বইঃ ভয়নিচের অজানা ভাষা ও আরো বারো
লেখকঃ অভিজ্ঞান রায়চৌধুরী
প্রকাশকঃ দেব সাহিত্য কুটির
আলোচনাঃ তন্ময় বিশ্বাস
উইকএন্ডের ছুটিটা বেশ
তারিয়ে তারিয়ে নীলে সবুজে মেশানো বইখানা চিবোনো গেল। তারপরও আধখানা সময় বেঁচে
যাওয়ায় ভাবলুম,
এবার একটু
জাবর কাটা যেতেই পারে।
১) ভয়নিচের অজানা ভাষাঃ
না, বইয়ের নামটাই আবার রিপিট করছি না। এটা বইয়ের প্রথম গল্প, আর আমার মতে এটাই এই
বইয়ের সেরা লেখা। গল্পটা এর আগে অনেক অনেক রিভিউ পেয়েছে। তাই নতুন করে কিছু বলব
না। এটুকু বলতে পারি, শুধু এই একটা লেখা পড়ার জন্যও বইটা অনায়াসে কিনে ফেলা যায়।
২) আলোছায়াঃ আগেও পড়েছি
এবং আবারও পড়লাম। মুগ্ধতার কি আর সত্যি সত্যিই কোনও শেষ থাকে! যারা ভয়ের
গল্প ছাড়াও ভূতের গল্প পড়তে ভালোবাসেন তাদের জন্য রইল এক অসাধারণ গল্প। কে জানে বলা
তো যায় না ভয় পেলেও পেতে পারেন।
ওহ্, ভালো কথা, এটা এবং এর আগের গল্পে পেইন্টিংয়ের
ওপর লেখকের যা কনসেপ্ট দেখলাম তাতে বলতে বাধ্য হচ্ছি, উনি শিল্পী হলে অনেকেরই ভাত মারা
যেত। কে বলতে পারে ভবিষ্যতে হয়তো যাবেও। সাধু সাবধান!
৩) বাটারফ্লাই এফেক্টঃ মন
ভরে যাওয়ার মতো গল্প। এই নিয়ে কিছু বলা মানে গল্পটা মারাত্মকভাবে স্পয়েলড করে ফেলা।
শুধু বলি,
একা হতে হতে
এমন দিনও হয়তো আসবে। হয়তো আসছে।
৪) অ্যাকিনেটপসিয়াঃ নামের
ওপর ভিত্তি করেই গল্প। তবে আমার মনে হয়েছে গল্পটাকে আরেকটু খেলালে হয়তো ভালো হত।
হালকা দুর্বল লাগল।
৫) পরজীবীঃ মিস্টার
পাইয়ের দারুণ একটা গল্প। চেনা প্লট হলেও বেশ উপভোগ্য। আশা করি বাকিদেরও ভালো
লাগবে।
৬) চড়াইঃ বেশ মিষ্টি
গল্প।
৭) মারগাম ক্যাসেলে
খানিকক্ষণঃ ভ্রমণকাহিনির মতো করে লেখা। সেভাবে পড়াই ভালো। মন্দ না। তবে এর জায়গায়
অন্য কোনও গল্প দিলে ভালো হত।
৮) পাথরের রাস্তায়ঃ আরও
একবার অভিজ্ঞানদাকে স্যালুট। গল্পটা নিয়ে নতুন করে আমি আর কিছু বলব না। মানবিকতার
কাছে সত্যি সত্যিই সব হেরে যায়। স-ব। এমনকি আমরা নিজেরাও।
৯) আগে কোথায় দেখেছিঃ
আবারও মানবিকতা। বেশ লাগল পড়তে। দিনের শেষে বালির ওপর কিছু কিছু দাগ তো থাকেই। তাই
না?
১০) উলূপীঃ কিছু বলব না।
চোখ বন্ধ করে পড়ে ফেলুন।
১১) বিশ্বাসঃ আবারও ফিরে
আসা মানবিকতা। মাঝে মাঝে ঠকে যাওয়াও তো ভালো!
১২) একটু অন্যরকমঃ সত্যিই
অন্যরকম গল্প। আমার মনে হয় সমস্ত বাচ্চাদের এই গল্পটা পড়ানো উচিত। কোনও কাজকেই যেন
তারা ছোটো করে না দেখে।
১৩) ছেলেটা এখনও বন্ধু
খোঁজেঃ এই ভয় পাওয়ার ব্যাপারটায় আমার মতে আমি সম্ভবত মেনটালি চ্যালেঞ্জড। কিন্তু সেটা বাদ দিলেও ইতিহাস, রহস্যে মেশানো দুর্দান্ত
একটা গল্প। শেষপাতে চেটেপুটে খাওয়ার গ্যারান্টি রইল।
সব মিলিয়ে একটা ফিল গুড
ব্যাপার আছে বইটায়। দেবাশিস দেবের ইলাস্ট্রেশনের তুলনা আগেও ছিল না, আজও নেই। কিন্তু
মাত্র দুটো গল্পে ইলাস্ট্রেশন পেয়ে মনটা ঠিক ভরল না। সেকেণ্ড ইস্যুতে আরও কিছু ছবি
যোগ করলে বেশ হয়। আরেকটা যেটা যোগ করলে ভালো হয় সেটা হচ্ছে, প্রথম প্রকাশের স্থান ও
কাল।
পুনশ্চঃ কল্পবিজ্ঞান, রহস্যের বাইরেও অভিজ্ঞান
রায়চৌধুরীকে জানতে হলে এই বইটা অবশ্যই পড়ুন।
_____
ভাল লেখা
ReplyDelete