কালো ভাল্লুক
শ্রীপর্ণা দাস ব্যানার্জী
১
ঘন শালবনের ফাঁক
দিয়ে
হালকা
চাঁদের
আলো
প্রায়
জঙ্গলের
মাটি
অবধি
যাচ্ছেই
না
বলা
চলে, তবু
ছেলেটা
প্রাণপণে
রাস্তা
খুঁজে
পালানোর
চেষ্টা
করে
যাচ্ছে।
পাতলা
চটি
ফুঁড়ে
বিঁধে
যাওয়া
কাঁটা
পায়ে
লেংড়ে
লেংড়ে
দৌড়োচ্ছে
ছেলেটা।
আর
তার
পেছনে
দৈত্যের
মতো
শব্দ
করে
দানবের
শক্তি
নিয়ে
ছুটে
আসছে
প্রাণীটা।
শেষ
দু-এক
মাসে
এই
প্রাণীটার
কথা
শুনেছে
পলাশ
বেশ
কয়েকবার।
বাচ্চা, বুড়ো, গরু, বাছুর
কিছুই
নাকি
ছাড়ে
না
প্রাণীটা, এর
কবলে
পড়লে
সবাইকে
হজম
করে
ফেলে।
কিন্তু
শেষে
পলাশের
পেছনেও
পড়বে
সেটা
ও
আন্দাজ
করেও
অনেকটা
বেশি
সাহস
দেখিয়ে
ফেলেছে।
কী
দরকার
ছিল
রমেনের
সঙ্গে
শর্ত
রাখার
যে
শালবনে
দৈত্য
নেই? আসলে
এই
জঙ্গলকে
পলাশ
দেখছে
সেই
ছোটোবেলা
থেকে, এই
জঙ্গলের
প্রতিটা
গাছ
যেন
ওর
বন্ধু।
এখানে
নাকি
কোন
এক
দৈত্য
আছে, পলাশ
রমেনের
মতন
১৩/১৪
বছরের
বাচ্চারা
বলে
দৈত্য, বড়োরা
বলে
নাকি
এটা
একটা
ভাল্লুক।
কেউ
কেউ
আবার
বলে
বুনো
হাতি, দলমায়
এমন
বুনো
পাগলা
হাতি
অনেক
আছে।
কিন্তু
হাতি
বড়োজোর
পায়ের
তলায় পিষে মেরে
দেবে, তাকে
খেয়ে
তো
নেবে
না।
হাতি
তো
আর
মাংস
খায়
না, তাই
ভাল্লুকের
ওপরেই
ভোটটা
বেশি।
যদিও
এই
জঙ্গলে
ভাল্লুক
আছে,
সেটা
শুধু
পলাশ
কেন,
তার
বাবা, বাবার
বাবাও
শোনেননি
কখনও।
নাহ, এসব
ভাবার
সময়
এখন
নেই।
পালাতে
হবেই
পলাশকে।
অনেকটা দৌড়োনোর পর পা আর চলছে
না
পলাশের, মৃত্যু
ভয়
কী
সাংঘাতিক
জিনিস।
পেছন
থেকে
সেই
দানবের
পায়ের
আওয়াজ
আর
আসছে
না।
হ্যাঁ
ঠিক
বুঝেছে
পলাশ, শব্দটা
থেমে
গেছে।
পেছনে
ঘুরে
তাকিয়ে
কিচ্ছু
দেখতে
পেল
না
পলাশ।
এক
ফোঁটা
হাওয়া
নেই, গাছপালা
সবাই
থমকে
যেন
পরিবেশটা
আরও
রহস্যময়
হয়ে
উঠেছে।
একটু
দূরে
আলো
দেখা
যাচ্ছে।
ওটাই
পুলিশ
থানাটা
না? হ্যাঁ, ঠিক; আলোটা
থানা
থেকেই
আসছে। মানে জঙ্গলের
অন্য
প্রান্তে
চলে
এসেছে
পলাশ
দৌড়োতে
দৌড়োতে।
মনে
ভরসা
জাগল
পলাশের, এ
যাত্রা
বেঁচে
গেল
তাহলে
সে।
জঙ্গল পেরিয়ে হুড়মুড়
করে
পলাশ
ঢুকে
পড়ে
থানার
ভেতর।
“পুলিশ কাকু! ওই
দৈত্যটা
জঙ্গলের
ভেতর... জল, একটু
জল...” -
অজ্ঞান
হয়ে
পলাশ
পড়ে
যায়
মাটিতে।
“এই ধর, ধর
ছেলেটাকে” - দড়াম
করে
চেয়ার
ছেড়ে
উঠে
দাঁড়ান
ইনস্পেকটর
বারুই।
“স্যার, ছেলেটা
আমাদের
মণ্ডল-দার
ছেলে
না?” – পলাশের
চোখে
মুখে
জলের
ছিটে
দিতে
দিতে
বলে
ওঠে
ইনস্পেকটর
বারুই-এর
অধীনস্থ
এক
পুলিশ।
“হ্যাঁ তাই তো, যা
ওকে
ছেড়ে
দিয়ে
আয়
বাড়িতে,” অন্যমনস্কভাবে
হাত
ঘড়ির
দিকে
তাকিয়ে
বলে
ওঠেন
ইনস্পেকটর
বারুই।
ঘড়িতে
তখন
রাত
সাড়ে
এগারোটা। “এত
রাতে
জঙ্গলে,
ছেলেটা
কি
পাগল
হয়ে
গেল?” – প্রশ্নটা
মনেই
রেখে
দেন
ইনস্পেকটর
বারুই।
পলাশ
ততক্ষণে
জলের
ছোঁয়া
পেয়ে
উঠে
বসেছে।
২
ইস্পাত এক্সপ্রেস যখন ঘাটশিলা
ঢুকল
তখন
সকাল
দশটা
বেজে
গেছে।
অরিজিৎবাবুর
মুড
একদম
ভালো
নেই।
বিয়ের
পরে
প্রথম
বেড়াতে
আসা।
কত
স্বপ্ন
ছিল
এই
ট্রিপ
নিয়ে, যদিও
আর্থিক
খরচের
কথা
ভেবে
ট্রিপের
স্বপ্ন
দেখাটা
গোয়া
থেকে
ঘাটশিলায়
এসে
ঠেকেছে।
অরিজিৎবাবুর
মতে
অকারণ
টাকা
খরচ
করার
কথা
স্বপ্নতেও
ভাবতে
নেই।
কিন্তু
বউয়ের
মুখ
গোমড়া।
মাধুরী, মানে
অরিজিৎবাবুর
স্ত্রীর
বন্ধুরা
সবাই
বিয়ের
পর
বেড়াতে
গেছিল
কেউ
সিকিম, কেউ
নেপাল, কেউ
ভুটান, কেউ
সিমলা-মানালি; সেখানে
অরিজিৎ
ওকে
গোয়া
নিয়ে
যাবে
বলে
ভেলকি
দেখিয়ে
ঘাটশিলা
নিয়ে
এসেছে, বলেছে
বেশি
গাঁইগুই
করলে
এটাও
ফসকে
যাবে।
সারা
ট্রেনে
মাধুরী
কথাই
বলেনি
অরিজিতের
সঙ্গে।
বলবেই
বা
কী
করে, সারা
ট্রেন
তো
অরিজিতের
ঝগড়া
করেই
কেটে
গেল, কি
না
সামনে
বসা
একটা
লোক
অরিজিৎ
সান্যালের
বই
পড়েনি।
তাতে
হয়েছেই
বা
কী? সে
তো
অরিজিৎ
সান্যাল, নারায়ণ
সান্যাল
তো
নয়
যে
সবাই
চিনবে।
অরিজিৎ
সান্যালের
বই
পড়েনি
মানে
লোকটা
নাকি
সান্যাল
পদবির
অপমান
করেছে। “আদিখ্যেতা
যত, নিজেকে
নারায়ণ
সান্যালের
সুপুত্র
মনে
করছে
একেবারে” – নিজের
মনেই
গজগজ
করতে
থাকে
মাধুরী।
সে যাই হোক, অরিজিৎ
সান্যাল
নারায়ণ
সান্যাল
না
হলেও
তাবড়
তাবড়
গোয়েন্দা
কেস
সলভ
করেছে
বটে।
সে
যে
কলেজে
শার্লক
হোমস
ছিল।
দেশের
নানান
জায়গায়
তার
ডাকও
পড়েছে
দু-একবার, এতটাও
অবজ্ঞা
করা
চলে
না
লোকটাকে।
অরিজিৎবাবুর
মতে
সব
কিছুকে
কি
ভাষায়
লিখে
ফেলা
যায়? এত
সহজ? বেচারা
এতদিনে
বউটাকে
একটা
প্রেমপত্রও
গুছিয়ে
লিখে
দিতে
পারেনি, সে
নাকি
আবার
লেখক।
গাড়ি চলেছে হোটেলের
পথে, হোটেলটা
ডিমনা
লেকের
কাছে।
কাজেই
গাড়িতে
ঘণ্টাখানেক
লাগার
কথা।
পথে
মাঝে
মাঝে
ছোটো
ছোটো
গ্রাম
আসছে, বনজঙ্গলও
পেরোতে
হচ্ছে।
দূরে
দূরে
পাহাড়
চোখে
পড়ছে।
গাড়িতে
হালকা
কি
একটা
ভোজপুরি
গান
চলছে।
চোখ
লেগে
এসেছিল
অরিজিৎবাবুর, হঠাৎ
করে
গাড়িটা
থেমে
যেতে
আর
অনেক
লোকের
কথার
শব্দে
তন্দ্রাটা
কেটে
গেল।
“গাড়ি কিঁউ
রোক
দিয়া
ভাই?” তন্দ্রা
লাগা
চোখের
পাতা
কোনোমতে
খুলে
জিজ্ঞেস
করেন
অরিজিৎবাবু।
“পুলিশ স্যার! কুছ
হুয়া
হ্যায়,” ড্রাইভার
উত্তরটা
দিয়ে
গাড়ি
থেকে
নামে।
অগত্যা অরিজিৎবাবু আর মাধুরীও
নামেন।
“এখানেও গোয়েন্দাগিরি?”
মাধুরী
নিজের
মনে
বলে
ওঠে।
“কিছু বললে?” অরিজিৎবাবু
জিজ্ঞেস
করে
উত্তরের
অপেক্ষা
না
করেই
এগিয়ে
যান
ইনস্পেকটরের
দিকে।
“সান্যালবাবু না? মানে
বিখ্যাত
গোয়েন্দা
অরিজিৎ
সান্যাল?” ইনস্পেকটর বারুই
বেশ
অবাক।
“কী যে বলেন! ওই
সব
বিখ্যাত-টিখ্যাত
আমি
না,” মুখে
বললেও
বেশ
গর্ববোধ
করেন
অরিজিৎবাবু।
মনে
মনে
ভাবেন – ‘ট্রেনের
লোকটাকে
পেলে
আচ্ছা
করে
দেখাতাম, দ্যাখ
আমার
কদর
কতখানি।’
“আচ্ছা কী ব্যাপার
বলুন
তো? এখানে
সবাই
জটলা
করে
দাঁড়িয়ে?” জিজ্ঞেস
করেন
অরিজিৎবাবু।
“আর বলবেন
না
মিস্টার
সান্যাল, কাল
রাতে
পড়িমরি
করে
একটা
ছেলে
আসে
থানায়।
বলে
ওকে
নাকি
দৈত্য
তাড়া
করেছে
জঙ্গলে, ভয়ের
চোটে
থানায়
পৌঁছেই
সে
অজ্ঞান
হয়ে
যায়।
তাকে
একটু
সুস্থ
করে
এই
গজাকে
বলি
ওকে
বাড়িতে
ছেড়ে
আসতে।
গজা
ওকে
বাড়ির
সামনে
ছেড়েও
এসেছিল, কিন্তু
ভোররাতে
ছেলেটির
বাবা
থানায়
এসে
জানান
যে
ছেলে
বাড়ি
ফেরেনি।”
“গজাটা কে?” কৌতূহলবশে
জিজ্ঞেস
করেন
অরিজিৎ
সান্যাল।
“ও সরি! গজা
মানে
গজেন্দ্রনাথ।
আমার
আন্ডারে
কাজ
করে,” জানান
ইন্সপেক্টর
বারুই।
“আচ্ছা, সে সব বুঝলাম, কিন্তু
এখানে
জটলাটা
কেন?” অবাক
হয়ে
জানতে
চান
মিস্টার
সান্যাল।
“ওই দেখুন
না, বেড়ালটা...,” ইনস্পেকটর
বারুই
আঙুল
তুলে
দেখান
এক
দিকে।
“বেড়াল দেখার
ভিড়
এটা?” জিজ্ঞেস
করেই
অরিজিৎ
সান্যাল
ভিড়
ঠেলে
এগিয়ে
বেড়ালটা
দেখে
নাক
টিপে
ফিরে
এলেন।
“না না, বেড়াল
দেখার
ভিড়
না, ওর
গলায়
দেখলেন?” আবার
বলে
ওঠেন
ইনস্পেকটর
বারুই।
“দেখলাম একটা
মরা
বেড়াল,” নিশ্চিত
করে
জানান
মিস্টার
সান্যাল।
“আর গলায়,” ইনস্পেকটর
বারুইকে
কথা
শেষ
করতে
না
দিয়েই
অরিজিৎবাবু
বলে
চলেন, “বেড়ালটার
গলায়
একটা
কালো
কারে
একটা
লকেট।
লকেটটা
কি
ওই
ছেলেটির? শনাক্ত
করা
গেছে?”
“একদম ঠিক।
ছেলেটির
বাবা
কনফার্ম
করেছেন
এটি
ওনার
ছেলে
পলাশেরই,” হাত
তুলে
পলাশের
বাবার
দিকে
দেখিয়ে
কথাগুলো
বলেন
ইনস্পেকটর
বারুই।
পলাশের বাবা খুব ভেঙে
পড়েছেন, তিনি
ধরেই
নিয়েছেন
তাঁর
ছেলে
আর
নেই।
কিন্তু
পলাশের
মৃতদেহ
পাওয়া
যায়নি
এখনও, যে
ওকে
মৃত
বলে
ঘোষণা
করা
যাবে।
আর
এখানে
কেউ
একটা
বেড়াল
মেরে
তার
গলায়
পলাশের
লকেট
ঝোলানো
কালো
কার
পড়িয়ে
গেছে, তাই
এই
জায়গাটা
খুঁজে
দেখা
হচ্ছে; আর
গ্রামবাসীদের
কৌতূহল, তাই
এত
ভিড়।
“ও আচ্ছা!” বলেই
হাঁটা
দেন
অরিজিৎবাবু।
“মিস্টার সান্যাল, এক
মিনিট।
পেছনে
ডাকলাম
বলে
আবার
কিছু
মনে
করবেন
না,” একটু
এগিয়ে
গিয়ে
ডাকেন
ইনস্পেকটর
বারুই।
“এই কেসটায়
আপনার
কি
একটু
সাহায্য
আশা
করতে
পারি? না, মানে
বুঝতে
পারছি
আপনারা
বেড়াতে
এসেছেন।
কিন্তু
যদি
একটু
এদিকে
সময়
দেওয়া
যায়...,” ইতস্তত
করতে
থাকেন
ইনস্পেকটর
বারুই।
“তা দেখব’খন, এখন
আসি?” পেছন
ফিরে
আবার
হাঁটা
দেন
অরিজিৎবাবু।
একটু
এগিয়ে
গিয়েই
আবার
ফিরে
এসে
বলেন, “আচ্ছা
ইনস্পেকটর বারুই, তা ছেলেটির
বাড়ি
কি
এই
রাস্তায়?”
৩
“তুমি কি এই কেসটা
নিচ্ছ?” মাধুরী
ধমকের
গলায়
জিজ্ঞেস
করে।
“কোন কেস বলো তো?” কিছুই
না
জানার
ভান
করে
জিজ্ঞেস
করেন
অরিজিৎবাবু।
“এই যে ছেলে
হারানোর
কেস...”
“না না, পাগল
নাকি? তোমার
সঙ্গে
সময়
কাটাতে
এসে
এসব
কে
করবে? আচ্ছা
তোমার
কেন
মনে
হল
ছেলে
হারানো? ছেলেটা
মারা
গেছে
মনে
হচ্ছে
না
কেন?”
“হয়ে গেল, ও
নাকি
আবার
কেসটা
নেবে
না? ষোলো
আনা
পা
বাড়িয়ে
আবার
বড়ো
বড়ো
কথা।
ছেলেটা
যদি
মরেই
যাবে, মরার
আগে
কি
গলা
থেকে
লকেট
আর
কার
খুলে
বেড়ালকে
উপহার
দিয়ে
যাবে? এ
তো
বোঝাই
যাচ্ছে
কেউ
ছেলেটাকে
অপহরণ
করেছে
না
হয়
মারার
ভয়
দেখাচ্ছে।”
“এই না হলে তুমি
মিসেস
সান্যাল!”
“ওই দেখেছ
কী
সুন্দর
গাছটা?” বেশি
প্রশংসা
পেলে
আবার
মাধুরী
দেবী
ঘাবড়ে
যান।
কথা
এড়াতেই
প্রশ্নটা
করে
বসেন, যেন
জীবনে
গাছ
দেখেননি, এই
প্রথম
চোখে
পড়ল।
“হ্যাঁ, ওটা মহুয়া
গাছ।
এই
গাছ
এখানকার
লোকেদের
খুব
প্রিয়, নেশা
করার
জন্য
এক্কেবারে
দরকারি
গাছ,”
অরিজিৎবাবু
জ্ঞান
দেবার
সুযোগ
কখনও
ছাড়েন
না।
“সাব, আ গয়া আপকা
হোটেল,” হোটেলের
গেটের
সামনে
গাড়ি
থামিয়ে
জানায়
ড্রাইভার।
“থ্যাংক ইউ ভাই,” গাড়ি
থেকে
নেমে
পড়েন
সান্যাল
দম্পতি।
জিনিসপত্র
গাড়ি
থেকে
নামিয়ে
দিতে
সাহায্য
করে
ড্রাইভার।
অরিজিৎ সান্যাল খুঁজে
খুঁজে
বাঙালি
খাবার
পাওয়া
যাবে
এমন
হোটেলই
বুক
করেছেন,
যতই
হোক
বাঙালি
খাবার
না
হলে
চলে
না,
কিন্তু
ভাবেননি
যে
হোটেলের
মালিকও
বাঙালি।
“অরিজিৎ সান্যাল
আর
মাধুরী
সান্যাল, তা
বাঙালি
তো? নাম
দেখে
তো
তাই
মনে
হচ্ছে, বাড়ি
কি
কলকাতা?”
এক
নাগাড়ে
জিজ্ঞেস
করে
গেল
হোটেলের
মালিক।
“হ্যাঁ কলকাতা,” অরিজিৎবাবু
আর
কথা
বাড়ান
না।
মনে
মনে
বিড়বিড়
করতে
থাকেন – ‘আর
এক
মর্কট
লোক, অরিজিৎ
সান্যালকে
চেনে
না, এর
থেকে
রিসেপশনের
ম্যানেজারটা
ভালো, নিকুচি
করেছে
বাঙালি
হোটেল। দুটো
প্রশ্ন
করেই
চলে
গেল
মালিকটা, কী
দরকার
ছিল
প্রশ্ন
দুটোর? যত
সব।’
“মিস্টার সান্যাল, স্পেশাল
অকেশন, স্পেশাল
রুম
নেহি
চাহিয়ে?” জিজ্ঞেস
করে
রিসেপশনের
ম্যানেজারটা।
“না দাদা, থ্যাংক
ইউ; জ্যায়দা
স্যুইট
পসন্দ
নেহি
করতে
হ্যায়
হাম,” ব্যঙ্গ
করে
বলেন
অরিজিৎ
সান্যাল।
“ওকে নো প্রবলেম, ইয়ে
রহা
আপকা
রুম
কি
চাবি, রুম
নাম্বার
২০৭।
আউর
এক
জরুরি
বাত, রাতবিরেতে
জঙ্গলে
না
যাবেন,
বিপদ
আছে, কি
বাংলা
ঠিক
হল
আমার?”
“কীসের বিপদ?” জানতে
চান
অরিজিৎবাবু।
“এক কালা
ভালু
নিকলা
হ্যায়, যো
ভি
জঙ্গল
মে
যা
রহে
হ্যায়
সব
গায়েব, কোই
ভি
ওয়াপাস
নেহি
আ
রহে হ্যায়।
মগর, চিন্তা
করনে
কা
কোই
বাত
নেহি, দিন
মে
যাইয়ে, জঙ্গল
ঘুম
ফিরকে
সাম
তক
ওয়াপস
আ
যাইয়ে, কোই
খতরা
নেহি,” আশ্বাস
দেয়
ম্যানেজার
ভদ্রলোক।
“উফ! এখানে
কি
সবাই
অতিরিক্ত
কথা
বলতে
ভালোবাসে
নাকি? জঙ্গলে
নাকি
ভাল্লুক? আমি
যাবই
যাব
জঙ্গলে, কী
হয়
দেখি,” চাবি
নিয়ে
রুমের
দিকে
হাঁটা
দেন
অরিজিৎ
সান্যাল, পেছনে
পেছনে
মাধুরী।
হানিমুন
যে
মাথায়
উঠেছে
মাধুরী
সেটা
অনেকক্ষণ
থেকেই
আন্দাজ
করেছে।
দুপুরে লাঞ্চে চিংড়ির
মালাইকারি
পেয়ে
সান্যালবাবু
খুব
খুশি, “এই
মাধুরী, দুপুরটা
একটু
জিরিয়ে
নিয়ে
চলো
বিকেলে
লেকের
দিকটা
একটু
ঘুরে
আসি, কী
বলো?”
“ভূতের মুখে
রাম
নাম,” নিজের
মনে
বলে
ওঠে
মাধুরী।
“কিছু বললে? আচ্ছা
সকাল
থেকে
কী
বিড়বিড়
করে
বলছ
বল তো?”
“কিছু বলছি
না, এই
যে
ম্যানেজারটা
বলল
সন্ধের
মধ্যে
হোটেলে
ফিরতে, কী
সব
বিপদ
আছে...”
“ধ্যার, ছাড়ো
তো।
বিপদ
না
ছাই, তা
চলোই
না, কী
এমন
বিপদ
দেখেই
আসি,” অরিজিৎবাবুর
কথা
শেষ
হতে
না
হতেই
একটা
মাঝবয়সি
ছেলে
এসে
দাঁড়াল
খাবার
টেবিলের
পাশে।
“আপনি রাইটার
অরিজিৎ
সান্যাল
না? আমি
অনেক
পড়েছি
আপনার
বই।”
“এইত্তো এতক্ষণে
একটা
ভালো
লোক
পাওয়া
গেল।
তোমার
নাম
কী
ভাই? এখানে
কাজ
করো?”
“আমি সুনন্দ, হ্যাঁ
এই
হোটেলেই
কাজ
করি।
আপনি
তো
অনেক
গোয়েন্দা
কাজও
করেন
শুনেছি, তা
এই
খুনের
কেসটা
কি
আপনাকে
দিয়েছে
পুলিশ?”
“হ্যাঁ! না মানে, আমি
নিইনি, বউয়ের
সঙ্গে
বেড়াতে
এসেও
কাজ
করলে
কি
বিয়ে
টিকবে?”
“তা ভালোই
বলেছেন, এসবে
আবার
জড়ানো
কেন
বেড়াতে
এসে।
আমি
চলি
এখন, ভালো
থাকবেন,” বলে
ছেলেটা
হাঁটা
দেয়।
ছেলেটি চলে যেতে
অরিজিৎবাবু
একটা
চিংড়িকেই
অনেকক্ষণ
পর্যবেক্ষণ
করে
সেটাকে
টপ
করে
মুখে
পুরে
এক
গাল
হাসলেন।
মাধুরী
অবশ্য
এই
হাসির
মানে
ঠিক
বুঝতে
পেরেছে।
৪
“আরে মিস্টার
সান্যাল
যে, কী
সৌভাগ্য, আসুন
আসুন, বসুন
বউদি, একটু
চা
চলবে?” – থানায়
হঠাৎ
মিস্টার
আর
মিসেস
সান্যালের
অপ্রত্যাশিত
আগমনে
ইনস্পেকটর
বারুই
খুশিতে
একেবারে
আপ্লুত।
“হ্যাঁ হ্যাঁ, চা
ছাড়া
কি
সন্ধে
কাটে? এই
একটু
বউকে
নিয়ে
লেক
ঘুরতে
গেছিলাম, ঘুরতে
ঘুরতে
চলে
এলাম
এদিকে।”
“কিন্তু বেশি রাত করবেন
না
মিস্টার
সান্যাল, আজকাল
কী
সব
যে
হচ্ছে,” ইনস্পেকটর
বারুই
সতর্ক
করেন।
“আপনিও একই কথা বলছেন
দেখছি, সকাল
থেকে
সবাই
আমাকে
সতর্ক
করছে
ওই
জঙ্গল
নিয়ে।
এই
ব্যাপারটাই
জানতে
এলাম
বলতে
পারেন।”
“আর বলবেন
না, মাস
দুয়েক
হল
কী
একটা
দানব
নাকি
ঘুরে
বেড়াচ্ছে
জঙ্গলে।
দেখলেন
না,
ওই
ছেলেটিও
উধাও
হয়ে
গেল।
তাও
তো
সে
আমার
কাছে
এসেছিল, নিজের
মুখে
বলল
দৈত্যটা
নাকি
ওকে
তাড়া
করেছিল।
সন্ধের
পর
যে-ই
ওই
জঙ্গলে
যাচ্ছে
একেবারে
উধাও
হয়ে
যাচ্ছে,” জানান
ইনস্পেকটর
বারুই।
“আর কে কে উধাও
হয়েছে
ছেলেটি
ছাড়া?”
“মানুষ বলতে
ছেলেটি
এই
প্রথম, এর
আগে
পশু, জঙ্গলের
হাতিও
নাকি
গায়েব
হচ্ছে, আচ্ছা
বলুন
তো
হাতিকে
গায়েব
করবে
এ
কী
প্রকাণ্ড
প্রাণী? তাই
শুনে
কেউ
আর
ওদিকে
পা
মাড়ায়
না।”
“তা আপনারা
রাতের
দিকে
খোঁজ
করেননি
কী
হচ্ছে?”
“সেটাও করেছি, গাড়ি
নিয়ে
জঙ্গল
চষে
বেড়িয়েছি
দফায়
দফায়
অনেক
বার, কিন্তু
কিচ্ছু
বুঝিনি।”
“তাহলে আজ আর একবার
হয়ে
যাক? আসলে
সকলে
এত
বারণ
করে
করে
জঙ্গলের
নেশাটা
বাড়িয়ে
দিয়েছে,
বুঝলেন?”
“হোক তাহলে
মধ্য
রাতে
জঙ্গল
ভ্রমণ,” সম্মতি
জানান
ইনস্পেকটর
বারুই।
“আর এই ছেলেটির
সম্বন্ধে
কোনো
নতুন
খবর?”
“আপাতত কিচ্ছু
না, ছেলেটিকে
মৃতও
বলা
যাচ্ছে
না, বডিও
পাওয়া
যায়নি।”
৫
সকাল দশটা বেজে
গেছে, কিন্তু
মিস্টার
সান্যালের
ঘুম
আর
ভাঙছে
না।
মাধুরী
ইতিমধ্যে
গজ
গজ
করা
শুরু
করে
দিয়েছে।
ওদের
আজ
দলমা
পাহাড়
যাওয়ার
কথা
ছিল, সব
ভেস্তে
গেল।
কাল
রাতে
প্রায়
দুটোর
কাছাকাছি
হোটেলে
ফিরেছেন
অরিজিৎবাবু, পুলিশের
জিপ
ছেড়ে
দিয়ে
গেছে
হোটেল
অবধি।
মাধুরী
জিজ্ঞেস
করাতে
অরিজিৎ
বলেছে
যে
বেকার
নাকি
সময়
নষ্ট, ভাল্লুক
কেন,
একটা
ঝিঁঝিঁ
পোকাও
বেরোয়নি।
যত
আলতু
ফালতু
কথা।
রাগে বেলুনের মতো ফুলে
বিছানায়
গিয়ে
সেই
যে
ঘুম
দিয়েছে, ঘুমিয়েই
যাচ্ছে।
ঘুমটা
ভেঙেছে
শাশুড়ির
ফোনে - “হ্যালো!”
“শুনলাম নাকি
আমার
মেয়েটা
সারাদিন
একা
একা
হোটেলেই
সময়
কাটাচ্ছে।
এই
জন্যই
প্রেম
করে
বিয়ে
করলে,
হ্যাঁ? মাধুরীকে
এখানে
নিয়ে
যাব, ওখানে
নিয়ে
যাব; শেষে
নিয়ে
গেলে
একটা
এঁদো
মার্কা
জায়গায়, তাও
মেয়েটা
আমার
সারাদিন
একা
একা
হোটেলে
সময়
কাটাবে?” দজ্জাল
শাশুড়িটার
জন্যই
অরিজিৎ
অনেকবার
ভেবেছিল
মাধুরীকে
বিয়ে
করবে
কি
করবে
না, শেষে
মাধুরীর
করুণ
মুখ
দেখে
মায়া
হয়েছিল,
কিন্তু
কোথায়
সেই
মুখ? কেমন
মায়ের
কাছে
নালিশ
করে
আমার
দিকে
তাকিয়ে
আছে
হুলো
বেড়ালের
মতো।
“কী হল, উত্তর
নেই
কেন?” শাশুড়ি
আবার
ধমক
দেন।
“হুলো বেড়াল! না
মানে
ভাল্লুক
বেরিয়েছে
তো
তাই...”
“বেড়াল, ভাল্লুক, এসব
কী? তোমরা
কি
চিড়িয়াখানা
গেছ
নাকি?”
“না যাইনি, যাব; এই
তো
বেরোচ্ছি।
নিন, মেয়ের
সঙ্গে
কথা
বলুন,”
ফোনটা
কোনোমতে
মাধুরীকে
ধরিয়ে
উঠে
পড়েন
অরিজিৎবাবু।
“দেখলে মা! শুনলে?” মাধুরীর
গলায়
অভিযোগ।
“দ্যার! এই শুরু
হল,” অরিজিৎ
কিছুটা
বিরক্ত।
“হ্যালো ভাই,
দু-কাপ
চা
পাঠাও
না
রুমে, সঙ্গে
দু-প্লেট
স্যান্ডউইচ,” রুমের
ফোন
থেকে
খাবারের
অর্ডার
দেন
অরিজিৎবাবু।
“স্যার, বাস দো মিনিট
টাইম
দিজিয়ে, এক
হি
লড়কা
আজ
কাম
পে
হ্যায়।”
“কওন হ্যায়, সুনন্দ?” সুনন্দকে
ভোলেননি
অরিজিৎবাবু, ওই
তো
একমাত্র
যে
কিনা
ওঁর
বই
পড়ে, ভালো
ছেলে।
“কওন সুনন্দ
স্যার? ইস
নাম
পে
তো
কোই
নেহি
হ্যায়
ইধার!” বলে
রিসেপশনের
লেডি।
ফোন
রাখেন
অরিজিৎবাবু, নিজের
মনেই
বলেন, “যা
মনে
হচ্ছিল
তাই।”
ঘড়িতে দুপুর বারোটা।
মাধুরীকে
নিয়ে
অরিজিৎ
বেরিয়েছেন
দলমা
পাহাড়
দেখাতে।
লাঞ্চ
আজ
মাথায়, আহা
কালকের
মালাইকারিটা
যা
ছিল।
আজ
কী
মেনু
হোটেলে
কে
জানে? সব
ছেড়ে
যাও
ধুলোবালি
পেরিয়ে
পাহাড়ে – ভাবতে
ভাবতে
বুক
করা
একটা
সাদা
গাড়িতে
এসে
বসলেন
অরিজিৎবাবু, পাশের
সিটে
মাধুরী।
গাড়িটা
স্টার্ট
নিতেই
হুশ
করে
পাশ
দিয়ে
একটা
মোটর
বাইক
বেরিয়ে
গেল, কালকের
সেই
সুনন্দ
মনে
হল
যে।
“ড্রাইভার, উস বাইক
কা
পিছা
করো
জলদি,” আদেশ
দেন
অরিজিৎ
সান্যাল।
“দলমা?” মাধুরী
পাশ
থেকে
বলে
ওঠে।
“হবে হবে, দাঁড়াও” – পিছু
নিতে
নিতে
বাইকের
নাম্বার
প্লেটের
একটা
ছবি
নিলেন
মিস্টার
সান্যাল।
সঙ্গে সঙ্গে
পাঠিয়ে
দিলেন
ইনস্পেকটর
বারুইকে, সঙ্গে
লিখে
দিলেন
এই
বাইকের
লোকটাকে
পারলে
আটকাতে, আর
এই
বাইকের
ওনারের
ডিটেইল
জানাতে।
নাহ, শেষ অবধি
আর
পিছু
নেওয়া
গেল
না
বাইকটার, বাইকটা
বেরিয়ে
গেল
হুশ
হুশ
করে।
অগত্যা
দলমারই
জয়
হল।
৩০০০ ফুট উঁচুতে
দলমা
হিল
টপে
বাবা
মহাদেবের
মন্দিরও
হল, সেখানে
গুহার
ভেতর
ঠাকুর
দর্শনও
হল।
মাধুরী খুশিতে গদগদ।
যাক, দজ্জাল
শাশুড়ির
আর
ফোন
আসবে
না
কিছুদিন।
সেদিন রাতেও অরিজিৎবাবু
হোটেলে
ফিরলেন
রাত
করে, প্রায়
মধ্য
রাতে।
মাধুরী
ছিলেন
হোটেলেই।
অরিজিৎবাবু
বলেই
গেছিলেন
কাজ
আছে, মাধুরীর
বুঝতে
একটুও
অসুবিধে
হয়নি
কী
কাজ।
তবে
বাড়ি
ফিরে
খুব
গম্ভীর
ছিলেন।
পরদিন সন্ধের দিকে
ফোন
আসে
ইনস্পেকটর
বারুইয়ের, “স্যার,
যে
ছেলেটির
ডিটেইলস
চেয়েছিলেন
তাকে
ধরা
গেছিল
কালকেই।
রাত
অবধি
জেরা
করে
জানতে
পেরেছি
ওর
নাম
সুনন্দ
হালদার, পলাশের
দাদার
মতোই, আপনাদের
পেছনে
পেছনে
ঘুরছিল
জানার
জন্য
আপনি
পলাশের
কেসের
কিছু
জানতে
পারলেন
কিনা।
আপনি
ওকে
বলেছেন
এই
কেস
আপনি
দেখছেন
না, কিন্তু
কথাটা
ও
বিশ্বাস
করেনি, তাই
পিছু
নিয়েছিল
আপনাদের।
নির্দোষ
ছেলে, তাই
ছেড়ে
দিয়েছি।
কিন্তু
ওদিকে
অন্য
বিপদ
স্যার, যার
জন্য
ফোন
করলাম।
গ্রামের
লোকের
মতে
একটা
হাতির
বাচ্চাকে
পাওয়া
যাচ্ছে
না, মা
হাতি
গ্রামে
ঢুকে
পড়েছে, সব
তছনছ
করছে।
বাচ্চা
হাতি
মনে
হয়
ওই
কালো
ভাল্লুকের
পেটে
গেছে।”
“খবরটা কখন পেলেন?” জিজ্ঞেস
করেন
মিস্টার
সান্যাল।
“এইত্তো আজ বিকেলে।
বাচ্চা
হাতিটা
সম্ভবত
কাল
থেকে
নিখোঁজ,” উত্তর
দেন
ইনস্পেকটর
বারুই।
“এখুনি সব চেক পোস্টে
পুলিশ
বাড়ান, আর
সবাইকে
বলে
দিন
যাতে
সব
ট্রাক
ভালো
করে
চেক
করে
তবে
ছাড়ে।
আমি
আসছি, চেক
পোস্ট
চেক
করিয়েছেন
কখনও, এসব
ঘটনার
পর?”
“চেক পোস্ট
কেন
স্যার? কালো
ভাল্লুক
লোকালয়ে
যায়
না,” ইনস্পেকটর
বারুই
আমতা
আমতা
করে
জিজ্ঞেস
করেন।
“উফ, যা বলছি
করুন, আর
হ্যাঁ, তাড়াতাড়ি,” বলে
ফোনটা
রাখেন
মিস্টার
সান্যাল।
৬
“আপনি মহান
স্যার, কিন্তু
বুঝলেন
কী
করে
যে
জন্তু
পাচার
হচ্ছে
গ্রাম
থেকে?” ইনস্পেকটর
বারুই
প্রশংসায়
পঞ্চমুখ।
“কাল রাতে
আমি
ঘাপটি
মেরে
জঙ্গলে
ছিলাম
একা, সন্দেহ
তো
হয়েইছিল
এত জনের
বারণ
শুনে
যে
জঙ্গলে
আর
যাই
হোক
ভূত
বা
অলৌকিক
কারোর
হানা
হচ্ছে
না।
ঘড়িতে
যখন
ঠিক
সাড়ে
এগারোটা, বীভৎস
শব্দ
তুলে
এল
আপনাদের
সেই
কালো
ভাল্লুক, রণপা
আর
সার্কাস
থেকে
ভাড়া
করা
ভাল্লুকের
বিশাল
পোশাকে।
তা
সেই
ভাল্লুকের
গলার
শব্দ
বেরোয়
রেকর্ডার
থেকে।
বুঝলাম
কী
করে
রেকর্ডার, কারণ
সেটা
একবার
চলে
আর
একবার
বন্ধ
হয়।
প্রথমে
আমিও
ভয়
পেয়েছিলাম, পরে
ভাবলাম
আমার
উপস্থিতি
যখন
টের
পায়নি
তখন
আর
আমার
ভয়
কী? আসল
জন্তু
হলে
মানুষের
গন্ধ
ঠিক
টের
পেত।
তা
সেই
ভাল্লুক
পাহারা
দিল
ততক্ষণ,
যতক্ষণ
কিছু
লোকের
জটলা
চলল
জঙ্গলে।
ঘণ্টাখানেক
পর
সব
ফাঁকা।
আন্দাজ
করছিলাম
কিছু
একটা
হবে।
কিছুক্ষণের
মধ্যে
একটা
ট্রাক
এল, বড়ো
বড়ো
বস্তা
উঠল
তাতে।
কেউ
একজন
হিন্দিতে
বলে
উঠল
আসল
মাল
এলেই
রওনা
দেবে
ওরা।
রাতের
দিকে
চেক পোস্টে
সাধারণত
সবাই
ঘুম
চোখে
ডিউটি
করে, যত
পাচার
কাজ
রাতেই
সুবিধে।
কিন্তু
কী
সেই
আসল
মাল
আজ
বুঝলাম, হাতি
চুরি
শুনে।
ভাল্লুকের
পেটে
না, হাতি
পাচার
হচ্ছে,” এক
নাগাড়ে
বলে
থামলেন
অরিজিৎবাবু।
পলাশকে পাওয়া গেছে। “গজা
পুলিশের
জিপ
থেকে
নামিয়ে
দেওয়ার
পর
ও
বেচারা
সেদিন
ঘরে
ঢুকতে
যাবে, গ্রামেই
শুনতে
পায়
কিছু
গুজগুজ
কথা।
কান
পেতে
শুনতে
গিয়ে
দেখে
এই
হোটেলের
ম্যানেজার, যদিও
পলাশ
এনাকে
চেনে
না, আমি
তো
চিনি।
ও
শুনে
ফেলেছিল
সব
কথা, তাই
ওকে
মারার
ধমকি
দিয়ে
গলার
লকেট
আর
কার
বেড়ালকে
পড়িয়ে
ভয়
দেখানো।
এতে
অবশ্য
আমার
মাধুরীর
অনেক
অবদান, ও
ছেলেধরার
ধারণাটা
না
বললে
আমি
খুনই
ভাবতাম
প্রথমে
হয়তো।
বাকি
চোরা
কারবারের
ডিটেইল
এঁদের
থেকে
নিন, আমি
চললাম।
হানিমুনটা
মাঠে
মারা
গেল
এই
কালো
ভাল্লুকের
চক্করে।”
----------
ছবি - শ্রীময়ী
No comments:
Post a Comment