সুদখোরের
টাকার থলি
সঞ্জয় কর্মকার
সুদখোর
মহাজন, হিংসুটে মন
সেদিন
কী কুক্ষণে করেন গমন
পথ
ধরে সাঁঝবেলা বাজারের পানে;
ভাগ্যে
কী আছে, মহাজন তা কি জানে?
মহাজন
খুশি মনে হাঁটে পথ ধরে,
কখন
যে পয়সার থলি গেল পড়ে
জানতেও
পারল না সুদখোর ব্যাটা;
মন
ভরা খুশি নিয়ে তাই দেয় হাঁটা।
তারপরে
বাজারেতে গিয়ে হাহাকার―
“টাকার থলিটা গেল কোথায় আমার?”
এই
বলে মহাজন কাঁদে ভেউ ভেউ
তাই
শুনে কুকুরেও করে ঘেউ ঘেউ!
চারিদিকে
খুঁজে খুঁজে পায় না সে থলি
থলিটা
হারাল তাকে দেখিয়ে কদলি!
এখন
থলির শোক ভোলে সে কী করে?
দশ
হাজার টাকা ছিল থলির ভেতরে!!
মহাজন
বলে তাই, “খোঁজো সবে মিলে―
ইনাম
পাঁচশো টাকা থলি খুঁজে দিলে!”
এবার
কী হল শোনো, গরিব এক মুটে
যাচ্ছিল
পথ দিয়ে ঘুম থেকে উঠে
দেখল,
ঝোপের ধারে, আধো আধো ভোরে
পয়সার
থলি এক যেন আছে পড়ে!
টাকার
থলির কথা তার ছিল শোনা।
জানত
সে, ইনামের হয়েছে ঘোষণা।
যখন
টাকার থলি দিল সে ফেরত
ভেবেছিল
বেড়ে যাবে মান-ইজ্জত
কিন্তু
সে মহাজন থলি ফিরে পেয়ে
বারে
বারে টাকা গুনে ওঠে ঘেমে নেয়ে।
“থলিতে যে কম দেখি পাঁচশত টাকা!”
এই
কথা বলল সে, দৃষ্টিটা বাঁকা।
তারপর
হেসে বলে, “ঠিক বুঝে গেছি…
সন্দেহ
তোমাকেই করি মিছিমিছি!
ইনাম
পাঁচশো টাকা... সেটা মনে নেই?
সে
টাকা নিয়েছ তুমি ইতিমধ্যেই!”
এমন
চালাকি দেখে মুটে তো অবাক!
রেগে
বলে, “ধড়িবাজ… কালো দাঁড়কাক…
পাঁচশত
টাকা যদি এখনই না দিস
গ্রাম-প্রধানের কাছে করব নালিশ!”
তারপরে
বসল যে বিচার সভাটি
গ্রামের
প্রধান ছিল মানুষটি খাঁটি
বুঝেছে
সে সবকিছু জলের মতন―
কার
মন সাদা আর পাপী কার মন।
তাই
তো সে বলে ওঠে, “হক কথা বলি
মহাজন
পাবে না কো টাকার এ থলি।
মহাজন
বলছে যা টাকার সংখ্যা
আমার
মনেতে নেই কোনোই শঙ্কা―
এ
থলি সে থলি নয়, আর একটি হবে
মুটেটা
পেয়েছে, তাই তার কাছে রবে।”
সেই
শুনে মহাজন করে হায় হায়
সেখানেই
বসে পড়ে― হাতটি মাথায়!
----------
ছবি - আন্তর্জাল
No comments:
Post a Comment