দেশবিদেশের গল্প:: বিশ্বের শেষ বই - রডম্যান ফিলব্রিক (অনুবাদঃ অনন্যা দাশ)


বিশ্বের শেষ বই
রডম্যান ফিলব্রিক
(অনুবাদ – অনন্যা দাশ)

তোমরা এটা পড়ছ মানে হাজার বছর কেটে গেছে। কারণ, এখন তো আর কেউ পড়ে না কিছু। আর পড়বেই বা কেন যখন ‘প্রোব’ রয়েছে? মানে একটা ছুঁচের সাহায্যে যত ছবি, আনন্দ, উৎসাহ, উত্তেজনা একেবারে সোজা ব্রেনে ঢুকিয়ে দিলেই হল – তারপর বুঁদ হয়ে থাকো! ট্রেন্ডি, শুটার, হুটার, জুম – কত রকমের প্রোব রয়েছে। আজকাল সবাই নাকি শুটার পছন্দ করছে, গত বছর যেমন ট্রেন্ডি নিয়ে পাগল ছিল লোকে।
জুমগুলো সবসময়ই সকলের খুব পছন্দের, যদিও অনেকেই সেটা স্বীকার করতে চায় না। কেন চায় না সেটা আমি বলতে পারব না কারণ, আমি কোনওদিন প্রোব করিনি – ট্রেন্ডি না, শুটার না, কোনওরকম মগজচিড়িক না। আমি যে করতে চাইনি তা না, আসলে ওগুলো আমার শরীর সহ্য করতে পারে না। প্রোবের ওই ছুঁচের মতন ইলেকট্রোডগুলোতে আমার ভয়ঙ্কর অ্যালার্জি। আমার ব্রেনে ওগুলো ঢোকালেই আমার মৃগী রোগের মতন হয় আর আমি অজ্ঞান হয়ে যাই – তাই ওসব আমার চলে না। সেই কারণে মেজাজটা খিঁচড়ে আছে। আমার খুব ইচ্ছে করে ওই জুম বা শুটার একটা কিছু ব্রেনে ঢোকাতে, যাতে অন্তত এটা জানতে পারি যে এত হইচই কিসের, কিন্তু আমার এমন পোড়া কপাল যে সেটা করতে পারি না!
আমাকে সবাই স্প্যাজ বলে ডাকে। কেমন একটা বোকা বোকা নাম, তাই না? আগে নামের জন্যেও মন খারাপ করতাম, এখন আর করি না। আমি একটা পুরনো ভয়েস রাইটার প্রোগ্রামে কথা বলি, আমি যা বলি সব লেখা হয়ে প্রিন্ট করে যন্ত্রটা। কেন করছি? কারণ আমি ওই রক্তলোলুপ গ্যাংদের দেখলাম যে। ওরা লেখকবিকে যা করল তা আর বলবার নয়। ওরা যা দেখল আমিও দেখলাম আর ওরা যা শুনল আমিও শুনলাম, আর তাতেই আমার মাথাটা ঘুরে গেছে।
লেখকবি লোকটা একটা বুড়ো মতন মানুষ। সে একটা খুপরিতে থাকত। ওই জায়গায় সব হেরোরা থাকে, ওরা কিছুই করতে পারে না বলে। খুপরিগুলো এমনিতে কারও নয়। যারা অনেকদিন ধরে ওগুলোতে থাকে তারা অনেক সময় ওগুলোকে নিজের বাড়ি বলে চালায়। বাড়ি আবার কী? দশ ফুট বাই দশ ফুটের কংক্রিটের বাক্স। আগে নাকি ওগুলো জেল হিসেবে ব্যবহার হত, মানে মগজ সিধা করার যন্ত্র আবিষ্কারের আগে। খুপরিগুলোতে জল নেই, পাইপ নেই, ব্রডব্যান্ড নেই, কিছুই নেই - শুধু একটা দরজা দেওয়া বাক্স মাত্র। ওতে যারা থাকে তারাও সেইরকম পেরে উঠছি না, কাজ করব না দলের সব। রক্তলোলুপ গ্যাংয়ের লোকজন ভেবেছিল লেখকবি লোকটা সেইরকমই একজন, কিন্তু লোকটা দেখিয়ে দিল।
রক্তলোলুপ গ্যাংরা আসলে ভাল লোক নয়। ওরা এইসব খুপরির লোকজনকে মাঝে মাঝে ধরে নিয়ে গিয়ে নিজেদের জেটবাইকের পিছনে বেঁধে চরকিপাক খাইয়ে বেড়ায়। তার ফলাফল প্রায়ই মারাত্মক হয়। তাও ওরা প্রায়ই করে ওটা – এমনি এমনি, মজা দেখার জন্যে। আমি ঠিক রক্তলোলুপদের দলে বলা যায় না কিন্তু আমাকে ওরা ওদের সঙ্গে থাকতে দেয়। ওদের হয়ে দ্বার ভাঙা বা ঝাড়াই করি আমি। দ্বার ভাঙা হল যখন কেউ কারো বাড়ির দরজা ভেঙে ঢুকে যা খুশি তাই তুলে নিয়ে যেতে পারে আর ঝাড়াইটা অনেকদিন আগেকার ছিনতাইয়ের মতন। এখন পৃথিবীটা অনেক বেশি নির্মম, অনেক বেশি কঠিন আর এখনকার মানুষদের মনগুলোও তাই।
লেখকবির সঙ্গে আমার সেইভাবেই আলাপ। ওর খুপরিতে আমাকে দ্বার ভাঙতে বলেছিল রক্তলোলুপরা। আমি কিছু যে পাবো সে আশা করিনি। খুপরিতে যারা থাকে তাদের কাছে নেওয়ার মতন তেমন কিছু থাকে না। আমি রক্তলোলুপদের কথা অমান্যও করতে চাইনি। বলা তো যায় না শেষে খেপে গিয়ে আমাকেও যদি জেটবাইকের পিছনে বেঁধে টেনে নিয়ে যায় স্রেফ মজা দেখার জন্যে!


যাই হোক, বুড়ো লোকটার কথায় আসা যাক। প্রথমেই যেটা দেখলাম সেটা হল লোকটা খুপরির দরজাটা খোলাই রেখেছে। আমি লাথি মেরে দরজা ভাঙার জন্যে প্রস্তুত কিন্তু লাথিটা বৃথা গেল। আমি বোকার মতন দাঁড়িয়ে আছি দেখে লোকটা মিটিমিটি হেসে বলল, “এসো ভিতরে এসো!” একটা পুরনো কাঠের বাক্স দিয়ে টেবিল বানিয়েছে লোকটা।
আমাকে ডাকছে শুনে আমি তো থ! লোকটা কি খ্যাপা নাকি? কেউ যেচে দ্বার ভাঙাতে চায় নাকি বা ঝাড়াই? আমার মুখ দিয়ে ‘অ্যাঁ’ ছাড়া কিছুই বেরল না। লোকটা বলল, “রক্তলোলুপরা তোমাকে পাঠিয়েছে বুঝি?” যেন সেটা কোনও ব্যাপারই না, সে বলে চলল, “একদিন না একদিন সেটা হবে জানতাম। নাও নাও, যা ইচ্ছে নিয়ে নাও। সবকিছু ওখানে রাখা আছে।” দেখি একটা ব্যাগে সবকিছু ভরে রেখেছে লোকটা। সব আদ্যিকালের জিনিস – একটা ক্রিকেট খেলার বল আর গ্লাভস, একটা অ্যালার্ম ঘড়ি, একটা কফি বানানোর মেশিন, তার তারটা আবার সুন্দর করে গোটানো। এসব এমনিতে কোনও কাজের নয় কিন্তু পুরনো জিনিসের দোকানে বিক্রি করে দু’চার পয়সা পাওয়া যাবে। কিছু লোক আছে যাদের এইসব সংগ্রহ করার শখ।
“নাও, নিয়ে নাও!” বুড়ো লোকটা আবার বলল।
আমি ভেবে পাচ্ছিলাম না এটা কোন ধরণের ব্যবহার। সবকিছু গুছিয়ে রেখেছে।
“এটা আমার বাড়ির প্রথম দ্বার ভাঙা নয়। আমি জানি কী হয়। আমাদের দুজনেরই যাতে সুবিধা হয় তাই সব গুছিয়ে রেখেছি’’
“আর কী আছে তোমার কাছে?”
লোকটা হাসল। ওর চামড়া কুঁচকে যাওয়া মুখটা উজ্জ্বল হয়ে উঠল। মনে হল যেন সে হাসতেই চায় সবসময়।
“তোমার মনে হচ্ছে আমার আরও কিছু আছে?”
ঠিক তখনই আমার চোখে পড়ল ওর টেবিলের তলায় রাখা তোড়া তোড়া কাগজ।
“ওগুলো কী?” আমি জিগ্যেস করলাম।
“দামি কিছু নয়,” লোকটা যেন একটু বিচলিত হল আমি দেখতে পেয়েছি বলে, “একটা বই। তুমি জানতে চাইলে তাই বললাম।”
আমি রেগে গিয়ে বললাম, “মিথ্যে কথা! বই তো লাইব্রেরিতে থাকে, বা থাকত।’’
লোকটা একটু ভেবে বলল, “তুমি তাহলে জানো যে বই লাইব্রেরিতে থাকত। কী করে জানলে? সেটা তো তোমার জন্মের আগেকার কথা।”
আমি কাঁধ ঝাঁকালাম, “শুনেছি সব যখন ছোট ছিলাম। ভাঙ্গনকালের আগে পৃথিবীটা যেমন ছিল সেইসবের গল্প।”
“যা শোনো তোমার সব মনে থাকে?”
“হ্যাঁ, কেন থাকবে না। সবারই তো থাকে!”
“না না, এখন আর কারও কিছু মনে থাকে না। প্রোবে আর মগজচিড়িকে ব্রেন সব ঝাঁঝরা হয়ে গেছে। কিছুই আর ধরে রাখতে পারে না। যারা মনে রাখে তারা সবাই আমার মতন বুড়ো, আর এখন শুনছি তুমিও মনে রাখো!”
আমার হঠাৎ মনে হল কথাটা সত্যি। আমি অনেক জিনিসই মনে রাখি যা অন্যরা সবাই ভুলে যায়।
“আর কী মনে আছে তোমার?” লেখকবি বলল।
“তাতে তোমার কী?”
“ওটাই তো আমার কাজ। লোকের যা মনে থাকে আমি সেগুলোকে লিখে রাখি। আগে একটা ভয়েস রাইটার ছিল কিন্তু সেটা দ্বার ভেঙে নিয়ে গেছে তাই এখন এইভাবেই লিখি। মাথায় ভাবি আর হাতে কলম ধরে পাতায় লিখি,” বলে সে তোড়া তোড়া কাগজগুলো দেখাল আঙুল দিয়ে, “একটু সেকেলে ব্যাপার কিন্তু কাজ চলে যায়।”
“কিন্তু কী হচ্ছে এটা?”
“বই লিখছি। আমার জীবনের গল্প। সবার গল্প। যখন বই ছিল তখনকার গল্প। পৃথিবীটা বদলে নির্মম হয়ে যাওয়ার গল্প!”
“এখন কেউ বই পড়েই না,” আমি মুখ বিকৃত করে বললাম।
“জানি। কিন্তু হয়তো একদিন পড়বে, হয়তো একদিন সবকিছু বদলাবে। একদিন হয়তো লোকে মগজের প্রোব ছেড়ে বই পড়তে চাইবে আবার।”
“লোকে মানে কারা?”
“আগামী দিনের কেউ। তোমার গল্প, আমার গল্প। তোমার গল্পটা বলো আমায়,” লোকটা বলল।
কী বলছে লোকটা? আমি বললাম, “আমার কোন গল্প নেই!”
“সবার জীবনেই গল্প থাকে। তোমার ভাবনা, গোপন কথা সবই তো গল্প!”
কেন জানি মনে হল লোকটা ঠিক বলছেআমি বসে ওর কথা শুনতে লাগলাম। ওর চুল সাদা হয়ে যাওয়ার আগের কথা। কীভাবে পৃথিবীকে নষ্ট করে ফেলা হল, তার সমস্ত প্রাকৃতিক সম্ভার শেষ করে। মানুষের লোভ, লালসা কীভাবে সবকিছু ধ্বংস করে দিল সেইসব গল্প। এই ধোঁয়ার ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাওয়ার আগে আকাশটা নীল ছিল। সেই আকাশে চকচকে যেসব জিনিসগুলো ছিল তাদের তারা বলত সবাই। আমি আমার মাথার মধ্যে সেইসব দেখতে পাচ্ছিলাম।
লোকটা চোখ বন্ধ করে বলল, “তুমি তো কোনওদিন সবুজ ঘাস দেখনি, বা ঘাসের গন্ধ শোঁকোনি। চোখ বন্ধ করে সেই সুগন্ধ নিলে মনে হত বেঁচে থাকা সার্থক। মাথায় অসংখ্য ছুঁচ ফোঁটাতে হত না।”
সেদিন আমি কিছু না নিয়েই ফিরে গিয়েছিলাম। পরদিন আবার ফিরে গিয়েছিলাম বুড়োটার খুপরিতে। লোকটা যেন আমার জন্যেই অপেক্ষা করছিল।
আমাকে দেখে বলল, “আমি তোমার কথাই ভাবছিলাম স্প্যাজ! তুমি কীভাবে সবকিছু মনে রাখো? সব লেখকের একজন পাঠক লাগে। আমি ভেবেছিলাম আমার পাঠক জন্মায়নি কিন্তু তুমি তো রয়েছ!”
আমি ভাবলাম ও ঠাট্টা করছে, তাই বললাম, “তুমি কি ভাবছ তোমার ওই কাগজের আঁচড় কাটা আমি পড়ব?”
লোকটা বলল, “আমি তোমাকে শেখাবো পড়তে! বেশিদিন লাগবে না। বছর খানেকের মধ্যেই তুমি পড়তে শিখে যাবে এই ভাষা।”
তখন আমি ওকে কথাটা বললাম, “তোমার কাছে আর এক বছর সময় নেই। যে কোনও দিন রক্তলোলুপরা আসবে তোমায় জেটবাইকের চাকায় বেঁধে ঘোরাতে।”
“তুমি ঠিক জানো?” লেখকবিকে খুব চিন্তিত দেখাল, “আমি ভাবছিলাম শুধু দ্বার ভাঙা বা ঝাড়াই কিন্তু জেট বাইকের পিছনে বেঁধে ঘোরানো তো সহ্য করতে পারব না। বয়স হয়েছে।”
আমি মরিয়া হয়ে বললাম, “তুমি পালিয়ে যাও। এক্ষুণি, বড্ড দেরি হয়ে যাওয়ার আগে।”
দীর্ঘশ্বাস ফেলে লোকটা বলল, “বুড়ো হয়ে গেছি, অনেক বয়স হয়ে গেছে। এখন আর কোথায় পালাব? আমার মাথায় একটা বুদ্ধি এসেছে। আমার বইটাকে তুমি শেষ করে তোমার বই করে নিও!”
“কী! তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে!”
“না না, মাথা খারাপ হয়নি। আমি ঠিকই বলছি। তোমার বুদ্ধি আছে আর আছে মনে রাখার ক্ষমতা। ওই দুটোই কাজে লাগবে। তুমি বাইরের লোক সেটাও ভাল, তারা মন দিয়ে সব দেখে আর শোনে। তোমার বয়সটাও কম, তুমি শক্তিশালী–এ সবই দরকার। আর যেটা চাই সেটা হল সাহস, তা সেটাও তোমার প্রচুর আছে।”
“তুমি কী করে জানলে আমার সাহস আছে?”
“তুমি শুনতে ভয় পাও না বলে!”
“আমি পড়তেই শিখিনি তো লিখব কী করে শুনি?”
“তুমি উপায় ঠিক খুঁজে নেবে!”
লেখকবি আর কিছু বলার আগেই রক্তলোলুপদের দল এসে হাজির। ওকে ধরে নিয়ে গেল। বীভৎস উল্লাসে চিৎকার করতে করতে!
“আমার কাগজগুলোকে দেখো!” লোকটা চিৎকার করে উঠল।
কথাটা যেই রক্তলোলুপদের কানে গেল ওরা সব কাগজ ছিঁড়ে তাতে আগুন লাগিয়ে দিল। তারপর শুরু হল ওদের পৈশাচিক নৃত্য।
আমি বলতে লাগলাম, “ওকে ছেড়ে দাও!” কিন্তু ওরা আমার কথা শুনল না।
ওরা যখন ওকে জেটবাইকের পিছনে বেঁধে টেনে নিয়ে যাচ্ছে তখনও লোকটা অনেক কথা বলে চলল। ওর জীবনের কথা, প্রিয়জনদের মৃত্যুর কথা। আমি জেটবাইকের পিছন পিছন ছুটতে লাগলাম। ওর দড়িটা খুলতে চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না। রক্তাক্ত অবস্থায় লোকটা বলল, “না না, আমার জন্যে তুমি ঝুঁকি নিও না। তুমিই আমার একমাত্র আশা। তুমি শুধু আমার বইটার কথা মনে রেখো। বেঁচে থেকো – মনে রেখো!”
চারিদিকে লোক জড়ো হয়ে দেখছিল লেখকবিকে। সে বলেই চলেছে, “সবার কিছু না কিছু গল্প আছে। তোমাকে শুধু মন দিয়ে শুনতে হবে। তুমিই আগামী দিনের আশা। তুমিই বিশ্বের শেষ বই!”
আমি আর ওখানে থাকিনি। আর দেখতে পারছিলাম না। ওর কথা বলা শেষ হতেই আমি ওখান থেকে পালিয়ে গেলাম। কয়েকটা খুব উঁচু বাড়ির ছাদে উঠে আকাশের দিকে চেয়ে তারাদের দেখতে চেষ্টা করলাম কিন্তু পোড়া ধোঁয়ার কুয়াশা ছাড়া কিছুই দেখতে পেলাম না।
###

পরদিন আমি অদ্ভুত একটা কান্ড করলাম। পুরনো জিনিসের দোকান ঘেঁটে একটা ভয়েস রাইটার নিয়ে এলাম। ধুলোয় ভর্তি জিনিসটা কত কাল ব্যবহার হয়নি। নেড়েচেড়ে যা বুঝলাম, ওটাতে কথা বললে লেখা হয়ে বেরিয়ে আসে। ঠিক কাজ করছে দেখে আমি বলতে শুরু করলাম লেখকবির গল্প। ও আমাকে যা যা বলেছিল – সবুজ ঘাস আর চকচকে তারাদের কথা আর ওর যা হল, ওরা ওকে যা করল সবকিছু। আমি তখন বুঝিনি কিন্তু বই লেখা আমি শুরু করে দিয়েছিলাম। লেখকবি যে গল্পটা লেখা শুরু করেছিল সেটা আমার মাথার মধ্যে বড় হতে লাগলআমি যা কিছু দেখি বা শুনি তার গল্প। যাদের ভালবাসি বা ঘৃণা করি তাদের গল্প। বাঁচার লড়াই – মরার যুদ্ধ – সবকিছু। একবার শুরু যখন করে ফেলেছি তখন আর থামতে পারছি না। লেখকবি বলেছিল না, যে আমিই বিশ্বের শেষ বই।
মানে তোমরা পড়ার আগে পর্যন্ত!
________________

[এই গল্পটি টুমোরোল্যান্ড নামক একটি গল্প সংকলন থেকে নেওয়া। লেখক রডম্যান ফিলব্রিক (জন্ম-১৯৫১)। থাকেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেইন আর ফ্লোরিডা রাজ্যে।
লেখক লেখাটা নিয়ে যা বলেছেন - টুমোরোল্যান্ডের জন্যে লিখতে বলাতে আমার মনে প্রশ্ন জাগে ভবিষ্যতের পৃথিবী কেমন হবে? যদি এমন একটা সময় আসে যখন কেউ বই পড়বে না, তাহলে পৃথিবীটা কেমন হবে, আর তার লোকেরাই বা কেমন? আমার কাছে উত্তর ছিল না কিন্তু আমি এমন একজনকে জানতাম যার উত্তর জানা ছিল – স্প্যাজ! তাকে নিয়ে, তার ভাল হয়ে ওঠা নিয়েই আমার গল্প।
এই ভাবনা ও স্প্যাজকে নিয়ে লেখক একটি উপন্যাসও লেখেন পরে।
নিজের সম্পর্কে লেখক প্রায়ই বলেন যে ওনার শরীরের বয়স বেড়েছে কিন্তু মনের বয়স বারোতেই আটকে রয়েছে সেই কবে থেকে!]
_________
ছবি - তন্ময় বিশ্বাস এবং সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায়

2 comments:

  1. Bhoyonkor sotyo bhobisyoter prithibi r jonyo

    ReplyDelete
  2. Dhanyabad Saptarshi o Tonmoy...sundor chhobigulor janye...

    ReplyDelete