জয় আন্তর্জালের জয়!
সহেলী রায়
ডোকরা ছুটির দিনে আরও বেশি
ব্যস্ত থাকে। সকাল থেকেই মাথার ভেতর ফুর্তি ডগমগ করতে থাকে। এমনিতে স্কুলের দিন
ঘুম ভাঙে না। কিন্তু ছুটির দিন সবার ঘুম ভাঙায়। তোমরা কী
ভাবছ? ডোকরা খুব দুষ্টু? নাহ, একেবারেই না। ডোকরা ঘুম থেকে উঠেই ঘরের
সমস্ত পাখা বন্ধ করে দেয়, জানালা খুলে মুক্ত বাতাস ঘরে ভরে। তারপর জানালা বন্ধ
করে কিছুক্ষণ ঘোঁত ঘোঁত শব্দ করে নিঃশ্বাস নেয়। এতে
নাকি ফুসফুস ভালো থাকে। ডোকরার এই অত্যাচারে বাড়ির লোকজন ছুটির দিনে একটু ভয়ে ভয়েই
থাকে। কিন্তু ডোকরার দাদাজির কড়া ইন্সট্রাকশন, ছেলেটা যা করতে চাইছে তা ওকে করতে
দেওয়া হোক। এভাবেই কত ক্রিয়েটিভ মানুষের জন্ম হয়েছে, কিছুই বলা যায় না। ডোকরা এসব
কিছুই শিখেছে ইন্টারনেট থেকে। এই এগারো বছর বয়সে একটাই নেশা তার। সারাদিন
পার্সোনাল কম্পিউটার ইন্টারনেটে কানেক্ট করে নানারকম তথ্য জানা ও পড়া। তার তেমন
কোনও বন্ধুবান্ধবও নেই। আসলে এই বয়সি ছেলেরা বাইরে খেলেধুলে বেড়ায়। এ সবে ডোকরার
দারুণ অনীহা। একটু ভীতু প্রকৃতির মানুষ সে। বাইরে খেলাধূলা করতে গিয়ে যদি কোথাও
চোট লাগে! সে ইন্টারনেটে পড়েছে যে কোনও কাটা জায়গায় ব্যাকটিরিয়ার সংক্রমণ হতে
পারে। আর সেই ব্যাকটিরিয়া শরীরে পৌঁছে শরীরের নানারকম সিস্টেমকে বিকল পর্যন্ত করে
দিতে পারে। কী দরকার বাবা এসব রিস্ক নেওয়ার? বিলু
তাকে অনেকবার বলেছে, “তোর খেলে কাজ নেই, বসে থাকবি চল।”
পাগল? বল এসে গায়ে লাগে যদি। ছুটি পেলেই সারাদিন যন্ত্রমানব হয়ে বসে থাকা যাবে, এই
ফুর্তিই তাকে তাড়া করে বেড়ায়।
মাঝে মাঝে ছাদে গিয়ে দাঁড়ায়
ডোকরা। এটা তার প্রিয় জায়গা। সে হাঁ করে
আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকে পাখিদের ওড়া দেখে। কোন পাখি কী পদ্ধতিতে ওড়ে সে বোঝার চেষ্টা করে। ফ্ল্যাপিং, গ্লাইডিং, সোরিং না
হোভারিং? কোন পাখি কী করছে সব রূদ্ধশ্বাসে গেলে
ডোকরা। এ সব কটা পদ্ধতিই বিস্তারিত জানে সে। চিল যখন অনেক উঁচুতে উঠে ডানা না
নাড়িয়ে বৃত্তাকারে ঘোরে, তখন ডোকরা আনন্দে সোরিং বলে চেঁচিয়ে ওঠে। আসলে এত তথ্য সে
যখন গোল গোল চোখ করে প্রায় গেলে তখন তার ইচ্ছেও হয় এগুলো বাস্তবে খতিয়ে দেখার। তবে
সব কিছু নিজেকে বাঁচিয়ে। ঐ চিলটাই যখন উঁচু থেকে একটু নিচের দিকে নেমে আসে ডোকরা
দৌড়ে চিলেকোঠার ঘরে ঢুকে পড়ে। পাছে চিল যদি তার চোখ উপড়ে নেয়! একবার তাদের নিচের
তলার ভাড়াটের পোষা বেড়ালটা ছাদে উঠে এসেছিল। ডোকরা এমন পাখি দেখতে ব্যস্ত, খেয়ালই
করেনি। বেড়ালটি খানিকক্ষণ
ঘাপটি মেরে বসে থাকার পর ছাদের টবে বসে থাকা এক চড়ুই এর
উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। প্রচন্ড কিচিরমিচির শব্দে ডোকরার সম্বিত ফিরল। কিন্তু বেড়ালটার হাত থেকে
পাখিটাকে বাঁচানোর বদলে ডোকরা পালিয়ে যায় তার চেনা পরিচিত চিলেকোঠার ঘরে। দরজা
বন্ধ করে কানে আঙুল দিয়ে বসে থাকে বেশ কিছু সময়। ডোকরার মনে হয়েছিল বিড়ালটাকে
দেখে, তাকে বাধা দিলে সে তাকে আক্রমণ করবে।
বিড়াল কামড়ালে র্যাবিস নামে একটা রোগ হয়। সে একটা নিউজ জার্নালে পড়েছে, একটি লোক
বিদেশে মায়ো ক্লিনিক নামে এক হসপিটালে তিন বছরেরও বেশি সময় ভর্তি ছিল বিড়াল
কামড়ানোর ফলে। যেখানে কামড়েছিল সেখানকার সব টিসু
জার্মে আক্রান্ত হয়ে গেছিল। শেষে অপারেট করে সে সব টিসু বাদ দিতে হয়েছিল। আওয়াজ
কমলে ডোকরা যখন দরজা খুলে বাইরে আসে, তখন বিড়ালটা আর নেই। চারিদিকে চড়াইয়ের
ছিন্নভিন্ন পালক, রক্ত। ডোকরা ভয়ে নিচে পালিয়ে আসে। তারপর তার ধুম জ্বর। চারদিন
পুরো ঘোরে কাটে ডোকরার। ডাক্তার বদ্যি
ওষুধ পথ্যি করে তবে সে উঠে বসে। তবে এ ঘটনা সে কাউকে বলে উঠতে পারেনি। কিন্তু
ডোকরার মা ছাদ থেকে ডোকরার হুড়মুড় করে নেমে আসা, তার বিছানায় শুয়ে পড়া আর তারপরেই
ধুম জ্বর দেখে ছাদে ঘুরে এসে কিছুটা আন্দাজ করতে পারে।
ডোকরার পাঠ্যবই পড়তে ভালো
লাগে না। প্রথমবার রিডিং করার পর বার বার একই জিনিসে সে বিরক্ত হয়ে যায়। বিশেষ করে
ইতিহাস। ঐ রাজায় রাজায় যুদ্ধ, কার পর কী সভ্যতা,
সাল তারিখ এসব পড়ে কোথায় কাজে লাগাবে সে ভেবে পায় না। ইংরেজি, বাংলাও গল্প পড়ে ‘এ
কথা কে? কাকে? কেন বলেছিল?’ এ উত্তর খুঁজতে বা লিখতে তার জীবন অতিষ্ঠ হয়ে যায়। ফলে
সায়েন্স গ্রুপে মোটামুটি করলেও বাকি সব মিলিয়ে তার রেজাল্ট মন্দের দিকেই থাকে। এই
নিয়ে ডোকরার বাবা-মায়ের নিদারুণ চিন্তা। এখন সবে ক্লাস সিক্স। এরপর তো আরও কঠিন
সময়। কিন্তু দাদাজি এসব মানতে নারাজ। তাঁর
বক্তব্য ওসব পাঠ্যবই পড়ে কূপমন্ডুক
হওয়ার চেয়ে এসব বাহ্যিক জ্ঞান অনেক বাস্তবিক বুদ্ধি বাড়ায়। ডোকরার বাবা-মা বুঝিয়ে
বুঝিয়ে নাজেহাল আজকের ইঁদুর দৌড়ে রেজাল্টটাই সব। তারপর ওই
বিড়াল কান্ডের পর থেকে বিশেষত ডোকরার মা খুব ভয় পেতে শুরু করেন। শেষে দাদাজিকে
আড়ালে রেখে তাঁরা স্থির করেন ডোকরাকে কোনও মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাবেন।
ডোকরা অবশ্য এ সব নিয়ে মোটেই চিন্তিত নয়। বাবা মা একটু বকাবকি করলেই দাদাজি একদম
হাজির থাকেন তাকে উদ্ধার করার জন্য। সে নির্বিঘ্নে তার দুনিয়া নিয়ে খুশিতে বিরাজ
করে।
“সাগ্নিক তো খুব ভালো ছেলে,
দারুণ সব বিষয়ে ইন্টারেস্ট ওর,” ডক্টর রাউত ডোকরার সঙ্গে বেশ খানিকক্ষণ একা কথা
বলার পর ডোকরার বাবা-মাকে চেম্বারে ডেকে কথাগুলো বললেন, সাগ্নিক ডোকরার ভালো নাম।
“এবং সাগ্নিক সম্পূর্ণ সুস্থ, আমি ওর মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা পাইনি। আপনারা
নিছকই ভয় পাচ্ছেন,” ডক্টর
রাউত আশ্বস্ত করলেন।
“কিন্তু ডক্টর, রেজাল্ট দিন
দিন খারাপ হচ্ছে, তাছাড়া এরকম সব কিছুতেই ভয় - এগুলো আমাদের খুব ভাবাচ্ছে,” ডোকরার
মা বললেন।
“ওকে স্কুলের পড়াশোনার উপযোগিতাটা বোঝাতে হবে ম্যাডাম, তাছাড়া ও যে ভাবে পড়তে ভালোবাসে,
মানে ওর সাবজেক্টগুলোকে থ্রু ইন্টারনেট আরও তথ্য দিয়ে পড়ান, ও ইন্টারেস্ট পাবেই।
আর ভয় পাওয়া নিয়ে অত চিন্তার কিছু নেই। ওকে মাঝে মাঝে বেড়াতে নিয়ে যান, বাইরের জগত
ঘুরে দেখলে বুঝবে কত লোকে কতরকম ভাবে জীবনযাপন করে, আস্তে আস্তে এ সব কেটে যাবে।
সমুদ্রে যেতে পারেন, মাঝিদের কত বিপদের ঝুঁকি নিয়ে মাছ ধরতে যেতে হয় এসব দেখান
ওকে, ও তো প্র্যাকটিকালি দেখতে ভালোবাসে।”
ডক্টর রাউতের কাছ থেকে আসার
পরই ডোকরার বাবা-মা পুরী যাওয়ার প্ল্যান করেন। সামনেই
গরমের ছুটি। ডোকরার শোনামাত্রই মুখ ব্যাজার হয়ে যায়। টানা ৪৫ দিন ছুটি। পার্সোনাল
কম্পিউটারের সামনে বসে কত দরজা খুলবে সে, তা না, সমুদ্রের ধারে বসে থাকতে হবে।
কিন্তু এবারে দাদাজি কিছু বললেনই না। বরং বেড়াতে যাওয়ার কথা শুনে বেশ খুশিই হলেন।
কতদিন কোথাও যাওয়া হয় না। ডোকরাকে ডেকে বললেন, “দাদুভাই তোমার ইন্টারনেট দেখে
একখানা লিস্টি কর, বেড়াতে যেতে গেলে কী কী লাগবে।” ডোকরা যা
লিস্ট করল তাতে নানারকম কীটনাশকের সংখ্যা
বেশি। ট্রেনের গদিতে ছারপোকার আশঙ্কা, রাতে হোটেলে মশা, বালিতে সামুদ্রিক পোকামাকড়
এসব নিয়ে তার নানারকম চিন্তা।
ভোরবেলাতেই তারা পুরী পৌঁছল।
ট্রেন জার্নি ডোকরার মন্দ লাগেনি, পোকামাকড় নিয়ে অস্বস্তি থাকলেও। স্টেশন থেকে
দুটো রিক্সায় চেপে তারা হোটেলে পৌঁছল। রুমগুলো বেশ বড়ো আর পরিস্কার
পরিচ্ছন্ন। তার আর দাদাজির রুমটার বারান্দার দরজা খুললেই সামনে সমুদ্র। ডোকরা
সব দরজা জানলা খুলে ফুসফুসের ব্যায়ামটা করতে থাকল। দাদাজিও
তার দেখাদেখি আরম্ভ করে দিলেন। হালকা কিছু
ব্রেকফাস্ট করে ওরা সমুদ্রের ধারে বেড়াতে গেল। ডোকরার বাবা ডোকরাকে একটা পাতলা
ডিঙ্গি দেখিয়ে বোঝাতে লাগলেন কী ভাবে জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে মাঝিরা মাঝ সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়, কতরকমের বিপদ সমুদ্রে। ডোকরার
শুনতে মন্দ লাগছিল না। কিন্তু প্রথম দিন পুরীতে এসেই সমুদ্রে নামতে নারাজ ডোকরা,
সে এই আবহাওয়ার সঙ্গে নিজেকে অ্যাডজাস্ট করতে
চায়। দাদাজি এইবার
সমর্থন করল ডোকরাকে। দুপুরে হোটেলের বাথরুমে স্নান করে দারুণ সব মাছের রেসিপি দিয়ে
ভুরিভোজ সারল তারা। ডোকরার মনটা বেশ ফুরফুরেই হয়ে আছে। বিকেলবেলা আবার তারা
সমুদ্রের ধারে হাঁটতে গেল। সমুদ্রের আসা-যাওয়া দেখতে দেখতে ডোকরা ভাবল এবার ফিরে
গিয়ে ঢেউ নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। ঠিক তখনি একটা ভারি কিছু পায়ের কাছে এসে ঠেকল।
একটা ছোটো ডিউজ বল। বলটা ছোটো হলেও বেশ ভারি। পেছনে তাকিয়ে দেখল কতগুলো ছেলে
ক্রিকেট খেলছিল আর তারা বলটা খোঁজাখুঁজি করছে। ডোকরা
বলটা লুকিয়ে ফেলল সন্তর্পণে। বলটা যদি
তার গায়ে জোরে আঘাত করত? আবার যদি করে? ছেলেগুলো ডোকরার কাছাকাছি এসে খুঁজতে লাগল,
কিছুটা সন্দিগ্ধ চোখে ডোকরার দিকে তাকালও, কিন্তু ডোকরা এমনভাবে সমুদ্রে মন দিল যে
তারা কোনও কিছু না বলে ফিরে চলে গেল। ডোকরা বসে বসে চারিদিকে খেয়াল রাখতে লাগল, কে
কী করছে। একটা বছর পাঁচেকের বাচ্চা
দৌড়ে দৌড়ে খুব খেলছে। ডোকরার খুব মজা লাগল দেখতে। তার বাড়ির লোকেরা গোল করে বালির
উপর বসে গল্প করছে, কখনও কখনও বাচ্চাটার
নাম ধরে ডাকছে। বাচ্চাটা ফিরে আসছে আবার চলে যাচ্ছে। ডোকরার
বাবা-মা বিচে বসে থাকা দোকানিদের সঙ্গে কথাবার্তা বলছে। দাদাজি নিজের মতো হাঁটাচলা
করছেন। বাচ্চাটা এগিয়ে যাচ্ছে দৌড়তে দৌড়তে। তার বাড়ির লোকজনেরা এত গল্পে মশগুল আর
খেয়ালই করছে না। বাচ্চাটা এগোতে এগোতে ছোটো হয়ে যাচ্ছে। ডোকরা দেখতে পেল তিনটে লোক
দাঁড়িয়ে আছে, বাচ্চাটাকে প্রায় দেখাই যাচ্ছে না। তাদের মধ্যে একজন বাচ্চাটাকে কোলে
তুলে আদর করছে। ডোকরার অস্বস্তি হতে লাগল। সামনের দিকে হাঁটতে থাকল। লোক তিনটে
বাচ্চাটাকে নিয়ে সামনের দিকে এগোচ্ছে। ডোকরাও একটু তফাতে থেকে হাঁটতে লাগল। সামনে
লোকের ভিড় কমছে। লাইটহাউসের কাছাকাছি একটু নির্জন পরিবেশ। এদিকটায়
লোকজন নেই বললেই চলে। লোক তিনটে বাচ্চাটাকে নিয়ে সামনে ঝাউবনের দিকে ঢুকে পড়ছে।
ডোকরাও খানিকটা দৌড়ে ঝাউবনের মধ্যে ঢুকল। ঝাউবনের মধ্যে একটা পুলিশের গাড়ি টহল
দিচ্ছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। গাড়ির আওয়াজ পেয়েই লোকগুলো গাছের আড়ালে গা ঢাকা দিল।
ডোকরাও একটা গাছের আড়ালে লুকিয়ে রইল। হঠাৎ তার খুব ভয় করতে আরম্ভ করল। এটা সে কী করেছে? কাউকে না জানিয়ে এই বিপদের মধ্যে চলে এসেছে।
লোকগুলো টেররিস্ট বোঝাই যাচ্ছে। ডোকরা ইন্টারনেটে
ভয়ঙ্কর ভয়ঙ্কর টেররদের কথা পড়েছে। কতরকমের অস্ত্র থাকে তাদের কাছে। এবার কী হবে? ও ফিরবে কীভাবে?
পুলিশের গাড়ির কাছে যাওয়ারও ক্ষমতা নেই ডোকরার, যদি ওরা ডোকরাকে লক্ষ্য করে গুলি
চালায়। গাড়ির আওয়াজ মিলিয়ে যেতেই ওরা বেরিয়ে
এল। এক জায়গায় দাঁড়িয়ে কীসব আলোচনা
করছে। এতক্ষণ ডোকরা ঘোরে হেঁটে চলে এসেছে। খেয়ালই
করেনি। এখন হঠাৎ খেয়াল করল তার পকেটে খুব ভারি একটা কিছু আছে। ডিউজ বলটা। ডোকরা
বলটা বের করল। নিজে খেলাধূলা না করলেও এ সবের পেছনের টিপসগুলো পড়তে ডোকরার ভালোই
লাগে। কিছুদিন আগে বাস্কেটবল কীভাবে থ্রো
করতে হয় তাই নিয়ে পড়ছিল ডোকরা। বল ছোঁড়ার
সময় চোখ আর হাতের কোঅর্ডিনেশনটা খুব জরুরি। সন্ধে হবে হবে। আলো খানিকটা কম।
লোকগুলো বেশ লম্বা। তাও ডোকরা থ্রো করল বলটা। একদম বাজিমাত। একটা লোকের মাথার
পেছনে গিয়ে লাগল, সে চিৎকার করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। বাকি দু’জন বাচ্চাটাকে কোল
থেকে নামিয়ে তাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেল। ঠিক তখনি পেছন থেকে কেউ হেল্প হেল্প বলে
চিৎকার করতে লাগল। দাদাজির গলা। ডোকরাকে একা হাঁটতে
দেখে দাদাজিও পিছু নিয়েছিলেন। পুলিশের
গাড়িটা হুশ করে ঝাউবনের ভেতর থেকে বেরিয়ে এল।
বাচ্চাটিকে তার বাড়ির
লোকজনদের হাতে ফেরত দিয়ে দাদাজি ডোকরাকে জড়িয়ে ধরলেন। বাচ্চাটির বাবা-মা কীভাবে ডোকরাকে ধন্যবাদ জানাবে ভাষা পাচ্ছিল
না। পুলিশও ডোকরার সাহসের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। ডোকরার বাবা-মাও আহ্লাদে আটখানা। কে
বলে ডোকরার সাহস নেই? জয় আন্তর্জালের জয়।
_____
ছবিঃ রুমেলা দাশ
No comments:
Post a Comment