গল্প:: কেলুদার কেরামতি - সায়ন্তনী পলমল ঘোষ


কেলুদার কেরামতি
সায়ন্তনী পলমল ঘোষ

বিরস মুখে নারকেল কোরা দিয়ে মাখা মুড়ি চিবোচ্ছিলেন কেলুদা মুড়ি খেতে খেতে উদাস মুখে বাইরের গেটের দিকে তাকিয়ে আছেন নাহ্, দুধওয়ালা আর কাজের মাসি ছাড়া কেউ আসেনি
কেলুদা ওরফে কালোসোনা মিত্র হলেন ‘ঈগলের চোখ’ ডিটেকটিভ এজেন্সির কর্ণধার কেলুদাকে নিয়ে আমাদের গর্বের অন্ত নেই আমাদের পাড়ার একমাত্র ডিটেকটিভ হল কেলুদা বাচ্চা বুড়ো সবার দাদা হল কেলুদা ডাক্তার, মাস্টার, অফিসার এসব তো পাড়ায় পাড়ায় ভুরি ভুরি থাকে, কিন্তু ডিটেকটিভ তো আর সব পাড়ায় থাকে না কেলুদা ছোটো থেকেই গোয়েন্দা কাহিনির ভক্ত লোম খাড়া করা রোমহর্ষক রহস্য সিরিজ পড়তে পড়তে কেলুদা যখন নিজেকে শার্লক হোমসের ভারতীয় সংস্করণ ভাবতে শুরু করেছেন ঠিক তখনই বাবার চাপে পড়ে রেলের চাকরিতে ঢুকতে বাধ্য হন সেখানে অনেক উন্নতি করলেও মনের মধ্যে স্বপ্নটাকে পুষে রেখেছিলেন কেলুদা যেই ছেলেমেয়ে দুজন চাকরি পেয়ে গেল অমনি কেলুদা চাকরি থেকে ভি আর এস নিয়ে খুলে বসলেন তাঁর স্বপ্নের ডিটেকটিভ এজেন্সি নিয়মিত শরীরচর্চা করার ফলে কেলুদাকে দেখলে কিন্তু বোঝা যায় না যে বয়স পঞ্চাশ পেরিয়ে ষাট ছুঁই ছুঁই কেলুদার সাকসেস রেটও কম নয় লাউ চুরি, আংটি হারানো, চশমা হারানো, পোষা কুকুর কিডন্যাপ এই ধরনের কেস আকছার আসে কেলুদার কাছে আর কেলুদা যথেষ্ট কৃতিত্বের সঙ্গে সেসব সমাধান করে ফেলে কেস অনুযায়ী কেলুদার ফিজও বদলাতে থাকে আংটি হারালে দুশো কিন্তু কারুর আন্টি হারালে সেটা দু-হাজার হয়ে যায়, তবে ইদানীং কেলুদার একটু মন্দা চলছে গত এক মাস যাবৎ কোনো কেস আসেনি আর এদিকে ছন্দা বৌদি মানে কেলুদার স্ত্রী কোনোদিনই কেলুদার এই চোর ছ্যাঁচড়দের পেছনে ঘোরা পছন্দ করেন না উনি হুংকার দিয়ে রেখেছেন দু-দিনের মধ্যে যদি কোনো কেসের মতো কেস না আসে তাহলে কেলুদাকে ঈগলের চোখ চিরতরে বন্ধ করে দিতে হবে, তাই কেলুদা অফিসে বসে মুড়ি খেতে খেতে চাতকের মতো চেয়ে আছেন গেটের দিকে
গেটে আওয়াজ হতেই কেলুদা উদগ্রীব হয়ে সেদিকে তাকালেন যদি মক্কেল হয় তাহলে চট করে মুড়ির ডিশটা সরাতে হবে, কিন্তু দুঃখের বিষয় হল গেট দিয়ে কোনো মক্কেল নয়, ঢুকল এ পাড়ার হেবলি এখানে হেবলি সম্পর্কে কিছু তথ্য জানিয়ে রাখা ভালো হেবলি এখন ক্লাস ইলেভেনের ছাত্রী ছোটো থেকেই ক্যারাটে, কুংফু, জুডোতে ওস্তাদ হেবলি মাঝে মাঝেই একে তাকে পিটিয়ে হাতের সুখ করে ছোটোবেলায় হেবলি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকত বলে সবাই ভাবত বোকা হ্যাবলা হবে মেয়েটা সেই থেকে নাম হয়ে গেছে হেবলি, যদিও পরে সবাইকে ভুল প্রমাণিত করেছে হেবলি, কিন্তু ওই নামখানি রয়ে গেছে সময় থাকলে হেবলি মাঝে মাঝে কেলুদাকে অ্যাসিস্ট করে হেবলিকে দেখে কেলুদার উৎসাহের বেলুন ফুট করে ফেটে গেল কেসই নেই তো অ্যাসিস্ট্যান্ট কী করবে? হন্তদন্ত হয়ে কেলুদার অফিসে ঢুকল হেবলি
“তুমি বসে বসে মুড়ি খাচ্ছ! আর এদিকে আমি তোমাকে কতবার ফোন করেছি জানো ফোনটা ধরনি কেন?
“ফোনটা চার্জে বসিয়েছি কাছে নেই রাগ করিস না মা
হেবলির রাগকে এ পাড়ার সবাই ভয় পায়
“ঠিক আছে, ঠিক আছে তাড়াতাড়ি মুড়ির ডিশ রাখো ক্লায়েন্ট আসছে এসে যদি দেখে ডিটেকটিভ চুরুট, পাইপের বদলে এত্ত বড়ো ডিশ নিয়ে মুড়ি খাচ্ছে তাহলে প্রেস্টিজ এক্কেবারে পাংচার হয়ে যাবে
কেলুদা তাড়াতাড়ি করে মুড়ির ডিশটা রেখে এসে একটা সিগারেট ধরালেন সিগারেট খেতে দেখলে ক্লায়েন্টদের কাছে একটা বেশ ফেলুদা ফেলুদা ফ্লেভার আসে বলে কেলুদার ধারণা, যদিও হেবলি বলে ফেলুদা নয় ফালুদা মনে হয়
“হ্যাঁ রে হেবলি, ক্লায়েন্ট আসছে তুই কী করে জানলি?
“আমি জানব না তো কে জানবে? আমার বন্ধুর বাবা আসবে তো আমিই তো ওদের বাড়িয়ে বাড়িয়ে আমাদের পাড়ার বিখ্যাত গোয়েন্দা কে এস মিটার সম্বন্ধে জানিয়েছি দু-দিনের মধ্যে কেস না পেলে জেঠিমা তো তোমার কেস গন্ডগোল করে দেবে
“তা যা বলেছিস
কথাবার্তার ফাঁকে গেটে আওয়াজ হতেই কেলুদা বেশ মেজাজ নিয়ে রিভলভিং চেয়ারটায় বসলেন

“মে আই কাম ইন?
“ওহ, ইয়েস প্লিজ কাম
বছর পঁয়তাল্লিশ বয়সের এক ভদ্রলোক সঙ্গে হেবলির বয়সি একটি মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে ঢুকলেন
“প্লিজ, সিট
ভদ্রলোক আর মেয়েটি চেয়ারে বসতেই কেলুদা বেশ কায়দা করে জিজ্ঞেস করলেন, “সিগারেটের ধোঁয়ায় আপনাদের প্রবলেম নেই তো? আসলে সিগারেটের ধোঁয়া যেমন ছড়িয়ে যায় তেমনি আমিও আমার বুদ্ধি, আমার মেধা সব ছড়িয়ে দিতে চাই” কেলুদা আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু হেবলির লাল চোখ দেখে থেমে গেল
আগত ভদ্রলোক নমস্কার করে বললেন, “আমার নাম সুবিনয় দত্ত আদি বাড়ি সোনাবনি গ্রামে, কর্মসূত্রে এখানে থাকি আর এ হল আমার মেয়ে পরিধি আমরা পরি বলে ডাকি হেনরিয়েটার কাছে আপনার কথা শুনে ভাবলাম আমাদের সমস্যা নিয়ে আপনার কাছেই আসি
“হেনরিয়েটা?
“আমি,” হেবলি চোখ পাকিয়ে বলল আসলে হেবলির হেবলি নামটা এত জনপ্রিয় যে তার যে একটা সুন্দর ভালো নাম আছে সেটা কারুর মনে থাকে না
“ওকে ওকে এবার আপনার সমস্যাটা বলে ফেলুন সব শোনার পর আমি ডিসাইড করব যে কেসটা নেব কি নেব না” বেশ ভারিক্কি চালে কথাটা বললেন কেলুদা
হেবলি মনে মনে ভাবল, “হাতে কেস নেই বলে হাত কামড়াচ্ছিল আর এখন কায়দা করছে!
সুবিনয়বাবু গলাটা একটু ঝেড়ে নিয়ে শুরু করলেন, “সমস্যাটা বুঝতে হলে আপনাকে একটু আমাদের পারিবারিক ইতিহাসটা জানতে হবে
“ওকে, বলুন
“আমাদের বংশের আদি নিবাস ছিল বাংলাদেশের কোনো এক গ্রামে আমাদের এক পূর্বপুরুষ শশীভূষণ দত্ত ইংরেজ আমলের মাঝের দিকে কলকাতায় এসে বিভিন্ন রকম ব্যাবসা করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করে সোনাবনি গ্রামে জমিদারি কেনেন তারপর থেকে আমাদের দত্ত পরিবারের বাস সোনাবনি গ্রামে বর্তমানে আমাদের যে বাড়ি সেটা তৈরি করেন শশীভূষণের ছেলে নবকুমার নবকুমার দুই ছেলের জন্য দুইটি আলাদা মহল তৈরি করেন, সেই থেকে নাম হয়েছে বড়ো মহল আর ছোটো মহল এবার হয়েছে কি, নবকুমারের ছোটো পুত্রবধূ ছিলেন রাধারানি রূপে-গুণে অনন্যা ছিলেন তিনি সবাই খুব মানত, সম্মান করত তাঁকে বউঠাকুরানি নামে ডাকত প্রজারা কিন্তু একদিন পুজো করার সময় কীভাবে যেন প্রদীপের আগুন লেগে ওনার শাড়ি দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে বাঁচানো যায়নি, উনি অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান খুব ভয়ানক মৃত্যু হয়েছিল ওনার ওনার শ্রাদ্ধ শান্তি মিটতেই ওনার স্বামী মনের দুঃখে পাকাপাকিভাবে কাশীবাসী হন ওঁদের কোনো সন্তান ছিল না এসব কিছুর পর ছোটো মহলে যারা থাকত তারা আর ওখানে থাকতে চাইল না ছোটো মহলের গায়ে অশুভ তকমা জুটে গেল ছোটো তরফের উত্তরাধিকারী আর কেউ ছিলও না ক্রমশ ছোটো মহল প্রায় পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রইল সম্প্রতি আমার বাবা সুকমল দত্ত একটা সিদ্ধান্ত নেন ছোটো মহলকে বিক্রি করার ছোটো মহলকে সারিয়ে নিলেই কাজ চলবে তো ব্যাপারটা হল কি, যেই আমরা এ বিষয়ে আলাপ আলোচনা শুরু করলাম অমনি রাত্রিবেলা ভূতের উপদ্রব শুরু হল
“ভূত!
“হ্যাঁ, মিস্টার মিত্র, বউঠাকুরানির ভূত
“স্ট্রেঞ্জ!
“হুম, অবাক হওয়ার বিষয়ই বটে
“কীভাবে বুঝলেন বউঠাকুরানির ভূত?
“ছোটো মহলের এখানে সেখানে আগুন জ্বলে উঠছে আরও নানারকম অস্বাভাবিক ব্যাপার কে যেন ছুটে যায় বারান্দা ধরে আসলে আপনাকে ঠিক মুখে বলে বোঝাতে পারব না সবকিছু আপনাকে নিজের চোখে দেখতে হবে এখন ভয়ে কেউ ছোটো মহলের দিকে পা বাড়ায় না
“মিস্টার দত্ত, আমি তো ভূত তাড়াবার ওঝা নই আমার কাছে কেন
“জানি মিস্টার মিত্র, আপনি ওঝা নন গোয়েন্দা, আর সেইজন্যই আমার আপনার কাছে আসা আমি হয়তো খুব একটা সাহসী নই কিন্তু আমি বাস্তববাদী ভূত এবং ভগবান কোনোটাতেই বিশ্বাস নেই আমি চাই আপনি এই রহস্যের পর্দা তুলুন প্লিজ কেসটা নিন হেনরিয়েটার কাছে আপনার অনেক প্রশংসা শুনেছি
কেলুদা কৃতজ্ঞতার দৃষ্টিতে হেবলির দিকে তাকালেন
“মিস্টার মিত্র, আপনি কেসটা নেবেন তো? সবাই একটা অশান্তির মধ্যে আছি” সুবিনয় অনুরোধ করেন
“যদিও আমি এখন একটু ব্যস্ত আছি, তাও আপনার কেসটা আমি নেব, তার কারণ হেবলি থুড়ি হেনরিয়েটা আপনাদের এনেছে ওর অনারে কেসটা আমি নিলাম
“থ্যাঙ্কু থ্যাঙ্কু আপনার রেমুনারেশনটা যদি একটু বলেন
“ওটা আমি কাজ হয়ে যাবার পর বলব
“আচ্ছা, তাহলে আপাতত এইটা রাখুন অ্যাডভান্স
দুটো দু-হাজারের নোট এগিয়ে দিলেন সুবিনয়

সুবিনয়রা চলে গেলে কেলুদা হেবলিকে বললেন, “যা তো, এই নোট দুটো তোর জেঠিমাকে দিয়ে আয়, বলবি এটা ওনলি অ্যাডভান্স আর বলে আসবি আমার ব্যাগপত্র যেন গুছিয়ে রাখে আমাকে তদন্তের কাজে বিদেশ যেতে হবে
“বিদেশ! গাড়িতে গেলে সোনাবনি যেতে মোটে এক ঘণ্টা লাগবে
“আরে সেটা তুই জানিস, তোর জেঠিমা থোড়াই জানে সোনাবনি না সিঙ্গাপুর থেকে কেস এসেছে
কেলুদার কথা শুনে হেবলি খিকখিক করে হেসে উঠল

সুবিনয় নিজে ড্রাইভ করে কেলুদাদের সোনাবনি নিয়ে এসেছেন পরিধি আর ওর মাও এসেছেন কেলুদার প্ল্যান অনুযায়ী পরিধি সকলকে জানাল যে তার বন্ধু হেনরিয়েটা আর তার জেঠু গ্রাম দেখতে এসেছেন বর্তমানে বড়ো মহলের বাসিন্দা হলেন পরিধির দাদু সুকমল, ঠাকুমা নিভা, বড়ো জেঠু সুদীপ, জেঠিমা নয়না, ছোটো কাকা সুনন্দ আর সুবিনয়বাবুর এক পিসতুতো ভাই দীপক ছোটো থেকেই দীপক এ বাড়িতে মানুষ সবাই সাদর অভ্যর্থনা জানাল কেলুদাদের
পুরোনো আমলের জমিদার বাড়ি যেরকম হয় বড়ো মহল সেই রকমই বিশেষ কোনো বিশেষত্ব নেই, আর ছোটো মহলও নাকি অবিকল একই রকম দুই মহলের মাঝখানে একটা মাঝারি আকারের পুকুর

দোতলায় থাকার ব্যবস্থা হয়েছে কেলুদাদের কেলুদার পাশের রুমে পরিধির সঙ্গে থাকবে হেবলি পরিধি ঘুমিয়ে পড়েছে অনেকক্ষণ হেবলি ঘরের সামনের বারান্দায় বেরিয়ে এল
“জেঠু, যাবে নাকি ছোটো মহলে ভূত দেখতে?
“ধুর, বোকা ভূত দেখা দেবার আগেই ভূতকে দেখা দেওয়া ঠিক নয়
“তাহলে কি ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে যাব? কোনো অ্যাকশন নেব না?
“আজ শুধু ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ
“বুঝেছি ভুতের জন্য ওয়েট করব

কেলুদার একটু তন্দ্রা মতন এসে গিয়েছিল, হেবলির ঠেলা খেয়ে ধড়ফড় করে উঠে বসলেন
“জেঠু, ওই দ্যাখো
ছোটো মহলের তিনটে জায়গায় আগুন জ্বলে উঠেছে নিচের কোনো ঘরের জানালায়, দোতলার বারান্দায় হঠাৎ একটা আগুনের পাশে ছায়া ছায়া কার যেন অবয়ব অন্ধকারের জন্য ভালো বোঝা না গেলেও এটা যে কোনো নারীর অবয়ব তা বেশ বোঝা যাচ্ছে
কেলুদা আর হেবলি খুব মন দিয়ে দেখতে লাগল খানিক পরে আগুন নিভে গেল আর সেই নারী মূর্তিও মিলিয়ে গেল অন্ধকারে ছোটো মহল আবার ডুবে গেল নিশ্ছিদ্র আঁধারে
“জেঠু, কী বুঝলে?
কেলুদা কোনো উত্তর না দিয়ে বললেন, “এখন শুয়ে পড় ভোরবেলায় উঠতে হবে, সবাই জাগার আগে
“ঠিক আছে

সন্তর্পণে সদর দরজা খুলে কেলুদা আর হেবলি বাইরে বেরোল সবে মাত্র আলো ফুটেছে তখন পুকুরটার পাড় ধরে হেঁটে গিয়ে ছোটো মহলে পৌঁছোল ছোটো মহলের সদর দরজায় নামমাত্র একটা তালা ঝুলছে বাইরে থেকে চারিদিকটা একপাক ঘুরে আসতে বেশ কয়েকটা ভাঙা জায়গা পাওয়া গেল যেখান দিয়ে ভেতরে ঢোকা যায় সেরকম একটা জায়গা দিয়ে ভেতরে ঢুকল কেলুদা আর হেবলি
“বুঝলি হেবলি, আমার আন্দাজ বলছে কাল রাতে ওই ঘরটার জানালা দিয়ে আগুন দেখেছি চল ওখানে যাওয়া যাক
ঘরটায় ঢুকতে গিয়ে থমকে দাঁড়াল কেলুদা হাতের পাঁচ সেলের টর্চটা জ্বালিয়ে খুব মনোযোগ সহকারে মেঝেতে দেখতে লাগল
“কী দেখছ জেঠু?
“ভূতের পায়ের দাগ
“কী!
“এই দ্যাখ, যেখানে যেখানে ধুলোর আস্তরণ বেশি সেখানে সেখানে পায়ের ছাপ
“তার মানে তো সুবিনয় কাকুর ধারণাই ঠিক ভূত-টূত কিছু নয়, মানুষের কাণ্ডকারখানা, কিন্তু এই হঠাৎ করে আগুন জ্বলে ওঠা...
“আগুন জ্বালানোর হরেক উপায় আছে রে এখন আগুনটা কে জ্বালাচ্ছে সেটা জানা দরকার চল তো পেছন দিকটায় কী আছে দেখি
ছোটো মহলের পেছন দিক ঝোপঝাড় আর বড়ো বড়ো গাছের জঙ্গলে ভর্তি কেলুদা এক দৃষ্টিতে সেদিকে তাকিয়ে আছে
“কী দেখছ জেঠু?
“হেবলি, তুই সাপে ভয় পাস?
“নাহ্, এই দুনিয়ার কোনো কিছুতেই হেবলি ভয় পায় না, কিন্তু হঠাৎ সাপের কথা বলছ কেন?
“তুই কি ভাবছিস এই ঝোপজঙ্গলে সাপ নেই! আমাদের এই জঙ্গলে ঢুকতে হবে আর আমার সাপে বেজায় ভয় রক্ষা করিস মা আমায়
“অবশ্যই, অবশ্যই
আকাশ আস্তে আস্তে একদম পরিষ্কার হয়ে এসেছে কেলুদা আর হেবলি জঙ্গলের মধ্যে ঢুকল
“দ্যাখ, ঝোপের ডাল ভেঙে যাতায়াতের রাস্তা করা হয়েছে রানির ভূত এদিক দিয়েই যাতায়াত করে মনে হচ্ছে
জঙ্গলের মধ্য দিয়ে কিছুটা এগোনোর পরই একটা সরু মাটির রাস্তায় এসে উঠল কেলুদারা সেই রাস্তা আবার কিছু দূরে গিয়ে বড়ো একটা রাস্তায় উঠেছে
“হেবলি, বুঝলি কিছু?
“হুম, এদিক দিয়ে ছোটো মহলে ঢুকে ভয়-টয় দেখিয়ে আবার এই রাস্তায় পালায়, কিন্তু একাজ করার কারণটা কী?
“সেটাই তো খুঁজে বের করতে হবে রে চল এবার ফিরে যাই
পুকুরের কাছে আসতেই দীপকের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল কেলুদাদের দেখে তিনি মোটেও প্রসন্ন হলেন না বেশ রাগী রাগী মুখ করে বললেন, “সাত সকালে আপনারা এদিকে কেন?
“এমনি একটু গ্রামের ফ্রেশ এয়ার নিচ্ছি
“ফ্রেশ এয়ার নেওয়ার জন্য এদিকটা মোটেও উপযুক্ত নয় মেজদা কি আপনাদের কিছুই বলেনি?
“সুবিনয়বাবু বলেছিলেন বটে, ওই কে যেন আগুন-টাগুন জ্বালে
“ব্যাপারটা মোটেও এত হালকাভাবে নেওয়ার মতো নয় আপনার সঙ্গে আবার একটা বাচ্চা মেয়ে আছে সাবধানে থাকবেন না বলে এদিক সেদিক যাবেন না” কথাগুলো বলেই দীপক গটগট করে ফিরে চললেন
কেলুদা চোখটা ছোটো করে সেদিকে তাকিয়ে বললেন, “সাসপিশাস, ভেরি ভেরি সাসপিশাস

সকালবেলা প্রাতরাশের টেবিলে সবার সঙ্গে দেখা হল
“হেনরিয়েটা, আমাদের গ্রাম কেমন লাগছে?” সুনন্দ হেবলিকে জিজ্ঞেস করলেন
“এখনও তো সেভাবে কিছু দেখাই হয়নি
“তাও ঠিক পরি, তোর বন্ধুকে ভালো করে আমাদের গ্রাম ঘুরিয়ে দেখাস আমাদের গ্রামের রাধাগোবিন্দের মন্দির খুব বিখ্যাত দেখতেও ভারী সুন্দর
পরিধি কাকার দিকে ঘুরে বলল, “কাকাই, তুমিও চল না আমাদের সঙ্গে আজ তো তুমি স্কুলে যাবে না বললে
“এত করে বলছিস যখন চল তোদের সফরসঙ্গী হয়ে যাই

গ্রাম ঘুরতে বেরিয়ে বেশ ভালো লাগছিল কেলুদার গ্রামটা বেশ সুন্দর গাছপালা, পুকুর ভরা গ্রাম হেবলি আর পরিধি গল্প করতে করতে সামনে চলেছে একটু পিছনে কেলুদা আর সুনন্দ
“আচ্ছা সুনন্দবাবু, একটা কথা জিজ্ঞেস করব? অবশ্যই যদি কিছু মনে না করেন” একটু ইতস্তত করে কেলুদা বললেন
“আরে এত ফরমালিটি করছেন কেন? বলুন
“আপনাদের ওই ছোটো মহলের ভূত ভুল করেও বড়ো মহলে চলে আসবে না তো?” কেলুদার গলাটা কেঁপে উঠল
“না না, ভয় পাবেন না ওরকম কিছু হবে না, আসলে কী জানেন, বাবা আর বড়দা, মেজদার জন্যই এমনটা হল
“মানে? ঠিক বুঝলাম না
“সবাই জানে ছোটো মহল অভিশপ্ত, অথচ বাবার মাথায় খেয়াল চাপল ছোটো মহল দীনেশ বাজোরিয়াকে বিক্রি করবেন বাজোরিয়া ওখানে কী যেন একটা করবে দাদারাও তাতে সমর্থন করল
“আপনি তো বাধা দিতে পারতেন
“আমি! আমি আবার একটা মানুষ হলাম নাকি? আমার কথা কে শুনবে?
“কেন? ঠিক বুঝলাম না আপনার কথা
জোর করে মুখে হাসি টেনে এনে সুনন্দ বললেন, “দেখেই নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন আমি দাদাদের থেকে অনেকটা ছোটো শুধু বয়সে নয় সব দিকেই ছোটো বড়দা ডাক্তার, মেজদা ইঞ্জিনিয়ার আর আমি সামান্য অনার্স গ্রাজুয়েট, প্রাইমারি স্কুলে পড়াই ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াই জমিদার ফ্যামিলির উপযুক্ত নই আমি সকলের দয়ার পাত্র হয়ে থাকা চলে আমার, কিন্তু নিজের কোনো মতামত জানানোর অধিকার নেই আমার
“ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর ব্যাপারটা ঠিক বুঝলাম না
“আসলে আমি গ্রামের গরিব ছেলেমেয়েদের নিয়ে কিছু কাজ করি কারুর পড়াশোনার খরচ চালানো, কাউকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করা, এইসব টুকটাক অপকর্ম করে থাকি গ্রামের একজনের বাড়িতে ছোটোখাটো অফিস মতো করেছি
“অপকর্ম বলছেন কী মশাই, আপনি তো নমস্য ব্যক্তি
“এ মা! এসব কী বলছেন! ওই যে বাড়িটা দেখছেন ওখানেই আমার অফিস
“বাহ্, তাহলে আপনার অফিসটা তো দেখতেই হয়
“যাবেন আপনি?
“অবশ্যই

লম্বা একটা মাটির হলঘরের মতো জায়গায় সুনন্দর অফিস চারিদিকে হাতে তৈরি বিভিন্ন জিনিস রাখা আছে
“ছেলেমেয়েরা এসব তৈরি করে
“কী সুন্দর হাতের কাজ!” হেবলি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে
অফিসের ভেতর একটি ছেলে বসে কিছু কাজ করছিল ওদের দেখে উঠে এল
“পল্টু, এঁরা আমাদের বাড়ির গেস্ট আমাদের অফিস দেখতে এসেছেন” সুনন্দ বললেন
এমন সময় বাইরে থেকে কেউ একজন সুনন্দকে ডাকল সুনন্দ বেরিয়ে গেল আর কেলুদারা পল্টুর সঙ্গে গল্প করতে লাগলেন

দুপুরের খাওয়াদাওয়ার পর কেলুদা নিজের রুমে বসে মৌরি চিবোচ্ছিলেন হেবলি এসে ঢুকল
“জেঠু তোমার বুদ্ধি কত দূর দৌড়োল? স্কুল বন্ধ থাকলেও আমার টিউশনিগুলো তো বন্ধ হচ্ছে
“আমার বুদ্ধি উসেইন বোল্টের মতো দৌড়োচ্ছে গ্রামের ফ্রেশ এয়ারে টুকটুক করে বুদ্ধিগুলো খুলে যাচ্ছে রে তুই চিন্তা করিস না ফেলুদার সঙ্গে রহস্য সমাধান করতে গিয়ে তোপসে এমন কত টিউশন মিস করেছে এখন যা রেস্ট কর রাত্রে জাগতে হবে
হেবলিকে পাঠিয়ে দিয়ে কেলুদা এক জায়গায় ফোন করলেন ফোন শেষে কেলুদার ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠল মনে মনে বললেন, “হুঁ হুঁ বাবা, কেলু মিত্তিরের পাল্লায় পড়েছ ধরা তো তুমি পড়বেই

রাত প্রায় একটা ছোটো মহলের একটা ঘুপচি মতন জায়গায় গুঁড়ি মেরে বসে আছেন কেলুদা সোনাবনির মশারা বড়ো ভয়ঙ্কর ওডোমসকে পাত্তাই দিচ্ছে না সতর্ক হলেন কেলুদা মৃদু পায়ের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে পেছন দিক থেকে দুজন ঢুকল ছোটো মহলে একজন নারী আর একজন পুরুষ পুরুষটি একটু পরেই বেরিয়ে গেল ছোটো মহলে আবার জায়গায় জায়গায় আগুন জ্বলে উঠছে আর সেই আগুনের আলোর পাশে এসে দাঁড়াল সেই নারীমূর্তি কেলুদা আস্তে আস্তে আড়াল ছেড়ে বেরিয়ে সেই নারী মূর্তির ঠিক পেছনে গিয়ে দাঁড়াল
“পল্টু” আচমকা ডেকে উঠলেন কেলুদা
সেই নারী মূর্তি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ায় বলে উঠল, “হ্যাঁ” পরমুহূর্তেই নিজের ভুল বুঝতে পেরে ঘুরে দাঁড়াল নারী বেশি পল্টু বিপদ বুঝে পালাতে উদ্যোগী হল সে, কিন্তু ততক্ষণে কেলুদার হাতে উঠে এসেছে পিস্তল
“নড়লেই টুক করে ট্রিগারটা টিপে দেব চল আমার সঙ্গে
রিভলবারের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করল পল্টু
কেলুদার রিভলবারের ডগায় সুড়সুড়ি খেতে খেতে বাইরে বেরোল পল্টু
“চল, বড়ো মহলে চল
পুকুরটার পাড়ে আসতেই পল্টু হঠাৎ করে বাঁচার শেষ চেষ্টা করল সহসা পেছন ফিরে কেলুদার মুখে এক ঘুসি মারল আর কেলুদা পড়ল জলে পল্টু ছুটে পালানোর চেষ্টা করল, কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগেই হেবলির হাতের জবরদস্ত এক পাঞ্চে মাটিতে পড়ে গেল সে সে বাইরে ছিল অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা করার জন্য হাতের সুখ করতে পেলে হেবলির ভারী আনন্দ হয় অল্প সময়ের মধ্যেই পল্টুকে পেড়ে ফেলল সে
“ওরে হেবলি, আমাকে তাড়াতাড়ি তোল ছোটোবেলায় শেখা সাঁতার আর বুড়োবেলায় কাজে আসে না,” জলে খাবি খেতে খেতে কেলুদার কাতর আর্তি
ততক্ষণে বড়ো মহল থেকে সবাই বেরিয়ে এসেছে হেবলি পরিধিকে বলে রেখেছিল সজাগ থাকতে সুনন্দ এসে জলে ঝাঁপিয়ে পড়ল কেলুদাকে উদ্ধার করতে

বড়ো মহলের বসার ঘরে সবাই জমায়েত হয়েছে অপরাধী হিসেবে পল্টু আর তার সঙ্গী চন্দনও আছে চন্দনকে ছোটো মহলের পেছনদিকে আগেই মেরে অজ্ঞান করে দিয়েছিল হেবলি দুজনেই ভয়ে কুঁকড়ে আছে
“বল, কেন তোরা এভাবে ভয় দেখাচ্ছিলি? বল, না হলে এক্ষুনি পুলিশ ডাকব
দীপক হুংকার ছাড়লেন, কিন্তু পল্টু আর চন্দন চুপ করে রইল
“যদি কেউ কিছু মনে না করেন তাহলে আমি এবার বলি?” কেলুদা বললেন এতক্ষণে সবাই কেলুদার আসল পরিচয় জেনে গেছে
“হ্যাঁ হ্যাঁ, আপনি বলুন,” পরিধির জেঠু বলে উঠলেন
“প্রথমেই বলি পল্টু আর চন্দনকে ধমকে লাভ নেই সম্ভবত ওরা মরে গেলেও ওদের পেছনে কে আছে ওরা বলবে না
“ওদের পেছনে মানে?
“বলছি সব বলছি সেদিন রাতে আগুনের শিখাটা দেখেই আমার সন্দেহ হয়েছিল এটা সাধারণ আগুন নয় আমার সন্দেহ যে অমূলক নয় কাল রাতে তার প্রমাণ পেয়েছি সাদা ফসফরাস বায়ুর সংস্পর্শে এলেই সবুজ শিখায় জ্বলে ওঠে অন্ধকারে আরও উজ্জ্বল হয়ে জ্বলে এজন্য ফসফরাসকে জলে ডুবিয়ে রাখা হয় এখানে ফসফরাস রাখা জলের পাত্রের নিচে ফুটো করে দেওয়া হচ্ছিল, ফলে জল গলে গেলেই ফসফরাস বায়ুতে উন্মুক্ত হয়ে যাচ্ছিল বউঠাকুরানির আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার ব্যাপারটাকে খুব সুচতুরভাবে কাজে লাগানো হয়েছে পল্টু শাড়ি পরে মেয়ের মতো সেজে আগুনের পাশে এসে দাঁড়াত রাতের অন্ধকারে এত দূর থেকে সবাই ভাবত বউঠাকুরানির ভূত কি সুনন্দবাবু, ঠিক বলছি তো? শ্রীমা কেমিক্যালসের মালিক অমিত দত্ত তো আপনার কলেজ মেট দুজনে একসঙ্গে কেমিস্ট্রি অনার্স পড়তেন আপনার অফিস ঘরেই টেবিলের নিচে কার্ডটা পেয়েছিলাম ওখানেই ফোন নম্বর ছিল একটু মিথ্যার আশ্রয় নিতেই ভদ্রলোক গড়গড় করে অনেক কিছু বলে দিলেন ভুল কিছু বলছি কি?
কেলুদার শেষ ক’টা কথায় সকলে চমকে উঠলেন
সুনন্দ ম্লান হেসে বললেন, “সবই যখন জেনে গেছেন আমার আর কী বলার থাকতে পারে শুধু একটা অনুরোধ, পল্টু আর চন্দনকে ছেড়ে দেওয়া হোক ওরা আমার নির্দেশে এসব করেছে ওদের কোনো দোষ নেই
“জানতাম তুমি একটি অপদার্থ, কিন্তু আমার ছেলে হয়ে এত বড়ো বদমাইশ হবে তুমি ভাবতে পারিনি,” উত্তেজনায় সুকমল উঠে দাঁড়িয়ে গেছেন
কেলুদা হাত তুলে ওনাকে নিরস্ত করল, “দাঁড়ান, দাঁড়ান আমার আরও কিছু বলার আছে কেউ একবারও জানতে চাইছেন না তো সুনন্দ কেন এমন করল? আমি বলছি, কালই আমি পল্টুর কাছ থেকে জানতে পারি যে সুনন্দ গরিব ছেলেমেয়েদের নিয়ে যেসব কাজকর্ম করে তার জন্য অনেকটা বেশি জায়গার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে, কিন্তু সুনন্দর অত সামর্থ্য নেই আর চিরকাল দাদাদের তুলনায় কেরিয়ার গ্রাফে পিছিয়ে থাকার জন্য এ বাড়ির কেউ তাকে বিশেষ পাত্তা দেয় না, তাই কারুর সাহায্য সে পাবে না আমার ধারণা সুনন্দ পড়ে থাকা ছোটো মহলকে কাজে লাগানোর কথা ভেবেছিল, কিন্তু ছোটো মহল বিক্রির ব্যবস্থা করা হতে মরিয়া হয়ে বিক্রি আটকানোর জন্য সুনন্দ এই পথ নেয় আমি ঠিক বললাম তো সুনন্দ?
সুনন্দ চুপচাপ মাথা নাড়ল
কেলুদা সুবিনয়বাবুর দিকে তাকিয়ে বললেন, “ছোটো মহলের ভূত আমি ধরে দিয়েছি এবার আমাদের ফেরার ব্যবস্থা করে দিন
“অবশ্যই বলছি আপনার ফিজটা
“না সুবিনয়বাবু, সুনন্দর মতো একটা হিরের টুকরো ছেলেকে ধরিয়ে দিয়ে আমি টাকা নিতে পারব না
সুনন্দ কেলুদার দিকে তাকাল তার চোখে জল
একটু থেমে কেলুদা সুকমলবাবুর দিকে তাকিয়ে বললেন, “ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ছেলে অনেকেই পায়, কিন্তু পরের জন্য প্রাণ কাঁদে এমন ছেলে সহজে পাওয়া যায় না মেসোমশাই তাছাড়া শিক্ষকতা তো পবিত্র একটি পেশা যাই হোক, আমার কাজ শেষ, এবার আপনারা ঠিক করুন কী করবেন

ছোটো মহলে সুনন্দর এনজিও-র উদ্বোধন হবে অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হলেন আমাদের কেলুদা আর হেবলি থুড়ি হেনরিয়েটা আরেকটা কথা চুপিচুপি বলে রাখি, কেলুদার রিভলবারটা না আসল নয়, একটু দামি খেলনা রিভলবার ওতেই কামাল করে দিল কেলুদা
----------
ছবি - সপ্তর্ষি চ্যাটার্জী

No comments:

Post a Comment