রাতদুপুরে হুতোমপুরে
মধুমিতা ভট্টাচার্য
হুতোমপুরে রাতদুপুরে কী কান্ড আজকাল,
পুণ্যিমা-রাত জ্যোছনামাখা শীতকুয়াশার জাল।
যখন ছড়ায় চৌদিকেতে ঠিক নাকি তক্ষুনি,
হাবু রায়ের ছাতে নাচে ভূত আর শাঁকচুন্নি!
সে এক বেজায় ভয়ের ব্যাপার কারও সাহস নেইতো
দেখবে গিয়ে চিলেকোঠায় (ভয়েতে কাঁপবেই তো)
হাবু বলে, “ওরে তোরা আমারই ছাত পেলি?
হাড় খটাখট নেত্য জুড়ে কানের মাথা খেলি!
যা না উড়ে অনেক দূরে অন্য কারও বাড়ি,
ভূতের ছানা দত্যি-দানা বুড়ো কিম্বা ধাড়ি।
রাত পোহালে পালাস কোথা? দেখতে পেলে ধরে
বুঝিয়ে দেব নাচ কারে কয়, বেঁধে টঙের ঘরে।
উলটো মাথায় ঝুলিয়ে রেখে অমাবস্যার রাতে,
গুনগুনিয়ে গান শোনাব ভাঙা কাঁসর হাতে।”
তবুও দেখে নাচ থামে না, হাবু রেগেই লাল
ডান্ডা হাতে উঠল ছাতে মধ্যরাতে কাল।
আকাশ থেকে ঝরছে তখন চাঁদনি ঝুরঝুরিয়ে,
টাকের ওপর উড়ছিল চুল হাওয়ায় সুরসুরিয়ে।
চাঁদের আলোয় দেখল হাবু ঘুমচোখে আবছাতে,
ছায়ার মতো দাঁড়িয়ে কে ঐ রেলিঙের পাশটাতে!
গাইছে ভজন নাকের সুরে মাথাটা ঝুঁকিয়ে,
চমক লেগে হাবুর গলা কাঠ হল শুকিয়ে।
কেঁপেকুপে বলল শেষে, “ওখানে ও কে গো?
এমনধারা ভয় দেখালে মরব আমি হায় গো!
আমার ছাতে কেন বাপু? দোষ করেছি কিছু?
যাও না তুমি সগ্গে চলে, ছেড়ে আমার পিছু।”
সেই না শুনে বললে ছায়া, “ও মা, বলিস কী রে!
চিনতে আমায় পারলিনে তুই এতদিনের পরে?
এই চেয়ে দেখ ভালো করে, তোরই বিন্তিপিসি
দাঁড়িয়ে আছি সামনে শুধু নাকে একটিপ নস্যি
নিয়েছিলাম, তাই বেরোল তানগুলো নাক কাঁপিয়ে
উহ্ বাবা গো, বকতে বকতে দেখ তো গেলুম হাঁপিয়ে!
শোন এবারে এসেছিলাম কেনইবা এই ছাতে,
ভূত ভেবে তুই ধরলি কাকে বেকার হাতেনাতে!
বাদলা দিনে রোদ কোথা পাই শুকোয় না তো বড়ি,
চাঁদের রোদে তাই মেলে দিই আমার বড়ির ঝুড়ি।
সেই ফাঁকেতে ধিনতাধিনা ঝুমুর নাচি তালে,
এবং সাথে দু-এক কলি গিটকিরি গাই বলে,
ভাবিস কি তুই ভূতপেতনি নাচ করে রোজ ছাতে?
বুক ঢিপঢিপ দেখতে এলি তাই কি মধ্যরাতে!
হায় কী কপাল, জ্যান্ত আমায় বানিয়ে দিলি ভূত,
মাথায় কী রে? ঘাস বিচালি? কিম্বা গোবর? ধুত!”
অবাক হাবু বলে, “পিসি, চাঁদনি রোদে তুমি
বড়ি শুকোও! কান্ড সে কী! এমন তো শুনিনি!
ঢের হয়েছে, এবার চলো, থাকুক পড়ে বড়ি
বুঝে গেলাম আজই, আমি নেহাতই আনাড়ি।
ভূতেরা সব থাকুক দূরে পিসি তুমিই ব্রাইট,
এবার চল ঘুম পেয়েছে, গুড নাইট... গুড নাইট।
পুণ্যিমা-রাত জ্যোছনামাখা শীতকুয়াশার জাল।
যখন ছড়ায় চৌদিকেতে ঠিক নাকি তক্ষুনি,
হাবু রায়ের ছাতে নাচে ভূত আর শাঁকচুন্নি!
সে এক বেজায় ভয়ের ব্যাপার কারও সাহস নেইতো
দেখবে গিয়ে চিলেকোঠায় (ভয়েতে কাঁপবেই তো)
হাবু বলে, “ওরে তোরা আমারই ছাত পেলি?
হাড় খটাখট নেত্য জুড়ে কানের মাথা খেলি!
যা না উড়ে অনেক দূরে অন্য কারও বাড়ি,
ভূতের ছানা দত্যি-দানা বুড়ো কিম্বা ধাড়ি।
রাত পোহালে পালাস কোথা? দেখতে পেলে ধরে
বুঝিয়ে দেব নাচ কারে কয়, বেঁধে টঙের ঘরে।
উলটো মাথায় ঝুলিয়ে রেখে অমাবস্যার রাতে,
গুনগুনিয়ে গান শোনাব ভাঙা কাঁসর হাতে।”
তবুও দেখে নাচ থামে না, হাবু রেগেই লাল
ডান্ডা হাতে উঠল ছাতে মধ্যরাতে কাল।
আকাশ থেকে ঝরছে তখন চাঁদনি ঝুরঝুরিয়ে,
টাকের ওপর উড়ছিল চুল হাওয়ায় সুরসুরিয়ে।
চাঁদের আলোয় দেখল হাবু ঘুমচোখে আবছাতে,
ছায়ার মতো দাঁড়িয়ে কে ঐ রেলিঙের পাশটাতে!
গাইছে ভজন নাকের সুরে মাথাটা ঝুঁকিয়ে,
চমক লেগে হাবুর গলা কাঠ হল শুকিয়ে।
কেঁপেকুপে বলল শেষে, “ওখানে ও কে গো?
এমনধারা ভয় দেখালে মরব আমি হায় গো!
আমার ছাতে কেন বাপু? দোষ করেছি কিছু?
যাও না তুমি সগ্গে চলে, ছেড়ে আমার পিছু।”
সেই না শুনে বললে ছায়া, “ও মা, বলিস কী রে!
চিনতে আমায় পারলিনে তুই এতদিনের পরে?
এই চেয়ে দেখ ভালো করে, তোরই বিন্তিপিসি
দাঁড়িয়ে আছি সামনে শুধু নাকে একটিপ নস্যি
নিয়েছিলাম, তাই বেরোল তানগুলো নাক কাঁপিয়ে
উহ্ বাবা গো, বকতে বকতে দেখ তো গেলুম হাঁপিয়ে!
শোন এবারে এসেছিলাম কেনইবা এই ছাতে,
ভূত ভেবে তুই ধরলি কাকে বেকার হাতেনাতে!
বাদলা দিনে রোদ কোথা পাই শুকোয় না তো বড়ি,
চাঁদের রোদে তাই মেলে দিই আমার বড়ির ঝুড়ি।
সেই ফাঁকেতে ধিনতাধিনা ঝুমুর নাচি তালে,
এবং সাথে দু-এক কলি গিটকিরি গাই বলে,
ভাবিস কি তুই ভূতপেতনি নাচ করে রোজ ছাতে?
বুক ঢিপঢিপ দেখতে এলি তাই কি মধ্যরাতে!
হায় কী কপাল, জ্যান্ত আমায় বানিয়ে দিলি ভূত,
মাথায় কী রে? ঘাস বিচালি? কিম্বা গোবর? ধুত!”
অবাক হাবু বলে, “পিসি, চাঁদনি রোদে তুমি
বড়ি শুকোও! কান্ড সে কী! এমন তো শুনিনি!
ঢের হয়েছে, এবার চলো, থাকুক পড়ে বড়ি
বুঝে গেলাম আজই, আমি নেহাতই আনাড়ি।
ভূতেরা সব থাকুক দূরে পিসি তুমিই ব্রাইট,
এবার চল ঘুম পেয়েছে, গুড নাইট... গুড নাইট।
_____
অলঙ্করণঃ নচিকেতা মাহাত
ম্যাজিক ল্যাম্পের আরও শ্রীবৃদ্ধি হোক দিনেদিনে। নচিকেতা মাহাতকে আন্তরিক ধন্যবাদ এমন সুন্দর ছবির জন্যে।
ReplyDelete