বদলা
আর. এল. স্টাইন্
এই গল্পটা চিৎকার দিয়েই শুরু
হচ্ছে। তবে না, ভয় নেই, এই চিৎকার
ভয়ের নয়, আনন্দের, প্রবল আনন্দের। বারো বছরের ফ্রেডি আর তার এগারো বছরের বোন টেডি
অনেক দিন ধরেই নতুন সাইকেলের জন্যে বায়না করছিল। হাসিমুখে গ্যারেজের খোলা দরজার
সামনে দাঁড়িয়ে ওদের বাবা মিস্টার হার্ডউইক নতুন দুটো সাইকেলের দিকে আঙ্গুল তুলে
দেখালেন। দেওয়ালে ঠেস দিয়ে রাখা দুটো সাইকেল দুপুরের রোদে চকচক করছিল যেন।
ফ্রেডির কোনো অসুবিধা হল না
নিজের সাইকেলটাকে চিনতে। অনেকদিন ধরে এই মডেলটাই চাইছিল সে। কালো আর সবুজ রঙ করা রেজার
হাই রোলার বি এম এক্স, দারুণ দেখতে আর দারুণ জোরে দৌড়তে পারে। টেডিকে ওদের বাবা
বুঝিয়ে দিলেন যে ওরটা দুর্দান্ত নীল একটা সিঙ্গল স্পিড সাইকেল। টেডিরও দেখেই খুব
পছন্দ হয়ে গেল সাইকেলটাকে, আর চাকার ওপর দেওয়া বেগুনি মাডগার্ডগুলোর তো কথাই নেই।
ওদের আনন্দের চিৎকারগুলো শুনে
ওদের বাবা মিস্টার হার্ডউইক খুব মজা পাচ্ছিলেন। দু’জনে ছুটে গিয়ে সাইকেলদুটোর
হ্যান্ডেল চেপে ধরে সিটের ওপর হাত বোলাতে লাগল।
“চালিয়ে দেখো,” মিস্টার
হার্ডউইক বললেন, “কিছু অ্যাডজাস্ট করতে হবে কিনা সেটাও দেখো।”
ফ্রেডি ততক্ষণে সাইকেলে চড়ে
বসে চালানো শুরু করে দিয়েছে। টেডি একটু সাবধানি প্রকৃতির, সে তখনও সাইকেলটার গায়ে হাত
বুলিয়ে চলেছে, নতুন গুপ্তধন পাওয়ার আনন্দ উপভোগ করত করতে।
“চল আমরা মিলস্টোন হিলের ওপর
থেকে নিচে নামি,” ফ্রেডি চিৎকার করে বলল, “দারুণ মজা হবে, দেখব কত তাড়াতাড়ি সাঁ
সাঁ করে যেতে পারি! ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস টেন!” ফ্রেডি আবার সিনেমার পোকা।
টেডির প্রথমে ব্যালান্স রাখতে
একটু অসুবিধা হচ্ছিল, তবে সে সামলে নিয়ে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে জোরে জোরে পা
চালাতে শুরু করল, “দারুণ হয়েছে বাবা!” বলে চিৎকার করতে করতে সে দাদার পিছন পিছন
রওনা দিল।
দারুণ মজায় ভরা মুহূর্তগুলো।
সন্ধ্যার বেগুনি ছায়াগুলো
ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছিল রোদের তেজ নষ্ট করতে। হাওয়ার ঝাপটাটাও যেন বেশ মিষ্টি আর
ঠান্ডা মনে হচ্ছিল ওদের।
ওরা অবশ্য জানত না যে ওদের ওই
আনন্দ খুব শিগগির মাটি করতে আসছিল ড্যারো ভাই যুগল। হ্যারি আর ক্লিটাস ড্যারো যে
ওদের দিনটাই নষ্ট করে দেবে সেটা তখনও জানত না ওরা।
মিলস্টোন হিল যখন শীতকালে
বরফে ঢাকা থাকে তখন সবাই স্লেজ নিয়ে সাঁ সাঁ করে ঢাল বেয়ে নিচে নামে। নিচে খোলা
মাঠ তাই চোট লাগার প্রশ্ন থাকে না।
গরমকালে সব রকমের বোর্ড নিয়ে
বাচ্চাদের ভিড় জমে সেখানে। স্কেটবোর্ড, রোলার বোর্ড, হোভার বোর্ড সব কিছু। মাউন্ট
স্টারলিং গ্রামে যাদের গতি পছন্দ তারা সবাই মিলস্টোন হিলে এসে জড়ো হয়।
ফ্রেডি আর টেডি যখন মিলস্টোন
হিলে গিয়ে পৌঁছল তখন সেখানে কেউ নেই। ওপর থেকে নিচে তাকিয়ে দেখল দু’জনে, তারপর
ব্রেক থেকে হাত সরিয়ে নিল। হ্যান্ডেলের ওপর ঝুঁকে পড়ে রেসিং করার ভান করে পেডাল
চালাতে শুরু করল দু’জনে। সাঁই সাঁই করে ঢাল বেয়ে নামতে শুরু করল ওদের নতুন সাইকেলগুলো।
দু’জনেই আনন্দে তারস্বরে চেঁচাচ্ছিল। বুকের মধ্যে একটা ফাঁকা হয়ে যাওয়ার অনুভূতি
আর ফুর্তিতে হাসি আর থামছিল না।
নিচে নেমে আবার ওপরে উঠতে
লাগল দু’জনে। এই রাস্তাতে গাড়ি বিশেষ নেই, একটা দুটো গাড়ি দেখা যায় মাঝে-সাঝে, তবে
টাউনের এই দিকটা শান্তই।
“চল রেস করি,” ওরা আবার
মিলস্টোন হিলের মাথায় পৌঁছতে ফ্রেডি বলল। দু’জনের মধ্যে সেই বেশি প্রতিযোগিতাপ্রবণ,
সব সময় সেরা হতে চায় সে।
টেডি প্রতিবাদ করল। রেস-টেস
করার কোনো ইচ্ছে তার নেই। নতুন সাইকেলটাকে নিয়ে আনন্দ করতে চায় সে। কিন্তু ফ্রেডি
ততক্ষণে তাড়াতাড়ি পেডাল চালিয়ে নিচে নামতে শুরু করে দিয়েছে।
“দাদা তুই চিটিং করছিস!” টেডি
চেঁচিয়ে বলল, “আমি তো বলিনি আমি রেস করব!”
ফ্রেডি শুনল না, সাঁ সাঁ করে নিচের দিকে ছুটে চলল। বড্ড
বেশিই জোরে যেন। ব্রেকগুলোকে ঠিকমতন সামলাতে পারছিল না
যেন সে। হঠাৎ সাইকেল থেকে ছিটকে শূন্যে উড়ে গিয়ে
ধপাস করে পড়ল সে আর সাইকেলটা পড়ল ওর ঘাড়ের ওপর।
টেডি সাইকেল নিয়ে নিচে ছুটল, নিজের অজান্তে বেশ তাড়াতাড়িই। ভয়ে
বুক ঢিপঢিপ করছিল।
ফ্রেডির কাছে পৌঁছে সাইকেল দাঁড়
করিয়ে সে বলল, “দাদা?”
ফ্রেডি সাইকেলের চাকাটাকে বুকের
ওপর থেকে সরিয়ে উঠে বসল। তারপর সোজা
হয়ে উঠে দাঁড়িয়ে মাথা ঝাঁকিয়ে সাইকেলটাকে টেনে খাড়া করে দেখে-টেখে বলল, “যাক বাবা! একটা আঁচড়ও লাগেনি!”
“তুই
ঠিক আছিস তো?” টেডি জিজ্ঞেস করল, জিনসটা ধুলোয় মাখামাখি হয়ে গেছে ফ্রেডির।
“হ্যাঁ, হ্যাঁ, আমি ঠিক আছি, আমার আবার কী হবে!” ফ্রেডি বলল।
ফ্রেডির চোট লাগতেই পারে না! সে নিজেকে অপ্রতিরোধ্য মনে করে, বিশ্বাসও
করে সেটাই।
“চল এবার
রেস করব,” ফ্রেডি বলল।
টেডি কিছু বলল না। ঝগড়া
করতে ইচ্ছে করছিল না তার। সাইকেল নিয়ে
দাদার পিছন পিছন আবার মিলস্টোন হিলের ওপরে চলল সে, নতুন
সাইকেলের চাকাগুলোর সুঁই সুঁই শব্দ শুনতে শুনতে।
আর তখনই সেখানে উদয় হল দুই ড্যারো
ভাই, ঠিক যেন দুটো কালো মেঘ।
বয়সের তুলনায় তাদের চেহারা বেশ
বড়োসড়োই। একজন তেরো আরেকজন এগারো। লম্বা
বাদামি চুল চোখের ওপর এসে পড়েছে, ফ্যাকাসে মুখ
আর চোখ দুটো ভীষণ হিংস্র, ঠিক যেন নেকড়ের
মতন।
তাদের স্বভাব হিংস্র আর অন্য সবাইকে
কষ্ট দিয়ে ভীষণ আনন্দ পায় তারা। কখনও-সখনও
এমন ব্যবহার করবে যেন তারা বন্ধু কিন্তু তার মানে তখন তাদের কোনো উদ্দেশ্য আছে।
তারা কখনও ধরাও পড়ে না। কীভাবে
সবাইকে বিরক্ত করেও ধরা না পড়া যায় সেই সব বিদ্যায় ওদের জুড়ি নেই!
তা ড্যারো ভ্রাতাযুগল তাদের নেকড়ের
মতন চোখগুলো সাইকেলের ওপর রেখে এসে হাজির হল। ওদের
দেখেই টেডির পেটের মধ্যে কেমন একটা করে উঠল। ওদের
দেখলেই যেমনটা হয় সবসময়।
“আরে
নতুন নাকি ওই সাইকেল দুটো?” ক্লিটাস তার
খসখসে গলায় প্রশ্ন করল।
ফ্রেডি আর টেডি কোনো উত্তর দিল
না।
হ্যারি বলল, “নতুন সাইকেল রে নতুন সাইকেল! নতুন
সাইকেল আমাদের ভারি পছন্দ!” বলতে বলতে নিজের
কুমিরের মতন দাঁতগুলো বার করে হাসছিল সে।
“আমাদের
বাড়ি ফিরতে হবে,” ফ্রেডি বলল।
“না, না, আগে আমরা সাইকেল দুটোকে পরীক্ষা করে দেখি,” হ্যারি বলল, “আমরা ওটা করে
থাকি। নতুন সাইকেল ব্যবহার করার আগে পরীক্ষা
করতে হয়।”
“হ্যাঁ, তোদের জন্যে ঠিক কিনা দেখে নিতে হবে না?” তার ভাই বলল, তার হাসিটাও
জঘন্য একেবারে।
“না, ওসবের দরকার নেই, আমাদের যেতে
হবে এখন,” টেডি বলল।
ক্লিটাস গর্জে উঠল, “না, যাওয়া চলবে না এখন।”
ধাক্কা মেরে ফ্রেডি আর টেডিকে
মাটিতে ফেলে দিয়ে দুই ভাই ওদের নতুন সাইকেলগুলোতে চেপে বসল।
“আমাদের
সাইকেল ফিরিয়ে দাও!” ফ্রেডি রাগে হাত মুঠো করে চিৎকার করে
উঠল। ওগুলো আমাদের নতুন সাইকেল, ওগুলোকে চুরি যদি করো…”
“চুরি
কে করছে?” নিজেদের নোংরা হাতগুলো দিয়ে হ্যান্ডেল
চেপে ধরে হ্যারি বলল, “আমরা চুরি করি না, সাইকেল তোদের উপযুক্ত কিনা পরীক্ষা করছি।”
“তোদের
তো উচিত আমাদের ধন্যবাদ দেওয়া!” ক্লিটাস বলল
আর দু’জনে গাধার মতন হ্যা হ্যা করে হাসতে লাগল।
তারপর প্রচন্ড জোরে পেডাল চালিয়ে
সাইকেল দুটোকে নিচে নিয়ে গেল দু’জনে। উল্লাসে
চিৎকার করতে করতে।
ফ্রেডি আর টেডি দেখল হ্যারি আর
ক্লিটাস প্রবল বেগে সাইকেল দুটোকে নিয়ে নিচের দিকে বিশাল সাসাফ্রাস গাছটাতে ধাক্কা
মারল। সাইকেলগুলো দুমড়ে মুচড়ে যাওয়ার শব্দ শোনা
গেল। ফ্রেডির মনে হল সেই শব্দে তার কান থেকে
রক্ত পড়বে আর টেডি তার চোখ বন্ধ করে ফেলল।
চোখ খুলে সে দেখল সাইকেল দুটোর
দশা চেপটে দেওয়া কোকের ক্যানের মতন হয়ে গেছে।
ফ্রেডি চিৎকার করছিল, “এই, এই, এই, এই!” যেন ওই একটা
শব্দই জানে সে।
হ্যারি নিচ থেকে বলল, “তোদের সাইকেলগুলো কোনো কাজের নয়, তোরা
এবার এগুলোকে নিয়ে নিতে পারিস।”
এরপর দুই ড্যারো বদমাইশ পরস্পরের
পিঠ চাপড়াতে চাপড়াতে দৌড়ে পালিয়ে গেল সেখান থেকে।
সাইকেল দুটোকে হাঁটিয়ে হাঁটিয়ে
নিয়ে বাড়ি ফিরতে অনেক সময় লেগে গেল ফ্রেডি আর টেডির। সামনের
বাগানে সাইকেল রেখে দু’জনেই বাবাকে বলতে গেল যা হয়েছে।
মিস্টার হার্ডউইক সব শুনে মাথা
নেড়ে বললেন, “সত্যি, ওই ড্যারো ছেলেগুলো একেবারে পাজি
নচ্ছার!” জানালা দিয়ে সাইকেলগুলোর দশা দেখলেন তিনি।
ফ্রেডি বলল, “আমাদের বদলা নিতে হবে বাবা!” কান্নায়
ওর গলা বুজে আসছিল।
টেডির মনে হচ্ছিল ওর দাদা বুঝি
বা এখুনি কেঁদে ফেলবে। ওর নিজের অবশ্য
কান্নার চেয়ে রাগ হচ্ছিল বেশি, “বাবা, ওরা যা করেছে তারপর বদলা নিতে চাওয়া তো অন্যায় কিছু নয়, তাই
না?”
মিস্টার হার্ডউইক ওদের দিকে ফিরে
তাকালেন। গম্ভীরভাবে খুব আস্তে আস্তে বললেন, “না, আমি তো সেভাবে
বড়ো করিনি তোমাদের!”
“কিন্তু
বাবা…” ফ্রেডি প্রতিবাদ করে কী একটা বলতে যাচ্ছিল
কিন্তু মিস্টার হার্ডউইক হাত তুলে ওকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, “আর ও
নিয়ে কথা নয়। এর আগেও এই নিয়ে কথা হয়েছে। আমাদের
ধৈর্য ধরতে হবে। রাগ করলে চলবে না। আমরা
বদলায় বিশ্বাস করি না।”
সেদিন রাতে ফ্রেডি বিছানায় শুয়ে
শুয়ে বিকেলের ঘটনার কথা ভাবছিল। ঘুমোবার
চেষ্টা করছিল সে, কিন্তু ঘুম আসছিল না। বার
বার চোখের সামনে সে দেখতে পাচ্ছিল ওদের সাইকেলে চড়ে দুই ড্যারোর উন্মাদের মতন হাসি
আর তারপর মোটা গাছের গুঁড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগিয়ে নতুন সাইকেলগুলোকে ভেঙ্গে চুরমার করে
দেওয়া।
গলা শুকিয়ে গিয়েছিল ফ্রেডির, রাগে বুকে ব্যথা করছিল যেন।
একটু তন্দ্রা মতন এসেছিল ফ্রেডির,
এমন সময় মনে হল কার যেন পায়ের শব্দ। কে একটা
কাশল কাছেই! শোবার ঘরের জানালাটার দিকে তাকাল ফ্রেডি। এ
কী! জানালা তো খোলা, কিন্তু তার পরিষ্কার মনে আছে শোওয়ার আগে জানালা বন্ধ করে শুয়েছিল
সে। ঘরটা একতলায়, তাই কারও ঢুকে আসা কঠিন
নয়। আবার একটা খুট করে শব্দ। ফ্রেডি
বুঝতে পারল সে ঘরে একা নয়।
“কে? কে ওখানে? আমি জানি কেউ
আছে ঘরে!”
ফ্রেডি একটা কাশি আর তারপর হাসির
শব্দ শুনতে পেল। একটা ছায়ামূর্তি ঘরের এ পাশ থেকে ও পাশ
ছুটে চলে গেল। বেশ বড়োসড়ো কেউ, যেন গন্ডারের মতন। কালো
ছায়া সাঁ করে জানালা দিয়ে বাইরে চলে গেল।
ফ্রেডি বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ে জানালার
কাছে ছুটে গেল এবার। বাইরে দেখার
চেষ্টা করল। রাস্তার আলোতে সে দেখতে পেল হ্যারি ড্যারো
তাদের বাগান দিয়ে ছুটে পালিয়ে যাচ্ছে। হাওয়াতে
তার চুল উড়ছে।
ফ্রেডি অস্ফুট স্বরে বলে উঠল, “হ্যারি ড্যারো আমার ঘরে ঢুকেছিল!”
ছুটে গিয়ে লাইটের সুইচটা অন করল
সে। জোরালো আলোতে সে দেখল বিছনায় ওর চাদরের
ওপর একটা কাগজের টুকরো রাখা রয়েছে।
কালো কালি দিয়ে লেখা রয়েছে তাতে
– ‘বাইকের ব্যাপারটা নিয়ে কারো কাছে নালিশ করলে তোদের মেরে ফেলব।’
ফ্রেডি বার বার বলতে লাগল, “হ্যারি ড্যারো আমার ঘরে ঢুকেছিল! নিজের
ঘরেও নিরাপদ নই আমি! বাবাকে বলতে হবে। বাবা
জানবে কী করা উচিত।”
হঠাৎ আবার একটা শব্দ শুনল সে। ক্যাঁচকোচ
শব্দ হচ্ছে। বাড়িতে আবার কেউ ঢুকেছে।
নির্ঘাত ক্লিটাস ঢুকেছে এবার। নিঃশব্দে
ছায়ামূর্তিটার দিকে এগিয়ে গেল ফ্রেডি, জাপটে ধরল তাকে।
“ধরেছি!”
খানিক চেঁচামেচি হুটোপাটির পর
ঘরের আলোটা জ্বলে উঠল আর ফ্রেডি দেখল সে টেডিকে জাপটে ধরে রয়েছে।
টেডি রেগেমেগে বলল, “দাদা, কী করছিস? তোর কী মাথাখারাপ হয়েছে?”
ফ্রেডি লাফিয়ে তিন পা পিছিয়ে গেল। টেবিলে
রাখা একটা ফুলদানি প্রায় উলটে পড়ে যাচ্ছিল ওর ধাক্কায়।
“আ আমি… আমি ভাবলাম…” সে হোঁচট খেয়ে
খেয়ে বলল।
টেডি রাগি রাগি স্বরে বলল, “কী ভাবলি তুই?”
“আমি
ভাবলাম ক্লিটাস ড্যারো ঢুকেছে ঘরে!”
“আমাকে
কী ক্লিটাস ড্যারোর মতন দেখতে?”
“অন্ধকারে
কিছু দেখা যাচ্ছিল না তো!”
মিস্টার হার্ডউইক ঘুম থেকে উঠে
চোখ কচলাতে কচলাতে এসে হাজির হলেন, “কী হচ্ছে এখানে?”
ফ্রেডি আর টেডি দু’জনে একসঙ্গে
বলতে শুরু করেছিল, কিন্তু আসল ঘটনাটা তো ফ্রেডিই বলল। কীভাবে
হ্যারি ড্যারো তার ঘরে ঢুকে চিরকুট রেখে গিয়েছিল।
মিস্টার হার্ডউইক ফ্রেডিকে শান্ত
করার চেষ্টা করতে লাগলেন, কিন্তু তাকে শান্ত করা যাচ্ছিল না একেবারেই।
“এর বদলা
নিতেই হবে বাবা! ও আমার ঘরে ঢুকেছিল, আমাকে শাসাচ্ছিল!”
মিস্টার হার্ডউইক বললেন, “তোমরা কিছু না করলে ওরা তোমাদের বিরক্ত করে করে বোর হয়ে যাবে,
তখন অন্য শিকার ধরবে।”
টেডির চোখ রাগে জ্বলছিল, “বাবা এটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না! ওদের
শাস্তি পাওয়া উচিত!”
“আমাদের
নতুন সাইকেলগুলোকে নষ্ট করে দিল ওরা!”
“হ্যাঁ! বদলা চাই!” টেডি বলল।
মিস্টার হার্ডউইক মাথা নাড়লেন। তাঁর
চোখ দুটো ছোটো ছোটো হয়ে গেছে, “না, আমরা ওইরকম নই! আমি তোমাদের
অনেকবার বলেছি।”
“কিন্তু
বাবা…” ফ্রেডি বলতে শুরু করল।
“একটু
সময় দাও, তাহলেই তোমরা দেখবে আমার কথাই ঠিক,” মিস্টার হার্ডউইক এই বলে আলোচনা শেষ করে দিলেন।
স্কুলের পিছনের লাল ইটের
বাড়িটার বাইরের দেয়ালটা টেনিস বল ছুঁড়ে মেরে ফেরানোর জন্যে একেবারে দারুণ। টেডি
টেনিস খেলতে খুব ভালোবাসে, কিন্তু কিছু শট বেশ দুর্বল। সেটাকে
ঠিক করার একমাত্র উপায় হল প্র্যাকটিস। তাই
ফ্রেডি যখন বাড়িতে বসে ভিডিও গেম খেলে বা ফেন্সিং অথবা স্কেটবোর্ড নিয়ে খেলে তখন টেডি
লাল বাড়িটার দেয়ালে বল মেরে মেরে টেনিসের শট প্র্যাকটিস করে। র্যাকেটটাকে
হাতের একটা অংশ মনে করতে হবে, কোচ বলেছেন।
বেশ ভালোই লাগে টেডির এইভাবে খেলতে, বলটা এমনভাবে ফিরে আসে যেন ওপাশের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ফিরিয়ে
দিচ্ছে!
আজকের দিনটা অবশ্য ভালো ছিল না। ক্লিটাস
ড্যারো উদয় হল কোথা থেকে। টেডি প্রথমে
খেয়াল করেনি, মন দিয়ে বলটাকে দেখছিল বলে। হঠাৎ
একটা শীতল ছায়া ওর ওপর এসে পড়তে তার বুঝতে বাকি রইল না যে কোনো একজন ড্যারো এসেছে কাছে।
টেডি খেলা থামিয়ে রেগে জিজ্ঞেস
করল, “কী চাই?”
বলটা ছিটকে অন্যদিকে চলে গেল আর
তাকে দৌড়ে কুড়িয়ে আনতে হল।
নেকড়ের মতন চোখগুলো দিয়ে তাকিয়ে
দেখতে দেখতে ক্লিটাস বলল, “তোর র্যাকেটটা
ভালো নয়। কিছু সমস্যা আছে!”
টেডি বলল, “না, কোনো সমস্যা
নেই। এখান থেকে যাও!”
ক্লিটাস দেঁতো হাসি হেসে বলল, “তোর র্যাকেটে ফুটো আছে!”
“তোমার
মাথা খারাপ! যাও বলছি এখান থেকে!”
“দেখি
তো!” বলে ক্লিটাস হাত বাড়িয়ে খপ করে র্যাকেটাকে
ধরে ছিনিয়ে নিল। এত জোরে হ্যাঁচকা টান মারল যে টেডি পড়েই
যাচ্ছিল।
“আমার
র্যাকেট ফিরিয়ে দাও!”
ক্লিটাস পকেট থেকে একটা ছুরি বার
করে র্যাকেটের নেটের অংশটা কেটে দিয়ে বলল, “এই দেখ! তোকে বললাম না তোর র্যাকেটে ফুটো আছে!” বলে র্যাকেটটাকে ঘাসের ওপর ফেলে দিয়ে হাসতে হাসতে চলে গেল।
বাড়ি ফিরে বাবাকে বলতে বাবা হাত
তুলে বললেন, “ধৈর্য ধরো। সবুরে
মেওয়া ফলে, এই কথাটা শোনোনি আগে?”
টেডি গজগজ করে বলল, “না, বোকা বোকা কথা!”
ফ্রেডি বলল, “আমরা মেওয়া চাই না, আমরা বদলা চাই!”
বাবা বললেন, “আমি তোমাদের বলছি ঝামেলা এড়িয়ে চলো।”
কিন্তু ওরা ঝামেলা এড়াতে চাইলেও
ঝামেলা ওদের এসে ধরে।
হপ্তায় দু’দিন করে ওরা সাঁতারের
ক্লাস করে টাউনের রিক্রিয়েশান সেন্টারে। সেই
দিন আবহাওয়া খুব একটা ভালো ছিল না। ঝোড়ো
হাওয়া দিচ্ছিল, তাই সবাইকে ভিতরের সুইমিং পুলে যেতে বলা হল।
আকাশে কালো মেঘ আর বৃষ্টির জন্যে
ফ্রেডি আর টেডি ছাড়া ক্লাসে আর কেউ আসেনি। দু’জনে
মনের আনন্দে সুইমিং পুলের নীল জলে সাঁতার কাটছিল।
ফ্রেডি এখানেও এগিয়ে ছিল, টেডি ধীরে ধীরে আরাম করে সাঁতার কাটতে কাটতে পিছন পিছন আসছিল।
হঠাৎ ফ্রেডির মনে হল কেউ ওর পা-গুলো
ধরেছে। প্রথমে সে ভাবল কিছুর সঙ্গে ধাক্কা
খেয়েছে, কিন্তু তারপর বুঝতে পারল কেউ ওর পা ধরে টানছে।
“এই ছেড়ে দাও, ছাড়ো বলছি!”
সে দেখতে চেষ্টা করছিল কে ওই
রকম করছে, এমন সময় একটা জোর টান তাকে জলের তলায় নিয়ে গেল। খাবি খেতে খেতে জল থেকে
মাথাটা তুলে সে দেখল পুলের অন্য দিকে টেডিরও একই অবস্থা। সে হাত-পা ঝাপটাচ্ছে আর
চিৎকার করছে, কিন্তু নড়তে পারছে না।
তার মানে কেউ কী তার পা-ও
ধরেছে?
“ছেড়ে দাও বলছি!” ফ্রেডি
চিৎকার করে বলল আর পরক্ষণেই আবার কেউ তার পা ধরে প্রবল জোরে টানতে শুরু করল।
ফ্রেডি ছটফট করে নিজেকে ছাড়াবার চেষ্টা করতে লাগল।
‘কেউ আমাকে ডুবিয়ে মারতে চাইছে!’
ভয়েতে দ্বিগুণ জোরে হাত-পা ছুঁড়তে
লাগল ফ্রেডি। অন্য দিকে টেডিরও একই দশা। হাত-পা ছুঁড়তে ছুঁড়তে এক সময় ক্লান্ত হয়ে
থেমে গেল ফ্রেডি। নিজের চারিদিকের সবুজ নীল জলটাকে দেখতে লাগল অসহায়ভাবে।
ঠিক তখনই পা ধরে টানাটা বন্ধ হল। হাঁউমাঁউ করে জলের ওপরে ভেসে উঠল সে।
চোখ থেকে জল সরাতেই দেখল
হ্যারি ড্যারোর বীভৎস হাসিমুখ। ফ্রেডির মুখে এক দলা থুতু ছিটিয়ে ফেলে সে বলল, “কী
রে, ভয় পেলি নাকি?”
ফ্রেডির মুখ দিয়ে কোনো কথা
বেরোচ্ছিল না, “তু তু...”
হ্যারি হা হা করে হেসে বলল,
“তুই এমন ক্যাবলা যে তোকে ভয় পাওয়াতে ভীষণ মজা লাগে! আর কী সহজেই ভয় পেয়েও যাস!”
ফ্রেডিকে এক ধাক্কা মেরে সে
পুলের মই-সিঁড়ি বেয়ে উঠে গেল।
পুলের অন্য দিকে টেডি
ক্লিটাসকে বলছিল, “আমাকে ডুবিয়ে মারতে চাইছিলে! তোমাদের কী মাথা খারাপ? বদমাইশ!”
ওর মাথা মুখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছিল ঝর ঝর করে।
দুই ভাই পুল থেকে উঠে হাসতে
হাসতে পালিয়ে গেল, যেন বিশাল বীরত্বের কাজ করেছে।
ফ্রেডি চোখ ছোটো ছোটো করে টেডির
দিকে তাকাল। দু’জনে কোনো কথা বলল না, কিন্তু দু’জনেই
ভাবছিল বদলার কথা।
“আমাদের জলে ডুবিয়ে মেরে
ফেলতে চেয়েছিল ওরা!”
“এটা কিন্তু ঠাট্টা নয়!”
“ওরা দিন কে দিন আরও বেশি
হিংস্র হয়ে পড়ছে বাবা, ওরা বোর হচ্ছে না, অন্য কাউকে ধরছে না!”
“আমাদের জলের তলায় চেপে
ধরেছিল, আমাদের মেরে ফেলতে চাইছিল!”
মিস্টার হার্ডউইক হাত তুলে দিয়ে
বললেন, “ঠিক আছে, আমি হার মানছি।”
“হার মানছি মানে?” ফ্রেডি জিজ্ঞেস
করল।
“ঠিক আছে, তোমরা বদলা নিতে পারো,”
ওদের বাবা বললেন, “যা খুশি করতে পারো। ওরা এই বিপদ নিজেরাই ডেকে এনেছে। তোমরা
সত্যিই প্রচুর ধৈর্য ধরে ছিলে।”
ফ্রেডি আর টেডি আশ্চর্য হয়ে
বাবার মুখের দিকে তাকাল, “তুমি ঠিক বলছ তো বাবা?”
মাথা নেড়ে মিস্টার হার্ডউইক
বললেন, “হ্যাঁ, ওদের বাড়িতে ডাকো, তারপর থেকে মনে হয় ওদের তোমাদের বিরক্ত করা বন্ধ
করাতে পারব।”
ফ্রেডি আর টেডি একগাল হেসে
বলল, “নিশ্চয়ই!”
হ্যারি আর ক্লিটাস ড্যারোর
মনে হয় বেশ অস্বস্তি হচ্ছিল ফ্রেডি আর টেডির সঙ্গে ওদের বাড়িতে আসতে। ক্লিটাস
মুখভর্তি বাবল গামটাকে বার বার ফুলিয়ে বেশ জোরে ফটাস ফটাস করে ফাটাচ্ছিল। হ্যারির
চুল কপালে আর চোখের ওপর এসে পড়ছিল। তার হাত দুটো মুঠো করা, যেন মনে হচ্ছিল কাউকে
ঘুসি মারতে চায়।
“বাহ ভালো বাড়ি তো,” বলে
ক্লিটাস ধপাস করে সবুজ রঙের সোফাটায় বসে পড়ল আর কাদামাখা জুতো পরা পা দুটো সামনের
টেবিলটায় তুলে দিল কোনো ভ্রুক্ষেপ না করেই।
“তা তোমরা দুই ক্যাবলাকান্ত
আমাদের কেন ডেকে এনেছ এখানে জানতে পারি?” চুলের ফাঁক দিয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে হ্যারি
বলল, “ওই রকম ছিঁচকাঁদুনে হওয়ার জন্যে ক্ষমা চাইবে বুঝি?”
টেডি এবার না হেসে পারল না,
বলল, “তোমাদের কিছু দেখাতে চাই তাই ডেকে এনেছি।”
“আর আমরা যদি সে সব না দেখতে
চাই?” ক্লিটাস বীরত্ব দেখিয়ে বলল।
“দূর, দেখাবার মতন কিছু নেই
তো কী দেখাবে!” হ্যারি টেবিলের ওপর বসে পড়ে হাতের আঙুল মটকাতে মটকাতে বলল।
“এইটা দেখে বলো কেমন লাগল,”
বলে ফ্রেডি নিজের নাকের কাছে হাতটা নিয়ে গিয়ে নাকের ফুটো থেকে কী একটা বার করে
আনল।
“এমা ওটা কী?” ক্লিটাস সোফায়
ঝুঁকে বসে জিজ্ঞেস করল।
“একটা কেন্নো! এই দেখো,” বলে
ফ্রেডি নাক থেকে আরেকটা মোটা কেন্নো বার করে কার্পেটে ফেলল। তারপর নাকে হাত ঢুকিয়ে
আরও বড়ো একটা কেন্নো টেনে বার করে আনল।
“ওরে বাবা রে!” হ্যারি লাফিয়ে
উঠে তিন হাত পিছিয়ে গেল। হাত দিয়ে মুখের ওপর পড়ে থাকা চুলগুলো সরাল সে, ভয়ে তার
চোখ গোল গোল হয়ে গেছে।
ফ্রেডি আরেকটা কেন্নো বার করে
ক্লিটাসের দিকে ছুঁড়ে দিল।
“এই বার আমার দিকে তাকাও!”
টেডি দাদার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল। তারপর বড়ো করে মুখটা হাঁ করে জিভ বার করল।
বীভৎস কালো মাকড়সা ভর্তি ওর মুখের ভিতর! তারা ওর মুখ থেকে বেরিয়ে কার্পেটে পড়তে
লাগল।
“ওয়াক থু! বিশ্রী, জঘন্য!”
ক্লিটাস চিৎকার করে উঠল। দুই ভাই উঠে দাঁড়িয়েছে এবার। ক্লিটাসের মুখ থেকে বাবল গাম
পড়ে তার জামায় আটকে গেছে।
টেডি মুখ থেকে আরও ডজনখানেক মাকড়সা
বার করল।
“আরেকটা মজা দেখাই তোমাদের,”
বলল ফ্রেডি। তার এক হাতে একটা বড়ো হাতুড়ি আর অন্য হাতে একটা বড়োসড়ো পেরেক। নিজের একটা
হাত টেবিলের ওপর রেখে অন্য হাত দিয়ে পেরেকটাকে হাতসহ টেবিলের সঙ্গে গেঁথে ফেলল সে।
“সর্বনাশ!” হ্যারি চিৎকার করে
উঠল।
ক্লিটাসও ভয়ে চেঁচিয়ে উঠল।
ফ্রেডি বলল, “দেখলে তো কোনো
রক্ত বেরোচ্ছে না। আর আমার লাগছেও না মোটেই। কেন জানো?”
ভয়ে হ্যারি আর ক্লিটাসের মুখ
দিয়ে কোনো কথা বেরোচ্ছিল না।
“কারণ আমরা তো মৃত!” টেডি
দাদার প্রশ্নের উত্তরটা দিয়ে দিল।
“তোমরা ঠিক মতন নির্বাচন করতে
পারোনি,” পেরেকটাকে আরো কয়েক বাড়ি মারতে মারতে ফ্রেডি বলল, “জলে ডুবিয়ে মারার
জন্যে ভুল লোকদের বেছে নিয়েছিলে। আমাদের জলে ডুবিয়ে মারা যায় না, আমরা আগেই মরে
গেছি।”
হ্যারি আর ক্লিটাস ড্যারো
কাঠের মূর্তির মতো স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল, এমন সময় মিস্টার হার্ডউইক ঘরে এসে
ঢুকলেন। দুই ভাইয়ের ফ্যাকাসে মুখ আর তারা থর থর করে কাঁপছে দেখে ফ্রেডি আর টেডিকে
জিজ্ঞেস করলেন, “যা দেখাবার দেখিয়ে দিয়েছ ওদের?”
ফ্রেডি আর টেডি মাথা নাড়ল।
টেডি আরও কিছু মাকড়সা বার করল মুখ থেকে।
মিস্টার হার্ডউইক দীর্ঘশ্বাস
ফেলে বললেন, “আবার এই এলাকা ছেড়ে অন্য ঠিকানা খুঁজতে হবে। বদলা নেওয়ার তো সেটাই
বিপদ। আর এখানে থাকা যাবে না। এই জায়গা ভদ্র জোম্বিদের জন্যে নয় মোটেই।”
টেডি বাবার কাছে গিয়ে
পীড়াপীড়ি করতে লাগল, “বাবা ওদের মাংসটা খাবো? প্লিজ বাবা?”
ফ্রেডিও যোগ দিল, “হ্যাঁ, বাবা
কতদিন হয়ে গেছে নরম মাংস খাইনি!”
মিস্টার হার্ডউইক একটু ভেবে
বললেন, “ঠিক আছে, কিন্তু রাতের খাবার খেতে পারবে না সেটা যেন না শুনি!”
ব্যস, গল্প শেষ এখানেই। তা এই
গল্পটা চিৎকার দিয়ে শুরু হয়েছিল আর চিৎকার দিয়েই শেষ হচ্ছে। কিন্তু এই শেষের চিৎকারগুলো
অবশ্য অন্য রকমের।
বেশ ভালো খেতে যাদের, সেই
ড্যারো যুগলের চিৎকার দিয়েই গল্পটা শেষ হল।
--------
লেখক পরিচিতিঃ আর. এল.
স্টাইন, ওরফে রবার্ট লরেন্স স্টাইন (জন্ম: অক্টোবর ৮, ১৯৪৩), একজন বিখ্যাত মার্কিন
লেখক ও সম্পাদক। ভয়ের গল্প লেখায় আর. এল. স্টাইনের জুড়ি মেলা ভার।
--------
ছবিঃ অতনু দেব
No comments:
Post a Comment