ব্রাইস, জিওন ও পেজ ভ্রমণ
প্রদীপ্ত ভক্ত
সেবার মেমোরিয়াল ডের ছুটিতে
গেছিলাম ব্রাইস ক্যানিয়ন, zion ক্যানিয়ন আর পেজ। পেজটা যাবার কথা ছিল না, গেছিলাম কীভাবে সে গল্পে
আসছি। যথারীতি শুক্রবার লং উইক-এন্ড হলেও অফিস থেকে বেরিয়ে গাড়ি তুলে, জল খাবার নিয়ে বেরোতে বেরোতে
বিকেল গড়িয়ে গেল। লং উইক-এন্ড, বেজায় ভিড় রাস্তা এইসব কাটিয়ে ফাঁকা রাস্তায়
পৌঁছতেই আমাদের গাড়িও ছুটল জোর কদমে। এদেশে স্পিড লিমিট মেনটেন করাটা
খুব জরুরি। স্পিড
ব্রেক করার পর পুলিশ ধরলেই চিত্তির। কিছু না, স্রেফ একটা বড়সড় টাকার
ফাইন আর ড্রাইভিং লাইসেন্স থেকে পয়েন্ট কাটা যাওয়া! এই পয়েন্ট কাটা যাওয়া
ব্যাপারটা খুব বাজে ব্যাপার। একটা নির্দিষ্ট পয়েন্ট-এর পর ড্রাইভিং লাইসেন্সটাই
বাতিল হয়ে যায়। তাই
সচরাচর স্পিড লিমিট কেউ ব্রেক করে না। কিন্তু সোজা ফাঁকা রাস্তা, দেরিটা কভার করা, এইসব মিলিয়ে
যে বন্ধুটা গাড়ি চালাচ্ছিল সে ৮০মাইল/ ঘন্টা স্পিড লিমিটে ১১০-১২০ মাইল/ ঘন্টা
গাড়ি ছোটাচ্ছে তখন। যথারীতি আশংকা সত্যি করে পুলিশ ধরল। আমাদের মুখ দেখেই হোক কি
তার মেজাজ ভালো ছিল বলেই হোক, দেখি ওয়ার্নিং দিয়েই ছেড়ে দিয়েছে। ফাইন করেনি। আমরা
তারপর থেকে অবশ্য ভদ্র বাচ্ছা হয়ে গেছিলাম।
ব্রাইস ক্যানিয়নটা লাল পাথরের
বিভিন্ন স্ট্রাকচারে ভরা। সে কখনও ধাপ
বেয়ে নেমে গিয়ে কখনও উঠে গিয়ে অবাক করা সব ক্ষয়ে যাওয়া পাথর দেখে চমকাতে হয় বটে।
কেউ দেখতে অবিকল একটা মানুষের মতন; কোনো স্ট্রাকচার মন্দিরের মতন।
zion ক্যানিওন-এ একটা ওয়াটার
হাইকিং-এর স্পট আছে। মানে দুপাশে পাহাড়, মাঝে নদী। সেই নদী হাঁটু জল, কিন্তু
স্রোতস্বিনী। সেই নদী বেয়ে বেয়ে এগিয়ে যাওয়া। অদ্ভুত আদিম অনুভূতি হয়। যেন সেই
কোনকালের কোনসময়ে পৌঁছে গেছি; যখন এই বাড়ি গাড়ি মোবাইল ইন্টারনেট- এর
সভ্যতা ছিল না তখনও এই নদী এই পাহাড় এভাবেই বয়ে গেছিল।
ওখান থেকে যে জায়গায় যাবার কথা
ছিল সেখানে পৌঁছে দেখা গেল তা আগের রাতে ঝড়ের কারণে বন্ধ হয়ে আছে। আমাদের মন-টন
ভারি খারাপ হয়ে গেল। তখন ম্যাপ দেখে আশেপাশে কোথায় যাওয়া যায় খোঁজ করতে করতে
দেখি পেজ বলে একখান জায়গা আছে, যেখানে গেলে কিঞ্চিৎ দূর হবে কিন্তু সেখানে হর্স শু
বেন্ড বলে একটা জায়গা আছে, যা ভারি চমৎকার। আমাদের দলটা ভালো ছিল। দেরি হবে ফিরতে
জেনেও চটপট সিদ্ধান্ত নেওয়া হল আমরা লেক পাওয়েল হয়ে পেজ হয়ে বাড়ি ফিরব। এদিককার
প্রকৃতি রুক্ষ। মালভূমি
পাহাড়। কোনও গাছ নেই। তার মধ্যে হঠাৎ নীল জল দেখে চোখ জুড়োয়।
হর্স শু বেন্ড জায়গাটা যে কী
সুন্দর তা লিখে বোঝানো যাবে না। সত্যি সত্যি এখানে নিশ্চয়ই পরীরা আসে জল খেতে রাত্তিরে।
তোমরা নিজেরাই দেখে নাও।
______
ছবিঃ লেখক
বড্ড ছোট লেখা একটা অসাধারণ জায়গার বর্ণনার জন্য
ReplyDeleteHyan lekha ta khub sundor kintu baddo choto...bhramar kahini porlei bag kandhe niye berie porte icche kore...sei mejajtai chole elo..
ReplyDelete