ছড়া-কবিতা:: প্রস্তুতি - সুজাতা চ্যাটার্জী

প্রস্তুতি
সুজাতা চ্যাটার্জী

দূর্গা পুজোর কদিন আগে, ভীষণ রকম হই চই,
কৈলাসেতে রব উঠেছে, সবাই হাঁকে কই? কই?
সরস্বতীর হলুদ ব্লাউজ, যাচ্ছে না তো পাওয়া,
লক্ষী দিদির একটি বালা, কোথায় যেন হাওয়া।
একটি প্যাকেট লাড্ডু ছিল, গণেশ দাদার স্টকে,
সাবধানেতে লুকিয়ে রাখা, দামি কী অ্যান্ড লক-এ।
সেটাও চোখে পড়ছে না তো, কোথায় যেন হাপিশ,
হারিয়ে গেছে নতুন ধুতি, কার্ত্তিকদার নালিশ।
মা দূর্গা ব্যস্ত ভীষণ, করেন খোঁজাখুঁজি,
অসুর মারার ত্রিশুল খানা হারিয়ে গেল বুঝি।
সরস্বতীর মাথায় হাত, পরবে কেমন করে?
নীল ব্লাউজে হলুদ শাড়ি? হাসবে সবাই জোরে।
লক্ষী দিদি ভাবছে বসে, প্রেস্টিজ আর থাকবে?
বালাবিহীন একখান হাত, কেমন করে ঢাকবে?
একলা বসে গণেশ দাদা, ব্যাকুল মনে ভাবে,
ভোগের থালা আসার আগে, খাবার কোথায় পাবে?
কার্ত্তিকদার চিন্তা বেজায় কী করে আজ কমবে?
পুজোয় এবার ইমেজখানা কেমন করে জমবে?
সবার এমন চিন্তা দেখে রাগ করে মা বলে,
“নিজের নিজের স্বার্থ নিয়ে থাকলে বুঝি  চলে?
একলা মানুষ, দশটি হাতে করছি শুধুই কাজ,
আমার এমন বিপদ খানা দেখছে না কেউ আজ!
অস্ত্র আমার আছে অনেক, নেইতো তাতে ভুল,
ত্রিশূল ছাড়া মারলে অসুর, লাগবে না তো কুল!
নিজের নিজের ভাবনা ছেড়ে, প্রবলেমটা বোঝো,
সবাই মিলে জোর কদমে, ত্রিশুল খানা খোঁজো।”
শান্ত মানুষ, দেবাদিদেব, ঘুমোচ্ছিলেন ঘরে,
এমনতর গণ্ডগোলে, চমকে উঠে পড়েন।।
বলেন এসে, “শান্ত হয়ে, আসল কথা শোনো,
সবার জিনিস ঠিকই আছে, ভুল হয়নি কোনও
এত লাগেজ থাকলে সাথে, কষ্টের নেই শেষ,
তাইতো আগেই শিপ করেছি, দুই খানা স্যুটকেস।
ত্রিশুল খানা সাবধানেতে যতই রাখো ঢেকে,
প্রতি বছর আটকায় ঠিক, সিকিউরিটি চেক-এ,
তাইতো সেটাও, থাকতে সময়, করেছি পার্সেল,
পৌঁছে যাবে ঠিক টাইম-এ, উইদাউট ফেল।
এবার সবাই ঠাণ্ডা মাথায় প্রস্তুতিটা সারো,
আমি বরং ঘুমিয়ে নিই ঘণ্টা খানেক আরও।।”
_____
ছবিঃ সুমিত রায়

1 comment:

  1. Khub bhalo hoyechhe, bes ananda pelam pore. Chaliye jao.

    ReplyDelete