নীলকণ্ঠ কলমিলতা
শেলী ভট্টাচার্য
এক
ছিল শান্ত নদী। নাম ছিল তার সখী। সেই নদীর তীরেই ছিল রাখাল বালক পক্ষীরাজের গ্রাম
সুখচর। সেখানে গ্রামের মানুষজন গরীব হলেও, চাষবাস করে আর নদীর মাছ ধরে বেশ সুখেই দিন কাটিয়ে দিত। গ্রামের
মধ্যিখানে ছিল এক মস্ত ফুলের বাগান, ঠিক গ্রামের
মোড়লের বাড়ির পাশেই। গ্রামের অনেক মেয়ে বৌয়েরাই সেই ফুলের মালা গেঁথে চারপাশের গ্রামগুলোতে
সকালে ফেরি করতে বেরোত।
রাখাল
বালক পক্ষীরাজ প্রায় গোটাদিন ওই গ্রামের বিভিন্ন ঘরের গবাদি পশুদের নদীর পাড়ের
মাঠে নিয়ে যেত। ওদের তৃষ্ণা পেলে নদীর পাড়ে নিয়ে গিয়ে সখী নদীর সুমিষ্ট জল পান
করাত। আর সূর্যি মাথার উপর চড়লেই সে মাঠের একপ্রান্তের বড়ো বড়ো আম গাছের ছায়ায় বসে
আপনমনে বাঁশি বাজাত। সেই বাঁশির সুরে মাতাল হত সমস্ত পশুপাখিরা। আর বৃক্ষ তার শীতল
বাতাস বইয়ে স্নিগ্ধ করে তুলত সম্পূর্ণ বাতাবরণখানিকে। রাখাল বালক আপনমনে ছড়ার গান
ধরত তখন -
‘সখী নদী আমার প্রাণ
বৃক্ষ আপনজন,
তাদের স্নেহে পালিত হয়
সুখচরের মন।’
গ্রামটির
একটিই সমস্যা ছিল। তা হল প্রতিবছর পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টিপাত হত না। তার ফলে সখী
নদীর জলস্তর নেমে যেত। চাষবাসের ক্ষতি হত। ফুলের বাগানও শুকিয়ে উঠত জলের অভাবে। আর
গ্রামবাসীরা তখন কোনও দিশা না পেয়ে প্রকৃতিদেবীর পূজা করত। পক্ষীরাজ সেইসময়
বৃক্ষমাতাদের কাছে গিয়ে বসে একমনে সবার জন্য প্রার্থনা করত। সে বিশ্বাস করত যে, যেই বৃক্ষ
তাকে তার মাতৃহীন শৈশব হতে স্নেহের আঁচলে আগলে রেখেছে, সে
নিশ্চয়ই তাদের ক্ষুধা
নিবারণের পথও দেখাবে। আর তার প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে একসময়
নদীর পাড় সংলগ্ন চিরচিরে জলে গজিয়ে উঠল কলমিলতার বন। বৃক্ষমাতা যেন তাকে ইশারা
দিয়ে জানাচ্ছিল -
‘ক্ষুধার পেটে থাকিস নে কেউ
বাছা আমার ওরে,
কলমিলতা সেদ্ধ খেয়েও
ক্ষুধার্ত পেট ভরে।’
এইভাবে
রাখাল বালকের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার সঙ্গে প্রকৃতিজাত বৃক্ষমাতার এক সুনিবিড়
স্নেহময় সম্পর্ক গভীর হতে থাকল। আর তার করুণ প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে বৃক্ষমাতাও উজাড়
করে দিতে থাকত তার সৃষ্টিসুখের ডালি।
এমনই এক খরার গ্রীষ্মে গ্রামের মোড়লের এক বন্ধু
নগররাজ এল সুখচর গ্রামে। সে সেই গ্রামের অবস্থা দেখে মোড়লকে বলল -
‘এমন খরায় মরিস কেন
আছে খাসা ফন্দি,
নদীর পাড়ের জমিখানি
কর না চুক্তিবন্দি।
আমার দু’টি প্রজা আছে
কল আর কারখানা,
তারা এলেই দেখবি আর কেউ
অভুক্ত থাকবে না।’
মোড়ল
তার বন্ধুর এইরূপ কথায়, প্রথমে কিছুই বুঝতে পারল না। তারপর বন্ধু নগররাজের সঙ্গে অনেক আলোচনার পর সে বুঝল যে, নগররাজের কাছে কল আর কারখানা নামক
দুটি প্রজা আছে। তাদের নদীপাড়ের জমিতে জায়গা করে দিলেই, গ্রামের
মানুষদের আর ক্ষুধার
সমস্যা থাকবে না। তারা ফুলের পাপড়ি থেকে, বিবিধ গাছের উপাদান থেকে রঙ উৎপন্ন
করবে,
ওষুধপাতি বানাবে। তার জন্য গ্রামবাসীদের কাছ হতে মোটা টাকায় ফুলের বাগানের লিজ
নেবে। আর নদীর পাড়ের মাঠের জমিটার লিজ নেবে মোড়লের কাছ থেকে। তার জন্য প্রতিমাসে
গ্রামের মোড়লকে মোটা টাকার শুল্কও দেবে। তাতে গ্রামবাসীদের কৃষির উপর নির্ভরতা
কমবে। এসব শুনে মোড়ল তো বেজায় খুশি। সে এসব গ্রামবাসীদের থেকে এত বছর ধরে যে শুল্ক
পেত, তার পরিমাণ
নতুন শুল্কের পরিমাণের কাছে নামমাত্র। তাও আবার খরার বছরে চাষিরা সেটুকুও দিতে পারত না। তাই সব ভেবেচিন্তে মোড়ল
নগররাজের কথায় রাজি হয়ে গেল। আর গ্রামে ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে প্রচার করে দিল যে -
‘দারুণ খবর জবর খবর
সমস্যা সব শেষ,
এ গ্রামেতে গড়বে এবার
সুখের রাজার দেশ।’
গরীব
সরল গ্রামবাসীরা তো মোড়লের কথা শুনে আহ্লাদে আটখানা। কিন্তু রাখাল বালকের মন কেঁদে
উঠল নদীর পাড়ের জমির কথা শুনে। সেই জমিতে আর সে গবাদি পশুদের সঙ্গে সারাদিন ঘুরে
বেড়াতে পারবে না। বৃক্ষমাতার আঁচল তলায় বসে বাঁশি বাজাতে পারবে না। মনের কষ্টে
পক্ষীরাজ তাই শেষবারের মতো বৃক্ষতলে বসে ছড়ার গান ধরল -
‘মাগো তোমার শীতল ছায়ার
পরশটুকু রেখো,
আঁখিজলে ডাকব যখন
সন্তানেরে দেখো।’
পক্ষীরাজের
কান্নাভেজা বাঁশির সুরে সেদিন আকাশ মেঘলা করে এসেছিল। বাতাসের স্রোত ভারী হয়ে
উঠছিল বিচ্ছেদ শোকে। নদীর জলে বাজছিল বিষাদের কলকল ধ্বনি। এক অদ্ভুত স্তব্ধতা ছিল
সমস্ত বাতাবরণ ঘিরে। প্রকৃতি যেন মনে মনে ভবিষ্যৎ বিপদের এক গোপন আভাস পাচ্ছিল।
অতঃপর মোড়লের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে তার বন্ধুর দুই প্রজা কল আর কারখানা এসে উঠল সুখচরের ভূমিতে। তাদের অতিকৃত্তিম কাঠামো দখল করে নিল নদীর পাড়ের জমির বেশিরভাগটাই। আর শীঘ্রই চালু হয়ে গেল প্রকৃতির উপাদান দিয়ে রাসায়নিক রঙ তৈরি করার কারখানা। তাতে, দিন যত গড়াতে লাগল ততই সুখচর গ্রামের বুকে মাথা উঁচু করে দাম্ভিক কল আর কারখানা বলতে লাগল -
‘আমার মুঠোয় আকাশ বাতাস
সবার সেরা আমি,
গ্রামের মলিনতা ঢেকে
ভীষণরকম দামি।’
প্রথমদিকে
গ্রামবাসীরা জমির দাম পেয়ে খুব খুশি ছিল। কিন্তু কয়েকমাস যেতে না যেতেই শুরু হতে
থাকল সমস্যা। গ্রামের বাতাস কেমন যেন তার নিলীয়মান স্নিগ্ধতা হারাতে শুরু করল। কল-কারখানার স্থাপনের জন্য বড়ো বড়ো বৃক্ষের আগেই
সমাধি হয়েছিল গ্রামে। তাই বাতাসের শুদ্ধতা রক্ষাকারী বৃক্ষমাতারাও সংখ্যায় কম হয়ে
পড়েছিল। এদিকে নদীর জলে কারখানা নির্গত দূষিত আবর্জনা মিশে নদীর মাছগুলো সব মরে
যেতে শুরু করল। গ্রামের লোকের একমাত্র জলের জোগান সখী নদী দূষিত হওয়ায়, তাদের মধ্যে
বিবিধ সমস্যা দেখা দিল। সবচেয়ে বড়ো সমস্যা দেখা দিল শিশুদের মধ্যে। তাদের শরীরে বিবিধ চর্ম্ম রোগের
উপসর্গ দেখা দিল। এসব দেখে রাখাল বালক পক্ষীরাজের খুব কষ্ট হল। শিশুর কষ্ট যে সে
একটুও সহ্য করতে পারে না। তাই সে গ্রামের সবার হয়ে মোড়লের কাছে দরবার করে বসল। কল
আর কারখানাকে তাড়ানোর জন্য গ্রামবাসীদের একত্রিত করতে তৎপর হল। কিন্তু মোড়ল তখনও
অধিক শুল্ক প্রাপ্তির নেশায় মত্ত। এদিক ওদিক ছোটাছুটি করেও পক্ষীরাজ কোনও দিকে
দিশা না পেয়ে, বৃক্ষমাতাদের কাছে শিশুর মতো কেঁদে আবদার শুরু করল। যাতে তারাই সমাধানের কোনও উপায় বাতলে দেয়। অপরদিকে গ্রামের
যারা ভাগচাষী ছিল, যাদের নিজেদের বরাবরই
কোনও জমি ছিল না, তাদের বিপদ বেড়ে গেল। তারা যাদের জমিতে চাষবাস করত, সে সব জমি তো চলেই গিয়েছিল কারখানার গ্রাসে। তার উপর তাদের ক্ষুধা
নিবারণের উপায় ছিল যে কলমিলতা, তা সেদ্ধ করে খেতে গিয়ে তাদের চরম অসুখবিসুখ হতে শুরু করল। এমনকি গবাদি পশুরাও
মরতে শুরু করল সেই কলমিলতার
শুকনো পাতা খেয়ে। পক্ষীরাজের এসব দেখে বড্ড মন খারাপ হল। সে তখন এক প্রাচীন
বৃক্ষমাতার কাছে উপোসি হয়ে একনাগাড়ে বসে মানত করে বলতে লাগল -
‘তোমায় আমি মা মেনেছি
জানো তুমি তা,
যতক্ষণ না দেখাবে দিশা
মোটেই সরব না।’
পক্ষীরাজের
এই মানতের তৃতীয় দিনে হঠাৎ ভোরের দিকে তার দেখা হল এক অচেনা পুরুষের সঙ্গে। তার
জ্যোতির্ময় চেহারায় প্রথমে অভিভূত হয়ে গেল পক্ষীরাজ। তার নাম ধাম জিজ্ঞেস করতে সে
বলল,
‘আমি থাকি সুবুদ্ধিতে
বিপদ করি ত্রাণ,
জ্ঞানের আলোয় দিশা দেখাই
নামটি সুবিজ্ঞান।’
তার
কাছে তখন পক্ষীরাজ নিজ দুঃখের কথা আর সুখচর গ্রামের সব কথা জানানোতে সেই
জ্যোতির্ময় পুরুষ পক্ষীরাজকে বলল, তার রাজ্যেও এই কল আর কারখানা নামক প্রজা আছে। কিন্তু তারা অসৎ নয়। তারা
প্রকৃতিকে বিনষ্ট করে তার কোলেতে বিষ ছড়ায় না। কারণ তারা বিজ্ঞানচিন্তায় বলীয়ান। তারা দুর্বলকে প্রলোভন দেখিয়ে
রাতারাতি সবল হয়ে ওঠে না। তারা সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে তাদের উন্নতি সংক্রান্ত
কুফলকে নিয়ন্ত্রণ করার পথ নির্দিষ্ট করে নেয়।
তখন পক্ষীরাজ বুঝতে পারে যে তাদের গ্রামের কল আর কারখানা মোটেই সৎ নয়। তারা চাতুরি করে রঙ বানানোর স্থানে অন্য কোনও ব্যবসাও করছে। তারপর পক্ষীরাজ সুবিজ্ঞানের কাছে উপায় জানতে চায়। অতঃপর বিস্তর কথাবার্তার পর সে জানতে পারে যে, প্রকৃতিমাতার অংশ হয়ে কলমিলতা কীভাবে তাদের সবার প্রাণ বাঁচিয়ে চলার নিরন্তর প্রয়াস করে চলেছে। সখী নদীর দূষণ কমাতে কল আর কারখানা নির্গত বিবিধ ভারী ধাতুকে সেই লতারা নিরন্তর নিজ দেহে টেনে নিচ্ছে। তাদের এই ক্ষমতা ঈশ্বরপ্রদত্ত। যাতে দূষিত জল ব্যবহার করে জীবের কম কষ্ট হয়। আর তার প্রভাবেই সেই কলমিলতা নিজে বিষাক্ত হয়ে উঠছে। কিন্তু তাতেও দূষণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়ে উঠছে না। কারণ সেই নিয়ন্ত্রণের কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে। সুবিজ্ঞানের মুখে এসব শুনে দু’চোখে জল চলে এল পক্ষীরাজের। সে বৃক্ষমাতার অসীম স্নেহের দানের কথা ভেবে কেঁদে ফেলল। এই কলমিলতাকে একদিন বৃক্ষমাতার ইশারায় সে গ্রামের মানুষকে ক্ষুধা নিবারণের জন্য তুলে দিয়েছিল। আজও সেই কলমিলতাই নিজে নীলকণ্ঠ হয়ে তার শরীরে বিষাক্ত ধাতু শুষে নিচ্ছে। অতঃপর সব চিন্তা করে অসৎ কল আর কারখানাকে তাড়াবার ব্যবস্থা করতে বদ্ধপরিকর হয়ে উঠল রাখাল বালক পক্ষীরাজ।
গ্রামের মানুষরা ততদিনে বুঝতে পেরে গিয়েছিল যে, পক্ষীরাজ বড্ড ভালো ছেলে। সবার নিঃস্বার্থ ভালো চায় সে। মোড়লের মতো লোভী নয়। তখন তারা সবাই মিলে নেমে নদীর জলে বাঁধ দেওয়ার চেষ্টা শুরু করল। যাতে কারখানার আবর্জনা আর পুরো নদীতে ছড়াতে না পারে। সখী নদীর যেই অংশে সেই আবর্জনা আসছিল, তাতে কলমিলতার চাষ শুরু করল তারা। আর সুবিজ্ঞানের কথামতো সেই কলমিলতাকে শুকিয়ে গুঁড়ো করে ওই কারখানার সামগ্রীতে মিশিয়ে দিল। তখন নিজ উৎপাদনের মধ্যে বিষক্রিয়া দেখে হুঁশ ফিরল কল আর কারখানার। তারা বুঝল যে তাদের উৎপাদন যেই বিষে নষ্ট হচ্ছে, সেই বিষ জীবন্ত শরীরে প্রবেশ করলে কী ঘটতে পারে।
ইতিমধ্যে
গ্রামের মোড়লের একমাত্র ছেলেরও চর্মরোগ হল। সে জানতে পারল যে পক্ষীরাজ এক ভেষজ
ওষুধের সাহায্য নিয়ে গ্রামের শিশুদের সেই দুরারোগ্য রোগ সারিয়েছিল। তাকে নাকি এক
জ্যোতির্ময় পুরুষ সে সব সন্ধান দিয়ে গিয়েছিলেন। মোড়ল তখন কেঁদেকেটে পক্ষীরাজের
দ্বারস্থ হল। পক্ষীরাজ মোড়লকে বলল,
‘নিজের শিশুর ব্যথার কান্না
থামাতে যদি চান,
কল-কারখানা বন্ধ করুন
করতে সবার ত্রাণ।’
মোড়ল
তখন নিজ পুত্রের প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে কল আর কারখানাকে ডেকে পাঠাল ও নিজ গ্রামে
ব্যাবসা চালাবার চুক্তিনামা দেখিয়ে বলল,
‘গ্রামটি ছিল সবুজ সরল
নির্মল ছিল বায়ু,
আজ সেখানে মরণ ফাঁদে
কমছে সবার আয়ু।
চাই না আমার জাঁকজমকের
নগরিয়া ছন্দ,
গাঁয়ের স্বচ্ছ জীবন মাঝে
থাকব নাকো মন্দ।
তোমরা এবার ব্যাবসা গুটাও
অনেক তো বিষ দিলে,
প্রকৃতিতে যা পাই খাব
আমরা সবাই মিলে।’
অতঃপর
মোড়লের সঙ্গে সব গ্রামবাসীদের বিরূপভাব দেখে কল আর কারখানা তড়িঘড়ি সুখচর গ্রাম হতে
নিজেদের ব্যাবসাপাতি সব গুটিয়ে নিল। কয়েকমাসের মধ্যেই সুখচর গ্রাম আবার আগের মতো
হয়ে প্রকৃতি মায়ের কোলে স্নিগ্ধতা লাভ করল। আর সখী নদীর জল কলমিলতার ক্রমিক চাষের
মধ্য দিয়ে আগের মতো শুদ্ধতা লাভ করল।
তারপর
বহুবছর পর পক্ষীরাজ একদিন ভিন গাঁও হতে খবর পেল যে, সুবুদ্ধি নামক সবুজাভ এক গ্রহে নাকি
সুবিজ্ঞানরা থাকেন। তারা বৃক্ষের বিবিধ ভেষজগুণ সম্বন্ধে প্রতিনিয়ত গবেষণা করেন। আর গবেষণার সুফলগুলো
বিবিধ স্থানে প্রচার করতে স্যাটেলাইটে করে আসেন। যাতে বৃক্ষও রক্ষা হয়, আর
বৈজ্ঞানিক পথ ধরে দেশের ও দশের উন্নতিও হয়। তবে কি তাদেরই কেউ ওদের সুখচর গ্রামে
চলে এসেছিল সেদিন? হতেও পারে।
তার হাতেও তো কীসব যেন
কাগজপত্র ছিল। চোখে আঁটা ছিল মোটা ফ্রেমের চশমা। আর ওই কাগজপত্র পড়েই তো উনি কলমিলতার
গুণাবলিগুলো সব বলছিলেন। এসব চিন্তা করে পক্ষীরাজ ভাবল,
‘সুবুদ্ধি তো দারুণ জায়গা
অনেক জ্ঞানের ঘাঁটি,
ওইখানেতেই জন্ম নেয় কি
বিজ্ঞানী সব খাঁটি?’
সেদিন
থেকে রাখাল বালক পক্ষীরাজ মনে মনে প্রার্থনা করতে শুরু করল, যাতে সমস্ত বিশ্বব্রহ্মাণ্ড ওই
সবুজাভ সুবুদ্ধি গ্রহের মতো সম্পূর্ণ দূষণমুক্ত হয়ে যায়।
_____
ছবিঃ লেখক
No comments:
Post a Comment