ছড়া-কবিতা:: রূপকথা - মধুমিতা ভট্টাচার্য

রূপকথা
মধুমিতা ভট্টাচার্য

গাছের তলায় ছড়িয়ে ছিল হারানো দিন সব
স্মৃতির হাওয়ার একটু ছোঁওয়ায় আবার কলরব।
আলোছায়ার নরম ওমে মনে পড়ার ধূম।
পাঁচ-দশ-ছয় ঋতুর পরে ভেঙ্গেছে শীতঘুম।

ছোট্টবেলার গল্প শোনার রূপকথারা সঙ্গী,
নকশী কাঁথার মাঠপারে ঘর, রামধনু সাতরংগী,
অচিন দেশে রাজকন্যার হীরের খাটে গা,
রেশম কোমল ঘুম বিছানায় মোতির খাটে পা।

রাজপুত্র ঘোড়সওয়ারে পৌঁছে সে বিভুঁয়ে
ঘুম ভাঙ্গালো সোনার কাঠি রূপোর কাঠি ছুঁয়ে।
বলল, “বল রাজকন্যা কোথায় তোমার দেশ?
প্রজারা সব কেমন ধারা, কেমন তাদের বেশ?
কোথায় তোমার ঘর? তোমায় ঘুম পাড়ালো কে?
আনব ধরে, দেবই সাজা, এমন দস্যুকে!

কন্যা বলে, “দুষ্টু সে এক, আনলো চুরি করে,
ঘুম পাড়িয়ে রাখল আমায় নিঝুম পাতালপুরে।
সোনার কাঠি ছুঁইয়ে তুমি জাগালে আজ তাই,
আবার আমি আমার ঘরেই ফিরে যেতে চাই

পঙ্খীরাজে উড়ল দুজন পৌঁছে গেল বাড়ি
রাজা, রাণী, মন্ত্রী, সেপাই সবাই খুশি ভারি।
বলেন রাজা, “ও যে আমার বড্ড ভাল মেয়ে,
ধন্য আমি হারিয়ে যাওয়া কন্যা খুঁজে পেয়ে।
তোমার সাথেই হোক না বিয়ে খুব ধুমধাম করে
গান-বাজনা, খানা-পিনা চলুক বছর ভরে!

কন্যা বলে, “না না বাবা, এক্ষুনি নয় বিয়ে,
পড়াশুনো করব আমি পুঁথি-কলম নিয়ে
ঠিক বলেছ, পড়াতো চাই,রাজপুত্র খুশি,
আমিই তোমায় পড়িয়ে দেব, দক্ষিণা যা খুশি

রাজা বলেন, “নেই পরোয়া, পড়ুক আমার মেয়ে,
এই কে আছিস? এক্ষুনি যা, বইখাতা আয় নিয়ে
বিয়ের কথা ভাবব পরে, এখন লেখাপড়া,
আনরে কলম, বসার আসন, আন কালি এক ঘড়া।”

সেদিন থেকেই পড়াশুনো হয়ে গেল শুরু,
রাজকন্যা ছাত্রী এবং রাজপুত্র গুরু।
পরের গল্প পরে হবে, আপাততঃ এই,
পড়াশুনো চলছে এখন, গোল করতে নেই।
------------
ছবি – দ্বৈতা গোস্বামী

3 comments: