টাকার গাছ
চুমকি চট্টোপাধ্যায়
শানদিঘিয়া গ্রামে ঢোকার মুখে যেখানে পাকা রাস্তা
শেষ হয়ে যাচ্ছে, সেখানে কে কবে যে একটা নীচু বেদির ওপর গান্ধিজির মূর্তি বসিয়ে রেখেছে,
কেউ তা জানে না। মূর্তিটা আদৌ মহাত্মা গান্ধির কিনা তাতেও ঘোরতর
সন্দেহ আছে। তবে ন্যাড়া মাথা আর চোখে গোল চশমার কারণে দেখতে অনেকটা সেরকমই লাগে।
জায়গাটার নামই হয়ে গেছে গান্ধি মোড়।
ছায়ারানি খুব গান্ধিভক্ত। ছোটোবেলায় বাবার কাছে গান্ধিজির
নুন, যাকে
ওরা লবণ বলে, তৈরির গল্প শুনে ওর খুব ভালো লাগত। ওর বাবা যা
বলত তার সবটা ঠিক না হলেও, খানিক খানিক ঠিকই বলত। ছায়ারানি
তাই ছেলের নাম রেখেছিল গান্ধি।
গ্রামদেশে কি আর এসব নাম চলে? ওখানে বাচ্চা-কাচ্চাদের
খোকা খুকু পুঁটি টেঁপি - এইসব নামে ডাকে। গান্ধি নামটা গ্রামের লোকেদের মুখে মুখে
হয়ে গেল গন্ধি, তার থেকে গন্ধ। কোনো মানে হয়, তোমরা বলো!
যাই হোক, কিছু তো করার নেই। ছায়ারানিই কেবল ছেলেকে গান্ধি
বলে ডাকত। নামের তো কিছু মাহাত্ম্য থাকে! গান্ধিরও যে বুদ্ধিশুদ্ধি বেশ, তা ওর মা বুঝেছিল। ছায়ারানির দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, গান্ধি
বড়ো হয়ে কিছু না কিছু খেল ঠিক দেখাবে। দেশবরেণ্য নেতার নাম কখনও ফেলনা যাবে না।
শানদিঘিয়া গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই হয় বাগানি নয়
জেলে। জেলে তো তোমরা জানো,
মাছ ধরে যারা। নৌকা নিয়ে জলধর নদে মাছ ধরতে বেরিয়ে পড়ত গ্রামের জেলে
যারা। জলধর নদ বয়ে গেছে গ্রামের পশ্চিম ধার ঘেঁষে। এই নদ গ্রামের প্রাণ।
অতিবৃষ্টিতে বন্যা না হলে জলধর সব সময়ে গ্রামবাসীর পাশে থাকে। ভারী লক্ষ্মী নদ।
তোমরা ভাবছ, জলধরকে নদ কেন বলছি, নদী কেন বলছি না। জলধর তো ছেলের নাম, তাই নদ। বুঝলে
তো। আচ্ছা, এবার বলি বাগানি কাদের বলে। বাগান করে যারা,
তারাই হল বাগানি। শানদিঘিয়া গ্রামের অনেক মানুষ বড়ো বড়ো বাগানে গাছ
বসায়। ফলের গাছ, ফুলের গাছ, সবজির গাছ।
কারোর কারোর নিজের অনেক জমি আছে, তাতেই বাগান করে।
যেমন হারুন আলি। তার অনেক বড়ো জমিতে সে দেদার আমগাছ লাগিয়েছে। কত রকমের আম হয় --
ল্যাংড়া, হিমসাগর, অরুণা, আম্রপালি, মল্লিকা, ফজলি --
বাব্বা, বলতে বলতে হাঁপিয়ে গেলাম! নাম দিয়ে কাম নেই।
এদিকে আবার বসুগোপালের সবজি বাগান। কাঁচালংকা থেকে
শুরু করে বেগুন, টমেটো, ঢ্যাঁড়শ, কলমি, পালং, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ,
চালকুমড়ো... আরও অনেক অনেক সবজি। তেমনি আবার সীমাদিদির ফুলের বাগান।
ফুলের রকম আর বলছি না, তোমরা শুনে শুনে হেদিয়ে যাবে।
গ্রামে দুটো পাঠশালা আছে। একটা ব্রজেশ্বর
মাস্টারের। আর একটা নারাণ পণ্ডিতের। ব্রজেশ্বর মাস্টারের পাঠশালাটা বড়ো, তাতে অনেক ছাত্রছাত্রী।
গান্ধি পড়ে নারাণ পণ্ডিতের পাঠশালায়। এইটা ছোটো, ছাত্র কম। কম ছাত্র বলে নারাণ পণ্ডিত যত্ন করে পড়ান।
পড়াতে পড়াতে নারাণ পণ্ডিত গল্প বলেন। গল্প শুনতে কে
না ভালোবাসে। খুব মন দিয়ে গল্প শুনছিল গান্ধি। গল্পের মধ্যে ‘টাকার গাছ’
কথাটা এল। কেউ একটা বলছে, আরে আমার কি
টাকার গাছ আছে নাকি? এইখানেই একদম থমকে গেল গান্ধি। বিষয়টা মাথার মধ্যে গেঁথে
গেল ওর।
পাঠশালা ছুটি হয়ে গেল। এখনই বাড়ি ফিরতে ইচ্ছে করে
না গান্ধির। কোনো একটা বাগানের পাশ দিয়ে বেশ কয়েক পাক চক্কর মেরে তবে ঘরে ফেরে ও।
হারুনচাচা থাকলে ওকে ভেতরে ঢুকিয়ে নেয়। দু-একটা আমও দেয় হাতে। লুকিয়ে নিয়ে যেতে বলে।
নাহলে অন্যদেরও দিতে হবে।
আজও একবার হারুনচাচার বাগানের দিকে গেল গান্ধি। চাচা থাকলে টাকার গাছের
ব্যাপারটা একবার জিজ্ঞেস করবে। ওখানে যেতে গিয়ে দেখা হয়ে গেল ওদেরই পাঠশালার এক
ক্লাস উঁচুতে পড়া লোকমানের সঙ্গে। সঙ্গে আরও দুটো ছেলে ছিল যাদের গান্ধি চেনে না।
লোকমান জিজ্ঞেস করল, “কী রে গন্ধ, এদিক কোথায় যাচ্ছিস? তোর বাড়ি তো এদিকে নয়?”
“হারুনচাচার বাগানে যাচ্ছি।”
“বাগানে ঢুকতে দেয় তোকে?”
“না, বাইরে থেকে দেখি,” বুদ্ধি করে বলল গান্ধি।
“বাগান দেখে কী করিস?”
“গাছ দেখতে ভালো লাগে আমার।”
“যাস না, তোর গন্ধে
গাছ পালাবে।” বলেই হ্যা হ্যা হাসিতে ফেটে পড়ে লোকমান। সঙ্গের ছেলে দুটোও হাসতে
শুরু করে। মন খারাপ হয়ে যায় গান্ধির। সোজা না গিয়ে জলধর নদের দিকে হাঁটা দেয় সে।
নদের পাড় থেকে ভাঙা টালির টুকরো কুড়িয়ে নিয়ে জলের সমান্তরালে ছুঁড়ে দিতেই ব্যাঙের
মতো লাফাতে লাফাতে চলল সেগুলো। এটা খুব পছন্দের খেলা গান্ধির। তারপর বাড়ির পথ ধরল।
ওদের কুঁড়ের সামনে অল্প একটু ফাঁকা জমি আছে। সেটা
কাদের জমি তা জানে না ওর বাবা মা। তাই একটা ঘরে খুব কষ্ট করে থাকতে হলেও ঘরটা বড়ো
করার চেষ্টা করে না গান্ধির বাবা। তাছাড়া বাবা তো কাজের জন্য বছরের দশমাসই বাইরে
থাকে। মা-ছেলের চলে যায় কোনোরকমে।
গান্ধি ঠিক করল, ওই ফাঁকা জায়গাটায় টাকার গাছ পুঁতবে। গাছ
লাগালে নিশ্চয়ই কেউ বকাঝকা করবে না। আর যদি তাতে টাকা ফলে, তাহলে
তো কথাই নেই। ওদের নিজেদের কষ্ট শুধু নয়, আশপাশের যত্ত মানুষ
কষ্টে আছে, সবাই ভালো থাকতে পারবে। এখন কথা হচ্ছে, টাকার গাছ পুঁততে হলে তো টাকা দরকার। সে কোথায় পাবে গান্ধি?
মাকে যদি ওর ভাবনার কথা বলে, মা ঠাস করে একটা
চড় লাগিয়ে দিয়ে বলবে, “মশকরা হচ্ছে! বেরো এখান থেকে।” মা বেশ
রাগি। তাহলে? কেউ যদি একটাকার কয়েন দিত তাহলেই কাজটা শুরু করতে পারত
গান্ধি। মনটা খারাপ হয়ে গেল ওর।
বাবা কবে আসবে চিন্তা করতে লাগল গান্ধি। মাকে জিজ্ঞেস করতে হবে।
এতে নিশ্চয়ই মা রেগে যাবে না। জিজ্ঞেস করতে ওর মা বলল, আর দিন পনেরো
বাদেই তো আসার কথা। স্বস্তি পেল গান্ধি।
পনেরো দিনের একদিন আগেই এসে গেল গান্ধির বাবা। আসার
সময় প্রতিবারই হাতে করে ছোটোখাটো জিনিসপত্র নিয়ে আসে। গান্ধির জন্য এবারে একটা
বাঁদর টুপি আর একটা কাবলি জুতো এনেছে। শীতে মাথা কান ঢাকা থাকলে ঠান্ডা কম লাগে।
জুতোটাও অনেক পুরোনো হয়ে গেছে। বাবা ঠিক বুঝতে পারে গান্ধির কোনটা দরকার।
গান্ধি খুশি হল কিন্তু তক্কে তক্কে থাকল বাবার
মেজাজ বুঝে একটা কয়েন বাগাবার। সন্ধেবেলা বাবা যখন মুড়ি-আলুর চপ খাচ্ছে, তখন গুটিগুটি
বাবার পাশে গিয়ে বসে গান্ধি। ও জানে, বাবার সব থেকে
প্রিয় খাবার এটা। এখন বাবার মেজাজ ভালোই থাকবে।
“বাবা, আমাকে একটা
জিনিস দেবে,” প্রায় ফিশফিশ করে বলে গান্ধি যাতে মায়ের কানে
না যায়।
ছেলে কোনোদিন কিচ্ছু চায় না। আজ এই আবদার শুনে একটু
থমকে গেল ওর বাবা। তারপর বলল, “কী চাই বল। সাধ্যে কুলোলে নিশ্চয়ই দেব।”
“আমাকে এক টাকার একটা কয়েন দেবে?” অবাক হয়ে যায় গান্ধির বাবা। “এক টাকার কয়েন দিয়ে কী
করবি রে?” ছেলে চুপ করে আছে দেখে আর কিছু জিজ্ঞেস না করে উঠে
গিয়ে শার্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে এক টাকার একটা কয়েন বের করে এনে গান্ধির হাতে দেয়।
আনন্দে চকচক করে ওঠে গান্ধির চোখ। ওর বাবা ছেলের আনন্দ দেখে হেসে ফেলে।
আজ গান্ধির ফুর্তিই আলাদা। পাঠশালা থেকে ফিরে
পান্তা খেয়ে হাতমুখ ধুয়ে উঁকি দিয়ে দেখে, মা পাশ ফিরে ঘুমোচ্ছে। বাবা মন্ডল জ্যাঠামশাইয়ের
কাছে গেছে। ওর বাবা রঙের মিস্ত্রি। মন্ডল জ্যাঠামশাই প্রথম কাজ দিয়ে
পাঠিয়েছিল ভিনরাজ্যে। এখনও বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরে ঘুরে সেই কাজই করে। গ্রামে এলে
মন্ডল জ্যাঠামশাইয়ের সঙ্গে অবশ্যই দেখা করতে যায় ওর বাবা।
গান্ধি কয়েনটা আর একটা কঞ্চি নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে
এল বাইরে। ফাঁকা জমিটায় একটা বড়ো বাবলা গাছ আছে। তারই নীচে উবু হয়ে বসে কঞ্চি দিয়ে
মাটিতে একটা গর্ত করল। কয়েনটা তার ভেতর যত্ন করে বসিয়ে ওর মনে হল, একটু জল দেওয়া
দরকার। উঠে দৌড়ে ঘরে গেল জলের বোতল আনতে। ফিরে এসে গর্তে মাটি চাপা দিয়ে খানিকটা
জল ছিটিয়ে দিল। মনে মনে বলল, “গাছ হ, গাছ
হ।” তারপর বাকি জল দিয়ে হাত ধুয়ে ঘরে ঢুকে গেল। মনটা বেশ ফুরফুরে লাগছে আজ। বাবলা
গাছের নীচু ডালে বসে থাকা কাকটা যে হাসল সেটা আর বুঝতে পারল না গান্ধি।
রোজই দু-তিন বার করে জায়গাটা দেখে যায় গান্ধি। জলও দেয় মাকে লুকিয়ে। চার-পাঁচ দিন কেটে
গেছে। গাছ বেরোবার কোনো চিহ্ন নেই। মনটা খারাপ খারাপ লাগছে একটু। তাহলে কি গাছ হবে
না?
সন্ধেবেলা বাবার কাছে বসে গান্ধি জিজ্ঞেস করল, “বাবা, বীজ থেকে গাছ বেরোতে কতদিন লাগে।”
“সেটা বীজের ওপর নির্ভর করে। কম করে সাত-দশ দিন তো
লাগেই। কেন রে?” ওর বাবা বলে।
“না, এমনি জিজ্ঞেস
করলাম।” স্বস্তি পায় গান্ধি। এখনও সময় আছে তার মানে। দেখা যাক।
একটা ভালো কাজের খবর পেয়ে সময়ের আগেই চলে গেল গান্ধির
বাবা। বাবা চলে গেলে ওর একটু মনখারাপ হয় তবে এবার মনোযোগ গাছের দিকে হওয়াতে অতটা
মনখারাপ হয়নি।
দশ দিন পেরিয়ে গেল। গান্ধি এবার হতাশ হতে শুরু
করেছে। ধুর, টাকার গাছ আর হবে না। এই গাছ হলে তো সবাই লাগাত, কেউ
কি ছাড়ত? নিজের বোকামিতে নিজের ওপরেই রাগ হল ওর।
পরদিন পাঠশালা থেকে ফিরে জায়গাটার দিকে তাকাতেই গান্ধি
দেখল ছোট্ট সবুজ কী যেন দেখা যাচ্ছে। হৃৎপিণ্ডটা টগবগিয়ে উঠল ওর। তিন লাফে সেখানে
পৌঁছে উবু হয়ে বসে দেখল,
ছোট্ট চারা মাথা তুলেছে কয়েন পোঁতা জায়গাটায়। আনন্দে চোখে জল এসে
গেল ওর। এই তো টাকার গাছ বেরোচ্ছে!
চারা একটু একটু করে বড়ো হচ্ছে। তার যত্নের কোনো শেষ
নেই। জল তো দেয়ই গান্ধি। এখন একহাত মতো বড়ো হওয়াতে কঞ্চি জোগাড় করে চারপাশ ঘিরে
দিয়েছে সে যাতে গোরু-ছাগলে না খায়।
চারা যখন প্রায় গান্ধির সমান, ঝিরিঝিরি চিকন
পাতায় ভরতি, গান্ধির মা একদিন বলল, “ওটা
তো তেঁতুলগাছ। বিচি ফেলেছিলি নাকি?”
চুপ করে থাকে গান্ধি। মা তো বুঝতে পারছে না যে
ওটা টাকার গাছ। পাতাগুলো তেঁতুলগাছের মতো গজিয়েছে বটে, হয়তো বা তেঁতুল যেমন
ঝোলে তেমনি টাকা ঝুলবে।
সেদিন রাতে শুয়ে এক আজব চিন্তা ঘিরে ধরল গান্ধিকে।
এক টাকা পুঁতেছে বলে সবই এক টাকা ফলবে না তো! তাহলে তো মুশকিল! এই যাহ্! ভুল হয়ে
গেছে। পাঁচ টাকা বা দশ টাকার কয়েন পোঁতা উচিত ছিল। কিন্তু অত টাকার কয়েন কে দিত
ওকে? এক
টাকা চেয়েছে বলে বাবা দিয়েছে। ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে গান্ধি।
দিন পার হয়, বাড়তে থাকে টাকার গাছ। বেশ বড়ো হয়ে উঠেছে
এখন সে। বাবলাগাছের ডাল ঠেলে উঠছে। ডালপালা এদিক ওদিক ছড়িয়েছে। রোজই গান্ধি হাঁ
করে তাকিয়ে খোঁজে টাকার ফল ধরল কি না। ওর মা নিশ্চিত যে এটা তেঁতুল গাছ।
এরপর এক সকালে গান্ধি অবাক হয়ে দেখল গাছটাতে অনেক ছোটো
ছোটো ফল ধরেছে। লাফিয়ে উঠল সে। কিন্তু ফলগুলো লম্বাটে। কত টাকা ওগুলো? টাকা তো এরকম
দেখতে হয় না! মাকে জিজ্ঞেস করতে ভরসা পাচ্ছে না।
আর ক’দিন যেতে না যেতেই ফলগুলো কোনোটা সোজা
লম্বা আবার কোনো কোনোটা বেঁকে আধখানা চাঁদের মতো হল। একদম তেঁতুলের মতো দেখতে।
ছায়ারানি বলল, “বাবা, অনেক তেঁতুল
ফলেছে তো রে গাছটাতে। পেকে গেলে ঘরে কিছু রেখে বাকিটা বাজারে বিক্রি করে দেব।”
গান্ধির খুব খুব মনখারাপ। পুঁতল টাকা আর হল কিনা
তেঁতুলগাছ! বিছানায় পাশ ফিরে শুয়ে খানিক কাঁদল গান্ধি। পরের দিন ঘুম থেকে উঠতেই
সে দেখল মা খুব উত্তেজিত হয়ে বলছে, “ও গান্ধি, কোন
জাতের তেঁতুলের বীজ পুঁতেছিলি রে, এত মিষ্টি খেতে! এক দানা
নুন-চিনি লাগছে না। খেয়ে দেখ।”
খেল গান্ধি। একেবারে গুড়ের মতো মিষ্টি স্বাদ
তেঁতুলের। দারুণ খেতে। সবই তো ভালো কিন্তু টাকা তো আর হল না!
দু-দিন ধরে মা-ছেলেতে মিলে লম্বা কঞ্চি দিয়ে
বাড়ি মেরে মেরে প্রচুর তেঁতুল পেড়েছে। কিছুটা বাড়িতে রেখে পরের দিন বাজারে বাকিটা
নিয়ে বিক্রি করে এসেছে ছায়ারানি। সে নাকি হুড়োহুড়ি পড়ে গেছে তেঁতুল
কিনতে। এক দোকানদার সব তেঁতুল অন্যদের থেকে বেশি দাম দিয়ে কিনে নিয়েছে। কিছু টাকা
আরও দিয়ে বায়না করে রেখেছে পরের লটের তেঁতুল নেবে বলে।
কড়কড়ে আটশো টাকা ব্যাগ থেকে বের করতে করতে গান্ধির
মা বলে, “কী লাগিয়েছিস বেটা, এ তো টাকার গাছ রে! তুই খাসির
মাংস খেতে চেয়েছিলি তো, এই রবিবার নিয়ে আসব।”
গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল গান্ধির। তাই তো, টাকা তো পাওয়া
যাচ্ছে তেঁতুল বেচে, তাহলে এভাবেই মনে হয় ভগবান টাকার গাছ
দেয়। কিন্তু এই মিষ্টি তেঁতুলের বীজটা এল কোত্থেকে? তখনই
তেঁতুল গাছের ডালে বসে থাকা কাকটা ‘ক’ বলে
ডেকে উঠল।
----------
ছবি - শ্রীময়ী
No comments:
Post a Comment