ভ্রমণ:: ল্যাণ্ডর মধুর দেশ - শ্রেয়সী চক্রবর্তী

চিত্রগল্প (ছবিতে ভ্রমণঃ দেশ):
ল্যাণ্ডর মধুর দেশ
শ্রেয়সী চক্রবর্তী

বাসে ট্রামে নয় এক্কেবারে ট্রেনে কিম্বা প্লেনে সোজা উড়ে যেতে হবে ভারতবর্ষের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের দেরাদুন শহরে। সেখান থেকে গাড়িতে পাহাড়ে মাখামাখি বন্ধুত্ব। পাকদণ্ডী পথে উঠে যেতে হবে সাত মঞ্জিল মুসুরী পাহাড়কে পিছনে ফেলে রেখে ছোট্ট জনপদ ল্যান্ডরে। এখানে এক সময় পথের বাঁকে বাঁকে ছিল বাঙালিদের বসবাস। এখন সবই অতীত। তবু বাঙালির আসা যাওয়ার বিরাম নেই ল্যাণ্ডরে। হাতে গোনা অল্প কয়েকজন বাঙালির দেখা পাওয়াও অসম্ভব নয় পাহাড়ের মাত্র আড়াই ধাপ জুড়ে শুয়ে বসে রোদ পোহানো অলস এই জনবসতিতে। এখান থেকে গাড়ি চড়ে পাহাড়ি পথে পাক খেতে খেতে দেখে নেওয়া যায় ল্যাণ্ডরের সব চাইতে উঁচু বিন্দু লালটিব্বার টেলিস্কোপে চোখ লাগিয়ে চীনের প্রাচীর! তারপর ডাক দিচ্ছে অনন্ত নীল আর সবুজের হাত বাড়িয়ে সতেজ আকাশ, সোনালী রোদ্দুর, ধনৌলটি ইকো পার্কের পথ। এখানে চারদিকে ছড়িয়ে আছে হিমালয় তার “বান্দরপুঞ্ছ” শৃঙ্গ নিয়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা দাবী করেন প্রতি শীত বিকেলে ল্যান্ডর-দিগন্ত আলো করে টুপটুপিয়ে ডুবে যাওয়া সূর্য লম্বা সোনালী উইন্টারলাইনের আভা ছড়িয়ে রাখে সান্দ্র নীল সন্ধ্যাবেলা, আলো জ্বলে ওঠে পাহাড়ি উপত্যকায়; আকাশে ঝিকিমিকি জ্বলে ওঠে তারা। এই উইন্টারলাইন নাকি নিউজিল্যাণ্ড আর ল্যাণ্ডর ছাড়া কোত্থাও দেখা যায় না! এখানে ঘন অরণ্যে মুখ লুকিয়ে সকাল সন্ধ্যায় পাহাড়ের নতুন রূপে মজে থাকা ভারতবর্ষের প্রথম বোর্ডিং স্কুল কম্পাউণ্ড উডস্টক ইন্টারন্যাশনাল (১৮৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত) তোমার আশেপাশে সব সময় মজুত। কেন বলো তো? আসলে এই পাহাড়ের ঘন জঙ্গল রক্ষার দায়িত্ব তো তাদেরই। মুসুরী থেকে ওঠার পথে এক ঝলক দেখে নিও ইন্দো-টিবেট বর্ডার ফোর্স-এর হেড কোয়াটার্স। আর আছে শান্তি বিছানো বহু পুরনো চার্চ থুত্থুরে সেন্ট পল্‌স্‌। তার ভিতরে কী সুন্দর ছবি সব! নীচে নামলে দেখতে পাবে ‘ডোমাজ্‌ ইন’ রেস্তোরাঁর সঙ্গে দেওয়াল শেয়ার করা সাদামাটা বাড়ি; সেখানে থাকেন বিখ্যাত সাহিত্যিক রাস্কিন বণ্ড। তাছাড়াও এদিকে ওদিকে ছড়িয়ে আছে সুরখণ্ডা দেবীর মন্দির, কেম্প্‌টি ঝর্না, হারিয়ে যাওয়া ক্লক টাওয়ার, ল্যান্ডর ল্যাঙ্গুয়েজ স্কুলের হাসিমুখ ছাত্র ছাত্রীর দল আর কেলগ্‌স্‌ চার্চের মোহ। জানো তো ওখানে দেখা সব পাখিই তোমার চোখে নতুন! আর ফুলেরাও বড়ই রঙবাহারি মায়াময়। আর মনের আনন্দে বেড়াতে গিয়ে কেবলি শুকনো মুখে খালি পেটে তোমরা বেড়িয়ে বেড়াবে সে কেমন করে হয়? তাই অবশ্যই ল্যাণ্ডরে চার্চের জংশনে পাহাড়ি পথে চারদুকানের সুস্বাদু লা-জবাব পরোটা খাওয়ার বায়না ধরতে ভুলো না যেন!

১। নাটহ্যাচ
২। মায়াবী ফুলের রাশ
৩। নতুন ভোরের আলো
৪। বান্দরপুঞ্ছ শৃঙ্গ
৫। লালটিব্বার টেলিস্কোপ
৬। যেদিকে তাকাই পাহাড়
৭। বরফচূড়া নাগাধিরাজ
৮। সুরখন্ডা দেবী মন্দিরের পথ
৯। ধনৌলটি ইকো পার্ক
১০। গাঢ় অবসর
১১। উইন্টার লাইন
১২। ইন্দো-টিবেট বর্ডার ফোর্স
১৩। সেণ্ট পল্-স্- চার্চ
১৪। সাহিত্যিক রাস্কিন বণ্ড-এর বাড়ি
১৫। প্রথম ভারতবর্ষীয় বোর্ডিং স্কুল উড্-স্টক
১৬। মুসুরী শহর
_______
ফোটো - লেখক

2 comments:

  1. asadharon sob chobi, asadharon sob muhurto, ar aprotim valo lagar satkahon :)

    ReplyDelete