বইঃ নিজেই করো গোয়েন্দা গিরি
সম্পাদকঃ স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রকাশনাঃ উজ্জ্বল সাহিত্য মন্দির,
কলকাতা
আলোচনাঃ ঋজু পাল
এক বৃদ্ধ প্রকৃতিবিজ্ঞানীর অস্বাভাবিক মৃত্যু
নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা কলকাতার প্রশাসনকে। মাথার চুল ছিঁড়তে বাকি রেখেছিলেন
গোয়েন্দারা, কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি।
এরকম খবর আমরা প্রায়ই খবরের কাগজে পড়ে থাকি।
উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়া অপরাধ সমাজে এনে দিয়েছে এক অস্বস্তিকর পরিবেশ। উপযুক্ত
প্রমাণের অভাবে বহু কেস আদালতে বন্ধও হয়ে যায় ... তার সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। আমরা
যারা ছোট থেকে বইকে বন্ধু হিসেবে বেছে নিয়েছি, তাদের চিন্তাভাবনা বা বলা ভালো সঠিক
সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা যে অন্য পাঁচজনের চেয়ে বেশি, একথা সবাই জানে। তাই অনেক
সময় চায়ের কাপে তুফান তোলা বাঙালির গণ্ডি থেকে বেরিয়ে কিছু ঘটনা আমাদের ভাবায়। আমি
নিজে হলে কি করতাম ওই পরিস্থিতিতে... এই প্রশ্নটা জীবনের পথে এগিয়ে চলতে গেলে যেমন
বিশেষ ভাবে প্রয়োজন... ঠিক তেমনই প্রয়োজন গোয়েন্দাগিরি করতে!!!
কি? অবাক হচ্ছ? এতদিন তো ব্যোমকেশ, ফেলুদা, হোমস
অনেক পড়লে, তা গ্রে ম্যাটার-টা কতটা জবরদস্ত হল সেটার পরীক্ষা নেবে না নিজে? ইচ্ছে
তো সবারই করে চোখের পলকে আপাতদৃষ্টিতে লুকিয়ে থাকা সূত্রগুলো জোড়া লাগাতে... তাই
না?
ধরো তোমার সামনে কতকগুলো ঘটনা স্ক্রিপ্ট আকারে
দিয়ে দেওয়া হল, তুমি হলে গোয়েন্দা X, ফেলুদার তোপসের মত তোমার সহযোগী Y, আর আছেন
তোমাদের সাহায্য করার জন্য ইনস্পেক্টর Z।
যেমন ধরো, এক বিখ্যাত
গয়নার দোকান। দিনের বেলায় একটা বহুমূল্য হীরের আংটি পাচার হচ্ছিল, ঘটনাপ্রবাহে
তুমিও সেই সময় সেই দোকানে। তোমার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি কী দেখতে পাবে সেটা?
বা, ধরো এক সুচতুর
মূর্তি চোর, হাজার লোকের ভিড়ে মন্দির থেকে আসল প্রাচীন মূর্তি নিয়ে চম্পট দিচ্ছিল।
পারবে তাকে কব্জা করতে? ভিড়ের মধ্যে তাকে চিনতে?
এক ভদ্রমহিলা এলেন তোমার
কাছে, উদ্বিগ্ন হয়ে... প্রবাসে থাকা ছেলের সাথে ফোনে কথা বলতে গিয়ে তিনি শুনতে পান
গুলির শব্দ, দরজা ভাঙ্গার আওয়াজ। সত্যিই কি ভদ্রমহিলার ছেলে কোন বিপদে পড়েছে? নাকি
অন্য কিছু... !
রাজাবাজারে দুটি খুন
হয়েছে। তদন্তে খুনি ধরাও পড়ল! কিন্তু সে যে খুন হওয়ার পনেরো দিন
আগেই মারা গেছে। এ কী করে সম্ভব? তুমিও কি এটাই বলবে বাকিদের মত যে মৃত
মানুষ খুন করেছে... না আসল রহস্য সমাধান করবে?
এমনই সব মাথা খাটানো
বাস্তবসম্মত কুড়িটি ঘটনা এই বইতে দেওয়া আছে। প্রতিটি ঘটনার শেষে আছে একটি প্রশ্ন,
যা তোমাকে মাথা খাটিয়ে সমাধান করতে হবে গোয়েন্দা X হয়ে। সাথে পাবে বিচক্ষণ গোয়েন্দা হতে গেলে কিভাবে চোখ কান খোলা
রাখতে হয়, তার কিছু নির্ভেজাল টিপস। ভুলেও সেগুলো অন্য কাউকে
বলবে না, নয়তো সবাইকে তাক লাগাবে কী করে?
বইয়ের শেষে আছে সমাধানও।
তবে কিনা বন্ধুরা যদি সত্যিই গোয়েন্দা হতে চাও, ভুলেও আগেভাগে উত্তর দেখো না, নিজে
সমাধান করার চেষ্টা করো। তবেই না ফেলুদা, ব্যোমকেশকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখতে, সেটা
বাস্তবে রূপ পাবে।
ঠিক বললাম তো? তাই আর
দেরি নয়, চটপট বইটা পড়ে নিজেকে সবার সামনে গোয়েন্দা হিসাবে তুলে ধরো। All The Best.
______
দারুণ বইয়ের সন্ধান দিলে, লেখাটিও পড়ে ভাল লাগল।
ReplyDeleteবইটা এখন পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম, কিন্তু খোঁজ করবই। আলোচনার জন্য ধন্যবাদ।
ReplyDeleteএক বৃদ্ধ ভদ্রলোক রাত 10 টায় খুন হন। আপনার ডিটেকটিভ সত্বা জাগ্রত করুন খুনীকে পাকড়াও করতে
ReplyDeletehttps://www.fosterbrain.com/2020/07/murder-at-10pm.html?