বিজ্ঞান:: পুজো সংখ্যার বিজ্ঞানের পাতা - বিভাগীয় সম্পাদক


পুজো সংখ্যার বিজ্ঞানের পাতা
বিভাগীয় সম্পাদক

পুজো সংখ্যার বিজ্ঞানের পাতার লেখা ও লেখকদের সঙ্গে তোমাদের পরিচয় করিয়ে দিই।

প্রকল্প ভট্টাচার্য চেন্নাইবাসী ও বেসরকারী সংস্থায় কর্মরত হলেও লেখালিখি চালিয়ে যাচ্ছেন বহুদিন ধরেই। শব্দের ওপর তার দখল ঈর্ষণীয়। অনেকগুলো লিটল ম্যাগের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত প্রকল্প ছোটদের জন্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একেবারে অন্য কায়দায় লিখতে সিদ্ধহস্ত। এই সংখ্যায় তার লেখা ‘হজম ওলা’ আদতে একটা নাটক, তোমরা ইচ্ছে করলে যা অভিনয় করে দেখাতে পার স্টেজে। নামেই প্রমাণ, লেখাটা খাদ্যবস্তু হজমের বিভিন্ন পর্যায়ের পর্যালোচনা।

পল্লব কুমার চট্টোপাধ্যায় দীর্ঘদিন ধরেই খনিজ তেল উত্তোলন সংক্রান্ত সংস্থার সঙ্গে যুক্ত একজন প্রযুক্তিবিদ। মধ্যপ্রাচ্যের এই প্রবাসী বাঙালির বিভিন্ন বিষয়ে যেমন জ্ঞান, লেখালিখির হাতটিও তেমন চমৎকার। ‘খনিজ তেলের অজানা কথা’ শিরোনামের লেখাটাতে ভারতে খনিজ তেল আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে মাটির তলা থেকে তেল তোলা ও তাকে পরিশুদ্ধ করে কীভাবে ব্যবহার করা হয়, তার বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়েছে প্রাঞ্জল ভাষায়। ম্যাজিক ল্যাম্পে এর আগে তোমরা তনুশ্রী চক্রবর্তীর লেখা তেল তোলার গল্প পড়েছিলে। সেটা ছিল সমুদ্রের তলা থেকে তেল তোলার ছক। এটা পড়লে জানতে পারবে খনিজ তেল নিয়ে অনেক অজানা কথা।

তোমরা যারা নিয়মিত ম্যাজিক ল্যাম্পের পাঠক, তোমাদের সঙ্গে সূর্যনাথ ভট্টাচার্যের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বর্তমানে দিল্লীবাসী এই প্রযুক্তিবিদের ধ্যান জ্ঞান হচ্ছে অঙ্ক, বিশেষ করে সংখ্যা। আগেও যেমন, এই সংখ্যাতেও তেমনি তিনি সংখ্যার মধ্যের রহস্য ছোটদের মত করে ধরবার চেষ্টা করেছেন ‘এ তো জানাই ছিল’ শীর্ষক লেখাটিতে। পড়ে দেখ আর সবাইকে চমকে দাও।

দীপা দাস আদ্যন্ত একজন শিক্ষিকা। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় তিনি ঘুরে ঘুরে বাস করলেও রাঁচিই তার প্রথম পছন্দের জায়গা। তার বিষয় রসায়ন হলেও এই সংখ্যায় তিনি লিখেছেন কিছু কিছু বস্তু ও সূত্রের আবিষ্কার নিয়ে। আবিষ্কার যে সব সময় পরিকল্পনা করে হয় না, মাঝে মাঝে হয়ে যায় সম্পূর্ণ ভুল করেই, যদিও তুখোড় পর্যবেক্ষণ ও সমপরিমাণ সংশ্লেষণের মাধ্যমেই, তা তিনি প্রকাশ করেছেন ‘ভুল হয়ে গেল ফুল’ শিরোনামের প্রবন্ধে। পড়লেই জানবে বিভিন্ন বিজ্ঞানী ও তাদের হঠাৎ করে পাওয়া আবিষ্কারের কাহিনি।

সুব্রত গোস্বামীর বিষয় বাণিজ্য, কিন্তু সব রকমের লেখায় সিদ্ধহস্ত। একজন অনুসন্ধিৎসু শিশু কীভাবে তার মনের রসদ মিটিয়ে চলে বিভিন্ন স্থান থেকে মজার মজার তথ্য সংগ্রহ করে, হার মানিয়ে দেয় এমনকি বড়দেরও, তাই নিয়েই লেখা ‘জ্ঞান দেবেন না, প্লিজ’তোমাদের নিঃসন্দেহে ভাল লাগবে। মনে হবে, আরে, আমিও তো লিখতে পারি। সেটাই সম্ভবত উদ্দেশ্য এই লেখকের। চেষ্টা করে দেখবে নাকি?

দেবজ্যোতি ভট্টাচার্যর সঙ্গে তোমাদের আর কী পরিচয় করিয়ে দেব? বহুকাল ধরে উনি সম্পাদনা করে আসছেন ছোটদের মনোজ্ঞ ওয়েব পত্রিকা জয়ঢাক। কুড়ি বছর ভারত সরকারের আমলা স্বেচ্ছা-অবসর নিয়ে এখন লেখালিখিতেই ব্যস্ত। ‘টাইম ট্র্যাভেলের রহস্যময় দুনিয়া’র বিষয়বস্তু তো বোঝাই যাচ্ছে। তবে এটা কল্পবিজ্ঞান নয়, বরং টাইম ট্র্যাভেল বিষয়টার আপাত প্যারাডক্স ও তার জটিল ফাঁদ থেকে মুক্তির এক বিষয়ভিত্তিক পর্যালোচনা। পড়ে দেখলেই বুঝবে।

কেয়া মুখোপাধ্যায় আমেরিকা-প্রবাসী গবেষক ও বিভিন্ন পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত লেখক। প্রকৃতির এক আশ্চর্য রূপ, পাতা ঝরার আগে তার রঙের বাহারি খেলা ও তৎসংক্রান্ত জৈবিক ও রাসায়নিক পরিবর্তন ‘পাতা ঝরার আগে’-র উপজীব্য। আমাদের দেশের বিশেষত বাংলার সাধারণ পর্ণমোচী উদ্ভিদজগতে এই ব্যাপারটা ততটা পরিলক্ষিত হয় না, যতটা হয় আমেরিকা বা ইওরোপে। সঙ্গে অসাধারণ কিছু ছবির সঙ্গে এই বিষয়ের অবতারণা করেছেন কেয়া।

সৌম্যকান্তি জানা ম্যাজিকল্যাম্পের নিয়মিত বিজ্ঞান লেখক। একদা উদ্ভিদবিজ্ঞানের ছাত্র ও বর্তমানে শিক্ষক সৌম্যকান্তি বিজ্ঞান নিয়ে নিয়মিত লেখালিখি করেন বহু পত্র-পত্রিকায়। দুর্গাপুজো উপলক্ষে তাকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছিলাম নবপত্রিকার উদ্ভিদবিজ্ঞান নিয়ে। আমাদের পুজোগুলো যে সবই আসলে প্রকৃতির পুজো, শস্যের পুজো বিভিন্ন প্রতীকে, তার ব্যাখ্যা নিয়ে সৌম্যকান্তি হাজির হয়েছেন এই সংখ্যার লেখায়। শীর্ষক – নবপত্রিকাঃ দেবী দুর্গারূপে উদ্ভিদশক্তির আরাধনা।

আমার লেখা ‘রসিক সায়ন’ নিবন্ধটিকে বিজ্ঞান বললে খুব বেশি বলা হয়ে যাবে। এর মধ্যে বিজ্ঞান কিছু নেই। যেটা আছে, তাকে বলা যেতে পারে অ্যাসোসিয়েশন। মেমরি বা স্মৃতি নির্ভর করে অতীতের কোনও একটা জিনিস দেখা বা শোনা গল্পের ওপর। একটা উদ্ভট গল্পের মধ্যে কী করে প্রয়োজনীয় কিছু নাম লুকিয়ে রাখা যায়, যা পরে স্মৃতি থেকে উদ্ধার করা হয়ত সম্ভব হতে পারে, না বলে সেটাকেই লুকিয়ে রাখার চেষ্টা হয়েছে এই লেখাটায় দেখো দেখি কাজের কিছু আছে কিনা।

ন’খানা লেখা আমাদের বিজ্ঞানের পাতার নবপত্রিকা তোমাদের কেমন লাগল, জানাতে ভুলো না। আবার দেখা হওয়ার আগে পুজো আনন্দে কাটুক সকলের।

-      অমিতাভ প্রামাণিক
______

No comments:

Post a Comment