ছড়া-কবিতা:: অন্ধকারের আজগুবিরা - প্রকল্প ভট্টাচার্য


অন্ধকারের আজগুবিরা
প্রকল্প ভট্টাচার্য

এই শহরে যেথায় অনেক গলি
দিনরাত্তির করছে কোলাকুলি,
ঝিম ধরানো যেথায় সারি সারি
শ্যাওলাধরা গা ছমছম বাড়ি,
সেইখানে, এক আদ্যিকালের মেসে
লেখকমশাই উঠল হঠাৎ এসে।
শুনত সে রোজ ওপরতলায় কারা
দিনরাত্তির ফিসফিসিয়েই সারা!
পাততো আড়ি, ফেলত সে সব টুকে,
ছাপতে দিত নিজের নতুন বুকে
পাঠকরা সব আঁতকে উঠত পড়ে,
বইয়ের দামও উঠল বেজায় চড়ে,
ভূতের লেখকনাম হল তার ভারি,
হাঁড়ির খবর জানল না কেউ তারই।
আসল ব্যাপার জানত কেবল গুপি,
সেই আমাকে বলল চুপি চুপি-
আজগুবি আর কালগুবি দুই ভায়ে,
যমজ তারা, ষড় করে সস্তায়
থাকত দু’জন একটা ঘরেই তারা,
গুনত কেবল একটা বেডের ভাড়া।
মেস ম্যানেজার একজনকেই জানে,
তাই দু’জনায় কয় কথা সাবধানে।
বাইরের কেউ টের না পেলেই ভালো,
তাইতো রাতেও জ্বালত না কেউ আলো!
তোমরা এসব ফাঁস কোরো না যেন!
লেখকবাবুর ভাতটা মারি কেন!
ওমা! সেকি! বিশ্বাস হচ্ছে না?
আজগুবি তো আমার ভীষণ চেনা!
ডাকব নাকি? নিজেই নেবে জেনে?
আমার কথা মানবে তো নাও মেনে
নইলে ভীষণ পস্তাবে তার পরে!
আজগুবিরা বেরোয় অন্ধকারে,
লোডশেডিংয়ের শিরশিরেনি রাতে।
একলা পেলে কাউকে সে রাস্তাতে
বলতে পারে আধখোঙানি স্বরে
থাকছে তারা কত নম্বর ঘরে
দুই ভায়েতে, আদ্যিকালের মেসে
ঠিকানাটা? ওই শ্মশানের শেষে।
আমি? পাশের বেলগাছটায় থাকি।
ওকি! শুনেই মুচ্ছো গেলে নাকি!
_____
অলঙ্করণঃ সুজাতা চ্যাটার্জী

1 comment:

  1. হা হা হা.... অসাধারণ। মুচ্ছোই যাচ্ছিলাম আট্টু হলে

    ReplyDelete