ছড়া-কবিতা:: পালক ঝরে রূপকথারই - শুভজিৎ বরকন্দাজ


পালক ঝরে রূপকথারই
শুভজিৎ বরকন্দাজ

দিনের আলো গড়িয়ে যেতেই
সন্ধ্যা-মেয়ের আঁধার শাড়ি
যেই না সবে মেলতে গেল
রং ছড়াল মেঘের বাড়ি।

রং ছড়াল চিকন সোনা
গড়িয়ে গেল দুধ-সাদা রং
কে ছড়াল কে ছড়াল
সেই কথাটাই শোনাই বরং।

আচ্ছা না হয় থাক সে কথা
যাচ্ছে ভেসে মেঘের গাড়ি
কানায় কানায় রং টুপিয়ে
আলপনা দেয় আকাশ-বাড়ি।

চরকা কাটা বন্ধ রেখে
ফোকলা গালের চাঁদের বুড়ি
যেই না বাড়ায় হাত দুখানা
জ্যোৎস্না ঝরে ইলশেগুঁড়ি।

গড়িয়ে পড়ে জ্যোৎস্না-ধারা
মাটির ওপর খড়ের চালে
জানলা গলে যায় হারিয়ে
ঘুম-জড়ানো খুকুর গালে।

খুকুও তখন ঘুমের দেশে
পঙ্খীরাজে যাচ্ছে উড়ে
রাজার কুমার হাতছানি দেয়
এই এদিকে বন্ধু রে!


জ্যোৎস্না তখন ঝরতে থাকে
বনের পথে ফুল ছড়িয়ে
সুগন্ধিতে ভরিয়ে তোলে
লতায় পাতায় যায় জড়িয়ে।

এমনি করে সন্ধ্যা যখন
গড়িয়ে চলে রাতের দিকে
মন কেমনের মুহূর্তরা
ছড়িয়ে পড়ে দিগ্বিদিকে।

ঠিক তখনই আকাশপথে
ভাসিয়ে দিয়ে মেঘের ভেলা
লালপরিরা নীলপরিরা
দৌড়ে আসে করতে খেলা।

হালকা জরির ফিনফিনে দুই
ময়ূরকন্ঠী মেঘের ডানা
ঘাসের ওপর ছড়িয়ে রেখে
কুড়ায় পালক একশোখানা!


রাত ফুরোলে যায় ফিরে সব
যায় ফিরে তার মেঘের বাড়ি
ভাব বললেই তার সাথে ভাব
আড়ি বললে, ভীষণ আড়ি।

উড়তে উড়তে নীলপরিরা
ওই পালকই দেয় ছড়িয়ে
জ্যোৎস্না মেখে রূপকথা হয়
দেয় আমাদের মন ভরিয়ে।

রূপকথা হয়, রূপকথা হয়
রূপকথারা সত্যি নাকি!
সত্যি ভাবলে সত্যি হবেই
মিথ্যে ভাবলে! মস্ত ফাঁকি।
_____
অলঙ্করণঃ সপ্তর্ষি চ্যাটার্জি

8 comments: