ছড়া-কবিতা:: হরির গোয়েন্দাগিরি - মধুমিতা ভট্টাচার্য


হরির গোয়েন্দাগিরি
মধুমিতা ভট্টাচার্য

বায়োলজির ল্যাবরেটরিতে হরেক রকম বোতল শিশি
আছে নানান যন্ত্রপাতি, মেড ইন ফরেন, কিংবা দিশি
পড়ুয়া সব ল্যাবে বসে মাইক্রোস্কোপে স্লাইড দেখে
ছুরি কাঁচি স্ক্যালপেল আর বায়োলজি-বক্স পাশেই থাকে।

হঠাৎ করে, এই কিছুদিন ধরেই যেটা যাচ্ছে দেখা
চিনির জলের বোতলগুলো আপনমনেই হচ্ছে ফাঁকা
ল্যাবের দাদা রেগে বলেন, ‘ব্যাপারটা তো অতি বাজে
সল্যুশনের বোতল ফাঁকা হচ্ছে কেন বিনা কাজে!

‘বেছে বেছে চিনির জলের বোতলগুলোই হচ্ছে ফাঁকা!
অবাক কাণ্ড, চোর ধরতে গোয়েন্দাকেই হোক না ডাকা!
শুনে ক্লাসের দুষ্টু ছেলে হরি বললে, ‘আরে তাই তো
কে খেয়ে যায় চিনির জলটা, ধরার কোনো উপায় চাই তো

হিসেব কষে দেখা গেল চুরি হচ্ছে সাঁঝের পরে
সারাদিনের ক্লাসের শেষে সবাই যখন যে যার ঘরে
আতসকাচে ফিঙ্গারপ্রিন্ট খুঁজল হরি হন্যে হয়ে
ওমা! এ কী! আজব এমন কীসের চিহ্ন শিশির গায়ে!

দেখল হরি চোখ পাকিয়ে, নাক ঠেকিয়ে গন্ধ শুঁকে
টেবিল, চেয়ার ঝেড়ে এবং আলমারিটার তলায় ঝুঁকে
ল্যাবরেটরির চোর না পেয়ে, হতাশ যখন হরি বেজায়
ভাবলে জেগে দেখবে নিজেই, চিনির জল কে খেয়ে যায়?

রাতের কালো অন্ধকারে ভীষণরকম গোয়েন্দাগিরি
হুল ফোটানো মশার জ্বালা, সঙ্গে গরম, ঘামও ফিরি।
এমন সময় খুটুর খুটুর শব্দ যেন শুনল হরি
কানটি খাড়া, ভাবল মনে, ঠিক এসেছে এবার চোরই!

ফটাস করে লাইট জ্বেলে দেখল ওমা, সামনে কী এ
ছোট্ট পানা নেংটি ইঁদুর জুলজুলিয়ে দেখছে চেয়ে!
‘এই নাকি চোর, হায় রে কপাল, বায়োলজি ল্যাবরেটরির?
নেংটি পালায় এক দৌড়ে, হেসে গড়ায় গোয়েন্দা হরি।
----------
ছবি - আন্তর্জাল

No comments:

Post a Comment