টম ব্রাউনের
শেষ
ডায়রি
কৌশানী
মিত্র
উডস্টক ছোট্ট
শহর।
শহরের
ওল্ড
কান্ট্রি
কোর্ট
হাউস
লোকালয়ের
শেষ
নিশানা।
তারপরেই
শুরু
হয়েছে
ওক
গাছের
জঙ্গল।
বিশাল
সেই
ওক
গাছের
সারি
অন্ধকার
আরও
গাঢ়
করেছে।
জঙ্গলের
মধ্যে
হাতে
গোনা
কিছু
বাংলো, সেখানে
মূলত
বয়স্কদের
বাস।
জঙ্গল
ভেদ
করে
চওড়া
রাস্তা
চলে
গেছে
শেষপ্রান্তে, লেকের
ধার
অবধি।
এখানে
শীতকালে
খুব
বরফ
পরে।
ঈস্টার
আর
ক্রিসমাস
ইভে
শহর
যখন
ঝলমলিয়ে
ওঠে, তখনও
ওক
গাছের
জঙ্গল
ঢেকে
থাকে
অন্ধকারে।
তারপর
আসে
গ্রীষ্ম, ‘সামার
ক্যাম্প’-এর
দৌলতে
কিছু
স্কুলবাস
এসে
দাঁড়ায়
এখানে।
নেচার
ক্যাম্প
থেকে
সায়েন্স
ক্যাম্প, ছাত্রদের
হইচই
চিৎকারে
মুখরিত
হয়ে
ওঠে
জঙ্গল।
তখন
বয়স্করাও
তাদের
সুদৃশ্য
বাংলো
বাড়ি
থেকে
বেরিয়ে
পড়ে, লেকের
ধারে
গিয়ে
বসে, ফিসিং
কিংবা
ডে
আউটের
অছিলায়
ব্যাস্ত
রাখে
নিজেদের
অবসর
জীবন।
১২ অক্টোবর, ১৯৮০, উডস্টক, ইলিনয়
সেদিন ছিল অক্টোবরের
রাত।
স্বভাবসিদ্ধ
স্তব্ধতা
দানা
বেঁধেছিল
জঙ্গলে।
মেঘের
মাঝে
উঁকি
মারছিল
চাঁদ।
রাস্তা
নিঝুম।
কেউ
কোথাও
নেই।
দূরের
কিছু
বাড়ি
থেকে
ভেসে
আসছে
হালকা
গানের
সুর।
শহরের
মাঝে
ক্লক
টাওয়ারে
ঢং
ঢং
করে
ন’টা
বাজল।
জঙ্গলের
মধ্যে
কয়েক
পাক
ঘুরে
সেই
আওয়াজও
আস্তে
আস্তে
মিলিয়ে
গেল।
হঠাৎ জঙ্গলের
মাঝের
পিচঢালা
রাস্তা
দিয়ে
ছুটে
এল
একটা
গাঢ়
সবুজ
রঙের
গাড়ি।
গাড়ির
লাইটের
তীব্র আলোয় মাঝে
মাঝে
ভেসে
উঠছে
এক
বছর
তিরিশের
যুবকের
মুখ।
চোখে
দৃঢ়তা, এভাবে
দুর্বল
হলে
চলবে
না, প্রমাণ
নষ্ট
করতে
হবে।
হঠাৎ
কী
ভেবে
পিছনে
তাকাল
সে।
ঠিক
তখনই
গাড়ির
সামনে
ঝাঁপিয়ে
পড়ল
একটা
কিছু।
খানিক
দূরে
গিয়ে
হোঁচট
খেল
গাড়িটা।
রাস্তায়
পড়ে
আছে
একটা
নিথর
দেহ।
যুবক
ভয়
ভয়
দরজা
খুলে
তাকাল
সেদিকে।
ঝট করে নড়ে উঠল শরীর।
মুহূর্তে
উঠে
এসে
ঝাঁপিয়ে
পড়ল
যুবকের
ওপর।
হকি
স্টিকের
এক
আঘাতে
অজ্ঞান
হয়ে
ঢলে
পড়ল
সে।
কপালের
রক্ত
মুছে
আততায়ী
এবার
হুমড়ি
খেয়ে
পড়ল
যুবকের
অচৈতন্য
শরীরে।
পাশের
সিট
থেকে
তুলে
নিল
একটা
কারুকাজ
করা
কাঠের
বাক্স।
ছুঁড়ে
দিল
জঙ্গলে।
তারপর
টলতে
টলতে
মিলিয়ে
গেল
অন্ধকারে।
ওহেয়ার
ইন্টারন্যাশনাল
এয়ারপোর্ট, নর্থ-ওয়েস্ট
শিকাগো
চার ঘণ্টার কাছাকাছি
প্লেন
জার্নি।
বার্কলে
থেকে
শিকাগো।
জিশান
বইতে
ডুবে
আছে।
বিনু
চেয়ারে
গা
এলিয়ে
দিল।
সে
এক
মাস
আগেই
পাড়ার
জিমে
ট্রেনার
হিসেবে
জয়েন
করেছে।
তখন
কি
আর
জানত
আবার
নতুন
রহস্য
হাতছানি
দিয়ে
ডাকবে
ওদের!
বার্কলেতে
জিশানের
দু’দিনের
সেমিনার
শেষ
করে
এবার
ওরা
রওনা
দিয়েছে
সেই
রহস্যের
পথে।
আমেরিকার এই অংশে
শীত
বেশি।
কিছুদিনের
মধ্যেই
ঝুরো
বরফে
ঢেকে
যাবে
গোটা
শহর।
দূর
থেকেই
দেখতে
পেল
ওরা, লুইস
দাঁড়িয়ে
আছে।
জিশান
দৌড়ে
গিয়ে
জড়িয়ে
ধরল
ওকে।
“বুঝলি
বিনু
আমরা
পাশাপাশি
হোস্টেলে
থাকতাম।
ও
মিডিয়া
সায়েন্স
নিয়ে
এম.এ. করে ‘ওয়াশিংটন
পোষ্ট’-এ
ইন্টার্ন
জয়েন
করল।
তারপর
এই
এতদিন
বাদে
আবার
সামনাসামনি
দেখা।” লুইসের
বয়স
চল্লিশের
আশেপাশে, লম্বাটে মুখ, নাকের
কাছে
একটা
চশমা
ঝুলছে।
রোগা
লম্বা, মাথায়
কুঁচকানো
চুলের
বাহার
দেখলে
মনে
হয়
এখনও
হাইস্কুল
পেরোয়নি।
জিশানের
সঙ্গে
প্রাথমিক
আলাপ
সেরে
নিয়ে
ওরা
চড়ে
বসল
লুইসের
গাড়িতে।
শহরের
বুক
চিরে
লম্বা
রাস্তা
চলে
গেছে।
ওদের
গাড়ি
এগিয়ে
চলল।
উডস্টকের
ক্লক
টাওয়ারে
তখন
ঢং
ঢং
করে
ন’টা
বেজেছে।
১২
অক্টোবর, ২০১৪, উডস্টক, ইলিনয়
সদ্য আশি পেরোনো
মিসেস
বায়ার
নরম, স্বল্পভাষী
হিসেবে
বেশ
জনপ্রিয়।
স্বামীর
মৃত্যুর
পর
থেকে
একাই
থাকেন।
দুই
ছেলে
চাকরিসূত্রে
শিকাগোতে।
ঘড়িতে
তখন
সাড়ে
আটটা।
চিকেন
গ্রিলে
বসিয়ে
তিনি
খেয়াল
করলেন
নুন
তলানিতে।
লুকাসের
ছোট্ট
ডিপার্টমেন্টাল
স্টোর
প্রায়
বন্ধ
হয়ে
যাচ্ছিল।
ওকে
অনুরোধ
করে
এক
প্যাকেট
নুন
যখন
হাতে
পেলেন
তখন
প্রায়
বেশিরভাগ
বাড়ির
আলো
নিভে
গেছে।
উডস্টক
ছোটো
হলেও
বেশ
শান্ত
শহর।
চুরির
ভয়
নেই
এখানে।
কাজেই
নিশ্চিন্তে
বাড়ির
পথ
ধরলেন
মিসেস
বায়ার।
ওঁর
লাঠির
ঠক
ঠক
শব্দ
প্রতিধ্বনিত
হচ্ছে
জঙ্গলের
ভিতর।
সঙ্গে
মিশেছে
ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক।
এক
অদ্ভুত
আবহ, অদ্ভুত
নৈসর্গ
খেলা
করে
চলেছে
এপাশ
ওপাশ।
গাড়ির হেডলাইটের
হলুদ
আলো
আর গোঁ গোঁ
আওয়াজে
থমকে
দাঁড়ালেন
মিসেস
বায়ার।
মুহূর্তে
সাঁ
করে
একটা
গাড়ি
বেরিয়ে
গেল
পাশ
দিয়ে।
টাল
সামলাতে
না
পেড়ে
হুমড়ি
খেয়ে
রাস্তায়
পড়লেন
তিনি।
ঝাপসা
দৃষ্টিতে
দেখলেন
অন্ধকার
থেকে
একটা
জন্তু
বেরিয়ে
এসে
ছিটকে
পড়ল
গাড়ির
সামনে।
মিসেস
বায়ার
কাঁপা
কাঁপা
দুর্বল
স্বরে
আর্তনাদ
করে
উঠলেন
– “হেল্প, প্লিজ হেল্প।” খুনে
জন্তুটা
ততক্ষণে
ছেলেটার
পাশ
থেকে
কী
একটা
তুলে
নিয়ে
ছুঁড়ে
দিয়েছে
জঙ্গলে।
মিসেস
বায়ার
উঠে
দাঁড়াতে
গেলেন।
পারলেন
না।
লুইসের
বাড়ির
ড্রয়িংরুম, উডস্টক
“প্রতি বছর একই ঘটনা
রিপিট
হয়?”
“মিসেস বায়ারের খবরটা পাঁচ
বছর
আগে
আমি
আমার
পেপারে
ফ্রন্ট
স্টোরি
করেছিলাম।
কিন্তু
নিউজের
টেস্ট
বদলাতে
হয়েছিল।
আমার
নিউজের
হেডলাইন
ছিল – ‘বয়স্কদের
জন্য
উডস্টক
কী
আদৌ
সেফ’?”
“কেন?”
“কারণ, নো প্রুফ।
মিসেস
বায়ারের
মুখের
কথা
ছাড়া
আর
কোনো
প্রমাণই
নেই
গোটা
ঘটনার।
কিন্তু
উনি
রাস্তায়
অজ্ঞান
হয়ে
পড়েছিলেন
সেটা
সত্যি।
আর…
আর
ওনার
কথার
মধ্যে
এমন
একটা
ব্যাপার
ছিল,
জাস্ট
ভাবতে
পারবি
না
জিশান।
প্রায়
পাঁচ
বছর
হয়ে
গেছে
এই
ঘটনার।
তারপরেও
এক-দুজন
এই
একই
ঘটনার
সাক্ষী
হয়েছেন…”
লুইসের কথার
মাঝেই
বিনু
কথা
বলে
উঠল,
“মিসেস
বায়ার
এখন
কোথায়?”
“প্রাথমিক
তদন্ত
শেষ
হতেই
শিকাগোতে
ওনার
ছেলের
কাছে
চলে
যান।
ওখানেই
শেষ নিঃশ্বাস
ত্যাগ
করেন।
মারা
যাওয়ার
আগে
অবধি
উনি
বলে
গেছেন - যা
দেখেছেন
তা
নাকি
হ্যালুসিনেশান
নয়,
সব
সত্যি!”
বিনু একটা
কোকের
ক্যান
নিয়ে
বারান্দায়
দাঁড়িয়েছিল, হাসল,
“মানে
উডস্টকের
জঙ্গলে
ভূত?”
“পজিটিভলি ভূত, শুধু
এর
পিছনের
বিজ্ঞানটা
আমাদের
খুঁজে
বার
করতে
হবে।
আজ
ঘুমিয়ে
পড়
বিনু।
কাল
তোর
অনেক
কাজ।”
হতবাক হয়ে বিনু
দেখল
তার
দাদা
নিজের
ঘরের
দিকে
পা
বাড়িয়েছে, হাতে
দুলছে
একটা
বই – ‘উডস্টক: দ্য
ওরাল
হিস্ট্রি’।
পরের
দিন
বাইরে বেশ শীত।
একটা
মোটা
জ্যাকেট
গায়ে
চাপিয়ে
কুয়াশামাখা
ভোরে
রাস্তায়
নামল
বিনু।
যদিও
আমেরিকানরা
আর্লি
রাইজার,
কিন্তু
ভোর
সাড়ে
চারটের
সময়
একটাও
লোক
নেই
বাইরে।
বিনু
একবার
ভাবল
ওল্ড
কোর্টের
দিকে
দৌড়বে।
কিন্তু
শেষে
জঙ্গলের
দিকেই
পা
বাড়াল
সে।
ঘন
কালো
পিচের
রাস্তা
ধরে
ছুটে
চলেছে
বিনু।
শীতের
খোলস
ছেড়ে
শরীরে
গরম
বাড়ছে।
এদিক
ওদিক
কিছু
সুদৃশ্য
বাংলো
বাড়ি
চোখে
পড়ছে।
কতক্ষণ
দৌড়েছে
মনে
নেই
বিনুর, হঠাৎ
থমকে
দাঁড়াল।
আরে, শহর
থেকে
এতদূরে
সিমেট্রি! পায়ে
পায়ে
এগিয়ে
গেল
সেদিকে।
পাশাপাশি
চারটে
সমাধি।
সমাধির
সামনে
পাথরে
খোদাই
করে
লেখা
আছে
নাম, বয়স
এসব। ‘রেড
রোজ’ নামের
কোনো
এক
মিউজিক
গ্রুপ-এর
নাম
খোদাই
করা
আছে
সব ক’টা
পাথরে।
“হ্যালো
স্যার, হোয়া
আর
ইউ
ডুইন
হিয়া?”
আচমকা আওয়াজে
চকিতে
পিছনে
ফিরতে
গেল
বিনু।
টাল
সামলাতে
পারল
না।
খসখসে
পাতায়
পা
হড়কে
পড়ে
যেতে
যেতে
একঝলক
দেখল - একটা
মেয়ে…
ওর
থেকে
কিছু
ছোটোই
হবে… হাতে
লাল
গোলাপ…
অবাক
হয়ে
তাকিয়ে
আছে…
ভোরের
হাওয়ায়
ওর
একগুচ্ছ
সোনালি
চুল
উড়ছে।
…
এখন দুপুর
একটা, লুইস, জিশান, বিনু
তিনজনে
ঘটনাস্থলে
উপস্থিত।
দু-চারটে
গাড়ি,
কিছু
সাইকেল
যাচ্ছে
রাস্তা
দিয়ে।
যদিও
মিসেস
বায়ারের
ঘটনার
পর
এই
অঞ্চলের
কোনো
মানুষ
পারতপক্ষে
রাতে
ঘর
থেকে
বেরোয়
না।
তিনি
সেদিন
এত
ভয়ংকর
বর্ণনা
দিয়েছিলেন
যে
সমস্ত
শহর
মেনে
নিয়েছিল, এই
অঞ্চলে
ভূত
আছে।
জিশান ক্যামেরা
বার
করেছে, নানা
জায়গা
থেকে
ঘটনাস্থলের
ফটো
নিচ্ছে।
বিনু
পায়ে
পায়ে
জঙ্গলের
দিকে
এগিয়ে
গেল।
বড়ো
বড়ো
ওক
গাছের
মাঝে
বেশ
অনেকটা
করে
জায়গা।
উঁচুনিচু
পাথুরে
মাটি।
আজ
ভোরেই
এই
মাটিতে
আছাড়
খেয়েছে
সে।
কনুইয়ের
কাছে
অনেকটা
কেটে
গেছে।
এরই
মধ্যে
লুইস
লোকাল
থানায়
কথা
বলে
জিশানের
সঙ্গে
অ্যাপয়েন্টমেন্ট
ঠিক
করে
দিয়েছে।
শহরের
অনেকেই
শুনেছেন
একজন
বিজ্ঞানী
এসেছেন
ইন্ডিয়া
থেকে
ভূত
তাড়াতে।
সবাই
বেশ
কৌতূহল
নিয়ে
অপেক্ষা
করছেন।
মুখ
টিপে
হাসল
লুইস, “ওদের
ধারণা
ইন্ডিয়াতে
অনেক
ভূত, তাই
তোরা
ভূত
তাড়াতে
দক্ষ।” জিশান
যেন
তখন
আলাদা
জগতে, অন্যমনস্ক
স্বরে
বলল,
“জ্যান্ত ভূতের
পান্তছানা… আজ
বারোই
অক্টোবর
না?”
১২
অক্টোবর, ২০১৯, রাত
ন’টা, উডস্টক
মাঝে কয়েক ঘণ্টা
কেটেছে, বিনু
আর
লুইসকে
বাড়ি
পাঠিয়ে
জিশান
গেছিল
পুলিশ
স্টেশান।
সেখান
থেকে
উডস্টক
টাউন
লাইব্রেরি।
বিকেলের
দিকে
লুইসের
বাড়িতে
এল
মিলি।
মিলি
ব্রাউন।
ভোরের
সেই
সোনালি
চুল
মেয়েটি।
ওর
গ্র্যান্ডপা
টম
ব্রাউনের
সমাধিতে
গোলাপ
ফুল
দিতে
গেছিল।
এখন
এসেছে
জিশানের
নিমন্ত্রণে।
বিনু
একটু
কিন্তু
কিন্তু
করছিল
যদিও।
মিলি
বাচ্চা
মেয়ে, ওকে
সঙ্গে
নেওয়াটা
কী
ঠিক? জিশান
জানিয়েছে
কোনো
ভয়
নেই।
মিলি
থাকুক।
ন’টা বাজতে
আর
ঠিক
পাঁচ মিনিট
বাকি।
ওরা
চারজনেই
ঘটনাস্থলে
পৌঁছে
গেছে।
চারিদিক
ঘুটঘুটে
অন্ধকার।
চাঁদের
নরম
আলো
ছড়িয়ে
আছে
রাস্তায়।
পরিষ্কার
আকাশে
তারাও
দেখা
যাচ্ছে
অল্প।
কিছু
বাংলোতে
নিভু
নিভু
আলো।
এইসময় ক্লক
টাওয়ারে
ঢং
ঢং
করে
ন’টা
বাজল।
সঙ্গে
সঙ্গে
আকাশ
মেঘলা
করে
এল, চাঁদ
ঢেকে
গেল
মেঘের
আড়ালে।
হঠাৎ
আলোর
ঝলক।
তীব্র
বেগে
এগিয়ে
আসছে
সেই
ঘন
সবুজ
চারচাকা।
একটা
লোক
ছুটে
এসে
আছড়ে
পড়ল
গাড়ির
সামনে।
ঘটনার
আকস্মিকতা
এমন
যে
বিনু
পর্যন্ত
দাদার
হাত
ধরে
টেনে
সরিয়ে
আনল।
কিন্তু
জিশানকে
তখন
যেন
ভূতে
ভর
করেছে, হাত
ছাড়িয়ে
দৌড়ে
গেল
গাড়ির
দিকে।
দাদাকে
আটকাতে
গিয়ে
বিনু
দেখল
খুনে
জন্তুটা
বিনুকে
লক্ষ
করে
কী
যেন
একটা
ছুঁড়ে
দিচ্ছে।
১৩ই
অক্টোবর, ২০১৯, উডস্টক, ইলিনয়
“আজ আপনাদের যা বলব তার কিছুটা
আপনাদের
জানা,
অনেকটাই
অজানা।
শুরু
করি
ইতিহাস
দিয়ে।
১৯৬৯
সালে
শুরু
হওয়া
একটা
ছোট্ট
মিউজিক
ফেস্টিভ্যাল
হঠাৎ
বিখ্যাত
হয়ে
ওঠে
সারা
বিশ্বে।
উডস্টক
মিউজিক
ফেস্টিভ্যালে
আসতে
থাকে
নানান
দেশের
গানপাগল
ছেলের
দল।
আমাদের
ঘটনার
শুরু
তার
ঠিক
দু’বছর
পর, সাল
১৯৭১, নিউ
ইয়র্ক
থেকে
পাঁচ বন্ধু
আসে
এখানে, চোখে
স্বপ্ন
গান
বেঁধে
বিখ্যাত
হবে।
নাথায়েল, টম, জোনাথন, অলিভার
আর
জে।”
শ্রোতাদের মধ্যে
থেকে
ভেসে
এল
চাপা
গুঞ্জন।
জিশান হাসে,
“হ্যাঁ,
আপনারা
সবাই
গল্পটা
জানেন।
ফেমাস
ব্যান্ড
আর
তৈরি
হল
না, উলটে
বন্ধুত্বে
ইতি
পড়ে
নাথায়েল
আর
অলিভারের
রহস্যজনক
খুনের
ঘটনায়।
ওদের
মৃতদেহ
পাওয়া
যায়
শহর
থেকে
দূরে
জঙ্গলে।
আজ
থেকে
প্রায়
পঞ্চাশ
বছর
আগে
সেখানে
কোনো
বাড়িঘরের
অস্তিত্বই
ছিল
না।
সরকারি
রেকর্ড
অনুসারে
টমকেই
খুনী
সাব্যস্ত
করা
হয়।
ঠিক
এক বছরের
মাথায়
টম
জেলের
ভিতর
সুইসাইড
করে।
লাগাতার
মৃত্যুতে
সকলেই
ভুলে
যায়
আর
এক
ব্যান্ড
মেম্বার
জে-এর
কথা।
সাতকুলে
কেউ
না
থাকা
জে
কিন্তু
আর
নিউ
ইয়র্ক
ফিরে
যায়নি।
টমের
মৃত্যুর
পর
পরই
কোথায়
যেন
মিলিয়ে
গেছিল
সে।”
লুইস বলল,
“ওনার
আর
কোনো
খোঁজ
পাওয়া
যায়নি।
অনেকের
ধারণা
বন্ধুমৃত্যুতে
ঘোর
আঘাত
পান
তিনি, প্রায়
পাগলের
মতো
হয়ে
গেছিলেন
শেষ
জীবনে।”
জিশান বলল,
“টমের
মৃত্যুতে
তার
আত্মগ্লানি
বেড়ে
গেছিল।
রীতিমতো
মানসিক
যন্ত্রণায়
থাকা
জে-র
কাছে
তখন
এক
অদ্ভুত
অফার
আসে
বন্ধুস্থানীয়
বিজ্ঞানী
রিচার্ডসনের।”
“কোয়ান্টাম মেকানিক্সের
প্রফেসর
লেট
আর
রিচার্ডসন?”
শ্রোতাদের
মধ্যে
থেকেই
একজন
বলে
উঠলেন।
“ঠিক তাই।
কলেজে
পড়ানোর
সঙ্গে
গোপনে
তিনি
শুরু
করেছেন
টাইম
মেশিন
ডেভেলপের
কাজ।
অনেক
উপরোধ
অনুরোধের
পর
১৯৯৮
সালে, জে
রাজি
হল
তার
বন্ধুর
আবিষ্কারের
প্রথম
গিনিপিগ
হতে, ওর
মানসিক
যন্ত্রণা
তখন
চরমে।
টাইম
ট্রাভেল
করে
ফিরে
যেতে
চায়
কুড়ি
বছর
আগের
উডস্টকে।
শুধরাতে
চায়
ফেলে
আসা
ভুল, তার
লক্ষ্য
আসল
ঘটনার
প্রমাণ
জোগাড়
করা।
সফল
হল
জে।
নিজের
মাথায়
আঘাত
করে
প্রমাণ
হাত
করে
নিল
সহজেই।”
বিনু উত্তেজনায়
চিৎকার
করে
উঠল,
“ঐ
লোকটা
জে
নিজেই
ছিল?”
“হ্যাঁ, শুধু
মাঝে
কয়েক
বছরের
গ্যাপ।
কিন্তু
প্ল্যানে
একটা
ছোট্ট
ভুল
থেকে
গেছিল।
তীব্র
বেগে
আসা
গাড়ির
সামনে
ধাক্কা
খেয়ে
সেদিন
গুরুতর
আহত
হয়
সে।
প্রেজেন্ট
টাইমলাইনে
ফেরার
আগে
জঙ্গলেই
মৃত্যু
হয়
তার।”
“কিন্তু ওর ডেডবডি
তো…”
লুইস ঢোঁক
গিলল।
“ও তো ট্র্যাডিশনাল
টাইম
লাইনে
ছিল
না
তখন
লুইস, অন্য
এক প্যারালাল টাইমলাইনে আটকে
আছে
সেই
দেহ।
জে
ছিল
বুদ্ধিমান।
যেহেতু
জে
আর
বর্তমানে
ফিরতে
পারেনি
তাই
ঠিক
ওইদিন
ঐ
সময়
ঘটনাস্থলে
একই
ঘটনা
রিপিট
হতে
দেখি
আমরা।
টাইম
ট্রাভেলের
সব
থেকে
ভয়ানক
ঘটনা
হল
এই
টাইম
লুপ।”
উডস্টক টাউন
হলে
প্রায়
কুড়িজন
লোক
জড়ো
হয়ে
এতক্ষণ
হাঁ
করে
শুনছিল
বাঙালি
বিজ্ঞানীর
কথা, এবার
একজন
প্রশ্ন
করল,
“কী
প্রমাণ
জোগাড়
করতে
এসেছিল
সে? ওটাও
কী
প্যারালাল
টাইমলাইনে
হারিয়ে
গেছে?”
এবার জিশান
তাকাল
অফিসারের
দিকে,
“অফিসার,
টম
কিন্তু
খুনি
ছিল
না।
সেদিন
বন্ধুদের
হাতাহাতি
চরমে
পৌঁছায়।
হাতের
কাছে
শক্ত
ধাতুর
ফুলদানি
পেয়ে
সেটা
দিয়েই
ওদের
দু’জনকে
আঘাত
করে
জে।
বন্ধুত্বের
খাতিরে
টম
সেদিন
একটা
কথাও
বলেনি, আর
সেটাই
জে-কে
আমাদের
টাইমলাইনে
ফিরিয়ে
এনেছে, বাধ্য
করেছে
প্রমাণ
রেখে
যেতে।” জিশান
অফিসারের
দিকে
এগিয়ে
ধরে
একটা
কাঠের
কারুকার্য
করা
বাক্স।
“এতে কিছু
চিঠি
পাবেন
জে
এবং
রিচার্ডসনের,
আর
একটা
ডায়রি
পাবেন।
টম
ব্রাউনের
লেখা
শেষ
ডায়রি।”
মিলি হঠাৎ
কেঁদে
ফেলল,
“আমাকে
ড্যাডি
বলেছিল,
গ্র্যন্ডপা
কিলার
নয়।
গ্র্যান্ডপা
যখন
মারা
যায়
আমার
ড্যাডি
তখন
এক
বছরের
শিশু।
আমাদের
ফ্যামিলি
স্পয়েল
হয়ে
গেছিল
ঐ
ঘটনার
পর।
কেউ
মিশত
না
আমাদের
সঙ্গে।”
জিশান কাছে
ডাকল
মিলিকে,
“অফিসার,
ও
মিলি
ব্রাউন, টম
ব্রাউনের
একমাত্র
উত্তরসূরি।”
বিনু বলল,
“আচ্ছা,
তাহলে
টমের
সমাধি
ওঁর
দুই
বন্ধুর
পাশে…।”
মিলি চোখ মুছে
বলল,
“ওটা
গ্র্যান্ডপার
শেষ
ইচ্ছা
ছিল।”
“আর তুই যে বললি
টাইম
লুপ
ব্রেক
হয়ে
গেছে
সেটা
কীভাবে
বুঝলি?”
বিনু
তাকাল
জিশানের
দিকে।
“সিওর নই, তবে টাইম
ট্রাভেলের
ক্ষেত্রে
পারিপার্শ্বিক এলিমেন্ট খুব দরকারি।
একটা
কিছু
সরিয়ে
নিলে
ইকুয়েশান
মেলে
না।
সার্কেল
ব্রেক
করে…”
“আচ্ছা… আর আমরা
টমের
লেখা
ডায়রি
সমেত
বাক্সটা
ওখান
থেকে
উদ্ধার
করে
নিয়ে
এসেছি…
কাজেই…। কাল
রাতে
আমার
দিকে
জে
যখন
বাক্সটা
ছুঁড়ে
দিচ্ছিল
সত্যি
খুব
ভয়
পেয়ে
গেছিলাম।
এত
জীবন্ত
ছিল
ব্যাপারটা,”
বলল
বিনু।
বাইরে তখন সূর্যাস্ত
হচ্ছে।
শহরের
সীমান্তে
ওক
গাছের
জঙ্গল
তখন
আবার
এক
নতুন
রহস্যের
ভার
নিয়ে
গায়ে
অন্ধকারের
চাদর
জড়াতে
শুরু
করেছে।
----------
(উডস্টক
শহর, ওল্ড
কান্ট্রি
কোর্ট
হাউস, ওক
গাছের
জঙ্গল
এবং
মিউজিক
ফেস্টিভ্যাল
বাদে
বাকিটা
কাল্পনিক)
----------
ছবি –
অতনু দেব
No comments:
Post a Comment