ছড়া-কবিতা:: গুপ্ত যে ধন - মৃণাল বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়


  গুপ্ত যে ধন
মৃণাল বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়

গতকাল রাত্রে কাঁপুনি দিয়ে গাত্রে দেখিনু ভীষণ স্বপ্ন এক,
বাড়ির পেছনেই বাগানে মাটি খুঁড়লে সেখানে গিয়ে দেখ -
আছে রাশি রাশি স্বর্ণমুদ্রা,জেনে ছুটল মোর নিদ‍্রা ভোর রাতে -
দরজা খুলে একছুটে গেলাম সবার অলক্ষেতে কোদাল নিয়ে হাতে।
খুঁড়তে খুঁড়তে হল সকাল, হায়রে পোড়া কপাল - এ যে ছেঁড়া খাতা!!
স্বর্ণমুদ্রা কোথায়? কিছু হিজিবিজি লেখা সেথায়, বোঝে কার মাথা।
সেই খাতাই বগলে চেপে ফিরে এলাম পা টিপে পাছে কেউ টের পায়,
কিন্তু গুচ্ছের আঁকিবুকি এই গবেট মাথায় কিছুই যে ঢুকছে না হায়।
দিন যায় মাস ফুরায়, উধাও হল সব চুল মাথায়, সবার লাগে সন্দ,
কিছু তো একটা ঘটেছে, চুল তাই দ্রুত উঠেছে, কিন্তু কীসের এত ধন্দ?
জিজ্ঞাসে জনে জনে, কী খুঁজিস একা একা গোপনে, চোর চোর হাবভাব?
চোখ দুটো ঘোলাটে, চেহারা পুরো বোম্বেটে, আগে তো ছিল না এহেন স্বভাব।
যত বলি হয়নি কিছু, তাও ঘোরে পিছু পিছু গন্ধ শুঁকে শুঁকে,
কী করে বলি সবে, গুপ্তধন হয়তো হবে বাগানের কোনো গাছের ফাঁকে।
কিন্তু না বললে কী হয়, এ খোঁজা একার কম্ম নয়, তাই বাধ‍্য হই দেখাতে
পেয়েছি এক গুপ্তধন, আছে নাকি সন্ধান এই খাতার হিজিবিজি লেখাতে।
সবে পড়ল হুমড়িয়ে, খাতা বুঝি গেলই ছিঁড়ে সবার টানাটানির চোটে,
কিন্তু এসব কি নকশা না আঁকিবুকি? সবে মিলে নখ দিয়ে খোঁটে।
হঠাৎ করে পাঁচ বছরের বিকি দিয়ে উঁকিঝুঁকি অবাক হয়ে বলে, “ও মা!!
এ তো আমারই হাতের লেখা, প্রথম তোমার কাছে শেখা, ভুলে গেছ মামা?
তুমি রাগের চোটে দিয়েছিলে মাটিতে পুঁতে বাগানে আম গাছটার নীচে!”
বাড়ি শুদ্ধ সবাই হল বোকা, এ এক চরম ধোঁকা, মিছেই গুপ্তধনের পিছে।
----------
ছবি - আন্তর্জাল

No comments:

Post a Comment