বিষয় -
ফটোগ্রাফি
এক্কেবারে ছবির মতো
তনুশ্রী
চক্রবর্তী
এক
পিসীমার মন ভাল নেই! থুড়ি, শরীর ভালো নেই! ছেলে বৌমা নাতিনাতনিরা অস্থির হয়ে যাচ্ছে চিন্তায়।
পিসীমার খানিক বয়স হয়েছে
বটে - যদিও ভজনপূজন-সর্বস্ব জীবন কাটানোর অবস্থা আসেনি এখনও, এদিকে
নাতি নাতনিরাও বড় হয়ে গেছে – তারাও আর সবসময় কাছাকাছি ঘুরঘুর করার বয়সে নেই আর
ঠিক! হঠাৎ করেই এহেন কর্মহীন, অনায়াস-হয়ে-পড়া জীবনটা চির-চটপটে, পড়ুয়া, কেজো পিসিমার পক্ষে
ঠিক পোষাচ্ছে না। জানা গেছে সবচেয়ে ছোট নাতিটিও ক্লাস নাইনে উঠে
প্রাইভেট টিউশন যেতে শুরু করার পরই শুরু হয়েছে এই ‘অসুস্থতা’। কেউ এ ব্যাপারে কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না – কারণ পিসিমার মতে তিনি
ঘোর অসুস্থ। তাঁর সবসময়ই জ্বরজ্বর ভাব, পেটে ব্যথাব্যথা করে, শীতশীত লাগে… ডাক্তাররা নাকি কোনও অসুখই ধরতেই পারছে না!
কলকাতা এসে শুনলাম এই
সব গল্প। পিসিমাকে আমি বড়ই ভালোবাসি – উনি অসাধারণ মানুষ, খুব ভালো লাগে
সময় কাটাতে ওনার সাথে। আমার প্রবাসী জীবনে দেশে আসা ছুটির দিনগুলো খুব টিপে টিপে
খরচ করতে হয় - সময় সামান্য আর মানসিক তাগিদা একরাশ – তাই কোন একটা জায়গায়
খুব বেশি সময় কাটানোর জো নেই। তাও স্থির থাকতে পারলাম না!
এক দুপুরে উপস্থিত
হলাম পিসিমা-সকাশে!
খাওয়া দাওয়ার পর সেই
পুরনো দিনের উঁচু সিলিং লাল মেঝে ঠান্ডা ঠান্ডা
ফুলবাতাসা মার্কা গন্ধওয়ালা ঘরে উঁচু খাটে বালিশ মাথায় বেশ ঘুমঘুম আসছিল। পিসিমা পাশে বসে
সকালের আনন্দবাজারটা তন্নতন্ন করে পড়ার ফাঁকে ফাঁকেই তখন দুঃখ
প্রকাশ করে চলেছেন যে তার ভঙ্গুর অসুস্থ শরীরের জন্য কিভাবে তিনি আমার যথেষ্ট যত্ন
নিতে পারছেন না।
এই সব
সেন্সিটিভ সময়ে ঘুমিয়ে পড়াটা খুব পাশবিক ঠেকবে – তাই আধো ঘুমের মধ্যেই বললাম, “পিসীমা, আমি কিন্তু ধরতে
পেরেছি তোমার অসুখ!”
পিসিমা তখন খবর শেষ
করে ‘তান্ত্রিক’ ‘বশীকরণ সম্রাট’, ‘বন্ধু চাই’ এইসব পাতায় চোখ বুলিয়ে
“মাগোমা” করে শিউরে উঠতে শুরু
করেছেন কি করেননি – আমার কথা শুনে একটু চমকালেন!
- ‘কি অসুখ রে?’
বললাম - “রাজার অসুখ।”
পিসিমার মুখের যা হাল
হল দেখে বুঝলাম কিছু একটা কেলো করেছি বোধহয় – একটু খুলে বলা দরকার!
কিন্তু বিশদে বলতে শুরু করার আগেই পিসীমা আঁতকে উঠে বললেন, “রাজার অসুখ?
রাজরোগ? সে কি রে? সে তো ভয়ঙ্কর
ব্যাপার!”
এবার উঠে বসতেই হ’ল, “উফ পিসীমা! আরে, রাজরোগ নয়, কী মুশকিল! তুমি তো এত্ত বই পড় রাতদিন...” (…“কই আর পড়ি,
কিছুই আর আজকাল ভালো লাগে না…” …থামিয়ে দিয়ে
কন্টিনিউ করলাম…) রাজার অসুখ গল্পটা
পড়োনি? সেই যে সুকুমার রায়ের লেখা …সেই যে এক রাজার
ভারি অসুখ। ডাক্তার ফাক্তার আসে আর যায় কিন্তু অসুখটা
সারাতে পারে না। সারাবে কী করে? অসুখ তো আর সত্যিকারের নয়। রাজামশাই কেবলই বলেন,
'ভারি অসুখ', কিন্তু কোথায় যে অসুখ তা
আর কেউ খুঁজে পায় না” –
পিসিমার মুখটা একটু
অভিমানী দেখাল – “হ্যাঁ পড়েছি!” তারপর একটু থেমে
বললেন, “তুইও এরকম বলছিস?”
আমি বললাম, “শোনো পিসীমা, একটা
কমন থিওরী আছে, জানো তো? জোড়া-জোড়া অসুস্থতা, যেমন গা হাত
পা ব্যথাব্যথা, জ্বরজ্বর, শীতশীত...
ইত্যাদির মানে হল তোমার শরীর একদম
পারফেক্ট আছে, কিন্তু
তোমার
মনটা ঠিক ভাল নেই! বুঝলে?
আর মন ভালো করার সবচেয়ে বড় ওষুধ কী বল তো? একটা জম্পেশ
হবি! নতুন কিছু একটা শুরু কর করতে, বুঝলে?”
“কী
করব বল – যা
ছিল সবই তো গেছে, আগুনের
কাছে যাই না আর – রান্নাবান্না
বন্ধ, ক্রস ওয়ার্ডও করতে পারি না
আর, কিছুই
মনে থাকে না ছাই, পড়তেও
যেন আর ভাল লাগে না – নতুন
বই যোগাড় করাও ঝামেলা... ওই স্মার্টফোন একটা ধরালি লাস্টবার এসে, সেও তো টাইপ
করতেই দিন কাবার...”
আমিও বেশ
দমেই যাচ্ছিলাম, হঠাৎ
স্মার্টফোন শুনেই আমার মাথার টঙে একটা লাইট বাল্ব জ্বলে উঠল – “ইউরেকা!!! তুমি
ফোটোগ্রাফি শুরু কর না পিসিমা – আমি শেখাবো তোমাকে!”
“ওরে
বাবা! সে তো ভয়ানক ব্যাপার! ও সব আমি পারব না। তোর পিসেমশাইয়ের ওই গাব্দা ক্যামেরা
তো আলমারিতেই তোলা থাকে! আমাকে দিত এক দু’বার তুলতে, তারপর সেই ছবি দেখে
চটে যেত – খালি নাকি আকাশ আসতো আর একটুখানি মুন্ডু – কী রাগ – অনেক শিখিয়েও আমি পারিনি! ...... ও আমি পারব না!!!”
“ও সব ক্যামেরা লাগবে না! ও ছাড়াই হবে। তুমি তো স্মার্টফোনেই ফটো
তুলতে পারো – তাতেই
হবে!”
“স্মার্টফোনে, য্যাঃ –ওসব তো
হাবিজাবি!”
“শোনো
পিসিমা – হাবিজাবি
করে
তুললেই হাবিজাবি – সুন্দর করে তুললেই সুন্দর! আর, সুন্দর
ছবি তোলার জন্য একটা দারুণ ক্যামেরা চাই কে বলেছে? তোমার হাতে যা আছে তাতেই তুমি
অনেক ভালো ছবি তুলতে পারবে! জানো এক বিখ্যাত ফটোগ্রাফার চেজ
জার্ভিস একটা আস্ত বইই লিখে গেছেন এর উপরে, the
best camera is the one that's with you.”
পিসীমা একটু একটু সোজা হয়ে বসছে দেখে খুশী হলাম!
“শোন পিসীমা,
আমি খুব কম জানি – আর
কম জানি বলেই তোমাকে শেখাতে আমার সুবিধা। খানিক পড়াশোনা করার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার
কোনকালে... তাই এ বি সি ডি যা শিখেছি তাই তোমাকে শেখাবো। তুমি
কিন্তু আমার
তুলনায় অনেক বড় বড় এক্সপার্ট অনেক পাবে আশেপাশেই –কিন্তু তারা তোমাকে সহজ করে মোটেই
শেখাবে না – (তাহলে
তারা যে এক্সপার্ট সেটা সবাই বুঝবে কী করে শুনি?J)! আর আমি
যেমনি করে শিখেছি – তোমাকেও
তেমনি করেই শেখাবো - অনলাইন ডিসট্যান্ট লার্নিং, কেমন? একবার চেষ্টা করে দেখই না পারো কি না!
কে জানে – হয়ত
তোমার পড়াশোনার
ইচ্ছাটাও খানিক বাড়বে! আর তারপর তুমি নিজে নিজে শিখে নিয়ে নীলকেও শেখাবে এবার, ওর সামারের ছুটিতে – ওরও তো স্মার্টফোন আছে! নীল হয়ত তখন
কম্প্যুটার গেমস আর খেলবে না দুপুরগুলোয় – তোমার সাথে বাড়ির মধ্যেই ফটোগ্রাফির
টপিক খুঁজে বেড়াবে!”
পিসিমার মুখে আলো
দেখলাম – স্পষ্ট – আমি আবার বালিশে মাথা দিয়ে চোখ বন্ধ করলাম!
“বাকীটা চিঠিতে, কেমন?”
এক নম্বর চিঠি – লেসন নাম্বার ওয়ান
পিসীমা,
প্রথমেই বলি, ফটোগ্রাফি হল সায়েন্স আর আর্ট একসাথে মিলেমিশে তৈরি এক সমসত্ত্ব
মিশ্রণ। কোনটাকে ছাড়া কোনটার চলে না! তবে সুবিধা কী
জানো তো, আজকাল অটোমেটেড টেকনোলজির দৌলতে ফটোগ্রাফির সায়েন্স পার্টটা এতই সহজ হয়ে
গিয়েছে যে অটো-মোডে ছবিও বেশ যথেষ্টই ভালো ওঠে। সেটা অনেককে সুযোগ করে দিয়েছে,
ফটো তোলার শখটা সহজে মেটানোর ব্যবস্থা করে! আমার পরিচিত অনেকেও দেখেছি ডিএসএলআর
(ওই যেটাকে তুমি গাব্দা ক্যামেরা বল) ক্যামেরায় ছবি তোলেন, অথচ কোন টেকনিক্যাল
ব্যাপারে যানই না; স্রেফ অটো বা প্রোগ্রাম মোড (ওই অটোরই নামান্তর)-এই থাকেন, এবং বিশ্বাস
কর, খুবই ভালো ছবিও তোলেন! তার কারণটা কী বল তো? ওনারা আর্টের দিকটা বোঝেন
ভালো, আর ফটোগ্রাফি তো শেষ অবধি একটা আর্টই। তুমি
সাহিত্যের মানুষ। তোমাকেও তাই টেকনিক্যাল
কচকচি শেখাব না একদম –অন্তত শুরুতে। আমার এই লেসন নাম্বার ওয়ান হবে একদম যাকে বলে প্রাইভেট
বাসের রিজার্ভড সিট – শিশু
ও বৃদ্ধদের জন্য শুধু! এফ-স্টপ, শাটার স্পিড, আই এস ও – এসবের নামই
নেব না। এক্সপোজার ট্র্যাঙ্গেল – রাম রাম -
খায় না মাথায় দেয়! ওদিকে যাবই না। শুধু আর্ট ব্যাপারটা নিয়েই বলব – আর খুব
সামান্য কিছু বেসিক কথা না জানালে পাপ হবে, সেগুলো তো বলতেই হবে!
ব্যাস! হয়ে গেল! তারপর কিন্তু তোমাকে জানাতে হবে তুমি কী চাও, মনে যা যা প্রশ্ন আসে
সে সব – তার উপর ভিত্তি করে পরের লেসনগুলো পাঠাব।
শুরুতে জানাই -
ফোটোগ্রাফী মানে হল ‘আলো দিয়ে ছবি আঁকা’; গ্রীক শব্দ photos মানে আলো আর
graphé মানে "representation by means
of lines" যার সোজা অর্থ ‘ড্রয়িং’! “আলো” আর “ছবি আঁকা”
কথার মধ্যেই লুকিয়ে আছে ফোটোগ্রাফির নির্যাস - তাই “আলো” ব্যাপারটার
মাহাত্ম্যটা তোমাকে মাথায় রাখতেই হবে; আর “ছবি আঁকা” কথাটারও, তাহলেই
তুমি সিঁড়ির প্রথম ধাপটা উঠে পড়বে চট করে!
ফটোগ্রাফিতে
আলোর গুরুত্ব অসীম। ভেবে দেখো, দিনের আলোয় ছবি তুললে সে ছবি যত
স্পষ্ট হয়, মেঘলা
হলে বা সন্ধ্যেবেলা তেমন হয় না, তাই না? গ্রেন চলে আসে... বালি বালি
একটা ভাব (গ্রেইনস)। আবার কিছু কিছু ছবি যেন কম
আলো ছাড়া মানায়ই না... যেমন ধরো মোমের আলোয় ছবি,
অন্ধকার ঘরের ভিতরের ছবি, কুয়াশার ছবি, অথবা ছায়ায় ছবি! কারণ আলো তো শুধু
স্পষ্ট ছবি তোলার জন্যই জরুরী তা নয়, আলো নির্ধারণ করে দেয় একটা
ছবির মুড, তার টোন, পরিবেশ, সৌন্দর্যও। শুধু
তাই নয় - আলো কোন দিক থেকে আসছে তার উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করে। এককথায় শুধু আলো
নিয়েই
একটা আলাদা পর্ব লিখব তোমার জন্য, আপাতত খালি কিছু ছবি দেখাই আর কিছু শব্দগুচ্ছ
জানিয়ে রাখি! পরে কাজে দেবে–
এই যে – এই একজোড়া ছবি দেখো – কি বলতে চাইছি আলো নিয়ে সেটা একদম স্পষ্ট,
তাই না? কিছুই বলে দিতে হবে না।
আলো কোনদিক দিয়ে
সাবজেক্টের উপর পড়ছে তার উপর ভিত্তি করে কিছু শব্দবন্ধ জেনে নাও – যেমন সাইড-লাইট,
ব্যাকলাইট আর ফ্রন্টলাইট। এই সামান্য তফাতটাই ছবিকে অনেক
অসামান্য করে তোলে –তোমার “হাবিজাবি” ছবিও হয়ে ওঠে
দেখবার মতোই। একটা হাবিজাবি ছবি (যাকে টেকনিকালি বলে স্ন্যাপশট) আর ভালো ছবি
(ফটোগ্রাফ)-এর মধ্যে যে জিনিষগুলো মূলতঃ তফাত এনে দেয় তা হল আলোর ব্যবহার,
কম্পোজিশন/ ফ্রেমিং, একটা পরিষ্কার সাবজেক্ট বা গল্প, আর ঠিকঠাক
ফোকাস। এ হল প্রথম ধাপের গল্প – এরপরে আরও অনেক এলিমেন্টস আছে
সেটা পরে জানাচ্ছি। আগে কিছু ছবি দেখাই! আমার তোলা নয় কিন্তু – সুবিধার জন্য নেট থেকে নিয়েছি।
প্রথমেই দেখাই কুয়াশায়
তোলা ছবি, আলো সেভাবে নেই - এটাকে বলে ওভারকাস্ট কন্ডিশন,
এখানে কিন্তু আলোর অভাবটাই ছবিটায় একটা প্রাণ এনে দিয়েছে – কারণ এই ছবির সাবজেক্ট
যদিও একটা ফুল, কিন্তু গল্পটা আরেকটু বেশি – এক কুয়াশাময় ভোরে শিশির/ বৃষ্টিস্নাত ফুল...
এবার তুমি এই ছবিটার সাথে তুলনা করলে বুঝবে কেন প্রথমটা হল ফটোগ্রাফ আর পাশের হলুদ
ফুলের ছবিটা হল স্ন্যাপশট।
এই দু’নম্বর ছবিটা মনে রেখো
– বারবার ফিরে আসব এটার
কথা বলতে!
এইবার দেখ অন্য ছবি!
উপরে বাঁ দিকের ছবিটাকে বলে ‘শিল্যুয়েট’ আর দ্বিতীয়টা ‘ব্যাকলাইটেড’ ছবি। দুক্ষেত্রেই আলো আসছে
সাবজেক্টের পিছন থেকে, কিন্তু শিল্যুয়েট আর ব্যাকলাইটেড ছবির মধ্যে যে তফাত আছে
সেটা বলার আগেই বুঝতে পারছো নিশ্চয়ই? শিল্যুয়েটে ছবির সাবজেক্টটা একদম ঘোর কালো থাকে,
যাকে বলে ওপেক (Opaque) – আদতে দুটোই ব্যাকলাইটেড।
ব্যাকলাইটেড ছবিতে
কিন্তু সাবজেক্টের ট্র্যানস্প্যারেন্সিটা খুব সুন্দর ব্যবহার করা যায় – অস্বচ্ছ আর
অর্ধস্বচ্ছ এই দুই সাবজেক্ট মিলিয়ে বেশ কিছু মোহময় ছবিও তোলা যায়... যেমন এই ছবিটা
দেখো – বেলুনের স্বচ্ছতা আর মানুষের ওপেসিটি মিলিয়ে কী দারুণ একটা ছবি! এই সব ছবি
দেখাচ্ছি তোমাকে আইডিয়া পাবে বলে। ভাবো
একবার,
এগুলো কি কোন বিরাট জটিল কোন ব্যাপার? তা তো নয় – কিন্তু তোমার মনের মাধুরী মিশিয়ে তুমি শিল্পসৃষ্টি করতে পারো এভাবেই!
ভালো ছবি তোলার আইডিয়ার জন্য ভালো ভালো ছবি দেখাটা খুব জরুরি। জানি জানি, কোথায়
পাবে জিজ্ঞেস করছ তো? সব বলে দেব, চিন্তা করো না! আর, আজ্ঞে
হ্যাঁ, মনে রেখো, এই যে সব ছবি দেখাচ্ছি এগুলো কিন্তু স-ব তোমার এই
স্মার্টফোনেই তোলা যাবে!
একই ভাবে, আলোর উৎসের
সাথে ছবির সাবজেক্টের অবস্থানের রকমফেরের উপর নির্ভর করে ফ্রন্টলাইট, সাইডলাইট
(৪৫ডিগ্রী, ৬০ডিগ্রী, ৯০ ডিগ্রী ইত্যাদি, বা যে কোন ডিগ্রী) ইত্যাদি
ধরনের ছবি তোলা হয় – দেখে নাও নীচে!
প্রথমটা ফ্রন্টলাইট। দ্বিতীয়টা হল
সাইডলাইট... ফুলের ছায়া আর আলোকিত অংশটা দেখলেই বুঝবে আলো কোথা দিয়ে আসছে,
এক্ষেত্রে যেমন ফটোর ডানদিকে উপর থেকে ওয়ান-থার্ডে মোটামুটি। কোন আলো কখন কী জন্য ব্যবহার করা হয়
সে নিয়ে পরে জানাব।
আচ্ছা, তুমি নিশ্চয়ই
ভাবছ, তোমাকে কেবলই ফুলের ছবির উদাহরণ দিচ্ছি কেন? কারণ, তোমার বাগানে অজস্র ফুল,
আর এই এই ছবিগুলো যাতে তুমি এক্ষুনি এক্ষুনি তোলবার চেষ্টা করতে পারো, সেইজন্য। কিন্তু এই শেখার
সিঁড়ির দ্বিতীয় ধাপে উঠে গেলে তখন কিন্তু আর ফুলের ছবি বা সূর্যাস্ত বা সূর্যোদয়ের
ছবি ভাল লাগবে না তোমার। (ভাল কথা মনে পড়েছে, সূর্যাস্ত
বা সূর্যোদয়ের ছবিও তোলার চেষ্টা কোরো তো কয়েকটা, আমাকে পাঠিও হোয়াটস অ্যাপে – তারপর আমি সেই প্রসঙ্গে
আলোচনায় যাব) তবে দ্বিতীয় ধাপে ওঠার অন্যতম প্রধান অংশই তো এখনও বলা হ’লনা, ফটোগ্রাফির আর্ট
বলতে যা বোঝায়,তার নাম হ’ল কম্পোজিশন আর ফ্রেমিং।
এটাই হল ফটোগ্রাফির
আর্ট পার্টের প্রথম ও প্রধান অধ্যায়। মানেটা বুঝতে পারছ নিশ্চয়ই – কম্পোজিশন মানে
ছবির সাবজেক্টকে সাজিয়ে নেওয়া, ছবি তোলার আগে, মনে মনে। কম্পোজ করা মানে
সাজানো, ফ্রেমিং মানে কীভাবে সেটা করছ, কোথায় কী রাখছ। তুমি খেয়াল
করেছ নিশ্চয়ই আগে ফিল্ম-ডিরেক্টরেরা কেমন দুহাতের বুড়ো আঙুল আর তর্জনীর সাহায্যে
একটা চৌকো মিছিমিছি ফ্রেম বানিয়ে তার মধ্যে দিয়ে দেখতেন চারপাশ – এটাকে বলে শট কম্পোজ করা,
মানে ছবির ফ্রেমের মধ্যে কী কী থাকবে আর কী কী থাকবে না
– পরিচালক সেটা ক্যামেরাম্যানকে বোঝালে ক্যামেরাম্যান সেইভাবে ছবিটা নিতেন। এখন টেকনোলজির
কল্যাণে সেই বোঝানোর ব্যাপারটা সহজ হয়ে গেছে, কিন্তু কম্পোজিশনের মূল্য ও গুরুত্ব
এতটুকু কমেনি – কারণ তার উপর নির্ভর করেই তো ছবি
ভালো বা খারাপ সেটা স্থির হয়! স্টিল ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে ক্যামেরার ভিউ-ফাইন্ডারের মধ্যে
দিয়েই (বা, মোবাইলে তুললে তার স্ক্রীনে) কী ছবি তুলতে চলেছি তা দেখা যায় – তাই
তুমি ছবির একটা প্রিভিউ সেখানেই পেয়ে যাবে।
কিন্তু নিশ্চয়ই ভাবছো
তখন থেকে কম্পোজিশন কম্পোজিশন করছি কেন – তবে শোনো!
এই কম্পোজিশনের কিছু নিয়ম আছে – কিন্তু ‘নিয়ম’ শব্দটা
শুনেই ঘাবড়ে যেও না, নিয়ম ভাঙা যাবে না কেউ বলেনি! নিয়ম
মানা হয় একটাই কারণে যাতে তাকে আবার ভাঙাও চলে, কিন্তু সুন্দর করে – তোমার প্রিয়
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কথায় বলতে হয় “ভাঙারও নিজস্ব এক ছন্দ আছে, রীতি প্রথা আছে”। আরও বলেছেন... “অপরূপ ভাবে ভাঙা, গড়ার চেয়েও মূল্যবান/ কখনো–সখনো”। তাই নিয়মগুলো জেনে তারপর ভাঙাই ভালো, তাই না? হিজিবিজি ভাঙলেই সেটা হয়ে যাবে স্ন্যাপশট!
রুলস বলার আগে – দুটো ছবি দেখাই,
একই ধরণের ছবি – কিন্তু একটু অন্যরকম। দেখ তো – কোন ছবিটা বেশী ভাল লাগছে?
একই ছবি প্রায় – কিন্তু দ্বিতীয়টা একটু যেন দু-সেকেন্ড
বেশী আটকে রাখে চোখকে, তাই না! একই সাবজেক্ট শুধু সাজানোর বা
সাবজেক্ট প্লেসমেন্টের উপর নির্ভর করে কতটা বেশী নয়নমনোহর হয়ে উঠতে পারে সেটাই জানায়
এই প্রথম রুল, যেটা আবার কী করে ভাঙাও যায় সেটাও পরে বলব আবার – বেশ মজা
লাগতে শুরু করেছে আমার অলরেডি।
কম্পোজিশনের অন্যতম
প্রধান নিয়ম – রুল অফ থার্ড! ধরে নাও মোবাইলের স্ক্রীনে,
বা ক্যামেরার ভিউফাইন্ডারে যেখানে ছবিটা ফুটে উঠেছে সেটাকে তুমি এই
নীচের ছবির মতো দুটো সোজা আর দুটো আড়াআড়ি লাইন টেনে ভেঙে ফেললে (মনে মনে)! এবার এই
লাইনগুলো যেখানে একে অপরকে কাটাকাটি করেছে তেমন চারটে বিন্দু তুমি পাবে! এবার করবে
কী – তোমার ছবির যা সাবজেক্ট তাকে এই চারটে বিন্দুর যে কোনও একটা বিন্দুতে রাখবে,
বা সামান্য আশেপাশে! তারপর ক্লিক করবে। ব্যাস –
এই রুলটি একদম
ইউনিভার্সাল – কিছু ছবি দেখাই কী ভাবে এর প্রয়োগ হয়!
এই রুলটি বিশেষভাবে
প্রযোজ্য দিগন্তরেখা বা হরাইজনের ছবি তোলার সময়। একটু ডিটেলে বলি!
নতুন যারা ছবি তোলে
তাদের মধ্যে একটা খুব সাধারণ ভুল হয়ে যায় - প্রায়ই তারা হরাইজনকে ছবির একদম
মাঝামাঝি রাখে, অথবা বেশ অনেক সময়েই সেটা হয়ে যায় বাঁকা! অথচ হরাইজনকে কোথায় রাখবে
এই সিদ্ধান্ত নেওয়া কষ্টকর নয় মোটেই। আকাশ আর ডাঙা/ জলের
মধ্যে যেটা বেশী জমকালো, সে প্রাধান্য পাবে! মানে ছবির ২/৩ ভাগ জুড়ে সে থাকবে! আর
যদি দুটোই দুর্দান্ত হয় – তখন আসবে রুল ভাঙার পালা –
কিন্তু তার আগে মোটেই নয় –
পরের ছবিটা দেখো – এখানে
যদিও আকাশ আর সমুদ্র দুটোই বেশ বোরিং, এবং আলোর হালও বেশ খারাপ, হরাইজনটাও বাঁকা,
তাও, যদি এসব না-ও হত, আকাশকে ১/৩ আর সমুদ্রকে ২/৩ দেখানো উচিত ছিল – অর্থাৎ হরাইজনকে লাইন
নাম্বার ১ -তে রাখা উচিত ছিল! মানে কিছুটা এইরকম... (আসল ছবিটা কেটেকুটে বানালাম – ফটোর মালিক
এসে আমাকে না ধরে এবারJ!)
আসল ছবি |
সোজা করার পরে – হরাইজন লাইন ২ তে |
কেটেকুটে হরাইজনকে লাইন ১-এ এনে ফেলেছি |
এই ছবিটায় পাথরটাকে
সাবজেক্ট ভেবে নিলে সেটা ভার্টিকালি ১/৩ আশেপাশে রয়েছে। কিন্তু এটা ভালো ছবি মোটেই
না, ছিঃ – বোরিং! ভাল ছবি দেখো এবার। প্রথম
ছবিতে আকাশ সাদামাটা তাই হরাইজন লাইন ১এ, দ্বিতীয়তে আকাশ জমজমাট, তাই লাইন ২ – বোঝা গেল?
প্লিজ এক্ষুনি আবার
দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবতে বোসো না যে তোমাকে বেড়াতে যেতেই হবে
ভালো ছবি তোলার জন্য!!! কে বলেছে! দেখো তো এই পরের ছবিগুলো চেনা চেনা
লাগে নাকি!
আসল কথা কী বলো তো
– সবকিছুর মধ্যেই সৌন্দর্য আছে – আর ফোটোগ্রাফি আমাদের সাহায্য করে সেই সুন্দরটা খুঁজে বার
করার চেষ্টা করতে –কী ভীষন পজিটিভ ব্যাপারটা, না? আমরা যদি
সবকিছুর মধ্যেই এভাবে সুন্দর খুঁজে বেড়াতে পারতাম, খুঁত না খুঁজে!
আর এই হল কিছু রুলভাঙা ছবি – শক্তি কি আর সাধে বলেছেন
– সুন্দরভাবে ভাঙা গড়ার চেয়েও মূল্যবান!
এর বাইরেও,
কম্পোজিশনের কিছু পরীক্ষিত এবং সহজ টেকনিক আছে, যেটা ছবির
দর্শকের মনোযোগ আটকে রাখে ছবির উপরে। এদের বলে কম্পোজিশনের “এম্ফ্যাসিস টেকনিক” – আগে সহজ এবিসিডি-গুলো একটু সড়গড় করে
নাও – তারপর বলব এর উপরে!
কম্পোজিশনের পরের রুলে
যাবার আগে একটু বলে নিই – স্ন্যাপশট হইতে ফটোগ্রাফে উত্তরণ – এই হচ্ছে আমাদের
(তোমার আমার আর নীলের) চলার পথ!
কাজেই এই দুই ধরনের ছবির মধ্যে তফাত কী,
সেটা একটু জেনে নিলে সুবিধা হবে!
ফটোগ্রাফে থাকতেই হবে
একটা সুস্পষ্ট সাবজেক্ট অফ ইন্টারেস্ট, যদি সেটা অ্যাবস্ট্র্যাক্ট হয়, তাও! ঠিকঠাক
আলো থাকতে হবে, জঞ্জালহীন (ক্লাটার-ফ্রি) ফ্রেম চাই, আর চাই
খালি স্পেস-এর ঠিকঠাক উপযোগ (এই রে –এই ‘নেগেটিভ স্পেস’ আরেক বড় টপিক – অবশ্যই জানাব বিশদে,
কিন্তু পরে) ইত্যাদি। তাই দ্বিতীয় রুল (আবার
বলি) “ছবির সাবজেক্ট হতে হবে পরিষ্কার, বোধগম্য, ওয়েল-ডিফাইন্ড”। আমরা শিখেছিলাম – “আ পিকচার
সেইজ আ থাউজ্যান্ড ওয়ার্ডস” – এবং, লেজুড় হিসেবে মাস্টারমশাই বলেছিলেন – “অ্যান্ড ইওর ক্যাপশন শুড সে নাথিং,
ইফ পসিবল” – অর্থাৎ ছবিই কথা বলবে,
তুমি নয়, বা তোমার ক্যাপশন নয়! তোমার ছবি দেখে যেন
কারো মনে প্রশ্ন না আসে, এটা কীসের ছবি! অবাক হয়ো না, এরকম ছবি প্রায়ই
দেখি আমরা! একটা উদাহরণ দিই! একটু বড় করে দেখাচ্ছি ছবিটা।
অথচ এই ছবিটার মধ্যে
অশেষ সম্ভাবনা ছিল। লক্ষ্য করে দেখ – একটা সুন্দর লালমাটির রাস্তা,
পাশে নীল জলের ভেড়ি, একজন গেরুয়াধারী এবং তার পিছনে ইলেক্ট্রিকের পোলের নবীন-প্রবীণ বৈপরীত্য,
একটা গ্রামীণ চায়ের দোকানের মানুষের আড্ডা!
প্রতিটিই সুন্দর মুহূর্ত, ছবি তোলার মতই
- কিন্তু আবেগে ভেসে গেলে চলবে না! এ তো ফটোগ্রাফারের পরম
সৌভাগ্য, একই জায়গায় দাঁড়িয়ে খানিক এদিক ওদিক হাঁটলেই এই প্রতিটি সাবজেক্টকে আলাদা
করে ধরতে পারতেন তিনি – কিন্তু এখন এই মুহূর্তে
এই ছবিটি একটি ফোটোগ্রাফ হয়নি,
এটাকে বলা হবে স্ন্যাপশট! ঠিক তেমনি
– হলুদ ফুলের দু-নম্বর ছবিটা মনে করো। ওখানে তো এত কিছু
ছিলনা – কিন্তু তাও কেন ছবিটা পচা?
কারণ ওটা ক্লাটারড! ওই ছবিটাকে মানুষ করতে
গেলে কী করতে হত – সেটা তোমাকে জানাবো – কিন্তু এই চিঠিতে না।
কম্পোজিশনের তৃতীয় আর
এই চিঠির শেষ টপিক – (বিশ্বাস করো – এই তো সবে শুরু)...
ফ্রেমিং! নাহ ... এটুকুতেই ক্ষান্ত দিই এই বারের মত ......আবার পরের চিঠিতে...
একটু প্রোমো দিয়ে দিই
– তলার ছবিগুলো দেখ! মাঝখানের ছবিটা আমার মাস্টারমশাইয়ের আঁকা – হাহাহা
– শেয়ার না করে পারলাম না!
ছবিটা দেখে নাও – পরের চিঠিতে এর উপর আলোচনা করব!
প্রথম ছবিটা ভীষণ চেনা চেনা নয়? দুটোই কিন্তু একই ছেলের ছবি – প্রথমটাতে ক্যামেরার চোখ একটু উর্দ্ধমুখী তাই বেচারী ছেলেটির পায়ের পাতাগুলো বাদ পড়েছে!
পরের ছবিটা হল শুধরে নেওয়ার পরে!
আমি তোমার সঙ্গে বাজি ধরছি – তুমি এই ধরনের ভুল প্রচুর পাবে আমাদের তোলা ছবিতে।
এটা শুধু একটু ছুঁয়ে
গেলাম – পিকচার আভি বহোৎ বাকি হ্যায় মেরে পিসিমা!!!
J
আরেকটা জরুরি কথা বলে
নিই। ছবি তোলার ব্যাপারে খুব কাজে দেয় ছবি দেখা। ভালো ভালো
অনেক অনেক ছবি দেখো, ভাল ফোটোগ্রাফারের কাজ দেখ, আর পারলে টুকটাক পড়াশোনা কোরো,
কিন্তু এক্ষুনি নয় – আমার চিঠির
বহর শেষ হোক, তারপর। এই স্মার্টফোনই সব জোগান দেবে তোমাকে। এন্তার গুগল করবে আর
ছবি দেখবে বা পড়বে তখন! আর হ্যাঁ, তোমার জন্য হোমওয়ার্ক তো অবশ্যই থাকবে পরের চিঠি
পাবার আগে। চটপট কিছু ফুলের ছবি
(আর সূর্যাস্ত সূর্যোদয়ের ছবিও)
তুলে আমাকে পাঠাও দিকি!! মনে রেখো কী কী
শিখলে এইবার - ওয়ান-থার্ড রুল, পরিষ্কার সাবজেক্ট আর ব্যাক/ সাইড
লাইটিং! নাও এবার লেগে পড়ো কাজে!
প্রণাম নিও।
ইতি, তনুশ্রী
(চলবে)
________
অসাধারণ লাগল। পরেরটির অপেক্ষায় থাকলাম।
ReplyDeleteKhub sohojvabe lekha...bojha gelo purotai
ReplyDeleteচমৎকার।
ReplyDeleteমাধ্যমিকে পড়ার সময় 'নবম দশম ' নামে একটা পত্রিকা বের হতো, সেখানে শক্ত শক্ত প্রবন্ধ জলবত তরলং করে বোঝানো হতো। এই লেখা পড়েও তেমনি লাগলো। অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা। পরের কিস্তির জন্যে আগাম অপেক্ষা শুরু।
ReplyDeleteখুব সুন্দর লেখা
ReplyDeleteবাহ: বেস সুন্দর,ভূমিকা এবং গল্পের মাধ্যমে ফটোগ্রাফির পাঠ। ভালো লাগলো। পরবর্তী চিঠির অপেক্ষায় থাকলাম।
ReplyDeleteDarun laglo,onek kichu sikhlam.Porer lekha tar opekkhay roilam
ReplyDeleteখুব সুন্দর.খুব ভাল লাগলো.জটিলতা কে সহজ করার মধ্যে মুন্সিয়ানা লুকিয়ে থাকে.যে জানে সেই ভাঙতে পারে আবার জুড়তেও পারে.ধন্যবাদ
ReplyDeleteকিছু বলার নেই।
ReplyDeleteশুধু প্রশ্ন: পরের লেখা কবে পাবো
পরের লেখা আসবে পরের সংখ্যায় - পুজো সংখ্যায়। প্রকাশ হবে পুজোর আগে আগেই।
Deletejust Fatafati
ReplyDeleteThanks a Lot to you all for taking out time to read and comment - Really really grateful
ReplyDeleteI will surely try to write the next episode soon. Your feedback on the topics and points covered, questions, and doubts if any will be highly appreciated, and will be answered to the best of my capabilities
Thanks to you all again
বয়েস হয়েছে তো তাই জানার আগ্রহ কমে গেছে । লেখাটা বেশ বড় আর আমার মনঃসংযোগ খুব অল্প সময়ের জন্যই রাখা সম্ভব হয় । মনটা খুব বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে বেশ কদিন । তাই এই বয়েসে ফটোগ্রাফী কতটা শিখলাম তা নিয়ে কোন তুলনামূলক আলোচনায় আমি যেতে চাই না কেন না তাতে আমারই অনেক খামতি রয়ে গেছে । বলা যায় আমি পিসীমার রাজরোগ থেকেও বড় রোগে ভুগছি যার নাম হাড়মুড়মুড়ি রোগ । পিসীমার রোগ সারানোর জন্য ফটোগ্রাফী শেখানোর ইচ্ছেপ্রকাশটা এত সুন্দরভাবে প্রকাশিত হয়েছে যে আমার তো পিসীমার ভাগ্যের প্রতি যারপরনাই হিংসে হচ্ছে । আমার রোগ সারাবার জন্য এমন যদি কোন চিকিৎসক পেতাম ।
ReplyDeleteসবাইয়ের জ্ঞাতার্থে জানাই "বুয়া" আমার ডাক নাম । যে নামে ছোটবেলায় সবাই আমাকে ডাকত , যত বড় হচ্ছি তত এ নামে ডাকার লোক কমছে ও এখন প্রায় নেই বললেই চলে । আমার পোষাকী নাম প্রণব রায় চৌধুরী ।
ReplyDeleteআমি তো ভাবছিলাম আপনিই বুঝি তনুশ্রীর সেই পিসিমা অর্থাৎ বুয়া। যাই হোক, আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। হাড়মুড়মুড়ি রোগের জন্যে কোনো দাওয়াই পাওয়া যায় কিনা খোঁজ লাগাচ্ছি।
Deleteতনুশ্রী, অনেকদিন থেকেই ভাবছিলাম তোর থেকে ফটোগ্রাফি-র একটা প্রপার ক্লাস করি। এখান এভাবেই সেটা হয়ে যাবে। প্র্যাকটিকাল ক্লাস কাল থেকে শুরু হবে, ঠিক আছে তো? দ্যাখ, তোর এই লেখাটা শুধুমাত্র কিশোর কিশোরীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। আমার মত ছাত্র ছাত্রীও পাবি। যাদের ইচ্ছে থাকলেও পড়াশোনা করার ধৈর্য (বানান টা ভুল জানি, ঠিক করে বাংলায় টাইপ করতে পারছিনা) নেই। তোর লেখায় অনেক কঠিন কঠিন তত্ত্ব অনেক সহজ সরলভাবে জানা যাবে। পরের পর্ব কবে আসবে জেনেই গেলাম। তবু অপেক্ষায় থাকলাম।
ReplyDeleteThank you Banajadi, my pleasure. Yes, kal thekei :-)
DeleteBtw, there is also something to show u tomorrow... surprise :-)
This comment has been removed by the author.
Deleteঅনবদ্য লেখার হাত। চালিয়ে যাও গুরু।পরের কিস্তির অপেক্ষায় থাকলাম।
ReplyDeleteএক্কেবারে ছবির মতো .. সমৃদ্ধ হলাম তান
ReplyDeleteএই অধ্যায়টা জীবনে শেখা হয়নি একেবারেই, তনুশ্রীর দৌলতে সুযোগ পেয়ে গেলাম। লেখার কায়দায় কম্পিউটারের 'ইডিয়ট' সিরিজের বইগুলোর কথা মনে পড়ে গেল, ফটোগ্রাফির ব্যাপারে আমিও তো তাই! কলেজে পড়তে একবার হোমটাস্ক পেয়েছিলাম- তোমার ঠাকুমাকে এনট্রপি আর এনথ্যালপির মধ্যে তফাৎ বোঝাও। এই লেখা পড়ে সেই দিনগুলোর কথা ভাবছি।
ReplyDelete