।
নমস্যতে
পত্রি ত্বং নমস্তে চন্ডনায়িকে।।
ওঁ হ্রীং
রম্ভাধিষ্ঠাত্র্যে ব্রহ্মাণ্যৈ নমঃ।”
বেদে
কী আছে জান তোমরা? ভূমি
বা মাটি হল মাতা, মৃত্শক্তি
যা ধারণ করে সব জীবনদায়িনী উদ্ভিদকে। আয়ুর্বেদের ঐতিহ্যবাহী ভারতবর্ষে রোগভোগের
প্রাদুর্ভাবও কিছু কম নয়। মা দুর্গার চিন্ময়ীরূপটি এই কলা-বৌয়ের
অবগুণ্ঠনেই যে প্রতিস্থাপন করা হয় সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এই কলাবৌকে বলা হয়
নবপত্রিকা। নয়টি প্রাকৃতিক সবুজ শক্তির সঙ্গে আধ্যাত্মিক চেতনশক্তির মিলন হয়
দেবীবন্দনায়। সম্বচ্ছর যাতে দেশবাসীর রোগভোগ কম থাকে এবং দেশ যেন সুজলা-সুফলা-শস্য-শ্যামলা
হয়ে ওঠে সেই বাসনায় এই নবপত্রিকাকে দুর্গারূপে পুজো করা হয়। ন’টি উদ্ভিদের
প্রত্যেকটির গুরুত্ব আছে। প্রত্যেকটি উদ্ভিদই দুর্গার এক-একটি রূপ এবং তার
কারিকাশক্তির অর্থ বহন করে। এরা সমষ্টিগতভাবে মা দুর্গা বা মহাশক্তির প্রতিনিধি। যদিও
পত্রিকা শব্দটির অর্থ হল পাতা, কিন্তু নবপত্রিকায় নয়টি চারাগাছ থাকে। আবক্ষ
অবগুণ্ঠনের আড়ালে নববধূর একটি প্রতিমূর্তি কল্পনা করা হয়। বসন্তকালে বাসন্তী এবং
শরৎকালে দুর্গার আরাধনায় নবপত্রিকা অর্চনার নিয়ম আছে। যে ক’টি
চারাগাছের সমষ্টিকে একত্রিত করে অপরাজিতার রজ্জু দিয়ে বেঁধে নবপত্রিকা তৈরি করা
হয় সেই নয়টি উদ্ভিদের নাম শ্লোকাকারে লেখা আছে, আর এই ন’টি গাছের
প্রত্যেকের আবার অধিষ্ঠাত্রী দেবী আছেন।
রম্ভা, কচ্বী, হরিদ্রা চ
জয়ন্তী বিল্বদাড়িমৌ। অশোক মানকশ্চৈব ধান্যঞ্চ নবপত্রিকা।।
এঁরাই
আবার এই সময় নবদুর্গা রূপে পূজিতা হন। তাই দুর্গাপূজার মন্ত্রে পাই,
“ওঁ পত্রিকে
নবদুর্গে ত্বং মহাদেব-মনোরমে”
এই
মন্ত্রে দেবীকে সম্বোধন করে নবপত্রিকাকে দেবীজ্ঞান করা হয়। শস্যোত্পাদনকারিণী
দেবী দুর্গা স্বয়ং কুলবৃক্ষদের প্রধান অধিষ্ঠাত্রীদেবতা ও যোগিনীরা দেবীর সহচরী। স্নানান্তে
নতুন শাড়ি পরিয়ে তিনটি মঙ্গলঘটে আমপাতা, সিঁদুর-স্বস্তিকা এঁকে জল ভরে এক
সঙ্গে ঢাকের বাদ্য, শঙ্খ, ঘন্টা এবং
উলুধ্বনি দিয়ে বরণ করে মন্ডপে মায়ের মৃন্ময়ীমূর্তির সঙ্গে স্থাপন করা হয়। এই
তিনটি ঘটের একটি মা দুর্গার ঘট, একটি গণেশের এবং তৃতীয়টি শান্তির ঘট। নবপত্রিকার পূজা
একাধারে কৃষিপ্রধান ভারতবর্ষের বৃক্ষপূজা, অন্যদিকে রোগব্যাধি বিনাশকারী বনৌষধির
পূজা। মহাসপ্তমীর ভোরে বিল্ববৃক্ষের পূজা, নবপত্রিকা এবং জলপূর্ণ ঘটস্থাপনের
দ্বারাই দেবীপূজার সূচনালগ্ন ঘোষিত হয়। ত্রিনয়নী ত্রিভুবনতারিণী তিনটি স্থানে
আবির্ভূতা হন দুর্গাপুজোর সময়। ঘটে, নবপত্রিকায় এবং মৃন্ময়ী প্রতিমায়।
“ওঁ চন্ডিকে
চল চল চালয় চালয় শীঘ্রং ত্বমন্বিকে পূজালয়ং প্রবিশ।
ওঁ উত্তিষ্ঠ
পত্রিকে দেবী অস্মাকং হিতকারিণি”
নবপত্রিকাকে
জনপদে মঙ্গলের দৃষ্টি দিয়ে বিচার করে পূজা করা হয়। একাধারে এটি কৃষিপ্রধান দেশের
চিরাচরিত কৃষিলক্ষ্মী যা প্রাক্-আর্যসভ্যতার নিদর্শন, অন্যাধারে জীবজগতের কল্যাণকর এই
উদ্ভিদগুলোর রোগনিরাময়ক গুণাবলীর জন্য বনৌষধিও বটে। তাই কলা, কালো কচু, হলুদ, জয়ন্তী, বেল, অশোক, ডালিম, মানকচু আর
ধান - এই ন’টি
গাছকে অপরাজিতা লতা দিয়ে বেঁধে দেওয়ার অর্থ হল জনকল্যাণকর এই উদ্ভিদগুলি যেন
রোগব্যাধির হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করে বা মানুষ যেন এই পুজোর মাধ্যমে রোগব্যাধিকে
জয় করতে পারে।
দুর্গাপুজোর
সঙ্গে আমাদের কৃষিজ দ্রব্যাদি উত্পন্ন হওয়া এবং সুষ্ঠুভাবে চাষাবাদের সম্পর্কটি
ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মহাষষ্ঠীর সন্ধেবেলায় ভগবতী দেবী দুর্গা আর নবপত্রিকা যেন
একাত্ম হয়ে ওঠেন ঢাকের বাদ্যির সঙ্গে। গন্ধ-পুষ্প-মাল্য সহযোগে যে কোনও উপাচারেই
পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণে একাকার হয়ে ওঠে পুজোমন্ডপ। “ওনেন গন্ধেন ভগব্দ্দুর্গায়া
নবপত্রিকায়াশ্চ শুভাধিবাসনমস্তু” আমরা নবপত্রিকার বাইরেটুকুনি দেখি
শুধু। অবগুণ্ঠনা সজীব,
সবুজ কলাগাছটি। একটি কলাগাছের একটি মোচা প্রায় শ’দুয়েক কলার জন্ম দেয়। আর
বাংলার আবালবৃদ্ধবণিতা সেই কলার পুষ্টিতে পুষ্ট থাকে সারাটা বছর। তাই বুঝি
নবপত্রিকার ন'টি
উদ্ভিদের মধ্যে কদলীবৃক্ষটির জন্য যুগ যুগ ধরে এত দুর্বলতা।
প্রচলিত
একটি ছড়ায় পাই যেখানে শিব তাঁর দুর্গাকে বলছেন,
“ও গণেশের
মা,
কলাবউকে
আমার দাগা দিও না।
ওর একটি
মোচা ফললে পরে
কত হবে
ছানাপোনা।”
এবার বলি মহাষষ্ঠীর বোধন কেন।
সীতাহরণের
পর রামচন্দ্র বানরসেনাদের সাহায্যে সেতুবন্ধ করে লঙ্কায় হাজির হলেন। ব্রহ্মা তখন
রামকে আদেশ করলেন অপরাজিতা দুর্গার পুজো করে জগতের উদ্ধারে নেমে পড়তে। সমগ্র
রাক্ষসকুলকে ধ্বংস না করতে পারলে যে ধরিত্রীর নিস্তার নেই। তাই
কৃষ্ণপক্ষেই নিদ্রিতা দেবীকে অকালে জাগ্রত করে, অকালে অর্থাৎ শরৎকালে (পূর্বে
বসন্তকালে শুক্লপক্ষে দেবলোক জাগ্রত অবস্থায় পুজো হত), কাজে নেমে
পড়েছিলেন রামচন্দ্র স্বয়ং। তাই তো অকালবোধন। ব্রহ্মার পরামর্শে দেবী দুর্গার
দশভুজা মূর্তি মাটি দিয়ে গড়ে ব্রহ্মা স্বয়ং বিল্ববৃক্ষমূলে সিংহবাহিনী সেই দেবীর
বোধন করেছিলেন।
সেই দিনটিই ছিল শুক্লপক্ষের মহাষষ্ঠী।
রামচন্দ্র
স্তব করলেনঃ
নমস্তে
ত্রিজগদ্বন্দ্যে সংগ্রামে জয়দায়িনী
প্রসীদ বিজয়ং
দেহি কাত্যায়নি নমোহস্তুতে।।
পূজা
শুরু হল। পিতামহ ব্রহ্মা রামচন্দ্রের সঙ্গে বললেন, “হে দেবী! যতদিন না
পর্যন্ত রাবণবধ হয়, রাক্ষসকুল
ধ্বংস না হয়, আমাদের পূজা গ্রহণ করে তুষ্ট হোন।”
মিথিলার
কবি বিদ্যাপতির দুর্গাভক্তিতরঙ্গিণী গ্রন্থে ষষ্ঠীতে মায়ের বোধনের উল্লেখ আছেঃ
ষষ্ঠ্যাং
বিল্বতরৌ বোধঃ সায়ংসন্ধ্যাসুকারয়েৎ।
বসন্তকালের
দুর্গাপুজোয় বোধনের প্রয়োজন হয় না। কারণ, দেবতারা ঐ সময় জাগ্রত থাকেন।
সমগ্র দেবকুলকে শরৎকালে জাগানোর উদ্দেশ্যেই এই বোধন। বোধনের অর্থ হল জাগরণ।
কালিকাপুরাণে পাওয়া যায় এই বোধন নিয়ে,
“বোধয়েদ্বিল্ব্শাখায়াং
ষষ্ঠ্যাং দেবীফুলেষু চ”
শুক্লাসপ্তমী
থেকে মহানবমী অবধি বিশেষ পুজো চলতে লাগল। সপ্তমীর দিন দেবী স্বয়ং রামের
ধনুঃশরে প্রবেশ করলেন। অষ্টমীতে রামের বাণে আশ্রয় নিলেন। অষ্টমী-নবমীর
সন্ধিক্ষণে দশানন রাবণের মস্তক পুনঃ পুনঃ ছেদন করলেন রামচন্দ্র।
তোমরা
জান, সন্ধিপুজোর বিশেষত্ব কী?
দুর্গাপুজোর
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষণ হল এই সন্ধিপুজো। অষ্টমীতিথির শেষ ২৪ মিনিট ও নবমীতিথির
শুরুর ২৪ মিনিট, এই মোট ৪৮ মিনিটের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হয়। মহিষাসুরের সঙ্গে যুদ্ধের
সময় দেবী দুর্গার পিছনদিক থেকে আক্রমণ করেছিল দুই ভয়ানক অসুর চন্ড ও মুন্ড। দেবী
তখন এক অদ্ভূত রূপ ধারণ করেন। কেশরাজিকে মাথার ওপরে সুউচ্চ কবরীতে বেঁধে নিয়ে কপালে
প্রজ্জ্বলিত অর্ধচন্দ্রাকৃতি টিপ ও তিলক এঁকে, গলায় বিশাল মালা ধারণ করে, কানে সোনার
কুন্ডল ও হলুদরঙা শাড়িতে নিজেকে সজ্জিত করেন। তাঁর রক্তচক্ষু, লাল জিহ্বা, নীলাভ
মুখমন্ডল এবং ত্রিনয়ন থেকে অগ্নিবর্ষণ করতে থাকেন। ঢাল ও খড়্গ নিয়ে চন্ড ও মুন্ডকে
বধ করেছিলেন দেবী এই সন্ধিপুজোর মাহেন্দ্রক্ষণে।
সন্ধিপূজার
এই মাহেন্দ্রক্ষণে কেউ বলি দেন। কেউ সিঁদুরসিক্ত একমুঠো মাসকলাই বলি দেন। সবকিছুই
প্রতীকী। সর্বকালের
সর্বক্ষণের দুষ্টের দমন হয় দেবীর দ্বারা। রক্তবীজ অসুরকুল বিনষ্ট হয়। ঢাকের বাদ্যি
বেজে ওঠে যুদ্ধজয়ের ভেরীর মতো। একশো আট প্রদীপের আলোকমালায় উদ্ভাসিত
হয় ভারতবর্ষের আনাচকানাচ। উত্তিষ্ঠত ভারতবাসীর জাগ্রত মননে দুষ্কৃতের বিনাশিনী এবং
সাধুদের পরিত্রাণকারী মা দুর্গা কান্ডারী হয়ে প্রতিবছর অবতীর্ণ হন মর্ত্যলোকে।
নবমীর
দিন সীতা উদ্ধার করলেন রাম। আর দশমীর দিন প্রাতে যুদ্ধে জয়লাভের
পর দেবীমূর্তি নদীর জলে ভাসিয়ে দিয়ে বিসর্জনমন্ত্র পাঠ হল। সেদিন পালিত
হল বিজয়া দশমীর বিজয়োত্সব। বিজয়ায় বিসর্জন দুর্গা মাকে ত্যাগ
নয়, বিশেষ
রূপে অর্জন। বিজয়া হল আসুরিক শক্তির ওপর দৈবশক্তির বিশেষ প্রভাব বিস্তারে জয়লাভ।
_____
স্তোত্র
সমূহের তথ্যসূত্রঃ মহিষাসুরমর্দ্দিণি দুর্গা - স্বামী
প্রজ্ঞানানন্দ
No comments:
Post a Comment