বাঘিয়াবাদের গপ্পো
মধুমিতা ভট্টাচার্য
মধুমিতা ভট্টাচার্য
বাঘ রাজাকে দেখে এলাম বাঘিয়াবাদ গিয়ে
রাজ্য শাসন করেন তিনি ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে
কোনও রকম দুষ্কর্ম হওয়ার তো নেই উপায়
চোর ডাকাতের শাস্তি ভীষণ, শূলের ওপর চাপায়
কেউ যদিবা তহবিলে এদিক সেদিক করে
পিঁপড়ে সেনার হাতেই তাকে দেন যে তিনি ছেড়ে
কুটুস পুটুস কামড় খেয়ে এমনি সে হয় নাকাল
কক্ষনো আর ভুলেও কোনো কাজ করেনা বেচাল।
হায়না ভায়া কুখ্যাত এক আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন
মারেন, কাটেন, ধমকি মারেন যক্ষণ তক্ষণ
রাজ্যের লোক অতিষ্ঠ তার অত্যাচারের ফলে
প্রতিবাদে একদিন সব বসলো সদলবলে -
ধর্ণা দিয়ে, ব্যাঘ্ররাজের গুহার সামনে যত
বাঘিয়াবাদের জীবজন্তু জুটল কয়েক শত
সবাই হাঁকে ইনকিলাবের জঙ্গলী তর্জমা
রাজা মশাই চমকে উঠে বলেন, “থামা থামা"
মিশকালো হাত কই রে আমার? গুঁড়োবি যে বড়?
হলুদ কালো এমন ডিজাইন দেখেছিস আর কারো?
চলছে নাকো, চলবে নাতো...চেঁচিয়ে ফাটাস গলা
খরগোশটাও লাফায় সাথে! এই সেদিনের পোলা?
বুঝলাম ওই হায়নাটাকে নিয়েই যত গোল
তাতেই হয়ে উত্তেজিত করছিস শোরগোল!
দেখতো তবে আমার মাথায় কত্তো জনের দায়
রাজ্য শাসন ভাবিস তোরা মুখের কথা? হায়!
তোরাই কিন্তু দলে ভারী, হায়না তো নেই বেশি
যদিও জানি ওদের নাচায় শত্তুর বৈদেশী।
লোহার মতন শক্ত যখন করবি দাঁত আর থাবা
গায়ের জোরে তোদের সাথে জিতবে তখন কে বা!
একতারই আরেকটি নাম শক্তি আগাগোড়া
বেঁচে থাকার মূলমন্ত্র, জেনে রাখিস তোরা।
শুনে সবাই উত্তেজনায় চেঁচায় হাল্লা বোল
হায়না গুলোর দাঁতের পাটি চিমটে দিয়ে তোল!
হুড়মুড়িয়ে জুটে তখন একসাথে দল বাঁধে
কারো হাতে ঢাল-তলোয়ার, কেউ বা ধনুক কাঁধে,
হায়না ধরার কল রয়েছে বানর সেনার হাতে
পট্পটাপট বন্দী হবে ডন-হায়না তাতে।
ছাতা, লাঠি, জুতোর পাটি, খুন্তি, বেলন, কাঁটা,
তেলে বেগুন ব্যাঘ্র রাজার, চোখ দুখানি ভাঁটা!
হেঁকে বলেন শয়তানী সব বন্ধ হবে তোদের
জ্বলছে আগুন সবার মনে দারুণ প্রতিশোধের!
দূর থেকে সেই মোর্চা দেখে হায়না ভয়ে কাঁপে
বন-বন-বন ঘুরল মাথা প্রবল রক্তচাপে!
কাঁদল ভায়া ‘হায় কি হোল’ বলে বারংবার
যেই না দিলেন ব্যাঘ্র রাজা ভীষণ হুহু্ঙ্কার!
পড়ল ধরা আজব কলে হায়না হাতেনাতে
আচ্ছা রকম গণধোলাই চলল দিনে রাতে।
খতম হোল অত্যাচারী ডন-হায়না শেষে
সত্যের জয় কায়েম হলো ব্যঘ্র রাজার দেশে।
নয়কো এসব গল্পকথা, আজগুবি এক ছল,
বাঘিয়াবাদে গিয়েই দেখো হায়না ধরার কল।
ছবি -তন্ময় বিশ্বাস
No comments:
Post a Comment