ছড়া-কবিতা:: কুলেন বাবুর গ্রহ-ভ্রমণ - মধুমিতা ভট্টাচার্য


কুলেন বাবুর গ্রহ-ভ্রমণ
মধুমিতা ভট্টাচার্য

প্লুটো গ্রহে গিয়েছিলেন কুলেন্দ্রনাথ মিদ্যা,
গবেষণা করেন তো, তাই মগজ ভরা বিদ্যা
প্লুটোয় গিয়ে ভাঙল মোহ,
আদৌ সে নয় কোনও গ্রহ
ঠিক করলেন পৃথিবীতেই ফেরত যাবেন সিধ্ধা

টিকেট কেটে চলে গেলেন এয়ারপোর্টে সোজা,
হেলমেট-গ্লাভস-কোট-পেন্টুল-জুতো এবং মোজা
পরেই নিলেন যত্ন করে,
বেল্ট বাঁধলেন রকেট চড়ে
পাইলট তার ক্যাপ্টেন রাম-রসিক পবন ওঝা

ঘড়ির কাঁটায় উড়ল রকেট ধরাধামের দিকে,
রোজনামতায় সময়-টময় রাখলেন সব লিখে
জানবে লোকে সেসব পড়ে,
কুলেনবাবু কেমন করে
প্লুটোর থেকে বেরিয়ে এলেনগ্রহ সে নয়শিখে

প্লুটোটা তো একরত্তি, নয়তো গ্রহ মোটে,
জরুরি এই তথ্যটুকু পয়েন্ট করে নোটে
লিখলেন তাই গবেষণায়,
ভাবেন নোবেল কে আটকায়   
বিশ্বজুড়ে সবাই দেবে হাততালি একজোটে

রাস্তা ভুলে রকেট গেল পিংখাকুলাস গ্রহে,
নতুন দেশের আবিষ্কারে নামলেন সাগ্রহে
কেউ নেই তো আশেপাশে,
কনকনে শীত বোশেখ মাসে
হেঁকে বলেন,কোথায় গেলে বন্ধুরা সব ওহে!

নতুন গ্রহের ইগলু থেকে বেরিয়ে এল কত,
কিম্ভূত আর অদ্ভুত সব এলিয়েনরা যত 
তিন-পা, ছ’হাত, কপালে শিং
দুইজোড়া চোখ, রোগা টিংটিং
আদলটা ঠিক পিংপোলানের পরিবারের মতো।

পিংপোলানের চেহারাটা কুলেনবাবুই জানেন,
ল্যাবরেটরির বাক্সে তারা থাকে তো তাই চেনেন
এলিয়েনদের ডেকে বলেন,
তিনপায়ে কী করে চলেন?
ঠিক করে দিই, যান তো গিয়ে হাতুড়িটা আনেন

হাতুড়ি দিয়ে সজোরে যেই মেরেছেন এক ঘা,
অমনি চেঁচায় বাবাগো মেরে ফেললে-গা
কাঁদিস কেন কান ফাটিয়ে,
মাথার ঘিলু খুব খাটিয়ে
সারিয়ে দেব তোদের চরণ,বলেন কুলেনদা।

হঠাৎ ফেরে সম্বিৎ তাঁর কীসের ধাক্কা খেয়ে,
ঘুমের ঘোরে খাটের থেকে পড়েন ধপাস হয়ে
পিংখাকুলাস কোথায় গেল,
কোমর বুঝি ভেঙেই গেল
ফ্যালফেলিয়ে শুয়ে থাকেন আকাশ পানে চেয়ে!

কুলেনবাবুর ল্যাবরেটরি শুনছি নাকি বন্ধ,
ছাদে বসে লেখেন রাতে ভৌতিক প্রবন্ধ
ছায়ারা সব হাওয়ায় ওড়ে,
আশেপাশেই ঘোরে-ফেরে
বোতল ভরে জমান সেসব ভূতের গায়ের গন্ধ।
_____
অলঙ্করণঃ সুজাতা চ্যাটার্জী

4 comments:

  1. Replies
    1. সুজাতাকে অনেক ধন্যবাদ। এলিয়েনটা বেশ হয়েছে।

      Delete