
গাছভূত
অলর্ক মণ্ডল
চতুর্থ শ্রেণী, সেণ্ট মেরীজ কনভেণ্ট
স্কুল, সাঁতরাগাছি
একদিন
একটা গ্রামের ছেলে, যার নাম রীতেশ ব্যানার্জ্জী, সে
একটা গাছ থেকে ফল তুলছিল। সেই গাছটি বড়ো সুন্দর দেখতে। কিন্তু তার পাশেই একটা পোড়া মড়া গাছ ছিল। তার মনে হচ্ছিল যে ওখান থেকে কেউ একটা তাকে ডাকছে। সে তো খুব বুদ্ধিমান ছেলে, সে উত্তর দিল না। মিনিট পাঁচেক পর যখন সে ফল তুলে চলে যাচ্ছিল, হঠাৎ তাকে সেই গাছটা থেকে ভূত যেন টেনে নিল বলে মনে হল। সে তো ভীষণ ভয় পেয়ে গেল। সে
পালানোর চেষ্টা করল, কিন্তু একদমই পারল না। তাকে সেই গাছের ভেতরে যেতেই হল। তারপর
থেকে এই খবরটা জেনে গ্রামের লোকেরা আর ঐ গাছের দিকে যায় না।
তারা সবাই মিলে ঐ গাছটির সামনে একটা বড়ো গাছের থেকেও আরও বড়ো বেড়া করে দিল।
তারপরেই
কয়েকজন গ্রামবাসী লোক দেখল, তাদের বানানো বেড়া অনেকটা ভাঙা। এই
দেখে সবাই ঐ বেড়া আর না বানিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ছুট দিল।
তার মধ্যে কয়েকজনকে গাছভূত টেনে নিল। এদের মধ্যে
রীতেশের বাবা আর মাও ছিল। রীতেশের বাবার নাম ছিল গৌরব আর
মায়ের নাম ছিল গার্গী। তাদের একটা ভালো বুদ্ধি এল। পাশে একটা লম্বা বাঁশের বেড়া ছিল।
তারা ঐ বাঁশের বেড়ার ওপর দিয়ে খুব খুব চেষ্টা করে পালাতে গেল। আর
ঐদিকে ঐ গাছটা পুরো একেবারে ভয়ঙ্কর জোরে তাদেরকে টেনে নিচ্ছে। কী
আর হবে, তারা ঐ রীতেশের মতো করেই ভেতরে ঢুকে গেল। ধীরে
ধীরে রীতেশকে নিয়ে মোট দশ জন পুরো ভূত হয়ে গেল।
এরপরে
এক সুন্দর সকালে ছ’জন ইংরেজ ঐ গ্রামের এলাকাটায় কয়েকদিন
থাকার জন্য এল। ঐখানে আসার সময়ে ওরা দেখতে পেল একটা
পোড়া মড়া গাছ। আর ঐ গাছটার বাইরেটায় লেখা ‘ডেনজার’ - ‘বিপদ’। ঐ লেখা
দেখে সবাই ভয় পেয়ে একেবারেই ছুট্টে গেল।
তার মধ্যে দুজন গ্রামের ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে একেবারেই গাছের ভেতরে চলে গেল। ভূতগুলো তাদের ভূত বানিয়ে দিল। তাদের শরীর থেকে সব রক্ত নিয়ে নিল। গার্গী, গৌরব আর
রীতেশ আর সেই গ্রামবাসীদের মতো তারা দুজনও পুরো একেবারে ভূত হয়ে গেল। এই করে করে ধীরে ধীরে আরও আরও লোকেরা ভূত হতে থাকল আর ঐ
গাছটা বড়ো হতে থাকল। একসময় ঐ গাছ পশু পোকামাকড় এমনকি
পাখিদেরও ভূত বানিয়ে ফেলল। কোনোভাবেই
কেউ ঐ গাছটাকে সমস্যা থেকে বাঁচাতে পারল না।
----------
ছবি - আন্তর্জাল
No comments:
Post a Comment