বিলু
সঙ্গীতা দাশগুপ্তরায়
ওই খাটেই শুচ্ছে
বিলু যে খাটে
রোজ শোয় ঠাকুমের
সাথে। ঘরটায় খাট
দু’খানা। একটায় বিলু
আর ঠাকুম শোয়
আর অন্যটায় দাদাই।
দাদাই মাঝে
মাঝে খুব কাশে। আগে
ঠাকুম উঠে
জল এনে দিত।
ইদানীং বিলু
উঠছে। ঠাকুম
হাসে আর বলে
ছেলের বিয়ে
দিয়ে অদ্দেক বেকার
হয়েছি, এবার
নাতি বড়ো হয়ে
পুরো বেকার হয়ে
যাব। তা ঠাকুম
ভুল তেমন বলে
না। চোখে কম
দেখে বলে বিলু
ঠাকুমকে খবরের
কাগজ পড়ে শোনায়, কোনো ভালো গল্প
দেখলে জোরে
জোরে পড়ে রাত্তিরে
যাতে ঠাকুম আর
দাদাই দু’জনেই
শুনতে পারে।
দাদাই অবশ্য
গল্পের প্রথম
পাতাতেই নাক
ডাকে। ঠাকুম
তখন বলে, “বিলু, এবার আস্তে আস্তে
পড় বাবা। চেঁচাতে
হবে না। ওদিকে
নাকের বাদ্যি
শুনছিস না?”
ঠাকুম গেছে ছোটোপিসির
বাড়ি। সে বাড়িতে
একটা ভাই বা
বোন আসবে। ছোটপিসির
এখন যত্ন আর
বিশ্রাম দরকার। দাদাইকেও যেতে বলেছিল পিসি।
ঠাকুম বলল,
“উনি গেলে আমি
তোর খেয়াল রাখব
না ওঁর হাতন্যাকড়া
হয়ে ঘুরব? উনি থাকুন।
আমি ওদিকে দেখি।”
ঠাকুম নেই। বিলুর
ফাঁকা ফাঁকা
লাগে। স্কুল
থেকে এসে দেখে
দাদাইয়ের খাওয়াদাওয়া
হয়ে গেছে। মণিপিসি
বিলুকে তরকারি আর
পরোটা দেয়।
একা একা বিলুকে
খেতে হয়। ঠাকুম থাকলে
দু’জনে একসঙ্গে
খায় দুপুরের খাবার।
বিলুর অভ্যেস
বাড়ি ফিরে ইশকুলের
যত নালিশ উজাড়
করে দেওয়া। ঠাকুমের
কাছে সব নালিশগুলো
গিয়েই কেমন
নরম হয়ে যায়। হয়তো সব্যসাচীর সাথে
ব্যাট নিয়ে
ঝগড়া হয়েছে, বিলুর মাথা তেতে আগুন, ঠাকুম ঠিক
এমন একটা পুরোনো
কথা বলবে সব্যকে
নিয়ে যে বিলু
পড়ে যাবে দোটানায়। হয়তো বলে বসল,
“আচ্ছা? সব্যসাচীটা এমন
দুষ্টু হয়ে
গেছে? আগে কত
ভালো ছিল! মনে আছে
বিলু, একবার তোর
ভাগের আমসত্ত্ব
হাত থেকে পড়ে
গেছিল বলে
সব্য তোকে ওর
থেকে অর্ধেকটা দিয়েছিল?” ব্যস! বিলুর
মনে পড়তে থাকে
সব্যর সঙ্গে
কবে কী কী
মজার ঘটনা ঘটেছে, কবে ওরা ক্লাসে
একসঙ্গে শাস্তি
পেয়েছিল, কবে সব্য
ওকে বলেছিল সাইকেল
চড়া শেখাবে, সব
কথা। রাগটাও ধীরে ধীরে
কোথায় হারিয়ে
যায় যেন।
এদিকে স্কুলে অ্যানুয়াল
ডে আসছে। নেপোলিয়ন
হবে স্টেজে। সব্য আর বিলু
দুই যোদ্ধার পার্ট
করছে। ড্রামা
স্যার বলেছেন
স্কুল ছুটির
পর থাকতে হবে
আরও এক
ঘন্টা রোজ। মানে স্কুল বাস
মিস করতে হবে। এসব কথা ঠাকুমকে
বাড়ি ফিরেই না
বললে হয়? আর ঠাকুমও
দেখ, গিয়ে থেকে
রাতে একবার ফোন
করে। বিলুর সঙ্গে
চারটে কথা
আর দাদাইয়ের সঙ্গে
দুটো। তাও
ওই কেবল ঠিকঠাক
খাওয়া, হোমওয়ার্ক সারা
এসব নিয়েই। আর
দাদাইয়ের সঙ্গে
কেবল সময়ে ওষুধ, বাথরুমের গিজার
অফ করতে না
ভোলার নির্দেশ
এই সব।
বিলুর ইচ্ছে করে
দুপুরে বাড়ি
ফিরে ঠাকুমকে ফোন
করতে, কিন্তু
মা সেল ফোন
হাতে নিলে খুব
রাগ করে।
বলে সেলফোনের রেডিয়েশন সকলের
জন্যই খারাপ
আর বাচ্চাদের জন্য
তো বিশেষ করে।
তাই মা বাড়ি
না থাকলেও বিলু
দাদাইয়ের ফোনে
হাত দেয় না।
ঠাকুম বলেছে
মায়ের কথা
না শুনলে ওর রাখা খাবার
পাখিরা খাবে না, ও গাছে জল
দিলেও গাছ
বড়ো হবে না।
সব্য বলে এমন
অদ্ভুত শাস্তি
কারও বাড়িতে হয়
না। কথা না
শুনলে ছোটোদের টিভি দেখা একদিন
বন্ধ করে দেওয়া
হল বা চিপস
কিনে দেওয়া হবে
না, ব্যাস ওইটুকুই।
পাখি খাবে না, গাছ বাঁচবে
না এসব অতি ভয়ানক শাস্তি
কেবল বিলুদের বাড়িরই
নিয়ম।
কিন্তু নিয়ম যাই
হোক আজ বিলুকে
কথা বলতেই হবে। দাদাই দুপুরের
খাবার খেয়ে
ঘুমোচ্ছে। এখন
ফোনটা নিয়ে
একটু কথা বলে
নিলে কেউ জানতেই
পারবে না। বিলু চুপচাপ দাদাইয়ের মাথার
কাছ থেকে ফোনটা
তুলে নিয়ে মা-বাবার
ঘরের বাথরুমে চলে
যায়।
“হ্যাঁ বল, তুমি এখন? দুপুরে শোওনি?” ঠাকুমের গলা
পাওয়া যায়
ফোনে।
“দাদাই না। আমি ফোন
করেছি তোমাকে,”
বিলু তাড়াতাড়ি উত্তর
দেয়।
“ওমা দাদাভাই! তুমি স্কুল
থেকে এসে খেয়েছ?” ঠাকুম আগেই
খাওয়ার কথা
জিজ্ঞেস করে।
“হ্যাঁ খেয়েছি। পরোটা
আর তরকারি। তুমি
আগে আমার কথাটা
শোনো শিগগির।”
“আচ্ছা বল। কী
এমন কথা।”
“ঠাকুম,
আমাদের ক্লাসের
রণজয়কে তোমার
মনে আছে?”
“রণজয়? যে সেই ইতিহাস
পরীক্ষার দিন
ইংলিশ পড়ে
গেছিল সে?”
“হ্যাঁ,
সেই রণজয়।
ওর তো দাদু ঠাকুমা
নেই। স্কুল থেকে
বাড়ি ফিরে ওদের
মাসির কাছে
থাকে। তো
কাল স্কুল থেকে
ফিরে ও দেখেছে
ওদের সেই মাসি
খুব কাঁদছে।”
“কার মাসি কাঁদছে? তোমার মাসি
এসেছে বুঝি
বাড়িতে?” ওদিকে বোধহয়
টিভি চলছে। ঠাকুমের
গলা ছাপিয়ে টিভির
গলা শোনা যাচ্ছে।
বিলু গলা তুলল,
“রণজয়ের মাসি, রণজয়ের।”
“ওঃ!
রণজয় কি মাসির
বাড়িতে এখন?”
এবার বিলুর রাগ
হয়ে যায়। ওদিকে
এত জোরে টিভি
চলছে যে ঠাকুম
এক্কেবারে কালা
হয়ে গেছে। কিন্তু
রাগ হলে কাজ
মাটি হবে। তাই
আরও একটু গলা
চড়িয়ে বলে,
“আমাদের বাড়ির
মণিপিসির মতো
একটা মাসি আছে
রণজয়ের। সেই মাসির
কথা বলছি। তুমি
টিভির কাছ
থেকে সরো, নইলে
শুনতে পাবে
না।”
ঠাকুম সত্যিই সরে
আসে বুঝি। বলে,
“আচ্ছা বুঝেছি।
তো মাসি কাঁদছে
কেন?”
“কারণ ওই মাসির
আর কেউ নেই। শুধু এক বুড়ি
মা আছে। ওদের
দেশের বাড়িতে
থাকে। কিন্তু সেখানে বাড়ি
ভেঙ্গে পড়ছে।
রাতে আলো নেই। ক’দিন আগে
ওই বুড়ি মা, মানে ওই দিদুটা
উঠোনে পড়ে
পা ভেঙ্গে গেছে।
এখন ডাক্তার বলেছে
একা ফেলে রাখা
যাবে না। তাই
মাসি কাঁদছিল মায়ের
কথা ভেবে। এখন
মাসিটার মা
কার কাছে থাকবে
বল?” ওদিক থেকে
এই সময় আরও
কার গলা শোনা
যায়। ঠাকুম তাড়াতাড়ি
বিলুকে থামিয়ে
দিয়ে বলে, “আহা
রে। কী আর
করবে বেচারা।
যাক তুমি ওই নিয়ে
মন খারাপ কোরো
না। হোমওয়ার্ক সেরে
নাও, নইলে মা
অফিস থেকে ফিরে
বকবে কিন্তু।”
হঠাৎ বিলুর কান্না
পেয়ে যায়। ঠাকুম
এমন পালটে গেল
কী করে এই
ক’দিনে? বিলুর কথা
শুনলই না
ভাল করে। বিলু
ভেবেছিল ঠাকুম
তো সব কিছুর
সমাধান বলতে
পারে। রণজয়ের
ওই মাসির মায়ের
জন্য কিছু একটা
ব্যবস্থা নিশ্চই
করবে। অথচ
ঠাকুম সে
দিকেই গেল
না। মন খারাপ
কোরো না বলে
ফোন রেখে দিল।
মন খারাপের কথা
বলতে ফোন করেছিল
না কি বিলু?
হঠাৎ রাগে না
কি অভিমানে বিলুর
খুব কান্না পেতে
থাকে। ফোনটা রেখে
অনেকক্ষণ ধরে
মুখ ধোয় বিলু। বাবার
ছোটো দাঁতের চিরুনি
দিয়ে চুল আঁচড়ায়
পরিপাটি করে।
তারপর বাথরুম
থেকে বেরিয়ে ভূত
দেখার মতো
চমকে ওঠে। সামনে
দাঁড়িয়ে দাদাই।
ভুরু কুঁচকে গম্ভীর
হয়ে হাত বাড়াল
দাদাই, “আমার
ফোন নিয়ে এসেছ?”
মাথা নিচু করে
ফোনটা দাদাইয়ের
হাতে দেয় বিলু।
দাদাই কল লিস্ট
দেখে অল্প হাসে।
তারপর বিলুর
মাথায় হাত
বুলিয়ে বলে,
“খুব মন কেমন
করছে বুড়িটার জন্য, না?”
“কোন বুড়িটা? রণজয়ের...”
“রণজয়ের বুড়ি আবার
কে?” দাদাই
ভুরু কুঁচকে তাকায়।
“ওই তো যার
কথা ঠাকুমকে বললাম,
ঠাকুম শুনলই
না ভালো করে।”
দাদাই বিলুকে একটু
কাছে টেনে নিয়ে
বলে, “আচ্ছা আমাকে বল
দেখি। আমি
শুনছি। মণি, আমার জন্য এক কাপ
চা কর আর
দাদুভাই এখন
যা খায় সেটা
দাও।”
বিলু হেসে ফেলে,
“আমি এখন কিছু
খাই না দাদাই।
স্কুল থেকে
এসেই খেয়েছি। তুমি
রণজয়ের মাসির
কথাটা শুনবে?” সোফায় দাদাইয়ের
কোলের কাছে
বসে বিলু গড়গড়
করে সমস্যাটা বলে।
“আচ্ছা,
তার মানে ওই
মাসিটার মায়ের
পা ভেঙ্গে গেছে
আর থাকার জায়গা
নেই, এটাই সমস্যা,”
দাদাই বেশ
মন দিয়ে পুরোটা
শুনে বলে।
“হ্যাঁ, রণজয়ের মা বলেছে ওদের বাড়িতে থাকতে
দিতে পারবে না।
অত জায়গা নেই।”
দাদাই কী যেন
ভাবতে ভাবতে
টেবিলে রাখা
কাগজটা খোলে।
“ও দাদাই, তুমি কাগজ
পড়তে লেগে গেলে
কেন। বল না, ওই মাসিটার জন্য...”
“ওই মাসির জন্যই
কাগজ খুলছি রে
বাবা। তুই
বোস দেখি চুপটি
করে...”
রাত বাড়লে দাদাই
রণজয়দের বাড়িতে
ফোন করে ওই
মাসির সঙ্গে
কথা বলে। বিলুর
কাছ থেকে কাগজ
চেয়ে নিয়ে কী
সব লেখে তাতে।
নাম বয়স, কে কে
আছে আর, কোন গ্রামে
বাড়ি এই সব।
পরের দিন স্কুলে
রণজয় বলে, “হ্যাঁ রে, তোর দাদাই মাসিকে
কী বলেছে যে
মাসিকে খুশি
দেখাচ্ছিল রাত্তিরে? জিজ্ঞেস করলাম
তো বলল, রণদাদা, ঠাকুরকে ডাকি
গো। তিনি যেন
মুখ তুলে চান।
কী কথার কী
উত্তর ভাব!”
বিলু বোঝে
না, জানেও
না কী করছে
দাদাই, কিন্তু
ওর মন বলছে
দাদাই ভালো
কিছুই করছে
নিশ্চয়ই।
পরের তিন-চারদিন
বিলু বার বার জানতে
চায়, কিন্তু দাদাই
খালি হাসিমুখে বলে,
‘চেষ্টা করছি
রে দাদুভাই। সবুর
কর। দেখি ক’দিন।’
শেষে শনিবার রাতে
খেতে বসে মণিদিকে বলে, “কাল
সকাল সকাল বেরোবো মণি। একটু
তাড়াতাড়ি চা
দিও তো।”
বাবা জিজ্ঞেস করল
কোথায় যাবে
দাদাই। দাদাই
বলল রসুলতলি যাব
একটু। বিলুর
খুব চেনা লাগছিল
নামটা, কিন্তু কোথায়
শুনেছে মনে
করতে পারল না।
সারা সপ্তাহ ঘড়ির
অ্যালার্ম শুনে
ঘুম ভাঙ্গে বিলুর, রোববার ছাড়া।
একটু বেলায় ঘুম থেকে
উঠে বিলু দেখে
দাদাইয়ের খাটের
চাদর ঝেড়ে টানটান
করে পাতা। মনে
পড়ল, রসুলতলি না
কোথায় যাবে
বলেছিল দাদাই।
জলখাবারে আলু পরোটা
খেতে খেতে বিলু
শুনছিল বাবাই
আর মা আলোচনা করছে দাদাইয়ের রোববার একা বেড়াতে যাওয়া
নিয়ে।
বাবা বলছিল, ‘ভালো
করেছে মানুষটা ছুটির দিনে
বেরিয়েছে। নিশ্চয়ই
কোনও পুরোনো বন্ধুর
বাড়ি গেছে হবে।
বাড়িতে মা
নেই। একা সারাদিন। বিলুর সঙ্গে
যা টুকটাক কথা
হয়। নিজের বন্ধুবান্ধবের
কাছে গিয়ে একদিন
কাটিয়ে আসা
তো ভাল।’
বিলুর খাওয়া হয়ে
গেছে। দাদাইয়ের
টেবিলের কাছে
গিয়ে এটা ওটা
সরাতে গিয়ে
বিলু দেখতে পেল
কাগজটা। ক’দিন
আগেই দিয়েছিল দাদাইকে।
লেখা আছে বিনতা
দাস, রসুলতলি।
বিকেলে দাদাই ফিরল
এক গা ঘাম
আর এক মুখ
হাসি নিয়ে।
বাবা জিজ্ঞেস করল, “বন্ধুর
বাড়ি ঘোরা হল?”
দাদাই মাথা নেড়ে
হ্যাঁ বলে
সোজা বাথরুমের দিকে
এগোতেই বিলুর চোখে
চোখ পড়ল। সে
চোখে হাসি স্পষ্ট।
ফ্রেশ হয়ে চা
নিয়ে ঘরে এসে
দাদাই ফোনটা
নিয়ে টুকটুক করে
ক’টা ছবি বার
করে দেখাল বিলুকে।
একটা অফিস ঘরের
মতো ঘরে ঢিলে জামা আর
কোঁচকানো শাড়ি পরা একজন
বুড়ি মানুষ, হাতে লাঠি
নিয়ে কুঁজো হয়ে
চেয়ারে বসে আছেন। পাশে
দাদাই, আর একজন
মহিলা। টেবিলের
পাশে আরও দু’জন
অচেনা ভদ্রলোক।
দাদাই একে একে
চিনিয়ে দিল,
“এই হল তোমার
রণজয়ের মাসি
আর এই বুড়ি
ভদ্রমহিলা ওই
মাসির মা।”
“এটা কোথায় দাদাই?” বিলু অবাক
বিস্ময়ে প্রশ্ন
করে।
এটা নরেন্দ্রপুরের একটা
আশ্রম দাদুভাই।
দুঃস্থ অসহায়
গরীব মানুষদের থাকতে
দেয় ওখানে।
ওই দিদুটাকে ওখানেই রাখার
ব্যবস্থা করেছি। আর ওঁকে
একা গ্রামে লোকের
বারান্দায় শুয়ে
থাকতে হবে
না।
খুশিতে বিলুর চোখে
জল এসে যায়।
দাদাইকে খুব
করে জড়িয়ে ধরে
বসে থাকতে ইচ্ছে
করে।
পরের দিন স্কুলে
গিয়ে তো বিলু
এক্কেবারে হিরো। রণজয় সব্বাইকে ডেকে
ডেকে দাদাইয়ের গল্প
করেছে। মাসি
কালও কেঁদেছে। জিজ্ঞেস করলে
বার বার বলেছে,
‘খুশিতে কাঁদছি
গো।’
রণজয়ের মা-বাবা বলেছে
একটা ছুটির দিনে বিলুদের বাড়ি
গিয়ে দাদাইকে প্রণাম
করে আসবে।
বিলু হাসি
হাসি মুখে তাকাচ্ছে বন্ধুদের দিকে,
এমনভাবে যাতে
স্পষ্ট বোঝা
যাচ্ছে এমন
একটা দাদাই শুধু
বিলুরই আছে
আর সে
জন্য বিলুর গর্বও আছে
বেশ।
ঠাকুমের ওপর বিলুর
অভিমান অবশ্য
যায়নি। তবে
ঠাকুম বোধহয়
দাদাইকে বলেছে
বিলুর কাছে
রোজ একটু গল্প
শুনতে, না
হলে বিলুর বই
পড়ার অভ্যেস চলে
যাবে। দাদাই
নিজেই আগ্রহ
দেখিয়ে বিলুর
কাছে গল্প শোনে
আজকাল রাতে। আর
যেদিন বিলুর
নিজের গল্প
পড়তে ইচ্ছে করে
না সেদিন দাদাই
কত সব অচেনা
দেশের অচেনা
মানুষের গল্প শোনায় বিলুকে।
ঘুমের মধ্যে বিলু
স্বপ্ন দেখে,
ঠাকুম দু’হাত
বাড়িয়ে বিলুকে
ডাকছে। ছুটে
ঠাকুমের কাছে
যাচ্ছে ভেবে
পাশ ফিরে দাদাইকে
জড়িয়ে ধরে
বিলু গভীর ঘুমে
তলিয়ে যায়।
_____
ছবিঃ পার্থ মুখার্জী
No comments:
Post a Comment