ছড়া-কবিতা:: ভূতোর জুতো - মধুমিতা ভট্টাচার্য


ভূতোর জুতো
মধুমিতা ভট্টাচার্য

ভূতোর হল নতুন জুতো
কিন্তু তেমন মনঃপূত
হয়নি মোটে,
মুখ হয়েছে ভার

একটু যেন সাদামাঠা
পায়ে দিয়ে হাঁটা ছোটা
যাচ্ছে না তাই
রাগ হল যে তার

যায় না কেন? নয় কি জুতো?
মোজার সাথে পর না ভূতো
দেখবি কেমন
দিব্যি হবে ফিটিং

ভূতো বলে, “মা’কে ডাকো
ঠাম্মা, বাবা, পিসুন, থাকো
দাদাই, কাকু,
খুব জরুরি মিটিং।”

দাদাই বলেন, “হলটা কী
নতুন জুতোর সমস্যাটি
বল তো খুলে,
হয়নি মনের মতো?

অনেক দোকান খুঁজে-টুজে
কিনে আনলাম আমি নিজে
জুতো জোড়া
ভেবে-চিন্তে অত!”

“হা ভগবান... ,” ঠাম্মা বলে
“এই ছিল রে তোর কপালে
জুতো দেখেই
খাচ্ছি আমি খাবি।”

কাকু বললে, “বুঝলি ভূতো
একেই বলে স্পেশাল জুতো
পায়ে দিয়ে
দেশভ্রমণে যাবি।

রাস্তা দিয়ে রোজ সকালে
হাঁটবি যখন খটাং তালে
দেখবি কেমন
অবাক হবে লোকে।”

ফিকফিকিয়ে পিসুন হেসে
ভূতোর দিকে একটু ঘেঁষে
যেই বলেছে,
“মেডেল দেবে তোকে!”

অমনি ভূতো ভ্যাঁ-অ্যাঁ-ক করে
বলল কেঁদে তারস্বরে,
“তোমরা সবাই
নিষ্ঠুর তো ভারি!

এই জুতো কেউ পরে নাকি
নতুন জুতোর নামে ফাঁকি
আমায় দিলে?
আমিও দিলাম আড়ি।”

রেগে আগুন ভূতোমানিক
চোখ গোল গোল অনেকখানি
মাথা হল
বেজায় রকম গরম।

“আনল দাদাই কোথা থেকে
দেখে-শুনে কিসের ঝোঁকে
খটর মটর
শব্দ তোলা খড়ম?

খড়ম পায়ে যাব স্কুলে?
দাদাই কি সব গেলে ভুলে?
নিয়ম-কানুন
ভীমরতি কি হল?”

দাদাই বলেন, “আরে না না
নই তো মোটেই তালে কানা
জুতোজোড়া
ভীষণ রকম ভালো,

ইকো-ফ্রেন্ডলি জুতো কেনা
সহজ নয় রে ভূতোসোনা
বুদ্ধি ঘেঁটে
বার করতে হয়

কাঠের খড়ম হয়ে হন্যে
কিনে আনলাম তোরই জন্যে
বুঝলিইই...
এসব সবার জন্যে নয়!”
_____
ছবিঃ নচিকেতা মাহাত

1 comment:

  1. কমেন্ট টা পোস্ট হলনা কেন কে জানে। তাই আবার বলি,
    অনেক ধন্যবাদ নচিকেতা আপনাকে এত সুন্দর ছবি এঁকে দেবার জন্যে । ভালো থাকবেন।

    ReplyDelete