ছড়া-কবিতা:: প্রশ্নোত্তর - জয়তী মুখোপাধ্যায়

প্রশ্নোত্তর
জয়তী মুখোপাধ্যায়

জিজ্ঞেস করেছিল মেয়ে এক রত্তির
রাতে কেন খেলা বাড়ে ভূত দানো দত্যির?
ঘোড়া কেন ছোলা খায়, ডাইনো ঘুমোয় না?
হাতিরা খাওয়ার শেষে মুখ বুঝি ধোয় না?
পথ খালি শুয়ে থাকে, বসতে কি সাধ নেই?
মাছরাঙা কেন খুশি থাকে শুধু মাছেতেই?

সব শুনে খ্যাপাদাদু বলে মাথা চুলকে
আরে দিদি মেনে নিতে হয় কত ভুলকে।
তবুও এসব ভুল ভুলভাল ভেবো না;
বিশ্বেস না হলে তো উত্তরও দেব না।


ঘোড়া আগে দিনরাত চাইনিজ খেত ভাই
চিলি ফিস, চিকেন নুডলস খালি পাতে চায়,
তারপরে একদিন নিল গুরুদীক্ষা
দিনরাত জপ-ধ্যান, আর মুঠিভিক্ষা।
গুরু বলে, “শোন বাছা নিরিমিষি জুড়ি নাই
আজি হতে ঘাস-ছোলা আহার্য কর তাই
ডাইনোর ঘুম নিয়ে কী বা বলি হায় রে?
তার মতো দুঃখী যে এ জগতে নাই রে।
ঘুমোতে গেলেই মশা আসে সহ পরিবার
বোঝো তবে কত বড়ো মশারির দরকার!
অত বড়ো মশারি তো বানানোর লোক নাই
ঘুম থেকে পিছু পা’টি হয়েছে ডাইনো তাই।


হাতিরা খাওয়ার পরে মুখ ধুত আগেতে
বাথরুম ঘষা ব্রাশে, রেখে জল মগেতে।
কিন্তু দাঁতের ফাঁদে ব্রাশ গেল আটকে
কেউ বলে চিল্লিয়ে, “নিকালিয়ে কাটকে
সেই হতে দাঁত-টাত মাজা পাট চুকিয়ে
হাতিছানা কত না কান্না করে ফুঁপিয়ে।
মাজা নাই দাঁত তার, মুখে ভারী গন্ধ,
গার্লফ্রেণ্ডের সাথে ডেটিংও তো বন্ধ।


পথ আগে খাড়া ছিল একেবারে উঁচিয়ে,
রোজ দিত চাঁদটার মুখ-টুখ মুছিয়ে।
কিন্তু সে একদিন আনমনে মুছোতে
গিয়েছিল পথ নাকি নাকে তার খুঁচোতে।
সেই হতে পথ আর সিধে হতে চায় না
যত কর খাড়া হতে তার কাছে বায়না।


মাছরাঙা আগে খেত চিকেনের ঠ্যাংটি
ভেড়া, ছাগ, শূকরের নামে খেত ব্যাঙটি।
যেইদিন ছাপল তা খবরের কাগজে
সবকিছু তালগোল হল তার মগজে।
হোটেলেতে ছাগ নয় ঠ্যাং দেয় কুকুরের
তাও মেনে নেওয়া যেত ব্যাঙ হলে পুকুরের।
কিন্তু এসব নাকি বাসি মড়া ভাগাড়ের!
মাছরাঙা ভাবে, ‘আর খাই আমি, বাবা রে!’


ভূত ভায়া সারাদিনে চার্জ দেয় বডিতে
রাতে লং ড্রাইভিং পেতনির অডিতে।
দূরে গিয়ে ফেঁড়ে খায় ভিন্দালু মানুষের
রক্তের ট্যালা স্যুপ খেয়ে ওড়ে ফানুসে।

এইসবই লেখা আছে মোটা মোটা বইতে
এক ফোঁটা মিছে নয়, ছুঁয়ে বলি পৈতে।
_____
ছবিঃ আন্তর্জাল

4 comments:

  1. অসাধারণ শিশুসাহিত্য....

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ জানাই

      Delete
  2. কী ভালো কী ভালো!!! বেটির শুনে হাসি আর ধরে না। ভীষণ সুন্দর

    ReplyDelete