গল্পের ম্যাজিক:: রহস্য যখন নদীর বাঁকে - অভিজ্ঞান রায়চৌধুরী

রহস্য যখন নদীর বাঁকে

অভিজ্ঞান রায়চৌধুরী


“স্বামী ভবানন্দজি। অদ্ভুত ক্ষমতা, তাই না!” মিলন বলে উঠল।

“হ্যাঁ, এরকম গ্যারান্টি দিয়ে ঈশ্বরদর্শন করানো! ভাবা যায়?”



“আসলে বলাটাই বড়ো কথা নয়, করেও তো দেখাচ্ছেন! যে-ই যায় ওর কাছে সেই তো পালটে যাচ্ছে। এই তো ম্যাজিশিয়ান মল্লিক অনেক হম্বি তম্বি করে গিয়েছিলেন, বলেছিলেন ভণ্ডামি, অপকীর্তি সব ফাঁস করে দেবেন। তা এক মাস বাদে ফিরে এলেন বাবা- বাবা বলতে বলতে। শুনছি ম্যাজিকও ছেড়ে দিচ্ছেন। বাকি সারা জীবন গুরুর বাণী প্রচার করে আর জনসেবায় দিন কাটাবেন বলছেন


“দেখেছো কাগজে ভবানন্দজির ওপর রোজ একটা লেখা থাকবেই। আমার মনে হয় মিডিয়ার সঙ্গেও ওর দারুণ যোগাযোগ আছে

“তা তো হবেই বড় বড় সব নেতা - আমলারা ওনার শিষ্য। আর ওনার কাছে দীক্ষা নেবার জন্যও বিশাল ওয়েটিং লিস্ট। স্বামীজি নাকি কয়েকশো নামের মধ্যে মাত্র কয়েকজনকে বেছে নেন। তাও আবার বছরের নির্দিষ্ট কিছু সময় ছাড়া দীক্ষা দেন না

“অদ্ভুত তো! তা লোকটাও খুব ভালো শুনেছি। ওনার কথা শুনে তাই তো মনে হয়

“লোক বলিস না বাবা, ওঁরা হলেন মহাপুরুষ,মাসিমা বলে উঠলেন, “আমরাও এক বছর ধরে অপেক্ষায় আছি। কখন স্বামীজি ডাকেন। ভাগ্যে থাকলে হবে

“আমি গত সপ্তাহে ডাক পেয়েছি মাসিমা। আগামী সপ্তাহে যাচ্ছি

বিশ্বজিৎদা বলে উঠল, “ন’ মাস অপেক্ষা করে” আমরা সবাই চমকে উঠলাম। এত বড়ো খবরটা এতক্ষণ বিশ্বজিৎ দা বলেনি।

“সত্যি ভাগ্য করে এসেছিস বিশ্ব। তা না হলে এরকম স্বামীজির কাছ থেকে ডাক পাস,” মাসিমা বলে উঠলেন। আমরাও সবাই তাতে যোগ দিলাম। এই প্রথম আমাদের চেনা কেউ স্বামীজির দর্শন পেতে চলেছে।

তোমরা যারা আমাদের শনিবারের আসর সম্বন্ধে পরিচিত নও, তাদের জানাই প্রত্যেক শনিবার উত্তর কলকাতার রামতনু বোস লেনের এক বাড়িতে আমরা জনা কুড়ি কিশোর কিশোরী জমায়েত হই। বিজ্ঞান, সাহিত্য, মেলা, সিনেমা কোনও কিছুই আমাদের আলোচনা থেকে বাদ যায় না। তা আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় স্বামী ভবানন্দজি। গত এক বছরে তাঁর নাম সারা ভারতে ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু ভারতে কেন ভারতের বাইরে থেকেও অনেকে ওনার কাছে দীক্ষা নিতে আসেন। স্বামীজির দীক্ষা দেওয়ার পদ্ধতিটাও ভারি অদ্ভুত। প্রায় একমাস ধরে এই দীক্ষা পর্ব চলেহয় বছরের বিশেষ কিছু সময়ে। বেছে বেছে নেন। লক্ষাধিক ভক্তের মধ্যে সামান্য কিছু জন স্বামীজির কাছে দীক্ষা নেবার সুযোগ পায়। আর যারাই ওঁর সংস্পর্শে আসেন তাদের মধ্যে বিশাল পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। বিখ্যাত অ্যাডভোকেট রামকুমার শেষাদ্রি, ই এন  পি সফটওয়্যার সার্ভিসের প্রধান রবি উনি, ক্রিকেটার ভরত শেঠ, হোম মিনিস্টার রাহুল সরকার - সবার মধ্যেই এক বিশাল মিল। এরা সবাই স্বামীজির শিষ্য। স্বামীজির থেকে দীক্ষা নেবার পর এদের কেউ কেউ পেশার থেকে সরে এসে পুরোপুরি জনসেবার কাজে যুক্ত হয়েছেন, কেউ পুরো সন্ন্যাসী হয়ে গেছেন। স্বামীজির কথায় প্রত্যেকের মধ্যেই ঈশ্বর আছেন, আর উনি সেই ঈশ্বর কে খুঁজে পেতে সাহায্য করেন।

“তা বিশ্বজিৎদা তুমি কবে যাচ্ছ? দারুণ এক্সাইটেড নিশ্চয়ই?” রাতুল বলে ওঠে।

“হ্যাঁ তা তো বটেই। তবে এখনও কুড়ি দিন বাকি আছে

“তা তুমি এত ধার্মিক হলে কবে থেকে?” শিশির বলে ওঠে।

“আরে আমি থোড়াই যাচ্ছি সেরকম ভক্ত হতে! আসলে এরকম পরিবর্তন এ ক'দিনের মধ্যে কীভাবে সম্ভব সেই কৌতূহলটাই আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে

“বিশ্বজিৎদা থেকে স্বামী বিশ্বানন্দজি,” অনিলিখা এতক্ষণ চুপ করে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিনের পাতা ওল্টাচ্ছিলো। হঠাৎ করে খোঁচা মেরে দিল।

কটমট করে অনিলিখার দিকে তাকিয়ে বিশ্বজিৎদা বলে উঠল, “আমার ওপর প্রভাব বিস্তার করাটা অত সহজ হবে না। আমার বিশ্বাস এর পেছনে একটা বড় কোনও চক্র কাজ করছে। এই যে চক্রধরপুর - এর কথা আগে কোনও দিন কেউ জানত? এখন শুধু স্বামীজির জন্যই লক্ষ্ লক্ষ্ লোক ওখানে আসতে শুরু করেছে। বিশেষ করে ইয়ংগার জেনারেশান - চল্লিশের কমবয়সীদের আকর্ষণ করতে পেরেছেন। স্বামীজির প্রভাবে ওই অঞ্চলে হিংসার ঘটনাও কমে গেছে

“তা এতে অস্বাভাবিক কী আছে?”

“অস্বাভাবিক আছে বৈকি! অন্য কোনও গুরু, মুনি-ঋষি যা পারলেন না, হঠাৎ করে ইনি করছেন কী করে? তা ছাড়া আর কোনও গুরুকে নিয়ে এত লেখালেখি হতে দেখেছিস? কাউকে ঘিরে এত বড় বড় নেতাদের ভিড় দেখেছিস? আমার মনে হয় পুরো ব্যাপারটার পেছনেই সরকার আর প্রচার মাধ্যমের প্রত্যক্ষ মদত আছে। আর তা-ই আমার যাওয়া

“তা ওখানে কতদিন থাকতে হবে?”

“একমাস তো থাকতেই হবে। পুরো দীক্ষার প্রসেসটাই চলবে একমাস ধরে। তারপর আমার আরও দিন চার পাঁচ থাকার ইচ্ছা আছে

“তার মানে বিশ্বজিৎদা তুমি বেশ কয়েক সপ্তাহ আর এখানে আসছ না?”

“আমি না থাকলেই বা কী! অনিলিখা তো আছেই। ওর কাছেই গল্প শুনিস তোরা” অনিলিখাকে বিদ্রুপ করার সুযোগ পেলে বিশ্বজিৎদা ছাড়ে না। আজকের বাকি সময়টাও ভবানন্দজি, আর বিশ্বজিৎদা কী ভাবে যাবে, কী প্রস্ততি নেবে - সেসব নিয়ে আলোচনায় কেটে গেল।

(২)

আমরা আবার তিনমাস বাদে শনিবারের আসরে বিশ্বজিৎদাকে ফিরে পেয়েছি। অনিলিখাও আছে। বিশ্বজিৎদা ছিল না বলে যে আমাদের শনিবারের জমায়েত বন্ধ ছিল তা নয়। তবে অনেকটাই স্বাদ হারিয়েছিল। অনিলিখাও এর মধ্যে একদিন এসেছিল। তাই দুই চন্দ্র –সূর্যের অভাবে আমাদের আসর একদমই টিমটিমে হয়ে পড়েছিল। বিশ্বজিৎদা প্রায় একমাস হল ফিরেছে। কিন্তু ফেরার পর থেকে আমাদের আসরে আর আসেনি। তাছাড়া লোকমুখে খবর পেয়েছি ফেরার পর থেকেই বিশ্বজিৎদা নাকি একেবারেই পালটে গেছে। দিনের অনেকটা সময় গীতা-ভাগবৎ পড়ে সময় কাটায়, হালকা কথা বলে না। তাই আরও উদগ্রীব হয়ে বিশ্বজিৎদার অপেক্ষা করছিলাম, যাতে পরিবর্তনটার চাক্ষুষ পরিচয় পাই। ঢোকামাত্রই সে প্রমাণ পেলাম। অন্যদিনের মতো চটিটা ছুঁড়ে না ফেলে হাতে করে সরিয়ে রাখল। সেরা চেয়ারটায় না বসে, ঘরের এককোণে রাখা টুলটার ওপর কুণ্ঠিত ভাবে বসল। আমাদের সবার উত্তেজিত কণ্ঠস্বর উপেক্ষা করে একবার উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে বুঝিয়ে দিল যে ও আর আগের মতো নেই। ট্রেতে রাখা গরম সিঙ্গারাগুলোর দিকে শীতল দৃষ্টিতে একবার তাকিয়ে চোখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিল। এ যেন অন্য কেউ।

আমাদের অনেক পীড়াপীড়িতে বিশ্বজিৎদা আস্তে আস্তে বলতে শুরু করল, “স্বামীজির সংস্পর্শে এসে আমি এটাই বুঝলাম যে এতদিন কীভাবে আমি নষ্ট করেছি” হাতটা কপালে ঠুকে, চোখ বন্ধ করে প্রণাম করে ফের বলতে শুরু করল, “জায়গাটা খুব রিমোট। আগে তো বলতে গেলে যাওয়াই অসম্ভব ছিল, এখন তাও স্বামীজির আশ্রমের জন্য প্রচুর বাস যায়। যদিও তা কোনও ভাবেই যথেষ্ট নয়। দেরাদুন থেকে বাসে দেড় ঘণ্টার মতো। সাকরি। তারপর সেখান থেকে আশ্রমের বাসই নিয়ে যায়। অন্য কোনও বাস বা গাড়িতে যাওয়ার উপায় নেই। যেদিন পৌঁছলাম তার দুদিন পরে প্রথম স্বামীজির দর্শন পেলাম। একদম আর পাঁচজনের মতো চেহারা। কিন্তু চোখ মুখের দিকে তাকালেই বোঝা যায় যে ইনি সাধারণ নন। একটা অদ্ভুত দীপ্তি, দৃঢ়তা আর প্রশান্তির ছাপ। মুখে সর্বদা স্মিত হাসি। চারপাশের চাঞ্চল্য থেকে যেন কত দূরে। আমাকে দেখে মৃদু হেসে বলে উঠলেন, “কী আবার আমার পরীক্ষা নিতে এসেছিস? তা ভালো, অন্ধ বিশ্বাস ভালো নয়। যাচাই করে নিতে হয়। তবে মনে রাখিস এ তোর নিজেরই পরীক্ষা” কী করে আমার মনের কথা বুঝলেন জানিনা। প্রথম দর্শনেই শ্রদ্ধায় মনটা ভরে উঠল। স্বামীজিকে প্রণাম করে অন্য একটা ঘরে বসলাম। আমারই মতো আরও যারা দীক্ষা নেবে তারা অপেক্ষা করছে। স্বামীজির এক শিষ্য এসে আমাদের সব বুঝিয়ে দিয়ে গেল। আমাদের প্রত্যেকের জন্য একটা জায়গা নির্দিষ্ট আছে, যেখানে বসে আমাদের আরাধনা করতে হবে। প্রত্যেকে শুধু দুটো করে জামা কাপড় সঙ্গে নিতে পারবে। দিনে মোটে একবার খেতে পারব। তাও যৎসামান্য। জলতেষ্টা পেলে পাশের নদী থেকে খেয়ে আসতে হবে। এভাবে একমাস কাটাতে হবে। তবেই নাকি আত্মশুদ্ধি হবে। তারপরে হবে দীক্ষা। মনে মনে হাসছিলাম কে কাকে দীক্ষা দেয়! এরপর তিনজন শিষ্য আমাদের আরাধনার জায়গা দেখাতে নিয়ে গেল। ভেবেছিলাম বোধ হয় কোনও বাড়ির বড় চাতাল হবে। কোথায় কী! পাশেই তোরাই নদী। পাহাড়ি নদী। বাঁক নিয়ে নেমেছে। তারই ঠিক পাশে। চারদিকে পাহাড়ে ঘেরা। তারই মাঝে খানিকটা উপত্যকা মতো। পাহাড়ের গায়ে ছোট ছোট গুহা। তারই একটাতে আমাকে বসতে হবে। সেটা বড়জোর পাঁচ বাই সাত ফুটের মতো জায়গা। পাথরের ওপর শুতে হবে। আমাদের আর নদীর মাঝে, নদীর ধার বরাবর শ্মশান ঘাট। তবে অনেক পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন। মড়া পোড়ানো হচ্ছে। জায়গাটা দেখে ভয় পাওয়া খুব স্বাভাবিক। তবু চারদিক এত পরিষ্কার, এত সুন্দর পরিবেশ যে কেন জানিনা ভয় লাগছিল না। চারদিকে তাকালেই মনে হয় এটা দারুণ বেড়ানোর জায়গাও হতে পারত।

(৩)

পরের দিন থেকে আরাধনা শুরু হল। কোনও কথা বলার অনুমতি নেই। যখন তখন ধ্যান ভেঙ্গে ওঠাও যাবে না। তবু প্রথমদিন উঠে মাঝে মাঝেই হেঁটে আসছিলাম। মনঃসংযোগ করতে অসুবিধা হচ্ছিল। দূর থেকে ওঁ ধ্বনি, মন্ত্রোচ্চারণ ভেসে আসছে। আমাদের প্রত্যেকের আরাধনার জায়গার মধ্যে প্রায় একশো ফুটের ব্যবধান। সকাল থেকে কোনও খাওয়া নেই। সন্ধেবেলা একজন একটা বাটিতে করে ডাল রুটি দিয়ে গেল। সারাদিনের খিদে কি আর ওতে মেটে? কিন্তু উপায় নেই। এটাই নিয়ম। রাতের বেলায় শুয়ে শুয়ে মনে হচ্ছিল কেন মরতে এখানে এলাম। চারদিকের অন্ধকারের মধ্যে আগুন দেখা যাচ্ছে, মড়া পোড়ানোর। আর নদীর জলের আওয়াজ। মাঝে মাঝে নদীর ধারের মন মাতাল করা হাওয়া। কিন্তু পেট জ্বলছে। প্রথম রাতে একটা মুখরোচক স্বপ্নও দেখে ফেললাম।

খিদের চোটে ঘুম তাড়াতাড়ি ভেঙ্গে গেল। তখনও সূর্য ওঠেনি। হেঁটে নদীর ধার অবধি ঘুরে এলাম। আমাদের গ্রুপে কয়েকজন বিদেশীও ছিল। তাদের একজনকে পথে দেখলাম। আশপাশে যে কটা গাছ দেখলাম কোনোটাতেই কোনও ফল নেই যে খাবো। রোদ একটু উঠতেই গুহায় ফিরে এলাম। ‘গুরুর বাণী’ বলে যে বইটা আমাদের পড়তে দেওয়া হয়েছে বসে বসে তাই পড়তে লাগলামনদীর ধার থেকে মড়া পোড়ানোর ধোঁয়া ভেসে আসছে। তবে আশ্রমের লোকেরাই পুরো ব্যাপারটা নিয়ন্ত্রণ করে, তাই মাঝে মাঝে কাঠ কাটার আওয়াজ ছাড়া আর কোনও আওয়াজ নেই। দুপুরের দিকে নদীর হাওয়ায় আর ক্লান্তিতে খানিকক্ষন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুম থেকে উঠে দেখি থালায় মোটা বাজরার রুটি আর ডাল দিয়ে গেছে। খিদের চোটে তা-ই খুব তৃপ্তি ভরে খেলাম। বিকেলের দিকে এক গুরুভাই জানিয়ে গেল যে সন্ধেবেলা নদীর ধারে একটা জায়গায় গীতা পাঠ হবে - আমি যেন যাই। খানিকবাদে সেখানে পৌঁছে দেখি জনাপাঁচেক ভক্ত আগুনকে ঘিরে গোল হয়ে বসে আছে। চারদিকে নিকষ কালো অন্ধকার। তারাখচিত আকাশের নিচে আগুনের আলোয় গীতাপাঠ হচ্ছে। অনির্বচনীয় পরিবেশ।

প্রায় ঘন্টাচারেক গীতা পাঠ হল। তারপর আমরা যে যার মতো গুহায় ফিরে গেলাম। সে রাতে খুব বৃষ্টি হল। সঙ্গে বজ্রপাত। এমন বজ্রপাত আগে দেখিনি। চারদিকের পাহাড় ও গাছগুলো চমকে চমকে উঠছিল বিদ্যু চমকে। ভোরবেলা উঠে দেখি ঠিক সামনেই একটা গাছে বজ্রপাত হয়েছে। গাছের কঙ্কাল বেরিয়ে পড়েছে। চারদিকের বাতাস অনেক হাল্কা লাগছে।

এরকম ভাবে দিনের পর দিন কাটতে লাগল। কোনও বৈচিত্র্য নেই।  কিন্তু অদ্ভুত একটা আনন্দ আছে, একটা নেশা আছে। সারাদিন ধরে গুহায় বসে ধর্মগ্রন্থ পাঠ, দুপুরের দিকে সামান্য আহার। সন্ধেতে বেশির ভাগ দিন সমবেত ভাবে আগুনের ধারে বসে গীতাপাঠ। রাতের অন্ধকারে তারাভরা আকাশ দেখা। নদীর ধারে শ্মশান ঘাটে আগুনজ্বলা দেখা। পাহাড়ে ধাক্কা খাওয়া বাতাসের কানাকানি, নদীর স্রোত আর ঝিঁঝিঁর ডাকের সিম্ফনি শোনা। মাঝে মাঝে ঝড় বৃষ্টির রাতে গুহার কোণে কোনও রকমে পড়ে থেকে বৃষ্টির ছাঁট এড়ানোর চেষ্টা। শরীর অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ল। মনে হয় সবসময় শুয়ে থাকি। মাঝে কয়েকদিন জ্বরও এল নদীর ঠাণ্ডা জলে স্নান করে। ডাক্তার দেখে কিছু কবিরাজী ওষুধ দিয়ে গেল। শুধু আমারই যে এরকম তা নয়, প্রত্যেকের এক অবস্থা। এত কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা খুব কম জনেরই থাকে। তবে আশ্রমের গুরুভাইরা এমনিতে খুব যত্ন নেয়। কারো শরীর খারাপ হলে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসে। বয়স্কদের উপর বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখে।

ওখানে একটা জিনিস খুব অদ্ভুত লাগত। এত সুন্দর একটা জায়গায় শ্মশান রেখেছে কেন? ওটাকে আলাদা করে দিতে পারত, অবশ্য এটা ঠিক শ্মশানের এই আগুন দূর থেকে দেখে মন যেন কেমন উদাস হয়ে ওঠে। মনে হয় একদিন তো আমারও ওই দশা হতে চলেছে। এসব কষ্ট তখন অনেক কম লাগে। প্রায় প্রতি রাতেই বৃষ্টি আর সঙ্গে বজ্রপাত। আর সেই বজ্রপাত এত অবিরাম হয় যে সকালে উঠলে অবাক লাগে এই ভেবে যে এত গুলো গাছ রক্ষা পেল কী ভাবে? দিন কুড়ির পর থেকে রোজ ডাক্তার এসে দেখত। ওষুধের সঙ্গে সঙ্গে ইঞ্জেকশানও দিত। ছাব্বিশ দিনের মাথায় শরীর এতটাই ভেঙ্গে পড়ল যে ডাক্তার দুধ খেতে বলল। পরের দিন দুধ খাবার পরই অদ্ভুত ব্যাপারটা হল।

দুধ খাবার পরই মাথাটা কী রকম ঝিমঝিম করে উঠল। হঠা করে মনে হল কেউ যেন আমাকে অন্ধকার পথ দিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছে দুরন্ত গতিতে। আর সেই অন্ধকার চিরে হঠা দেখতে পেলাম তীব্র আলো। বাবা মারা গেছেন দশ বছর হল। তাঁকে দেখতে পেলাম। দেখতে পেলাম আমার ছোটমাসিকে যে আমাকে ছোটবেলায় মানুষ করেছে। ছোটমাসিও বছর পাঁচেক হল মারা গেছে। স্কুল থেকে বেরুলেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকত এক অন্ধ ভিখারি, যাকে রোজ আমি টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে পাঁচ পয়সা দিতাম। তাকেও দেখতে পেলাম। দেখতে পেলাম প্রথম স্কুলে যাবার দিন। স্পষ্ট। বাবার হাত ধরে স্কুলের চাতালে দাঁড়িয়ে আছি। মনে হল আমি যেন আমার শরীর থেকে বেরিয়ে এসেছি। ওপর থেকে আমার শরীরটা দেখতে পেলাম। দেখতে পেলাম দূরে নদীর জল। চারদিকে পাহাড়। মনে হল আমার আর কোনও বন্ধন নেই। যেখানে চাই যেতে পারছি। সে এক অদ্ভুত স্বর্গীয় অভিজ্ঞতা। মনে দুঃখের কোনও লেশ নেই, শুধুই স্বার্থহীন আনন্দ। কতক্ষণ এরকম ছিলাম জানিনা। যখন জ্ঞান ফিরল দেখি আমাকে ঘিরে কয়েকজন গুরুভাই দাঁড়িয়ে আছে। নিজেকে সম্পূর্ণ অন্যরকম লাগছিল। মনের মধ্যে কোনও পাপবোধ নেই, নিজেকে নিয়ে চিন্তা নেই, ভাবনা নেই। বুঝলাম যে জন্য এখানে এসেছি, সে উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ হয়েছে। পরের দিন ভবানন্দজি আমাকে দীক্ষা দিলেন। আমার মাথায় হাত রেখে বললেন, “আর কোনও প্রশ্ন নেই নিশ্চয়! এতদিনে নিজেকে ফিরে পেয়েছিস, যা এবার তা কাজে লাগা। এ সংসার শুধু মিথ্যেয় ভরা। কালকে যা অনুভব করেছিস তাই ঈশ্বর। ঈশ্বর তোর মধ্যেই আছেন,” বলে আমার বুকে হাত ছুঁইয়ে বললেন, “এই এইখানে। এবার অন্যের কাজে নিজেকে লাগা। অন্যের কষ্ট দূর করার মধ্যেই জীবনের সার্থকতা

একটু থেমে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বিশ্বজিদা বলে উঠল, “আমি এখন বুঝতে পারি কীভাবে আমি জীবনের এতগুলো বছর নষ্ট করেছি। যাই হোক গুরুর কৃপায় এখন আমার উপলব্ধি হয়েছে


“তা তুমি যে জায়গায় গিয়েছিলে সেটা কি শুধুই পাহাড় দিয়ে ঘেরা ছিল? না আলাদা পাঁচিলও ছিল?” এতক্ষণের নীরবতা ভেঙ্গে অনিলিখা হঠা একটা বেখাপ্পা প্রশ্ন করে বসল। জানিনা পাঁচিলের ব্যাপারটা এত দরকারী মনে হল কেন?

বিশ্বজিদা খানিকটা অবাক হয়ে বলল, “হ্যাঁ ঠিক বলেছ। পুরো জায়গাটা প্রায় তিরিশ ফুট উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। তা তুমি আন্দাজ করলে কী করে? আমারও একটু অবাক লেগেছিল। এমনিতেই অত বিচ্ছিন্ন জায়গায় অত উঁচু পাঁচিল কেন! তেমন দামী কিছুও তো নেই

“তোমাদের কি মারা হত?” আবার অনিলিখা প্রশ্ন করল।

বিশ্বজিদা এবার সত্যিই অবাক, “হ্যাঁ অনুমতি নিয়েই পিঠে দশবার করে রোজ বেত মারা হত। স্বামীজির মতে এটা আত্মশুদ্ধি, পুরোনো গ্লানি থেকে মুক্তির জন্য। যাতে মনে অতীতের কোনও অপরাধ বোধ না থাকে

“আচ্ছা, যে দিন সকালে তোমার এই দর্শন হল, তার আগের রাতেও কি বৃষ্টি বজ্রপাত হয়েছিল?”

বিশ্বজিদা খানিক চিন্তা করে বলে উঠল, “হ্যাঁ, তার আগের দিন থেকে দুপুর থেকে প্রবল বৃষ্টি–বজ্রপাত হচ্ছিল। সেদিন সকাল অবধি চলেছিল। আচ্ছা তুমি এসব প্রশ্ন কেন করছ বলতো অনিলিখা?”

অনিলিখা মৃদু হেসে খানিক্ষন চুপ করে রইল, “তোমার যেদিন ওই অনুভূতি হয়েছিল তা খুব একটা সাধারণ দিন নয়। ওই দিনের একটা বিশেষত্ব ছিল — কী জানো?”

“আরে ওই দিনেই তো আমেরিকার ভার্জিনিয়ায় ইউনিভার্সিটিতে পাগল একটা ছাত্র এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে অনেক ছাত্রছাত্রী মেরেছিলো, তাই নয়?” মিলন বলে ওঠে।

শিশির ধমক দিয়ে বলে ওঠে, “থাম তো, তার জন্য কি আর ওই দিন কে বিশেষ বলা যায়?”

অনিলিখার ঠোঁটের কোণে একটু হাসি, “ওটা ওই দিনের বিশেষত্বের একটা প্রকাশমাত্র। মহাকাশবিদ ছাড়া খুব কম লোকেই জানে যে ওই দিনটাতে চাঁদ গত পঞ্চাশ বছরের মধ্যে পৃথিবীর সব থেকে কাছে এসেছিল। অর্থা কী বলতে পারিস?”

“ম্যাগনেটিক ফিল্ডের কিছু ব্যাপার?” রাতুল আমতা আমতা করে বলে ওঠে।

“ঠিক তাই। চাঁদের কাছে আসাটা পৃথিবীর তড়ি চৌম্বক ক্ষেত্রের উপর বিশাল প্রভাব ফেলে। আর তার প্রভাব পড়ে আমাদের মস্তিস্কে

অনিলিখা খানিক থেমে বলে ওঠে, “আমি যা বলতে যাচ্ছি তা বলার সাহস খুব কম লোকেরই আছে। সারা বিশ্বে গুটি কয়েকজন বিজ্ঞানী আছেন যারা এটি জানেন। তারাও এব্যাপারে প্রকাশ্যে কিছু বলবেন না, আর এ তথ্যকে গ্রহণ করতে হলে মনটাকে খোলা রাখতে হবে

মাসিমা অধৈর্য হয়ে বলে ওঠেন, “বলে ফেলো না অনিলিখা। এমন আর কী বলতে চলেছো? বিশ্বজি তো আমাদেরই ঘরের ছেলে

“আমাদের মস্তিস্কের সব থেকে বড় রহস্য হল টেম্পোরাল লোব। এটা মস্তিস্কের দুই ধারে কানের পাশাপাশি থাকে। টেম্পোরাল লোব সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন আছে। তবে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন এই টেম্পোরাল লোবকে উদ্দীপ্ত করলে বিশ্বজিদার যে অনুভূতি হয় ঠিক একই রকমের অনুভূতি হয়। লোকেরা হারিয়ে যাওয়া ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের দেখে, মনে হয় অনুভূতি শরীরের বাইরে ছড়িয়ে পড়ছে। শরীর কে ওপর থেকে দেখা যায় অনুভব করা যায় একটা বৃহ শক্তিকে, এককথায় আমাদের চেতনাবোধ শরীরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। অ্যালডাক্স হাক্সলে একেই বলেছিলেন মানুষ আর মহাবিশ্বের অচেনা এক বৃহ শক্তির মধ্যে সংযোগকারী মাধ্যম। তা কী করে এই টেম্পোরাল লোব উদ্দীপ্ত হয়? নাইট্রিক অক্সাইডের সাহায্যে। এই নাইট্রিক অক্সাইড তৈরী হয় অক্সিজেন আর নাইট্রোজেনের মিশ্রণে বিদ্যুসংযোগে। অর্থা নাইট্রিক অক্সাইড বাতাসে বেড়ে যায় বজ্র-বিদ্যুপাত হলে। আর তাছাড়া উঁচু জায়গাতে এমনিতেই নাইট্রিক অক্সাইড বেশী থাকে

জয়দীপ বলে ওঠে, “তুমি বলতে চাও বিদ্যুপাত হলে পরেই এই ধরণের অনুভূতি হয়তা হলে তো লোকে আকছার এরকম দেখত।

“না, শুধু নাইট্রিক অক্সাইড তৈরী হলেই যথেষ্ট নয়। নাইট্রিক অক্সাইড বাতাসের থেকে ভারী। দেখতে হবে এই নাইট্রিক অক্সাইড চারদিকে ছড়িয়ে না পড়ে। তাই চারধারে এই পাঁচিল। আর গুহার ভেতরে আরাধনা যাতে নাইট্রিক অ্যাসিডের ঘনত্ব আরও বেশী হয় । এবার আসি শ্মশান প্রসঙ্গে। মৃতদেহ পোড়ালে বা পচলে তা থেকে মিথেন বলে একটা গ্যাস উপন্ন হয় যা মস্তিস্কে প্রভাব ফেলে। বিজ্ঞান আজকে এ কথা বলছে, কিন্তু মুনি-ঋষিরা আগে থেকেই এ কথা জানতেন। তাই তাঁরা গুহায় বসে শ্মশানের কাছে। আর শুধু যে আমাদের দেশেই এই অভ্যাস ছিল তাই নয়। পিরামিড। পিরামিড তো মিশরীয়দের কাছে ছিল একধরনের উপাসনাস্থল। তাই পিরামিডের চার ধারেও অতীতে ছিল উঁচু পাঁচিল যাতে নাইট্রিক অক্সাইড না বেরুতে পারে। কবরখানাও থাকত সব পিরামিডের খুব কাছে

খানিক থেমে অনিলিখা আবার বলে ওঠে, “আরেকটা জিনিস লক্ষ্য করবি, পৃথিবীর সব ধর্মস্থানই হয় নদীর ধারে যেখানে নদী হঠা করে বাঁক নিয়েছে বা কোনও ঝর্ণার কাছে। কারণ ফ্রি ইলেকট্রন। টেম্পোরাল লোব কে উদ্দীপ্ত করতে আরেকটা অনুঘটক। বুদ্ধের বোধি লাভ করার কথাই ভাবো। বুদ্ধগয়া নৈরঞ্জনা নদীর ধারে। বুদ্ধ এরপর প্রথম ভক্তদের উপদেশ দেন সারনাথে। সারনাথেও যে জায়গা বেছে নিয়েছিলেন তা ছিল নদীর ধারে। এবার, দ্বিতীয় প্রসঙ্গে আসি। উপবাস, নাম মাত্র খাওয়া দাওয়া আমরা অনেক পুজোর দিনেই করি। হয়ত একদিন, আধদিন। এই অভ্যাসটা এসেছে কোথা থেকে? আগের মুনি ঋষিরা দিনের পর দিন না খেয়ে সাধনা করতেন। বিশ্বজি তো তাও কিছু একটা খেত। শরীরের ওপর অত্যাচার, টেনশন, কষ্ট এও তেমন অবস্থার সৃষ্টি করে যাতে টেম্পোরাল লোব সহজে উদ্দীপ্ত হয়। কিছু ধর্মে তো বেত বা ছড়ি দিয়েও মারা হয়। এ সবই প্রস্তুতি। খুব সুস্থ শরীরে টেম্পোরাল লোব উদ্দীপ্ত হয় না

“তুমি এবার বলবে বিশ্বজিদা কে দুধ খাওয়ানো হয়েছিল - তাও বিশেষ উদ্দেশ্যে,” মিলন উত্তেজিত হয়ে বলে উঠল।

“দুধ তো অবশ্যই ইচ্ছে করে খাওয়ানো হয়েছিল। দুধে থাকে ট্রিপটোফ্যান। ট্রিপটোফ্যান অবসন্ন শরীরের ক্ষেত্রে মস্তিস্কে খুব তাড়াতাড়ি প্রভাব বিস্তার করে। সেরোটনিন নামক এক রাসায়নিক যৌগ তৈরী করে। ঠিক যেমন বুদ্ধকে করেছিল। ঊনপঞ্চাশ দিন উপবাসের পর বুদ্ধ যখন প্রায় মৃত তখন সুজাতা নামক এক বালিকা বুদ্ধকে পায়েস দিয়েছিল, মনে পড়ে সে কথা? পায়েস মানেই দুধ। ট্রিপটোফ্যান যে ভাবে বুদ্ধের ওপর প্রভাব ফেলেছিল, ঠিক তেমনই ফেলেছে বিশ্বজি এর ওপরে। আরও অনেক উদাহরণ দেওয়া যায়। অশোকের পরিবর্তনের কথাই ভাবো। চণ্ডাশোক থেকে ধর্মাশোক। কোথায় হয়েছিল কলিঙ্গ যুদ্ধ? দয়া নদীর ধারে, যেখানে নদী বাঁক নিয়েছে, ধৌলিগিরি পাহাড়ের উপত্যকায়। নাইট্রিক অক্সাইডের মতো ভারী গ্যাসের পছন্দের জায়গা। যুদ্ধে এক লক্ষের মতো সেনা মারা গিয়েছিল। সেদিনও হাজার হাজার চিতা জ্বলেছিলো, তারপরে নেমেছিলো বজ্রবিদ্যুসহ প্রবল বৃষ্টি। সবে মিলে আমরা পেলাম সর্বকালের সেরা সম্রাটকে

“তাহলে তুমি বলতে চাও বিশ্বজিদাও এখন বুদ্ধের মতো হয়ে গেছে?”

“এটাই তো মুস্কিল। মহাপুরুষদের মধ্যে বাড়তি আরও কিছু থাকে এত কিছু সত্ত্বেও যার নাগাল বিজ্ঞান এখনও অবধি পায়নি। আর যাই হোক বিজ্ঞান কোনও দিন ল্যাবরেটরিতে মহাপুরুষ তৈরী করতে পারবে না। তবে এটাও ঠিক সেই সব মহাপুরুষের জীবনেই বড় পরিবর্তন এনেছিল কোনও একটা বিশেষ দিন। সেই দিন, সেই সময়, সেই পরিবেশ, সেই জায়গা ছিল একই রকম যার কথা তোমরাও এখন জেনে গেলে। তবে দেখো এসব কথা অপাত্রে বোলো না। মারধোর খেয়ে যেতে পারো

_________

ছবি দ্বৈতা হাজরা গোস্বামী

8 comments:

  1. সত্যিই ঘটনা গুলো এমন ভাবে বলা হল, কল্পবিজ্ঞান হলেও বাস্তব বলে মানতে ইচ্ছে হল। মানব মস্তিষ্ক বরাবরের জটিল গবেষণার বিষয়। কৌতুহলোদ্দীপক। ভাবনার একটা দরজা খুলে দিল গল্প টা।

    ReplyDelete
  2. darun...bigyan ar dhormer ei connection ta sotti chomotkar

    ReplyDelete
  3. অদ্ভুত! অনবদ্য! চমৎকার এক লেখা যা নিছক গল্প নয়, বহুদিন মনে ছাপ রেখে যাবে। অতুলনীয়, অভিজ্ঞানবাবু!

    শেষের ছবিটা বড় সুন্দর হয়েছে, দ্বৈতাদেবী।

    ReplyDelete
  4. বেশ ভাল লাগল। অনেকটা চার্বাকীয় পরম্পরায় মিথ বা চিরাচরিত ধারণার বিনির্মান। গল্পের চলন আর সঙ্গের ছবিটা অনবদ্য। অভিনন্দন অভিজ্ঞান এবং দ্বৈতা দুজনকেই।

    ReplyDelete
  5. darun!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

    ReplyDelete
  6. Anyo swader golpo...besh valo laglo....

    ReplyDelete
  7. Besh laglo porte...dhonnobad

    ReplyDelete
  8. Darun,darun.creat an extraordinary sensation in frontal part of my brain.golpo ta r ektu extend korle valo lagto Sir.

    ReplyDelete