সুখ-দুঃখ
শুভ্রজা চ্যাটার্জী
বয়স: ৯ বছর; ক্লাস:
ফোর
একটা মেয়ে তার মা-বাবার সঙ্গে থাকত। তার নাম ছিল রাজু। তার মায়ের নাম ছিল ভুবনা আর বাবার
নাম ছিল গগন। রাজু
খুব ভালো মেয়ে ছিল। সে
তার সব জিনিস খুব যত্ন করে ব্যবহার করত।
রাজুর একটা বড়ো গ্লাস ছিল। তার মধ্যে থাকত তার দাঁত মাজার ব্রাশ
আর মাজন। আর
একটা লাল মগ ছিল, তার ভেতর থাকত তার চান করবার সাবান ও স্পঞ্জ। মাজন ও সাবান ছিল সাদা রঙের
আর ব্রাশ ও স্পঞ্জ ছিল নীল রঙের, কিন্তু তাদের সকলেরই খুব মনখারাপ ছিল।
ব্রাশ স্পঞ্জকে বলত, “তোর কী মজা রে! আমার গায়ে রোজ দু-বার করে দাঁতের ময়লা লাগে!”
তাই শুনে স্পঞ্জ বলে, “না, না,
তুই ভালো আছিস রে। আমাকে দিয়ে তো সারা গায়ের ময়লা পরিষ্কার
করে। আর
তার পর কী গরম জলে ডুবিয়ে রাখে!”
মাজন সাবানকে ডেকে বলে, “এই, তোর কী মজা রে, তোকে কেমন বেশি করে মাখে রাজু,
আর আমায় রোজ একটু একটু করে ব্যবহার করে!”
সাবান বলে, “তুই ভালোই আছিস রে, আমার গায়ে দেখ কত চুল, ময়লা সব লাগে!” এইরকম করে দিন যায় আর তারা সকলেই খুব দুঃখে থাকে।
এইরকম করে অনেক দিন কাটার পরে একদিন গ্লাস আর মগ ঠিক
করল যে কিছু একটা করতেই হবে। তাই গ্লাস ব্রাশ আর মাজনকে ডেকে বলল, “ব্রাশ, তুমি তো খুব সুন্দর, রাজুর তোমাকে খুব পছন্দ,
তাই তো ও রোজ দু-বার করে দাঁত পরিষ্কার করে তোমাকে
দিয়ে। আর
মাজন, বেশি ব্যবহার করলে তো তুমি ফুরিয়েই যাবে, তাই তোমাকে
অল্প অল্প করে ব্যবহার করে রাজু।”
তখন মগও সাবান আর স্পঞ্জকে ডেকে বলল, “সাবান, ময়লা লাগে ঠিকই তোমার গায়ে, কিন্তু তার পরে সেটা পরিষ্কারও
তো করে দেয় রাজু। আর স্পঞ্জ, তুমি যাতে সুন্দর, পরিষ্কার
আর নরম থাকো, তাই তো তোমাকে গরম জলে ডুবিয়ে রাখে রাজু।”
এই কথা শুনে ব্রাশ, মাজন, সাবান ও
স্পঞ্জ বুঝতে পারল যে রাজু সত্যি তাদের সবাইকে ভালোবাসে। তখন তারা দুঃখ করা ছেড়ে দিয়ে খুশি
মনে থাকতে শুরু করল।
আসলে ভালো করে ভাবলেই সব কিছুর মধ্যে ভালো-টা খুঁজে পাওয়া যায়। তখন আর মনে দুঃখ থাকে না।
----------
ছবি - আন্তর্জাল
No comments:
Post a Comment