![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgoRJs6h27G93XoCv96yLPQeRuG6uVGtcjiJMv3t9r2Nd4E-axF9rInml_feImmx8UE7hLTLUmDDiWMUqQU2J3XETKdgocR4PP19dX38nEII_qTfU4Bfga66DmkZd60kHWlZ0S_X4_Z1fhe/s400/fermat+stamp.jpg)
অন্তিম
সূত্র
সূর্যনাথ ভট্টাচার্য
প্রায় সাড়ে
তিনশো বছর আগে, সম্ভবত
১৬৬৫ কি ৬৬ সালের বসন্তকাল। চিলেকোঠায় রাখা অনেকগুলো পুরোনো বাক্স সাফ করতে গিয়ে
স্যামুয়েল ক্লেমেন্ট দৈবাৎই দেখতে পেলেন তাঁর পিতার ব্যবহৃত একটা বেশ পুরোনো বই।
পিতা প্রয়াত হয়েছেন সম্প্রতি, তাঁর ব্যবহার করা বই, লেখা, কাগজপত্র ইত্যাদি সংগ্রহ করে একত্র
করছিলেন স্যামুয়েল।
এই বইটা
তৃতীয় শতাব্দীর গ্রীক দার্শনিক ও গণিতজ্ঞ ডায়োফ্যান্টাসের লেখা ‘অ্যারিথমেটিকা’-র ১৬২১
সালের একটি ল্যাটিন সংস্করণ। ডায়োফ্যান্টাস দুটি চলরাশির বিভিন্ন সূচক সংবলিত এক বিশেষ
ধরনের সমীকরণের সমাধানের বিষয়ে বহু তথ্যের গবেষণা করেছিলেন। এই সমীকরণগুলি
ডায়োফ্যান্টাইন ইকোয়েশন নামে খ্যাত। সেই গবেষণালব্ধ নানান সমস্যা ও তার সমাধানের
সংগ্রহ ছিল ঐ অ্যারিথমেটিকা। পাতা ওলটাতে ওলটাতে একটা জায়গায় এসে স্যামুয়েলের চোখ
আটকে গেল।
সেখানে একটা
অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে কী ভাবে একটা বর্গ সংখ্যাকে দুটো অন্য বর্গের যোগফলরূপে
প্রকাশ করা যায়। উদাহরণস্বরূপ ডায়োফ্যান্টাস দেখিয়েছেন যে, ৪ এর বর্গ, অর্থাৎ ১৬
কে দু’ভাগে ভেঙ্গে কী করে ১৬/৫ ও ১২/৫-এর বর্গের যোগফল হিসেবে দেখানো যায়।
এই অঙ্কটির
ঠিক ডানদিকের মার্জিনে পরিষ্কার হাতের লেখায় ল্যাটিন ভাষায় লেখা ছিল – কোনও কিউবকে
কিন্তু এইভাবে অন্য দু’টো কিউবের যোগফলরূপে দেখানো যায় না। অথবা কোনও চতুর্ঘাতীয় সংখ্যাকে
অন্য দু’টো চতুর্ঘাতীয় সংখ্যার সমষ্টি হিসেবে দেখানো যায় না। সাধারণভাবে, দু’য়ের বেশি
যে কোনও ঘাতের জন্যই এই নিয়মটি সিদ্ধ। আমি তার একটা চমকপ্রদ প্রমাণ আবিষ্কার করেছি, কিন্তু মার্জিনের
এই জায়গাটুকু সেটা ধরাবার পক্ষে যথেষ্ট নয়।
ব্যস, এইটুকুই।
লেখাটা বেশ পুরোনো, অন্তত
বছর ত্রিশেক আগেকার। লেখার কালি কোথাও কোথাও একটু আবছা হয়ে এলেও পিতার হাতের লেখা
পুত্রের পরিচিত। বুঝতে অসুবিধে হয় না কোনও এক আকস্মিক আবিষ্কারের অভাবনীয় আনন্দে
স্যামুয়েলের পিতা পিয়ার ডি ফার্মা এই কথা ক’টি লিখে রেখেছেন।
![]() |
পিয়ার ডি ফার্মা |
ফার্মা
ছিলেন ফ্রান্সের বোর্দো শহরের ব্যস্ততম বুদ্ধিজীবীদের একজন। শহরের আইনব্যবস্থার
উচ্চতম স্তরে ছিল তাঁর কর্মক্ষেত্র। কিন্তু নেশা ছিল অঙ্ক। সংখ্যাতত্ত্বে ছিল
বিশেষ আকর্ষণ। কর্মব্যস্ততার স্বল্প অবসরেই তিনি আবিষ্কার করেছিলেন বহু
গুরুত্বপূর্ণ সূত্র। কিন্তু স্বভাব অগোছালো ও অন্তর্মুখী এই গণিতপ্রতিভা তাঁর
আবিষ্কারগুলির সুষ্ঠু প্রকাশনায় আদৌ যত্ন নিতেন না।
এই উপপাদ্য
আবিষ্কারের আনুমানিক সময়ের আগে ও পরে অনেক সূত্রের প্রমাণই তিনি নিজে লিখে প্রকাশ
করেননি, শুধু
পত্রে জানিয়েছিলেন তাঁর বন্ধু ও সতীর্থদের। সেগুলো ফার্মার নামে পরে প্রকাশিত
হয়েছে সেইসব অন্তরঙ্গ বন্ধুদের সততা ও সৌজন্যে। অনেক সূত্র তিনি বিনা প্রমাণেই
উল্লেখ করে গেছেন, বড়োজোর
প্রমাণের কিছু ইঙ্গিত দিয়ে গেছেন মুখে বলে অথবা পত্রে। পরে তা প্রমাণিত হয়েছে তাঁর
উত্তরসূরীদের দ্বারা।
স্যামুয়েল
ভাবলেন এই সূত্রটিও সেইরকম কোনও এক উপপাদ্য, যা আবিষ্কার করার পরে তাঁর পিতা
হেলায় সে কথা ভুলে গিয়েছিলেন। সমস্ত কাগজপত্র তন্ন তন্ন করে খুঁজেও কোথাও পাওয়া
যায়নি এই সূত্রের সেই ‘চমকপ্রদ’ প্রমাণ। ফার্মা কোথাও সেটি লিখে রাখেননি, কাউকে পত্রে
বা অন্য কোনোভাবে দিয়ে যাননি সমাধানের কোনও ইঙ্গিত। সুতরাং অঙ্কশাস্ত্রের একটি উজ্জ্বল
রত্নখন্ড হয়তো হারিয়েই গেল চিরদিনের মতো।
স্যামুয়েল
নিজে উদ্যোগী হয়ে ১৬৭০ সালে অ্যারিথমেটিকার একটা নতুন সংস্করণ প্রকাশ করেন, যাতে ঐ
অঙ্কটির নিচে তিনি নিজের পিতার এই আবিষ্কারের কথাটাও নথিবদ্ধ করেন। প্রকাশিত হল ‘ফার্মার
অন্তিম সূত্র।’ যদিও তা প্রকাশিত হল একটি ‘অনুমান’ হিসেবে, কোনও
গাণিতিক প্রমাণ ছাড়াই। তারপরের ঘটনা ইতিহাস!
উপপাদ্যটিকে
ফার্মার শেষ সূত্র বলার কারণ আর কিছুই নয়, তাঁর অনুমিত কিন্তু প্রমাণিত নয় এরকম
আর সব তত্ত্বই হয় ফার্মার জীবদ্দশাতেই অথবা তার কিছু পরেই প্রমাণিত হয়ে গেছে।
একমাত্র এইটি ছাড়া। কেটে গেছে দশকের পর দশক, দশক পেরিয়ে শতক। প্রজন্ম পরম্পরায়
গণিতবিদেরা এই সূত্র নিয়ে গবেষণা করে গেছেন। তাদের মধ্যে ছিল অয়লার ও লিজেন্ডারের
মতো কিছু নাম, যাঁদের
মেধা ও গণিতপ্রতিভা কিংবদন্তী হয়ে আছে। বহু গুণীজন এর প্রমাণে কিছুদূর অগ্রসর
হয়েছেন। একে একে ৩, ৪, ৫, ৭... এইভাবে
১৪ সূচক পর্যন্ত এটি প্রমাণিত হয়ে গেল। প্রমাণ করা গেল সব অযুগ্ম মৌলিক সংখ্যার
জন্যেও। এই চলার পথে ঘটনাচক্রে আবিষ্কৃত হয়ে গেল অন্য অনেক গভীর ও কূটতত্ত্ব।
সাধারণভাবে (সকল পূর্ণসংখ্যার জন্য) ফার্মার শেষ থিওরেম কিন্তু রয়ে গেল অধরা।
ফার্মার দেহান্তের পরে দীর্ঘ তিনশ আটান্ন বছর এই উপপাদ্যটি ছিল অপ্রমাণিত!
সবাই জেনে
গিয়েছিল, ফার্মার
শেষ থিওরেম প্রমাণ করা যায় না। অথচ এর কোনও ব্যতিক্রমও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই
দীর্ঘ সময়ে একে মিথ্যা প্রমাণ করার চেষ্টাও বন্ধ ছিল না। উঁহু, তাও সম্ভব
হয়নি। কেউ দুই-এর বেশি এমন কোনও সূচক আবিষ্কার করতে পারেননি, যার জন্য
ফার্মার দেওয়া বিবৃতিটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। অবশেষে বিংশ শতাব্দীর গোড়ায় ‘বিশ্বের কঠিনতম
সমস্যা’ বলে গিনেস বিশ্বরেকর্ড পুস্তিকায় স্থান করে নিয়েছিল ফার্মার শেষ থিওরেম।
অথচ
সংখ্যাতত্ত্বের এই আশ্চর্য ধর্মটি অনুমানের পরেও ফার্মা আরও বহু তত্ত্ব নিয়ে
নাড়াচাড়া করেছেন। কিন্তু উচ্ছ্বাস দূরে থাক, এই সূত্র নিয়ে তাঁকে আর কোনও
উচ্চবাচ্য করতেও দেখা যায়নি। আমরা যদি অ্যারিথমেটিকায় ঐ ছোট্ট নোটের সময়কে এর
উৎপত্তি ধরে নিই, তাহলে
তার পরেও প্রায় ত্রিশ বছর ফার্মা জীবিত ছিলেন। এই দীর্ঘ সময়ে তিনি কি তাঁর
প্রমাণকে প্রকাশ করার অবকাশ পাননি? এমন চমকপ্রদ একটি তথ্য ত্রিশ বছরে
তিনি প্রতিষ্ঠিত করতে বিস্মৃত হবেন? একি শুধুই অমনোযোগ, উপেক্ষা, অবহেলা?
মনে হয় না।
তাহলে আর একটাই সম্ভাবনা হতে পারে। প্রমাণটি তিনি করতে পারেননি। যদিও আবিষ্কারের
উত্তেজনায় তিনি ভেবেছিলেন এটা সিদ্ধ, পরে নিশ্চয়ই সে পদ্ধতিতে কোনও ত্রুটি
পেয়েছিলেন। হয়তো সে ত্রুটি দূর করতে তিনি প্রয়াস করে গেছেন, কিন্তু
জীবদ্দশায় সফল হননি। তাই বিরক্তি বা হতাশায় আর এ নিয়ে দ্বিরুক্তি করেননি। এ ঘটনা
পরে অন্যান্যদের সঙ্গেও কয়েকবার হয়েছে, যখন কেউ ভেবেছেন যে তিনি সূত্রটি
প্রমাণ করতে সফল হয়েছেন। অল্প পরেই কিন্তু সমাধানের গলদটি আবিষ্কৃত হয়েছে।
সাড়ে তিন
শতক ধরে এক অমীমাংসিত গাণিতিক ধন্দ হয়েই রয়ে গিয়েছিল ফার্মার অন্তিম সূত্র।
গত শতাব্দীর
ষাটের দশকে সবাই যখন ধরেই নিয়েছে এ সমস্যার কোনও সমাধান নেই, ব্রিটেনে
অ্যান্ড্রু ওয়াইলস নামে এক দশম বর্ষীয় বালকের নজর পড়ে এই সূত্রটির প্রতি। দশ বছরেই
অঙ্কের ধাঁধাঁ-হেঁয়ালি সমাধান করতে অ্যান্ড্রু দারুণ আনন্দ পায়। একদিন মিল্টন
রোডের স্থানীয় লাইব্রেরিতে সে ই. টি. বেল রচিত ‘দ্য লাস্ট প্রবলেম’ বইটা হাতে পায়, যার মধ্যে
ফার্মার সূত্রটা ছিল। স্বভাবতই তা ছিল সমাধানরহিত। অ্যান্ড্রু পিথাগোরাসের সূত্র
পড়েছে, যা
কিনা ফার্মার সূত্রের দ্বিঘাতীয় রূপ। পিথাগোরাসের সূত্রে ভুল নেই। কিন্তু ঘাত দু’এর
বেশি হলে আর সমীকরণটা সিদ্ধ নয়, এটাই ফার্মার ‘অনুমান’। তার
মাথায় সমস্যাটা বসে গেল।
পরে যখন
কেমব্রিজে গবেষণা করতে ঢুকেছেন অ্যান্ড্রু, ততদিনে তিনি জেনে গেছেন ফার্মার
অন্তিম তত্ত্বের ইতিহাস। এক অজানা রোমান্টিসিজম তাঁকে পেয়ে বসল। তিনি মনস্থ করে
নিলেন, এর
সমাধান করতে হবে। ঘটনাচক্রে তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল ইলিপ্টিক কার্ভ সম্বন্ধীয়, যা
কাকতালীয়বৎ তাঁকে দেখিয়ে দেয় ফার্মার সূত্র সমাধানের এ যাবৎ অনাবিষ্কৃত একটা পথ।
পি-এইচ-ডি
সম্পূর্ণ করে ডক্টর অ্যান্ড্রু ওয়াইলস অধ্যাপকরূপে যুক্ত হলেন নিউ জার্সির
প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাঁর সমস্ত মস্তিস্ক জুড়ে তখন বিরাজ করছেন ফার্মা।
প্রোফেসর ওয়াইলস স্বভাবত স্বল্পবাক, অমিশুক। আশির দশকের শেষভাগে এসে
নিজেকে যেন আরও গুটিয়ে নিলেন। আরও অন্তর্মুখী, নিজের চিন্তায় মগ্ন, বিশেষ
বাইরেও বেরোন না। কয়েকটা বিচ্ছিন্ন তত্ত্বের মডিউল তাঁর অবচেতনায় অহরহ বলছে, এইগুলোতেই
আছে রহস্যের চাবিকাঠি। কিন্তু সেই টুকরোগুলোকে কিছুতেই জোড়া লাগানো যাচ্ছে না।
চলতে থাকে তীব্র মনন,
অনিঃশেষ গণনা। হাজারো গণিততত্ত্বের উষর মরুপথে তাঁর এককযাত্রা। সে যাত্রা কোনও
পরিষ্কার করে বিছানো সুঠাম রাজপথে নয়, জটিল তত্ত্বরাজির ধূসর কুয়াশাঢাকা এক
অজানার উজানে।
কখনো একা
বেরিয়ে পড়েন হাঁটতে। শান্ত বহিরাকৃতিতে বোঝার উপায় নেই অন্তরে তাঁর কী উথালপাথাল
চলছে। ক্যাম নদীর ধারে পায়চারি করতে করতে হঠাৎ মাথায় এল একটা নতুন চিন্তার মোড়।
আবার ফিরে গেলেন নিজের স্টাডির ছোট্ট চৌহদ্দির মধ্যে। এইভাবে চলতে চলতে অবশেষে এল
সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত। উনিশশো তিরানব্বই সালের তেইশে জুন!
সে এক
ঐতিহাসিক ঘটনা। কেমব্রিজের নিউটন ইনস্টিট্যুটের হলে সেদিন দু’শো লোকে ঠাসাঠাসি। সবাই
অঙ্কের মস্ত লোক সব। অ্যান্ড্রু ওয়াইলস এসে ঘোষণা করলেন, ইয়েস আই’ভ ডান
ইট!
পরবর্তী দু’ঘন্টায়
প্রোফেসর ওয়াইল্স ব্যক্ত করলেন গণিতশাস্ত্রের সেই অজানা রহস্য — শতাব্দী প্রাচীন ফার্মার
অন্তিম সূত্রের একটি আশ্চর্য সমাধান! পিনপতন নিস্তব্ধতার মাঝে বিদগ্ধ গণিতমণ্ডলী প্রত্যক্ষ
করলেন এক দুরূহ গণিততত্ত্বের সেই অভিরূপ উন্মোচন। বক্তৃতার শেষে অকৃত্রিম বিস্ময়ের
করতালিতে গুঞ্জরিত হল ঐতিহাসিক সভাকক্ষ।
![]() |
প্রোফেসর অ্যান্ড্রু ওয়াইলস |
কিন্তু
আবিষ্কারের আনন্দে ওয়াইলসও বোধহয় একটু তাড়াহুড়ো করে ফেলেছিলেন। তাঁর গবেষণাপত্রেও
রয়ে গিয়েছিল একটা ত্রুটি,
যা তাঁর দৃষ্টি এড়িয়ে গিয়েছিল। বিশেষজ্ঞের স্ক্রুটিনিতে তা ধরা পড়ে। ত্রুটি
খুব বড়ো নয়, কিন্তু
সে অল্প প্রমাদ যুক্তির একেবারে মূলে আঘাত করেছে। তাই অন্তিম সিদ্ধান্তটি আর
গ্রহণযোগ্য নয়। সাফল্যের ইমারতের চূড়া থেকে প্রোফেসর ওয়াইলস সজোরে এসে পড়লেন কঠিন
বাস্তবের ধরাতলে।
কিন্তু তীরে
এসে কি তরী ডুবতে দেওয়া যায়? তাই আবার সেই স্বেচ্ছানির্বাসন, আবার সেই
অনুধ্যান। হ্যাঁ, যুক্তিজালে
রয়ে গিয়েছিল একটা ক্ষুদ্র ছিদ্র! সেটা হয়তো সংশোধনের অতীত নয়। কিন্তু সেই সামান্য
মেরামতি করতে লেগে গেল আরও পনেরোটি মাস। সব হয়ে গিয়ে একসময়ে শুধু দুটি পদ্ধতির
প্রান্তিক সূত্রদুটো কিছুতেই এক আর করা যাচ্ছিল না। উনিশশো চুরানব্বই সালের উনিশে সেপ্টেম্বর
অকস্মাৎই মাঝের সেই সামান্য অন্তরালটি বিস্ময়করভাবে জোড়া লেগে গেল। ফার্মার সূত্র
প্রমাণের পূর্ণাঙ্গ রূপটা এবার প্রকট হল। আর একবার চমৎকৃত হলেন অ্যান্ড্রু ওয়াইলস।
অভাবনীয়ভাবে ছিন্ন যুক্তিজাল জোড়া লাগার সেই মুহূর্তটির অনুভূতি ব্যক্ত করে ওয়াইলস
পরে বলেছেন, ইট
ওয়াজ সো ইন্ডেস্ক্রাইবেবলি বিউটিফুল, সো সিম্পল অ্যান্ড সো এলিগ্যান্ট!
কিন্তু এবার
সাবধান হলেন তিনি। আর তাড়াহুড়ো নয়। শুরু থেকে আবার যাচাই করে দেখতে বসলেন, কোথাও আর
কোনও ছিদ্র থেকে গেল না তো?
কোথাও রয়ে যায়নি তো কোনও ভ্রান্ত অনুমান, কোনও সমীকরণের ত্রুটি, কোনও
অনভিপ্রেত বিক্ষেপ? বার
বার পরীক্ষা করেও দেখা গেল,
না — যুক্তিপরম্পরায় আর কোনও ভুল নেই। হ্যাঁ, বিশেষজ্ঞরাও পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই করে
এবার সবিস্ময়ে সম্মতি দিলেন — অসম্ভব অবশেষে সম্ভব হয়েছে!
সেই অক্টোবর
মাসে নিজের জন্মদিনে শ্রীমতী ওয়াইলস পেয়েছিলেন তাঁর জীবনের সেরা উপহারটি — তাঁর স্বামীর
আজীবনের সাধনালব্ধ সম্পূর্ণ পান্ডুলিপিখানা, যাতে আছে বিশ্বের কঠিনতম সমস্যার এক
অভাবনীয় সমাধান!
_____
ছবিঃ আন্তর্জাল
No comments:
Post a Comment