
দস্যি মেয়ে
অনিতা অধিকারী
মেয়েটার চঞ্চল মন সারাদিন দস্যিপানা
দু’পাশে দুলিয়ে বেণি চরাত ছাগল ছানা
নাকে তার মাকড়ি পরা পেঁচিয়ে ডুরে শাড়ি
দুপুরে টগর পিসির ঘুম সে নেবেই কাড়ি।
লুকিয়ে পেয়ারা পাড়ে, কিংবা নারকেলি কুল
দুপুরে আসত সাথে বাতাসি, শিউলি, বকুল
মনে তার রাগ ছিল না গজ দাঁতে ঝরত হাসি
পাড়াতে বউঝিরা সব যেন তার পিসি মাসি।
দু’পায়ে রুপোর তোড়া তাতে তো থাকত কাদা
কপালে কাঁচ পোকা টিপ মনটাও ভীষণ সাদা
দেখলে অভাব কারও যেন মন কেঁদে ওঠে
নিজেদের খাবার থেকে লুকিয়ে দিতেই ছোটে।
ভিখারি আসলে দ্বারে পরনে ছিন্ন শাড়ি
লুকিয়ে তারটা দিত কেউ না থাকলে বাড়ি
পাঠশালে আসত যারা অনেকের থাকত না বই
নিজ বই তাদের দিয়ে বকুনি শুনত কতই।
ছিল তার ভীষণ মায়া যত সব প্রাণীর প্রতি
গোয়ালের গাভিগুলো ছিল তার কাছের অতি
সে এখন বড়ো হয়েই সংসারে জীবনমুখী
হারিয়ে কিশোরবেলা
একলা বড়োই
দুখি।
ঘরে তার কড়া শাসন বাইরেও যেতে মানা
সময়ের বেড়াজালে বাঁধা তার জীবনখানা
তবুও সেই মেয়েটা রাত্রি অধিক হলে
বাড়িতে সবাই যখন নিদ্রাদেবীর কোলে।
কাগজে খসখসিয়ে কী যে সব লিখতে থাকে
তা দেখে হাসে সবাই বোঝে না কেউ তো তাকে
একদা একটা ছড়া ছাপে এক সম্পাদকে
খুশিতে জল ছলোছল মেয়েটার দুটো চোখে।
----------
ছবি - মেটা এআই
No comments:
Post a Comment